সূরা আল হাককাহ-বাংলা অনুবাদ

Share:

 

০৬৯. সূরা আল হাককাহ

আয়াতঃ ৫২;  রুকুঃ ০২; মাক্কী

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾

পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে

﴿ٱلْحَآقَّةُ﴾

অবশ্যম্ভাবী ঘটনাটি

﴿مَا ٱلْحَآقَّةُ﴾

কি সে অবশ্যম্ভাবী ঘটনাটি?

﴿وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلْحَآقَّةُ﴾

তুমি কি জান সে অবশ্যম্ভাবী ঘটনাটি কি?

﴿كَذَّبَتْ ثَمُودُ وَعَادٌۢ بِٱلْقَارِعَةِ﴾

সামূদ ও আদ আকস্মিকভাবে সংঘটিতব্য সে মহা ঘটনাকে অস্বীকার করেছিলো

﴿فَأَمَّا ثَمُودُ فَأُهْلِكُوا۟ بِٱلطَّاغِيَةِ﴾

তাই সামূদকে একটি কঠিন মহা বিপদ দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে

﴿وَأَمَّا عَادٌۭ فَأُهْلِكُوا۟ بِرِيحٍۢ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍۢ﴾

আর আদকে কঠিন ঝঞ্ঝাবাত্যা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে

﴿سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍۢ وَثَمَـٰنِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًۭا فَتَرَى ٱلْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَىٰ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍۢ﴾

যা তিনি সাত রাত ও আট দিন ধরে বিরামহীনভাবে তাদের ওপর চাপিয়ে রেখেছিলেন (তুমি সেখানে থাকলে) দেখতে পেতে তারা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়ে আছে যেন খেজুরের পুরানো কাণ্ড

﴿فَهَلْ تَرَىٰ لَهُم مِّنۢ بَاقِيَةٍۢ﴾

তুমি তাদের কাউকে অবশিষ্ট দেখতে পাচ্ছো কি?

﴿وَجَآءَ فِرْعَوْنُ وَمَن قَبْلَهُۥ وَٱلْمُؤْتَفِكَـٰتُ بِٱلْخَاطِئَةِ﴾

ফেরাউন, তার পূর্ববর্তী লোকেরা এবং উলটপালট হয়ে যাওয়া জনপদসমূহও একই মহা অপরাধে অপরাধী হয়েছিলো

﴿فَعَصَوْا۟ رَسُولَ رَبِّهِمْ فَأَخَذَهُمْ أَخْذَةًۭ رَّابِيَةً﴾

১০ তারা সবাই তাদের রবের প্রেরিত রাসূলের কথা অমান্য করেছিল তাই তিনি তাদের অত্যন্ত কঠোরভাবে পাকড়াও করেছিলেন

﴿إِنَّا لَمَّا طَغَا ٱلْمَآءُ حَمَلْنَـٰكُمْ فِى ٱلْجَارِيَةِ﴾

১১ যে সময় পানির তুফান সীমা অতিক্রম করলো তখন আমি তোমাদেরকে জাহাজে সওয়ার করিয়েছিলাম 

﴿لِنَجْعَلَهَا لَكُمْ تَذْكِرَةًۭ وَتَعِيَهَآ أُذُنٌۭ وَٰعِيَةٌۭ﴾

১২ যাতে এ ঘটনাকে আমি তোমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় স্মৃতি বানিয়ে দেই যেন স্মরণকারী কান তা সংরক্ষণ করে 

﴿فَإِذَا نُفِخَ فِى ٱلصُّورِ نَفْخَةٌۭ وَٰحِدَةٌۭ﴾

১৩ অতঃপর১০ যে সময় শিংগায় ফুঁৎকার দেয়া হবে- 

﴿وَحُمِلَتِ ٱلْأَرْضُ وَٱلْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةًۭ وَٰحِدَةًۭ﴾

১৪ একটি মাত্র ফুৎকার আর পাহাড়সহ পৃথিবীকে উঠিয়ে একটি আঘাতেই চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়া হবে 

﴿فَيَوْمَئِذٍۢ وَقَعَتِ ٱلْوَاقِعَةُ﴾

১৫ সেদিন সে মহা ঘটনা সংঘটিত হয়ে যাবে

﴿وَٱنشَقَّتِ ٱلسَّمَآءُ فَهِىَ يَوْمَئِذٍۢ وَاهِيَةٌۭ﴾

১৬ সেদিন আসমান চৌচির হয়ে যাবে এবং তার বন্ধন শিথিল হয়ে পড়বে 

﴿وَٱلْمَلَكُ عَلَىٰٓ أَرْجَآئِهَا ۚ وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍۢ ثَمَـٰنِيَةٌۭ﴾

১৭ ফেরেশতারা এর প্রান্ত সীমায় অবস্থান করবে সেদিন আটজন ফেরেশতা তাদের ওপরে তোমার রবের আরশ বহন করবে১১ 

﴿يَوْمَئِذٍۢ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَىٰ مِنكُمْ خَافِيَةٌۭ﴾

১৮ সেদিনটিতে তোমাদেরকে পেশ করা হবে তোমাদের কোন গোপনীয় বিষয়ই আর সেদিন গোপন থাকবে না 

﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَـٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقْرَءُوا۟ كِتَـٰبِيَهْ﴾

১৯ সে সময় যাকে তার আমলনামা ডান হতে দেয়া হবে,১২ সে বলবেঃ নাও, আমার আমলনামা পড়ে দেখো১৩ 

﴿إِنِّى ظَنَنتُ أَنِّى مُلَـٰقٍ حِسَابِيَهْ﴾

২০ আমি জানতাম, আমাকে হিসেবের সম্মুখীন হতে হবে১৪

﴿فَهُوَ فِى عِيشَةٍۢ رَّاضِيَةٍۢ﴾

২১ তাই সে মনের মত আরাম আয়েশের মধ্যে থাকবে

﴿فِى جَنَّةٍ عَالِيَةٍۢ﴾

২২ উন্নত মর্যাদার জান্নাতে 

﴿قُطُوفُهَا دَانِيَةٌۭ﴾

২৩ যার ফলের গুচ্ছসমূহ নাগালের সীমায় অবনমিত হয়ে থাকবে 

﴿كُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ هَنِيٓـًٔۢا بِمَآ أَسْلَفْتُمْ فِى ٱلْأَيَّامِ ٱلْخَالِيَةِ﴾

২৪ (এসব লোকদের কে বলা হবেঃ) অতীত দিনগুলোতে তোমরা যা করে এসেছো তার বিনিময়ে তোমরা তৃপ্তির সাথে খাও এবং পান করো 

﴿وَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَـٰبَهُۥ بِشِمَالِهِۦ فَيَقُولُ يَـٰلَيْتَنِى لَمْ أُوتَ كِتَـٰبِيَهْ﴾

২৫ আর যার আমলনামা তার বাঁ হাতে দেয়া হবে১৫ সে বলবেঃ হায়! আমার আমলনামা যদি আমাকে আদৌ দেয়া না হতো১৬

﴿وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ﴾

২৬ এবং আমার হিসেব যদি আমি আদৌ না জানতাম তাহলে কতই না ভাল হত১৭ 

﴿يَـٰلَيْتَهَا كَانَتِ ٱلْقَاضِيَةَ﴾

২৭ হায়! আমার সেই মৃত্যুই (যা দুনিয়াতে এসেছিলো) যদি চূড়ান্ত হতো১৮ 

﴿مَآ أَغْنَىٰ عَنِّى مَالِيَهْ ۜ﴾

২৮ আজ আমার অর্থ-সম্পদ কোন কাজে আসলো না 

﴿هَلَكَ عَنِّى سُلْطَـٰنِيَهْ﴾

﴿خُذُوهُ فَغُلُّوهُ﴾

৩০ (আদেশ দেয়া হবে) পাকড়াও করো ওকে আর ওর গলায় বেড়ি পরিয়ে দাও

﴿ثُمَّ ٱلْجَحِيمَ صَلُّوهُ﴾

৩১ তারপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করো 

﴿ثُمَّ فِى سِلْسِلَةٍۢ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًۭا فَٱسْلُكُوهُ﴾

৩২ এবং সত্তর হাত লম্বা শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলো 

﴿إِنَّهُۥ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ ٱلْعَظِيمِ﴾

৩৩ সে মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করতো না 

﴿وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلْمِسْكِينِ﴾

৩৪ এবং দুস্থ মানুষের খাদ্য দিতে উৎসাহিত করতো না২০ 

﴿فَلَيْسَ لَهُ ٱلْيَوْمَ هَـٰهُنَا حَمِيمٌۭ﴾

৩৫ তাই আজকে এখানে তার সমব্যথী কোন বন্ধু নেই

﴿وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِينٍۢ﴾

৩৬ আর কোন খাদ্যও নেই ক্ষত নিঃসৃত পুঁজ-রক্ত ছাড়া 

﴿لَّا يَأْكُلُهُۥٓ إِلَّا ٱلْخَـٰطِـُٔونَ﴾

৩৭ যা পাপীরা ছাড়া আর কেউ খাবে না 

﴿فَلَآ أُقْسِمُ بِمَا تُبْصِرُونَ﴾

৩৮ অতএব তা নয়২১ আমি শপথ করছি ঐ সব জিনিসের ও যা তোমরা দেখতে পাও 

﴿وَمَا لَا تُبْصِرُونَ﴾

৩৯ এবং ঐসব জিনিসের যা তোমরা দেখতে পাওনা 

﴿إِنَّهُۥ لَقَوْلُ رَسُولٍۢ كَرِيمٍۢ﴾

৪০ এটা একজন সম্মানিত রাসূলের বাণী২২

﴿وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍۢ ۚ قَلِيلًۭا مَّا تُؤْمِنُونَ﴾

৪১ কোন কবির কাব্য নয় তোমরা খুব কমই ঈমান পোষণ করে থাকো২৩ 

﴿وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍۢ ۚ قَلِيلًۭا مَّا تَذَكَّرُونَ﴾

৪২ আর এটা কোন গণকের গণনাও নয় তোমরা খুব কমই চিন্তা-ভাবনা করে থাকো 

﴿تَنزِيلٌۭ مِّن رَّبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾

৪৩ এ বাণী বিশ্ব-জাহানের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত২৪ 

﴿وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ ٱلْأَقَاوِيلِ﴾

৪৪ যদি এ নবী নিজে কোন কথা বানিয়ে আমার কথা বলে চালিয়ে দিতো 

﴿لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِٱلْيَمِينِ﴾

৪৫ তাহলে আমি তার ডান হাত ধরে ফেলতাম

﴿ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ ٱلْوَتِينَ﴾

৪৬ এবং ঘাড়ের রগ কেটে দিতাম 

﴿فَمَا مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَـٰجِزِينَ﴾

৪৭ তোমাদের কেউ-ই (আমাকে) এ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারতো না২৫ 

﴿وَإِنَّهُۥ لَتَذْكِرَةٌۭ لِّلْمُتَّقِينَ﴾

৪৮ আসলে এটি আল্লাহভীরু লোকদের জন্য একটি নসীহত২৬ 

﴿وَإِنَّا لَنَعْلَمُ أَنَّ مِنكُم مُّكَذِّبِينَ﴾

৪৯ আমি জানি তোমাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক লোক মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে থাকবে 

﴿وَإِنَّهُۥ لَحَسْرَةٌ عَلَى ٱلْكَـٰفِرِينَ﴾

৫০ নিশ্চিতভাবে তা এসব কাফেরদের জন্য অনুতাপ ও আফসোসের২৭ কারণ হবে

﴿وَإِنَّهُۥ لَحَقُّ ٱلْيَقِينِ﴾

৫১ এটি অবশ্যই এক নিশ্চিত সত্য 

﴿فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ﴾

৫২ অতএব হে নবী, তুমি তোমার মহান রবের পবিত্রতা ঘোষণা করো

--- সমাপ্ত ---

কোন মন্তব্য নেই

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।