০১৮. সূরা আল কাহফ
আয়াতঃ ১১০; রুকুঃ ১২; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي
أَنزَلَ عَلَىٰ عَبْدِهِ الْكِتَابَ وَلَمْ يَجْعَل لَّهُ عِوَجًا ۜ﴾
১। প্রশংসা
আল্লাহরই যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন এবং এর মধ্যে কোনো বক্রতা
রাখেননি।১
﴿قَيِّمًا لِّيُنذِرَ بَأْسًا
شَدِيدًا مِّن لَّدُنْهُ وَيُبَشِّرَ الْمُؤْمِنِينَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ الصَّالِحَاتِ
أَنَّ لَهُمْ أَجْرًا حَسَنًا﴾
২। একদম সোজা
কথা বলার কিতাব, যাতে
লোকদেরকে আল্লাহর কঠিন শাস্তি থেকে সে সাবধান করে দেয় এবং ঈমান এনে যারা সৎকাজ করে
তাদেরকে সুখবর দিয়ে দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য রয়েছে ভালো প্রতিদান।
﴿مَّاكِثِينَ فِيهِ أَبَدًا﴾
৩। সেখানে
তারা থাকবে চিরকাল।
﴿وَيُنذِرَ الَّذِينَ قَالُوا
اتَّخَذَ اللَّهُ وَلَدًا﴾
৪। আর যারা
বলে, আল্লাহ
কাউকে সন্তানরূপে গ্রহণ করেছেন, তাদেরকে ভয় দেখায়।২
﴿مَّا لَهُم بِهِ مِنْ عِلْمٍ
وَلَا لِآبَائِهِمْ ۚ كَبُرَتْ كَلِمَةً تَخْرُجُ مِنْ أَفْوَاهِهِمْ ۚ إِن يَقُولُونَ
إِلَّا كَذِبًا﴾
৫। এ বিষয়ে
তাদের কোনো জ্ঞান নেই এবং তাদের বাপ-দাদারও ছিলো না।৩ তাদের মুখ থেকে বেরুনো একথা
অত্যন্ত সাংঘাতিক! তারা নিছক মিথ্যাই বলে।
﴿فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ
عَلَىٰ آثَارِهِمْ إِن لَّمْ يُؤْمِنُوا بِهَٰذَا الْحَدِيثِ أَسَفًا﴾
৬। হে
মুহাম্মাদ! যদি এরা এ শিক্ষার প্রতি ঈমান না আনে, তাহলে দুশ্চিন্তায় তুমি হয়তো
এদের পেছনে নিজের প্রাণটি খোয়াবে।৪
﴿إِنَّا جَعَلْنَا مَا عَلَى
الْأَرْضِ زِينَةً لَّهَا لِنَبْلُوَهُمْ أَيُّهُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا﴾
৭। আসলে
পৃথিবীতে এ যাকিছু সাজ সরঞ্জামই আছে এগুলো দিয়ে আমি পৃথিবীর সৌন্দর্য বিধান করেছি
তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্য থেকে কে ভালো কাজ করে।
﴿وَإِنَّا لَجَاعِلُونَ مَا
عَلَيْهَا صَعِيدًا جُرُزًا﴾
৮। সবশেষে
এসবকে আমি একটি বৃক্ষ-লতাহীন ময়দানে পরিণত করবো।৫
﴿أَمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحَابَ
الْكَهْفِ وَالرَّقِيمِ كَانُوا مِنْ آيَاتِنَا عَجَبًا﴾
৯। তুমি কি
মনে করো গূহা৬ ও ফলক ওয়ালারা৭ আমার বিস্ময়কর নিদর্শনাবলীর
অন্তরভুক্ত ছিলো?৮
﴿إِذْ أَوَى الْفِتْيَةُ إِلَى
الْكَهْفِ فَقَالُوا رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا
رَشَدًا﴾
১০। যখন কজন
যুবক গূহায় আশ্রয় নিলো এবং তারা বললোঃ হে আমাদের রব! তোমার বিশেষ রহমতের ধারায়
আমাদের প্লাবিত করো এবং আমাদের ব্যাপার ঠিকঠাক করে দাও।”
﴿فَضَرَبْنَا عَلَىٰ آذَانِهِمْ
فِي الْكَهْفِ سِنِينَ عَدَدًا﴾
১১। তখন আমি
তাদেরকে সেই গূহার মধ্যে থাপড়ে থাপড়ে বছরের পর বছর গভীর নিদ্রায় মগ্ন রেখেছি।
﴿ثُمَّ بَعَثْنَاهُمْ لِنَعْلَمَ
أَيُّ الْحِزْبَيْنِ أَحْصَىٰ لِمَا لَبِثُوا أَمَدًا﴾
১২। তারপর আমি
তাদেরকে উঠিয়েছি একথা জানার জন্য যে, তাদের দু দলের মধ্য থেকে কোনটি তার
অবস্থান কালের সঠিক হিসেব রাখতে পারে।
﴿نَّحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ
نَبَأَهُم بِالْحَقِّ ۚ إِنَّهُمْ فِتْيَةٌ آمَنُوا بِرَبِّهِمْ وَزِدْنَاهُمْ هُدًى﴾
১৩। আমি তাদের
সত্যিকার ঘটনা তোমাকে শুনাচ্ছি।৯ তারা কয়েকজন যুবক ছিলো, তাদের রবের ওপর ঈমান এনেছিলো
এবং আমি তাদের সঠিক পথে চলার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।১০
﴿وَرَبَطْنَا عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ
إِذْ قَامُوا فَقَالُوا رَبُّنَا رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَن نَّدْعُوَ مِن
دُونِهِ إِلَٰهًا ۖ لَّقَدْ قُلْنَا إِذًا شَطَطًا﴾
১৪। আমি সে
সময় তাদের চিত্ত দৃঢ় করে দিলাম যখন তারা উঠলো এবং ঘোষণা করলোঃ “আমাদের রব তো কেবল
তিনিই যিনি পৃথিবী ও আকাশের রব। আমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কোনো
মাবুদকে ডাকবো না। যদি আমরা তাই করি তাহলে তা হবে একেবারেই
অনর্থক।”
﴿هَٰؤُلَاءِ قَوْمُنَا اتَّخَذُوا
مِن دُونِهِ آلِهَةً ۖ لَّوْلَا يَأْتُونَ عَلَيْهِم بِسُلْطَانٍ بَيِّنٍ ۖ فَمَنْ
أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا﴾
১৫। তারপর
তারা পরস্পরকে বললোঃ) “এ আমাদের জাতি, এরা বিশ্বজাহানের রবকে বাদ দিয়ে অন্য ইলাহ
বানিয়ে নিয়েছে। এরা তাদের মাবুদ হবার সপক্ষে কোনো
সুস্পষ্ট প্রমাণ আনছে না কেন? যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি
মিথ্যা আরোপ করে তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে?
﴿وَإِذِ اعْتَزَلْتُمُوهُمْ
وَمَا يَعْبُدُونَ إِلَّا اللَّهَ فَأْوُوا إِلَى الْكَهْفِ يَنشُرْ لَكُمْ رَبُّكُم
مِّن رَّحْمَتِهِ وَيُهَيِّئْ لَكُم مِّنْ أَمْرِكُم مِّرْفَقًا﴾
১৬। এখন যখন
তোমরা এদের থেকে এবং আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে এরা পূজা করে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
গেছো তখন চলো অমুক গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিই।১১ তোমাদের রব তোমাদের ওপর তাঁর
রহমতের ছায়া বিস্তার করবেন এবং তোমাদের কাজের উপযোগী সাজ সরঞ্জামের ব্যবস্থা করবেন।”
﴿وَتَرَى الشَّمْسَ إِذَا
طَلَعَت تَّزَاوَرُ عَن كَهْفِهِمْ ذَاتَ الْيَمِينِ وَإِذَا غَرَبَت تَّقْرِضُهُمْ
ذَاتَ الشِّمَالِ وَهُمْ فِي فَجْوَةٍ مِّنْهُ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ ۗ مَن
يَهْدِ اللَّهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ ۖ وَمَن يُضْلِلْ فَلَن تَجِدَ لَهُ وَلِيًّا مُّرْشِدًا﴾
১৭। তুমি যদি
তাদেরকে গুহায় দেখতে,১২ তাহলে দেখতে সূর্য উদয়ের সময়
তাদের গুহা ছেড়ে ডান দিক থেকে ওঠে এবং অস্ত যাওয়ার সময় তাদেরকে এড়িয়ে বাম দিকে
নেমে যায় আর তারা গুহার মধ্যে একটি বিস্তৃত জায়গায় পড়ে আছে।১৩ এ হচ্ছে আল্লাহর অন্যতম
নিদর্শন। যাকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান সে-ই সঠিক পথ
পায় এবং যাকে আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন তার জন্য তুমি কোনো পৃষ্ঠপোষক ও পথপ্রদর্শক
পেতে পারো না।
﴿وَتَحْسَبُهُمْ أَيْقَاظًا
وَهُمْ رُقُودٌ ۚ وَنُقَلِّبُهُمْ ذَاتَ الْيَمِينِ وَذَاتَ الشِّمَالِ ۖ وَكَلْبُهُم
بَاسِطٌ ذِرَاعَيْهِ بِالْوَصِيدِ ۚ لَوِ اطَّلَعْتَ عَلَيْهِمْ لَوَلَّيْتَ مِنْهُمْ
فِرَارًا وَلَمُلِئْتَ مِنْهُمْ رُعْبًا﴾
১৮। তোমরা
তাদেরকে দেখে মনে করতে তারা জেগে আছে, অথচ তারা ঘুমুচ্ছিল। আমি তাদের
ডাইনে বাঁয়ে পার্শ্ব পরিবর্তন করাচ্ছিলাম।১৪ এবং তাদের কুকুর গুহা মুখে
সামনের দু পা ছড়িয়ে বসেছিল। যদি তুমি কখনো উঁকি দিয়ে
তাদেরকে দেখতে তাহলে পিছন ফিরে পালাতে থাকতে এবং তাদের দৃশ্য তোমাকে আতংকিত করতো।১৫
﴿وَكَذَٰلِكَ بَعَثْنَاهُمْ
لِيَتَسَاءَلُوا بَيْنَهُمْ ۚ قَالَ قَائِلٌ مِّنْهُمْ كَمْ لَبِثْتُمْ ۖ قَالُوا لَبِثْنَا
يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ ۚ قَالُوا رَبُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَا لَبِثْتُمْ فَابْعَثُوا
أَحَدَكُم بِوَرِقِكُمْ هَٰذِهِ إِلَى الْمَدِينَةِ فَلْيَنظُرْ أَيُّهَا أَزْكَىٰ
طَعَامًا فَلْيَأْتِكُم بِرِزْقٍ مِّنْهُ وَلْيَتَلَطَّفْ وَلَا يُشْعِرَنَّ بِكُمْ
أَحَدًا﴾
১৯। আর এমনি
বিস্ময়করভাবে আমি তাদেরকে উঠিয়ে বসালাম১৬ যাতে তারা পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ
করতে পারে। তাদের একজন জিজ্ঞেস করলোঃ “বলোতো, কতক্ষণ এ অবস্থায় থেকেছো?” অন্যেরা বললো, “হয়তো একদিন বা এর থেকে কিছু
কম সময় হবে।” তারপর তারা বললো, “আল্লাহই ভালো জানেন আমাদের
কতটা সময় এ অবস্থায় অতিবাহিত হয়েছে। চলো এবার
আমাদের মধ্য থেকে কাউকে রূপার এ মুদ্রা দিয়ে শহরে পাঠাই এবং সে দেখুক সবচেয়ে ভালো
খাবার কোথায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে সে কিছু খাবার
নিয়ে আসুক ; আর তাকে
একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, আমাদের এখানে থাকার ব্যাপারটা সে যেন
কাউকে জানিয়ে না দেয়।
﴿إِنَّهُمْ إِن يَظْهَرُوا
عَلَيْكُمْ يَرْجُمُوكُمْ أَوْ يُعِيدُوكُمْ فِي مِلَّتِهِمْ وَلَن تُفْلِحُوا إِذًا
أَبَدًا﴾
২০। যদি
কোনোক্রমে তারা আমাদের নাগাল পায় তাহলে হয় প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা আমাদের
জোর করে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং এমন হলে আমরা কখনো সফলকাম হতে পারবো না।”
﴿وَكَذَٰلِكَ أَعْثَرْنَا
عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوا أَنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَأَنَّ السَّاعَةَ لَا رَيْبَ
فِيهَا إِذْ يَتَنَازَعُونَ بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْ ۖ فَقَالُوا ابْنُوا عَلَيْهِم بُنْيَانًا
ۖ رَّبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْ ۚ قَالَ الَّذِينَ غَلَبُوا عَلَىٰ أَمْرِهِمْ لَنَتَّخِذَنَّ
عَلَيْهِم مَّسْجِدًا﴾
২১। এভাবে আমি
নগরবাসীদেরকে তাদের অবস্থা জানালাম,১৭ যাতে
লোকেরা জানতে পারে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতের দিন নিশ্চিতভাবেই আসবে।১৮ (কিন্তু একটু ভেবে দেখো, যখন এটিই ছিল চিন্তার আসল
বিষয়) সে সময় তারা পরস্পর এ বিষয়টি নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছিল যে, এদের (আসহাবে কাহফ) সাথে কি
করা যায়। কিছু লোক বললো, “এদের ওপর একটি প্রাচীর
নির্মাণ করো, এদের রবই
এদের ব্যাপারটি ভালো জানেন।”১৯ কিন্তু তাদের বিষয়াবলীর ওপর
যারা প্রবল ছিল২০ তারা বললো, “আমরা অবশ্যি এদের ওপর একটি
ইবাদাতখানা নির্মাণ করবো”।২১
﴿سَيَقُولُونَ ثَلَاثَةٌ رَّابِعُهُمْ
كَلْبُهُمْ وَيَقُولُونَ خَمْسَةٌ سَادِسُهُمْ كَلْبُهُمْ رَجْمًا بِالْغَيْبِ ۖ وَيَقُولُونَ
سَبْعَةٌ وَثَامِنُهُمْ كَلْبُهُمْ ۚ قُل رَّبِّي أَعْلَمُ بِعِدَّتِهِم مَّا يَعْلَمُهُمْ
إِلَّا قَلِيلٌ ۗ فَلَا تُمَارِ فِيهِمْ إِلَّا مِرَاءً ظَاهِرًا وَلَا تَسْتَفْتِ
فِيهِم مِّنْهُمْ أَحَدًا﴾
২২। কিছু লোক
বলবে, তারা ছিল
তিনজন আর চতুর্থজন ছিল তাদের কুকুরটি। আবার অন্য
কিছু লোক বলবে, তারা
পাঁচজন ছিল এবং তাদের কুকুরটি ছিল ষষ্ঠ, এরা সব আন্দাজে কথা বলে। অন্যকিছু
লোক বলে, তারা ছিল
সাতজন এবং অষ্টমটি তাদের কুকুর।২২ বলো, আমার রবই ভালো জানেন তারা কজন
ছিল, অল্প লোকই
তাদের সঠিক সংখ্যা জানে। কাজেই তুমি সাধারণ কথা ছাড়া
তাদের সংখ্যা নিয়ে লোকদের সাথে বিতর্ক করো না এবং তাদের সম্পর্কে কাউকে কিছু
জিজ্ঞাসাবাদও করো না।২৩
﴿وَلَا تَقُولَنَّ لِشَيْءٍ
إِنِّي فَاعِلٌ ذَٰلِكَ غَدًا﴾
২৩। আর দেখো, কোনো জিনিসের ব্যাপারে কখনো
একথা বলো না, আমি কাল এ
কাজটি করবো।
﴿إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ
ۚ وَاذْكُر رَّبَّكَ إِذَا نَسِيتَ وَقُلْ عَسَىٰ أَن يَهْدِيَنِ رَبِّي لِأَقْرَبَ
مِنْ هَٰذَا رَشَدًا﴾
২৪। (তোমরা
কিছুই করতে পারো না) তবে যদি আল্লাহ চান। যদি ভুলে
এমন কথা মুখ থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে সাথে সাথেই নিজের রবকে স্মরণ করো এবং বলো, “আশা করা যায়, আমার রব এ ব্যাপারে সত্যের
নিকটতর কথার দিকে আমাকে পথ দেখিয়ে দেবেন।”২৪
﴿وَلَبِثُوا فِي كَهْفِهِمْ
ثَلَاثَ مِائَةٍ سِنِينَ وَازْدَادُوا تِسْعًا﴾
২৫। আর তারা
তাদের গুহার মধ্যে তিনশো বছর থাকে এবং (কিছু লোক মেয়াদ গণনা করতে গিয়ে) আরো নয় বছর
বেড়ে গেছে।২৫
﴿قُلِ اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا
لَبِثُوا ۖ لَهُ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ أَبْصِرْ بِهِ وَأَسْمِعْ ۚ مَا
لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا﴾
২৬। তুমি বলো, আল্লাহ তাদের অবস্থানের মেয়াদ
সম্পর্কে বেশী জানেন। আকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয়
প্রচ্ছন্ন অবস্থা তিনিই জানেন, কেমন চমৎকার তিনি দ্রষ্টা ও শ্রোতা!
পৃথিবী ও আকাশের সকল সৃষ্টির তত্ত্বাবধানকারী তিনি ছাড়া আর কেউ নেই এবং নিজের শাসন
কর্তৃত্ব তিনি কাউকে শরীক করেন না।
﴿وَاتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ
مِن كِتَابِ رَبِّكَ ۖ لَا مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَلَن تَجِدَ مِن دُونِهِ مُلْتَحَدًا﴾
২৭। হে নবী!২৬ তোমার রবের কিতাবের মধ্য থেকে
যাকিছু তোমার ওপর অহী করা হয়েছে তা (হুবহু) শুনিয়ে দাও। তাঁর
বক্তব্য পরিবর্তন করার অধিকার কারো নেই, (আর যদি তুমি কারো স্বার্থে তার মধ্যে
পরিবর্তন করো তাহলে) তাঁর হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে পালাবার জন্য কোনো আশ্রয়স্থল
পাবে না।২৭
﴿وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ
الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُم بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ ۖ وَلَا
تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ تُرِيدُ زِينَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَلَا تُطِعْ مَنْ
أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَن ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا﴾
২৮। আর নিজের
অন্তরকে তাদের সংগ লাভে নিশ্চিন্ত করো যারা নিজেদের রবের সন্তুষ্টির সন্ধানে
সকাল-ঝাঁঝে তাঁকে ডাকে এবং কখনো তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরাবে না। তুমি কি
পার্থিব সৌন্দর্য পছন্দ করো?২৮ এমন কোনো লোকের আনুগত্য করো
না২৯ যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ
থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির কামনা বাসনার অনুসরণ করেছে এবং যার
কর্মপদ্ধতি কখনো উগ্র, কখনো উদাসীন।৩০
﴿وَقُلِ الْحَقُّ مِن رَّبِّكُمْ
ۖ فَمَن شَاءَ فَلْيُؤْمِن وَمَن شَاءَ فَلْيَكْفُرْ ۚ إِنَّا أَعْتَدْنَا لِلظَّالِمِينَ
نَارًا أَحَاطَ بِهِمْ سُرَادِقُهَا ۚ وَإِن يَسْتَغِيثُوا يُغَاثُوا بِمَاءٍ كَالْمُهْلِ
يَشْوِي الْوُجُوهَ ۚ بِئْسَ الشَّرَابُ وَسَاءَتْ مُرْتَفَقًا﴾
২৯। পরিষ্কার
বলে দাও, এ হচ্ছে
সত্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে, এখন যে চায় মেনে নিক এবং যে চায় অস্বীকার
করুক।৩১ আমি
(অস্বীকারকারী) জালেমদের জন্য একটি আগুন তৈরি করে রেখেছি যার শিখাগুলো তাদেরকে
ঘেরাও করে ফেলেছে।৩২ সেখানে
তারা পানি চাইলে এমন পানি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হবে, যা হবে তেলের তলানির মতো।৩৩ এবং যা তাদের চেহারা দগ্ধ করে
দেবে। কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং কি জঘন্য আবাস!
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ إِنَّا لَا نُضِيعُ أَجْرَ مَنْ أَحْسَنَ عَمَلًا﴾
৩০। তবে যারা
মেনে নেবে এবং সৎকাজ করবে, সেসব সৎকর্মশীলদের প্রতিদান আমি কখনো নষ্ট করি না।
﴿أُولَٰئِكَ لَهُمْ جَنَّاتُ
عَدْنٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهِمُ الْأَنْهَارُ يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِن
ذَهَبٍ وَيَلْبَسُونَ ثِيَابًا خُضْرًا مِّن سُندُسٍ وَإِسْتَبْرَقٍ مُّتَّكِئِينَ
فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ ۚ نِعْمَ الثَّوَابُ وَحَسُنَتْ مُرْتَفَقًا﴾
৩১। তাদের
জন্য রয়েছে চির বসন্তের জান্নাত, যার পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী, সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকনে
সজ্জিত করা হবে,৩৪ সূক্ষ্ম ও পুরু রেশম ও
কিংখাবের সবুজ বস্ত্র পরিধান করবে এবং উপবেশন করবে উঁচু আসনে বালিশে হেলান দিয়ে,৩৫ চমৎকার
পুরস্কার এবং সর্বোত্তম আবাস!
﴿وَاضْرِبْ لَهُم مَّثَلًا
رَّجُلَيْنِ جَعَلْنَا لِأَحَدِهِمَا جَنَّتَيْنِ مِنْ أَعْنَابٍ وَحَفَفْنَاهُمَا
بِنَخْلٍ وَجَعَلْنَا بَيْنَهُمَا زَرْعًا﴾
৩২। হে
মুহাম্মাদ! এদের সামনে একটি দৃষ্টান্ত পেশ করে দাও।৩৬ দু ব্যক্তি ছিল। তাদের
একজনকে আমি দু’টি আংগুর বাগান দিয়েছিলাম এবং সেগুলোর চারদিকে খেজুর গাছের বেড়া
দিয়েছিলাম আর তার মাঝখানে রেখেছিলাম কৃষি ক্ষেত।
﴿كِلْتَا الْجَنَّتَيْنِ آتَتْ
أُكُلَهَا وَلَمْ تَظْلِم مِّنْهُ شَيْئًا ۚ وَفَجَّرْنَا خِلَالَهُمَا نَهَرًا﴾
৩৩। দু’টি
বাগানই ভালো ফলদান করতো এবং ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে তারা সামান্যও ত্রুটি করতো না। এ বাগান দু’টির
মধ্যে আমি একটি নহর প্রবাহিত করেছিলাম
﴿وَكَانَ لَهُ ثَمَرٌ فَقَالَ
لِصَاحِبِهِ وَهُوَ يُحَاوِرُهُ أَنَا أَكْثَرُ مِنكَ مَالًا وَأَعَزُّ نَفَرًا﴾
৩৪। এবং সে
খুব লাভবান হয়েছিল। এসব কিছু পেয়ে একদিন সে তার
প্রতিবেশীর সাথে কথা প্রসংগে বললো, “আমি তোমার চেয়ে বেশী ধনশালী এবং আমার
জনশক্তি তোমার চেয়ে বেশী।”
﴿وَدَخَلَ جَنَّتَهُ وَهُوَ
ظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ قَالَ مَا أَظُنُّ أَن تَبِيدَ هَٰذِهِ أَبَدًا﴾
৩৫। তারপর সে
তার বাগানে প্রবেশ করলো৩৭ এবং নিজের
প্রতি জালেম হয়ে বলতে লাগলোঃ “আমি মনে করি না এ সম্পদ কোনো দিন ধ্বংস হয়ে যাবে।
﴿وَمَا أَظُنُّ السَّاعَةَ
قَائِمَةً وَلَئِن رُّدِدتُّ إِلَىٰ رَبِّي لَأَجِدَنَّ خَيْرًا مِّنْهَا مُنقَلَبًا﴾
৩৬। এবং আমি
আশা করি না কিয়ামতের সময় কখনো আসবে। তবুও যদি
আমাকে কখনো আমার রবের সামনে ফিরিয়ে নেয়া হয় তাহলে নিশ্চয়ই আমি এর চেয়েও বেশী
জাঁকালো জায়গা পাবো।৩৮
﴿قَالَ لَهُ صَاحِبُهُ وَهُوَ
يُحَاوِرُهُ أَكَفَرْتَ بِالَّذِي خَلَقَكَ مِن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ
سَوَّاكَ رَجُلًا﴾
৩৭। তার
প্রতিবেশী কথাবার্তার মধ্যে তাকে বললো, “তুমি কি কুফরী করছো সেই সত্তার যিনি
তোমাকে মাটি থেকে তারপর শুক্র থেকে পয়দা করেছেন এবং তোমাকে একটি পূর্ণাবয়ব মানুষ
বানিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন?৩৯
﴿لَّٰكِنَّا هُوَ اللَّهُ
رَبِّي وَلَا أُشْرِكُ بِرَبِّي أَحَدًا﴾
৩৮। আর আমার
ব্যাপারে বলবো, আমার রব তো
সেই আল্লাহই এবং আমি তার সাথে কাউকে শরীক করি না।
﴿وَلَوْلَا إِذْ دَخَلْتَ
جَنَّتَكَ قُلْتَ مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ ۚ إِن تَرَنِ أَنَا
أَقَلَّ مِنكَ مَالًا وَوَلَدًا﴾
৩৯। আর যখন
তুমি নিজের বাগানে প্রবেশ করছিলে তখন তুমি কেন বললে না, “আল্লাহ যা চান তাই হয়, তাঁর প্রদত্ত শক্তি ছাড়া আর
কোনো শক্তি নেই?৪০ যদি তুমি
সম্পদ ও সন্তানের দিক দিয়ে আমাকে তোমার চেয়ে কম পেয়ে থাকো
﴿فَعَسَىٰ رَبِّي أَن يُؤْتِيَنِ
خَيْرًا مِّن جَنَّتِكَ وَيُرْسِلَ عَلَيْهَا حُسْبَانًا مِّنَ السَّمَاءِ فَتُصْبِحَ
صَعِيدًا زَلَقًا﴾
৪০। তাহলে
অসম্ভব নয় আমার রব আমাকে তোমার বাগানের চেয়ে ভালো কিছু দেবেন এবং তোমার বাগানের
ওপর আকাশ থেকে কোনো আপদ পাঠাবেন যার ফলে তা বৃক্ষলতাহীন প্রান্তরে পরিণত হবে।
﴿أَوْ يُصْبِحَ مَاؤُهَا غَوْرًا
فَلَن تَسْتَطِيعَ لَهُ طَلَبًا﴾
৪১। অথবা তার
পানি ভূগর্ভে নেমে যাবে এবং তুমি তাকে কোনোক্রমেই উঠাতে পারবে না।
﴿وَأُحِيطَ بِثَمَرِهِ فَأَصْبَحَ
يُقَلِّبُ كَفَّيْهِ عَلَىٰ مَا أَنفَقَ فِيهَا وَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَىٰ عُرُوشِهَا
وَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُشْرِكْ بِرَبِّي أَحَدًا﴾
৪২। শেষ
পর্যন্ত তার সমস্ত ফসল বিনষ্ট হলো এবং সে নিজের আংগুর বাগান মাচানের ওপর লণ্ডভণ্ড
হয়ে পড়ে থাকতে দেখে নিজের নিয়োজিত পুঁজির জন্য আফসোস করতে থাকলো এবং বলতে লাগলো, “হায়! যদি আমি আমার রবের সাথে
কাউকে শরীক না করতাম”।
﴿وَلَمْ تَكُن لَّهُ فِئَةٌ
يَنصُرُونَهُ مِن دُونِ اللَّهِ وَمَا كَانَ مُنتَصِرًا﴾
৪৩। সে সময়
আল্লাহ ছাড়া তাকে সাহায্য করার মতো কোনো গোষ্ঠীও ছিল না, আর সে নিজেও এ বিপদের
মুকাবিলা করতে সক্ষম ছিল না।
﴿هُنَالِكَ الْوَلَايَةُ لِلَّهِ
الْحَقِّ ۚ هُوَ خَيْرٌ ثَوَابًا وَخَيْرٌ عُقْبًا﴾
৪৪। তখন জানা
গেলো, কর্মসম্পাদনের
ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে ন্যস্ত, যিনি সত্য। আর
পুরষ্কার সেটাই ভালো, যা তিনি দান করেন এবং পরিণতি সেটাই শ্রেয়, যা তিনি দেখান।
﴿وَاضْرِبْ لَهُم مَّثَلَ
الْحَيَاةِ الدُّنْيَا كَمَاءٍ أَنزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَاءِ فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ
الْأَرْضِ فَأَصْبَحَ هَشِيمًا تَذْرُوهُ الرِّيَاحُ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ
شَيْءٍ مُّقْتَدِرًا﴾
৪৫। আর হে
নবী! দুনিয়ার জীবনের তাৎপর্য তাদেরকে এ উপমার মাধ্যমে বুঝাও যে, আজ আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ
করলাম, ফলে
ভূ-পৃষ্ঠের উদ্ভিদ খুব ঘন হয়ে গেলো আবার কাল ও উদ্ভিদগুলোই শুকনো ভূষিতে পরিণত হলো, যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়। আল্লাহ সব
জিনিসের ওপর শক্তিশালী।৪১
﴿الْمَالُ وَالْبَنُونَ زِينَةُ
الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا
وَخَيْرٌ أَمَلًا﴾
৪৬। এ
ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র। আসলে তো
স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই
উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম।
﴿وَيَوْمَ نُسَيِّرُ الْجِبَالَ
وَتَرَى الْأَرْضَ بَارِزَةً وَحَشَرْنَاهُمْ فَلَمْ نُغَادِرْ مِنْهُمْ أَحَدًا﴾
৪৭। সেই দিনের
কথা চিন্তা করা দরকার যেদিন আমি পাহাড়গুলোকে চালিত করবো৪২ এবং তুমি পৃথিবীকে দেখবে
সম্পূর্ণ অনাবৃত৪৩ আর আমি
সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে এমনভাবে ঘিরে এনে একত্র করবো যে, (পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের মধ্য
থেকে) একজনও বাকি থাকবে না।৪৪
সবাইকে একই সংগে জমা করে দেয়া হবে।
﴿وَعُرِضُوا عَلَىٰ رَبِّكَ
صَفًّا لَّقَدْ جِئْتُمُونَا كَمَا خَلَقْنَاكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ ۚ بَلْ زَعَمْتُمْ
أَلَّن نَّجْعَلَ لَكُم مَّوْعِدًا﴾
৪৮। এবং
সবাইকে তোমার রবের সামনে লাইনবন্দী করে পেশ করা হবে। নাও দেখে
নাও, তোমরা এসে
গেছো তো আমার কাছে ঠিক তেমনিভাবে যেমনটি আমি তোমাদের প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম।৪৫ তোমরা তো মনে করেছিলে আমি
তোমাদের জন্য কোনো প্রতিশ্রুত ক্ষণ নির্ধারিতই করিনি।
﴿وَوُضِعَ الْكِتَابُ فَتَرَى
الْمُجْرِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هَٰذَا
الْكِتَابِ لَا يُغَادِرُ صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً إِلَّا أَحْصَاهَا ۚ وَوَجَدُوا
مَا عَمِلُوا حَاضِرًا ۗ وَلَا يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا﴾
৪৯। আর সেদিন
আমলনামা সামনে রেখে দেয়া হবে। সে সময় তোমরা দেখবে অপরাধীরা
নিজেদের জীবন খাতায় যা লেখা আছে সে জন্য ভীত হচ্ছে এবং তারা বলছে, হায়! আমাদের দুর্ভাগ্য, এটা কেমন খাতা, আমাদের ছোট বড় এমন কোনো কিছুই
এখানে লেখা থেকে বাদ পড়েনি।৪৬ তাদের যে যা কিছু করেছিল সবই
নিজের সামনে উপস্থিত পাবে এবং তোমার রব কারোর প্রতি জুলুম করবেন না।
﴿وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ
اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ كَانَ مِنَ الْجِنِّ فَفَسَقَ عَنْ
أَمْرِ رَبِّهِ ۗ أَفَتَتَّخِذُونَهُ وَذُرِّيَّتَهُ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِي وَهُمْ
لَكُمْ عَدُوٌّ ۚ بِئْسَ لِلظَّالِمِينَ بَدَلًا﴾
৫০। স্মরণ করো
যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম আদমকে সিজদা করো তখন তারা সিজদা করেছিল কিন্তু
ইবলীস করেনি।৪৭ সে ছিল
জিনদের একজন, তাই তার
রবের হুকুমের আনুগত্য থেকে বের হয়ে গেলো।৪৮ এখন কি তোমরা আমাকে বাদ দিয়ে
তাকে এবং তার বংশধরদেরকে নিজেদের অভিভাবক বানিয়ে নিচ্ছো অথচ তারা তোমাদের দুশমন? বড়ই খারাপ বিনিময় জালেমরা গ্রহণ
করছে!
﴿مَّا أَشْهَدتُّهُمْ خَلْقَ
السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَا خَلْقَ أَنفُسِهِمْ وَمَا كُنتُ مُتَّخِذَ الْمُضِلِّينَ
عَضُدًا﴾
৫১। আকাশ ও
পৃথিবী সৃষ্টি করার সময় আমি তাদেরকে ডাকিনি এবং তাদের নিজেদের সৃষ্টিতেও তাদেরকে
শরীক করিনি।৪৯ পথভ্রষ্টকারীদেরকে
নিজের সাহায্যকারী করা আমার রীতি নয়।
﴿وَيَوْمَ يَقُولُ نَادُوا
شُرَكَائِيَ الَّذِينَ زَعَمْتُمْ فَدَعَوْهُمْ فَلَمْ يَسْتَجِيبُوا لَهُمْ وَجَعَلْنَا
بَيْنَهُم مَّوْبِقًا﴾
৫২। তাহলে
সেদিন এরা কি করবে যেদিন এদের রব এদেরকে বলবে, ডাকো সেই সব সত্তাকে যাদেরকে
তোমরা আমার শরীক মনে করে বসেছিলে?৫০ এরা তাদেরকে ডাকবে কিন্তু
তারা এদেরকে সাহায্য করতে আসবে না এবং আমি তাদের মাঝখানে একটি মাত্র ধ্বংস গহ্বর
তাদের সবার জন্য বানিয়ে দেবো।৫১
﴿وَرَأَى الْمُجْرِمُونَ النَّارَ
فَظَنُّوا أَنَّهُم مُّوَاقِعُوهَا وَلَمْ يَجِدُوا عَنْهَا مَصْرِفًا﴾
৫৩। সমস্ত
অপরাধীরা সেদিন আগুন দেখবে এবং বুঝতে পারবে যে, এখন তাদের এর মধ্যে পড়তে হবে
এবং এর হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা কোনো আশ্রয়স্থল পাবে না।
﴿وَلَقَدْ صَرَّفْنَا فِي
هَٰذَا الْقُرْآنِ لِلنَّاسِ مِن كُلِّ مَثَلٍ ۚ وَكَانَ الْإِنسَانُ أَكْثَرَ شَيْءٍ
جَدَلًا﴾
৫৪। আমি এ
কুরআনে লোকদেরকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়েছি কিন্তু মানুষ বড়ই বিবাদপ্রিয়।
﴿وَمَا مَنَعَ النَّاسَ أَن
يُؤْمِنُوا إِذْ جَاءَهُمُ الْهُدَىٰ وَيَسْتَغْفِرُوا رَبَّهُمْ إِلَّا أَن تَأْتِيَهُمْ
سُنَّةُ الْأَوَّلِينَ أَوْ يَأْتِيَهُمُ الْعَذَابُ قُبُلًا﴾
৫৫। তাদের
সামনে যখন পথনির্দেশ এসেছে তখন কোন জিনিসটি তাদেরকে তা মেনে নিতে এবং নিজেদের রবের
সামনে ক্ষমা চাইতে বাধা দিয়েছে? এ জিনিসটি ছাড়া আর কিছুই
তাদেরকে বাধা দেয়নি যে, তারা প্রতীক্ষা করেছে তাদের সাথে তাই ঘটুক যা পূর্ববর্তী
জাতিদের সাথে ঘটে গেছে অথবা তারা আযাবকে সামনে আসতে দেখে নিক।৫২
﴿وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ
إِلَّا مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ ۚ وَيُجَادِلُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا
بِهِ الْحَقَّ ۖ وَاتَّخَذُوا آيَاتِي وَمَا أُنذِرُوا هُزُوًا﴾
৫৬। রাসূলদেরকে
আমি সুসংবাদ দান ও সতর্ক করার দায়িত্ব পালন ছাড়া অন্য কোনো কাজে পাঠাই না।৫৩ কিন্তু কাফেরদের অবস্থা এই যে, তারা মিথ্যার হাতিয়ার দিয়ে
সত্যকে হেয় করার চেষ্টা করে এবং তারা আমার নিদর্শনাবলী এবং যা দিয়ে তাদেরকে সতর্ক
করা হয়েছে সেসবকে বিদ্রূপের বিষয়ে পরিণত করেছে।
﴿وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ
بِآيَاتِ رَبِّهِ فَأَعْرَضَ عَنْهَا وَنَسِيَ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ ۚ إِنَّا جَعَلْنَا
عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ أَكِنَّةً أَن يَفْقَهُوهُ وَفِي آذَانِهِمْ وَقْرًا ۖ وَإِن تَدْعُهُمْ
إِلَى الْهُدَىٰ فَلَن يَهْتَدُوا إِذًا أَبَدًا﴾
৫৭। আর কে তার
চেয়ে বড় জালেম, যাকে তার
রবের আয়াত শুনিয়ে উপদেশ দেয়ার পর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং সেই খারাপ পরিণতির
কথা ভুলে যায় যার সাজ-সরঞ্জাম সে নিজের জন্য নিজের হাতে তৈরি করেছে? (যারা এ কর্মনীতি অবলম্বন
করেছে) তাদের অন্তরের ওপর আমি আবরণ টেনে দিয়েছি, যা তাদেরকে কুরআনের কথা বুঝতে
দেয় না এবং তাদের কানে বধিরতা সৃষ্টি করে দিয়েছি। তুমি
তাদেরকে সৎপথের দিকে যতই আহ্বান কর না কেন তারা এ অবস্থায় কখনো সৎপথে আসবে না।৫৪
﴿وَرَبُّكَ الْغَفُورُ ذُو
الرَّحْمَةِ ۖ لَوْ يُؤَاخِذُهُم بِمَا كَسَبُوا لَعَجَّلَ لَهُمُ الْعَذَابَ ۚ بَل
لَّهُم مَّوْعِدٌ لَّن يَجِدُوا مِن دُونِهِ مَوْئِلًا﴾
৫৮। তোমার রব
বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তিনি তাদের কৃতকর্মের জন্য
তাদেরকে পাকড়াও করতে চাইলে দ্রুত আযাব পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু
তাদের জন্য রয়েছে একটি প্রতিশ্রুত মুহূর্ত, তা থেকে পালিয়ে যাবার কোনো
পথই তারা যাবে না।৫৫
﴿وَتِلْكَ الْقُرَىٰ أَهْلَكْنَاهُمْ
لَمَّا ظَلَمُوا وَجَعَلْنَا لِمَهْلِكِهِم مَّوْعِدًا﴾
৫৯। এ
শাস্তিপ্রাপ্ত জনপদগুলো তোমাদের সামনে আছে,৫৬ এরা জুলুম
করলে আমি এদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম এবং এদের প্রত্যেকের ধ্বংসের জন্য আমি সময়
নির্দিষ্ট করে রেখেছিলাম।
﴿وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِفَتَاهُ
لَا أَبْرَحُ حَتَّىٰ أَبْلُغَ مَجْمَعَ الْبَحْرَيْنِ أَوْ أَمْضِيَ حُقُبًا﴾
৬০। (এদেরকে
সেই ঘটনাটি একটু শুনিয়ে দাও যা মূসার সাথে ঘটেছিল) যখন মূসা তার খাদেমকে বলেছিল, দুই দরিয়ার সংগমস্থলে না
পৌঁছা পর্যন্ত আমি সফর শেষ করবো না, অন্যথায় আমি দীর্ঘকাল ধরে চলতেই থাকবো।৫৭
﴿فَلَمَّا بَلَغَا مَجْمَعَ
بَيْنِهِمَا نَسِيَا حُوتَهُمَا فَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ سَرَبًا﴾
৬১। সে
অনুসারে যখন তারা তাদের সংগমস্থলে পৌঁছে গেলো তখন নিজেদের মাছের ব্যাপারে গাফেল
হয়ে গেলো এবং সেটি বের হয়ে সুড়ংগের মতো পথ তৈরি করে দরিয়ার মধ্যে চলে গেলো।
﴿فَلَمَّا جَاوَزَا قَالَ
لِفَتَاهُ آتِنَا غَدَاءَنَا لَقَدْ لَقِينَا مِن سَفَرِنَا هَٰذَا نَصَبًا﴾
৬২। সামনে
এগিয়ে যাওয়ার পর মূসা তার খাদেমকে বললো, “আমাদের নাশতা আনো, আজকের সফরে তো আমরা ভীষণভাবে
ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।
﴿قَالَ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا
إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ وَمَا أَنسَانِيهُ إِلَّا الشَّيْطَانُ
أَنْ أَذْكُرَهُ ۚ وَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ عَجَبًا﴾
৬৩। খাদেম
বললো, “আপনি কি
দেখেছেন, কি ঘটে
গেছে? যখন আমরা সেই পাথরটার পাশে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম তখন আমার
মাছের কথা মনে ছিল না এবং শয়তান আমাকে এমন গাফেল করে দিয়েছিল যে, আমি (আপনাকে) তার কথা বলতে
ভুলে গেছি। মাছ তো অদ্ভূতভাবে বের হয়ে দরিয়ার মধ্যে
চলে গেছে।
﴿قَالَ ذَٰلِكَ مَا كُنَّا
نَبْغِ ۚ فَارْتَدَّا عَلَىٰ آثَارِهِمَا قَصَصًا﴾
৬৪। মূসা বললো, “আমরা তো এরই খোঁজে ছিলাম।৫৮ কাজেই তারা দুজন নিজেদের
পদরেখা ধরে পেছনে ফিরে এলো
﴿فَوَجَدَا عَبْدًا مِّنْ
عِبَادِنَا آتَيْنَاهُ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَعَلَّمْنَاهُ مِن لَّدُنَّا عِلْمًا﴾
৬৫। এবং
সেখানে তারা আমার বান্দাদের মধ্য থেকে এক বান্দাকে পেলো, যাকে আমি নিজের অনুগ্রহ দান
করেছিলাম এবং নিজের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ জ্ঞান দান করেছিলাম।৫৯
﴿قَالَ لَهُ مُوسَىٰ هَلْ
أَتَّبِعُكَ عَلَىٰ أَن تُعَلِّمَنِ مِمَّا عُلِّمْتَ رُشْدًا﴾
৬৬। মূসা তাকে
বললো, আমি কি
আপনার সাথে থাকতে পারি, যাতে আপনাকে যে জ্ঞান শেখানো হয়েছে তা থেকে আমাকেও কিছু
শেখাবেন?
﴿قَالَ إِنَّكَ لَن تَسْتَطِيعَ
مَعِيَ صَبْرًا﴾
৬৭। সে বললো, আপনি আমার সাথে সবর করতে
পারবেন না।
﴿وَكَيْفَ تَصْبِرُ عَلَىٰ
مَا لَمْ تُحِطْ بِهِ خُبْرًا﴾
৬৮। আর তাছাড়া
যে ব্যাপারের আপনি কিছুই জানেন না সে ব্যাপারে আপনি সবর করবেনই বা কেমন করে।
﴿قَالَ سَتَجِدُنِي إِن شَاءَ
اللَّهُ صَابِرًا وَلَا أَعْصِي لَكَ أَمْرًا﴾
৬৯। মূসা বললো, “ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে
সবরকারী হিসেবেই পাবেন এবং কোনো ব্যাপারেই আমি আপনার হুকুম অমান্য করবো না।
﴿قَالَ فَإِنِ اتَّبَعْتَنِي
فَلَا تَسْأَلْنِي عَن شَيْءٍ حَتَّىٰ أُحْدِثَ لَكَ مِنْهُ ذِكْرًا﴾
৭০। সে বললো, আচ্ছা, যদি আপনি আমার সাথে চলেন
তাহলে আমাকে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না যতক্ষণ না আমি নিজে সে সম্পর্কে আপনাকে
বলি।
﴿فَانطَلَقَا حَتَّىٰ إِذَا
رَكِبَا فِي السَّفِينَةِ خَرَقَهَا ۖ قَالَ أَخَرَقْتَهَا لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا لَقَدْ
جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا﴾
৭১। অতপর তারা
দুজন রওয়ানা হলো। শেষ পর্যন্ত যখন তারা একটি নৌকায় আরোহণ
করলো তখন ঐ ব্যক্তি নৌকা ছিদ্র করে দিল। মূসা বললো, “আপনি কি নৌকার সকল আরোহীকে
ডুবিয়ে দেবার জন্য তাতে ছিদ্র করলেন? এতো আপনি বড়ই মারাত্মক কাজ
করলেন।”
﴿قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ
لَن تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا﴾
৭২। সে বললো, “আমি না তোমাকে বলেছিলাম, তুমি আমার সাথে সবর করতে
পারবে না?”
﴿قَالَ لَا تُؤَاخِذْنِي بِمَا
نَسِيتُ وَلَا تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا﴾
৭৩। মূসা বললো, “ভুল চুকের জন্য আমাকে পাকড়াও
করবেন না, আমার
ব্যাপারে আপনি কঠোর নীতি অবলম্বন করবেন না।”
﴿فَانطَلَقَا حَتَّىٰ إِذَا
لَقِيَا غُلَامًا فَقَتَلَهُ قَالَ أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً بِغَيْرِ نَفْسٍ لَّقَدْ
جِئْتَ شَيْئًا نُّكْرًا﴾
৭৪। এরপর তারা
দুজন চললো। চলতে চলতে তারা একটি বালকের দেখা পেলো
এবং ঐ ব্যক্তি তাকে হত্যা করলো। মূসা বললো, “আপনি এক নিরপরাধকে হত্যা
করলেন অথচ সে কাউকে হত্যা করেনি? এটা তো বড়ই খারাপ কাজ করলেন।”
﴿قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكَ
إِنَّكَ لَن تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا﴾
৭৫। সে বললো, “আমি না তোমাকে বলেছিলাম, তুমি আমার সাথে সবর করতে
পারবে না?”
﴿قَالَ إِن سَأَلْتُكَ عَن
شَيْءٍ بَعْدَهَا فَلَا تُصَاحِبْنِي ۖ قَدْ بَلَغْتَ مِن لَّدُنِّي عُذْرًا﴾
৭৬। মূসা বললো, “এরপর যদি আমি আপনাকে কিছু
জিজ্ঞেস করি তাহলে আপনি আমাকে আপনার সাথে রাখবেন না। এখন তো
আমার পক্ষ থেকে আপনি ওজর পেয়ে গেছেন।”
﴿فَانطَلَقَا حَتَّىٰ إِذَا
أَتَيَا أَهْلَ قَرْيَةٍ اسْتَطْعَمَا أَهْلَهَا فَأَبَوْا أَن يُضَيِّفُوهُمَا فَوَجَدَا
فِيهَا جِدَارًا يُرِيدُ أَن يَنقَضَّ فَأَقَامَهُ ۖ قَالَ لَوْ شِئْتَ لَاتَّخَذْتَ
عَلَيْهِ أَجْرًا﴾
৭৭। তারপর
তারা সামনের দিকে চললো। চলতে চলতে একটি জনবসতিতে
প্রবেশ করলো এবং সেখানে লোকদের কাছে খাবার চাইলো। কিন্তু
তারা তাদের দুজনের মেহমানদারী করতে অস্বীকৃতি জানালো। সেখানে
তারা একটি দেয়াল দেখলো, সেটি পড়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল। সে
দেয়ালটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে দিল। মূসা বললো, “আপনি চাইলেএ কাজের পারিশ্রমিক
নিতে পারতেন।”
﴿قَالَ هَٰذَا فِرَاقُ بَيْنِي
وَبَيْنِكَ ۚ سَأُنَبِّئُكَ بِتَأْوِيلِ مَا لَمْ تَسْتَطِع عَّلَيْهِ صَبْرًا﴾
৭৮। সে বললো, “ব্যাস, তোমার ও আমার সংগ শেষ হয়ে
গেলো। এখন আমি যে কথাগুলোর ওপর তুমি সবর করতে
পারোনি সেগুলোর তাৎপর্য তোমাকে বলবো।
﴿أَمَّا السَّفِينَةُ فَكَانَتْ
لِمَسَاكِينَ يَعْمَلُونَ فِي الْبَحْرِ فَأَرَدتُّ أَنْ أَعِيبَهَا وَكَانَ وَرَاءَهُم
مَّلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ سَفِينَةٍ غَصْبًا﴾
৭৯। সেই
নৌকাটির ব্যাপার ছিল এই যে, সেটি ছিল কয়েকজন গরীব লোকের, তারা সাগরে মেহনত মজদুরী করতো। আমি
সেটিকে ত্রুটিযুক্ত করে দিতে চাইলাম। কারণ
সামনের দিকে ছিল এমন বাদশাহর এলাকা যে প্রত্যেকটি নৌকা জবরদস্তি ছিনিয়ে নিতো।
﴿وَأَمَّا الْغُلَامُ فَكَانَ
أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ فَخَشِينَا أَن يُرْهِقَهُمَا طُغْيَانًا وَكُفْرًا﴾
৮০। আর ঐ
বালকটির ব্যাপার হচ্ছে এই যে, তার বাপ-মা ছিল মুমিন। আমাদের
আশংকা হলো, এ বালক তার
বিদ্রোহাত্মক আচরণ ও কুফরীর মাধ্যমে তাদেরকে বিব্রত করবে।
﴿فَأَرَدْنَا أَن يُبْدِلَهُمَا
رَبُّهُمَا خَيْرًا مِّنْهُ زَكَاةً وَأَقْرَبَ رُحْمًا﴾
৮১। তাই আমরা
চাইলাম তাদের রব তার বদলে তাদেরকে যেন এমন একটি সন্তান দেন যে চরিত্রের দিক দিয়েও
তার চেয়ে ভালো হবে এবং যার কাছ তেকে সদয় আচরণও বেশী আশা করা যাবে।
﴿وَأَمَّا الْجِدَارُ فَكَانَ
لِغُلَامَيْنِ يَتِيمَيْنِ فِي الْمَدِينَةِ وَكَانَ تَحْتَهُ كَنزٌ لَّهُمَا وَكَانَ
أَبُوهُمَا صَالِحًا فَأَرَادَ رَبُّكَ أَن يَبْلُغَا أَشُدَّهُمَا وَيَسْتَخْرِجَا
كَنزَهُمَا رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ ۚ وَمَا فَعَلْتُهُ عَنْ أَمْرِي ۚ ذَٰلِكَ تَأْوِيلُ
مَا لَمْ تَسْطِع عَّلَيْهِ صَبْرًا﴾
৮২। এবার থাকে
সেই দেয়ালের ব্যাপারটি। সেটি হচ্ছে এ শহরে
অবস্থানকারী দু’টি এতীম বালকের। এ দেয়ালের নীচে তাদের জন্য
সম্পদ লুকানো আছে এবং তাদের পিতা ছিলেন একজন সৎলোক। তাই তোমার
রব চাইলেন এ কিশোর দু’টি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যাক এবং তারা নিজেদের গুপ্তধন বের করে
নিক। তোমার রবের দয়ার কারণে এটা করা হয়েছে। নিজ
ক্ষমতা ও ইখতিয়ারে আমি এটা করিনি। তুমি যেসব
ব্যাপারে সবর করতে পারোনি এ হচ্ছে তার ব্যাখ্যা।৬০
﴿وَيَسْأَلُونَكَ عَن ذِي
الْقَرْنَيْنِ ۖ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُم مِّنْهُ ذِكْرًا﴾
৮৩। আর হে
মুহাম্মাদ! এরা তোমার কাছে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।৬১ এদেরকে বলে দাও, আমি তার সম্বন্ধে কিছু কথা
তোমাদের শুনাচ্ছি।৬২
﴿إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ فِي
الْأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِن كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا﴾
৮৪। আমি তাকে
পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দিয়ে রেখেছিলাম এবং তাকে সবরকমের সাজ-সরঞ্জাম ও উপকরণ দিয়েছিলাম।
﴿فَأَتْبَعَ سَبَبًا﴾
৮৫। সে
(প্রথমে পশ্চিমে এক অভিযানের) সাজ-সরঞ্জাম করলো।
﴿حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ
الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا ۗ قُلْنَا
يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِمَّا أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّا أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا﴾
৮৬। এমন কি
যখন সে সূর্যাস্তের সীমানায় পৌঁছে গেলো৬৩ তখন সূর্যকে ডুবতে দেখলো একটি
কালো জলাশয়ে৬৪ এবং সেখানে সে একটি জাতির
দেখা পেলো। আমি বললাম, “হে যুলকারনাইন! তোমার এ শক্তি
আছে, তুমি
এদেরকে কষ্ট দিতে পারো অথবা এদের সাথে সদাচার করতে পারো।”৬৫
﴿قَالَ أَمَّا مَن ظَلَمَ
فَسَوْفَ نُعَذِّبُهُ ثُمَّ يُرَدُّ إِلَىٰ رَبِّهِ فَيُعَذِّبُهُ عَذَابًا نُّكْرًا﴾
৮৭। সে বললো, “তাদের মধ্য থেকে যে জুলুম
করবে আমরা তাকে শাস্তি দেবো তারপর তাকে তার রবের দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে এবং তিনি
তাকে অধিক কঠিন শাস্তি দেবেন।
﴿وَأَمَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ
صَالِحًا فَلَهُ جَزَاءً الْحُسْنَىٰ ۖ وَسَنَقُولُ لَهُ مِنْ أَمْرِنَا يُسْرًا﴾
৮৮। আর তাদের
মধ্য থেকে যে ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তার জন্য আছে ভালো প্রতিদান এবং আমরা তাকে
সহজ বিধান দেবো।”
﴿ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا﴾
৮৯। তারপর সে
(আর একটি অভিযানের) প্রস্তুতি নিল।
﴿حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ
الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا﴾
৯০। এমন কি সে
সূর্যোদয়ের সীমানায় গিয়ে পৌঁছুলো। সেখানে সে
দেখলো, সূর্য এমন
এক জাতির ওপর উদিত হচ্ছে যার জন্য রোদ থেকে বাঁচার কোনো ব্যবস্থা আমি করিনি।৬৬
﴿كَذَٰلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا
بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًا﴾
৯১। এ ছিল
তাদের অবস্থা এবং যুলকারনাইনের কাছে যা ছিল তা আমি জানতাম।
﴿ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا﴾
৯২। আবার সে
(আর একটি অভিযানের) আয়োজন করলো।
﴿حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ بَيْنَ
السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًا﴾
৯৩। এমনকি যখন
দু পাহাড়ের মধ্যখানে পৌঁছুলো৬৭ তখন সেখানে
এক জাতির সাক্ষাত পেলো। যারা খুব কমই কোনো কথা বুঝতে
পারতো।৬৮
﴿قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ
إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا
عَلَىٰ أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّا﴾
৯৪। তারা বললো, “হে যুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও
মাজুজ৬৯ এ দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। আমরা কি
তোমাকে এ কাজের জন্য কোনো কর দেবো, তুমি আমাদের ও তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর
নির্মাণ করে দেবে?
﴿قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ
رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا﴾
৯৫। সে বললো, “আমার রব আমাকে যাকিছু দিয়ে
রেখেছেন তাই যথেষ্ট। তোমরা শুধু শ্রম দিয়ে আমাকে
সাহায্য করো, আমি
তোমাদের ও তাদের মাঝখানে প্রাচীর নির্মাণ করে দিচ্ছি।৭০
﴿آتُونِي زُبَرَ الْحَدِيدِ
ۖ حَتَّىٰ إِذَا سَاوَىٰ بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ قَالَ انفُخُوا ۖ حَتَّىٰ إِذَا جَعَلَهُ
نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا﴾
৯৬। আমাকে
লোহার পাত এনে দাও।” তারপর যখন দু পাহাড়ের
মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা সে পূর্ণ করে দিল তখন লোকদের বললো, এবার আগুন জ্বালাও। এমনকি যখন
এ (অগ্নি প্রাচীর) পুরোপুরি আগুনের মতো লাল হয়ে গেলো তখন সে বললো, “আনো, এবার আমি গলিত তামা এর উপর
ঢেলে দেবো।”
﴿فَمَا اسْطَاعُوا أَن يَظْهَرُوهُ
وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا﴾
৯৭। (এ
প্রাচীর এমন ছিল যে) ইয়াজুজ ও মাজুজ এটা অতিক্রম করেও আসতে পারতো না এবং এর গায়ে
সুড়ংগ কাটাও তাদের জন্য আরো কঠিন ছিল।
﴿قَالَ هَٰذَا رَحْمَةٌ مِّن
رَّبِّي ۖ فَإِذَا جَاءَ وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكَّاءَ ۖ وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي
حَقًّا﴾
৯৮।
যুলকারনাইন বললো, “এ আমার
রবের অনুগ্রহ। কিন্তু যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতির
নির্দিষ্ট সময় আসবে তখন তিনি একে ধূলিস্মাত করে দেবেন৭১ আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি
সত্য।”৭২
﴿وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ
يَمُوجُ فِي بَعْضٍ ۖ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَجَمَعْنَاهُمْ جَمْعًا﴾
৯৯। আর সে দিন৭৩ আমি লোকদেরকে ছেড়ে দেবো, তারা (সাগর তরংগের মতো)
পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং আমি সব মানুষকে
একত্র করবো।
﴿وَعَرَضْنَا جَهَنَّمَ يَوْمَئِذٍ
لِّلْكَافِرِينَ عَرْضًا﴾
১০০। আর সেদিন
আমি জাহান্নামকে সেই কাফেরদের সামনে আনবো,
﴿الَّذِينَ كَانَتْ أَعْيُنُهُمْ
فِي غِطَاءٍ عَن ذِكْرِي وَكَانُوا لَا يَسْتَطِيعُونَ سَمْعًا﴾
১০১। যারা আমার
উপদেশের ব্যাপারে অন্ধ হয়েছিল এবং কিছু শুনতে প্রস্তুতই ছিল না।
﴿أَفَحَسِبَ الَّذِينَ كَفَرُوا
أَن يَتَّخِذُوا عِبَادِي مِن دُونِي أَوْلِيَاءَ ۚ إِنَّا أَعْتَدْنَا جَهَنَّمَ لِلْكَافِرِينَ
نُزُلًا﴾
১০২। তাহলে কি৭৪ যারা কুফরী অবলম্বন করেছে
তারা একথা মনে করে যে, আমাকে বাদ দিয়ে আমার বান্দাদেরকে নিজেদের কর্মসম্পাদনকারী
হিসেবে গ্রহণ করে নেবে?৭৫ এ ধরনের
কাফেরদের আপ্যায়নের জন্য আমি জাহান্নাম তৈরি করে রেখেছি।
﴿قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُم بِالْأَخْسَرِينَ
أَعْمَالًا﴾
১০৩। হে
মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, আমি কি তোমাদের বলবো নিজেদের কর্মের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী
ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত কারা?
﴿الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ
فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا﴾
১০৪। তারাই, যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা
ও সংগ্রাম সবসময় সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত থাকতো৭৬ এবং যারা মনে করতো যে, তারা সবকিছু সঠিক করে যাচ্ছে।
﴿أُولَٰئِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا
بِآيَاتِ رَبِّهِمْ وَلِقَائِهِ فَحَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَلَا نُقِيمُ لَهُمْ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ وَزْنًا﴾
১০৫। এরা এমন
সব লোক যারা নিজেদের রবের নিদর্শনাবলী মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর সামনে
হাযির হবার ব্যাপারটি বিশ্বাস করেনি। তাই তাদের
সমস্ত কর্ম নষ্ট হয়ে গেছে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে কোনো গুরুত্ব দেবো না।৭৭
﴿ذَٰلِكَ جَزَاؤُهُمْ جَهَنَّمُ
بِمَا كَفَرُوا وَاتَّخَذُوا آيَاتِي وَرُسُلِي هُزُوًا﴾
১০৬। যে কুফরী
তারা করেছে তার প্রতিফল স্বরূপ এবং আমার নিদর্শনাবলী ও রাসূলদের সাথে যে বিদ্রূপ
তারা করতো তার প্রতিফল হিসেবে তাদের প্রতিদান জাহান্নাম।
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا﴾
১০৭। তবে যারা
ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য থাকবে ফেরদৌসের বাগান।৭৮
﴿خَالِدِينَ فِيهَا لَا يَبْغُونَ
عَنْهَا حِوَلًا﴾
১০৮। সেখানে
তারা চিরকাল থাকবে এবং কখনো সে স্থান ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে তাদের মন চাইবে না।৭৯
﴿قُل لَّوْ كَانَ الْبَحْرُ
مِدَادًا لِّكَلِمَاتِ رَبِّي لَنَفِدَ الْبَحْرُ قَبْلَ أَن تَنفَدَ كَلِمَاتُ رَبِّي
وَلَوْ جِئْنَا بِمِثْلِهِ مَدَدًا﴾
১০৯। হে
মুহাম্মাদ! বলো, যদি আমার
রবের কথা৮০ লেখার জন্য সমুদ্র কালিতে
পরিণত হয় তাহলে সেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার রবের কথা শেষ হবে না। বরং যদি এ
পরিমাণ কালি আবারও আনি তাহলে তাও যথেষ্ট হবে না।
﴿قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ
مِّثْلُكُمْ يُوحَىٰ إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ فَمَن كَانَ يَرْجُو
لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ
أَحَدًا﴾
১১০। হে
মুহাম্মাদ! বলো, আমি তো
একজন মানুষ তোমাদেরই মতো, আমার প্রতি অহী করা হয় এ মর্মে যে, এক আল্লাহ তোমাদের ইলাহ, কাজেই যে তার রবের সাক্ষাতের
প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক
করা উচিত নয়।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।