০২২. সূরা আল হাজ্জ
আয়াতঃ ৭৮; রুকুঃ ১০; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا
رَبَّكُمْ ۚ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ﴾
১। হে মানব
জাতি! তোমাদের রবের গযব থেকে বাঁচো। আসলে
কিয়ামতের প্রকম্পন বড়ই (ভয়ংকর) জিনিস।১
﴿يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ
كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى
النَّاسَ سُكَارَىٰ وَمَا هُم بِسُكَارَىٰ وَلَٰكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ﴾
২। যেদিন
তোমরা তা দেখবে, অবস্থা এমন
হবে যে, প্রত্যেক
দুধদানকারিনী নিজের দুধের বাচ্চাকে ভুলে যাবে,২ প্রত্যেক
গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে এবং মানুষকে তোমরা মাতাল দেখবে অথচ তারা নেশাগ্রস্ত
হবে না। আসলে আল্লাহর আযাবই হবে এমনি কঠিন।৩
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَن يُجَادِلُ
فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَّرِيدٍ﴾
৩। কতক লোক
এমন আছে যারা জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহর ব্যাপারে বিতর্ক করে ৪ এবং
প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের অনুসরণ করতে থাকে।
﴿كُتِبَ عَلَيْهِ أَنَّهُ
مَن تَوَلَّاهُ فَأَنَّهُ يُضِلُّهُ وَيَهْدِيهِ إِلَىٰ عَذَابِ السَّعِيرِ﴾
৪। অথচ তার
ভাগ্যেই তো এটা লেখা আছে যে, যে ব্যক্তি তার সাথে বন্ধুত্ব করবে তাকে
সে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে এবং জাহান্নামের আযাবের পথ দেখিয়ে দেবে।
﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِن
كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن
نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِن مُّضْغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ
لِّنُبَيِّنَ لَكُمْ ۚ وَنُقِرُّ فِي الْأَرْحَامِ مَا نَشَاءُ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى
ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ۖ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّىٰ
وَمِنكُم مَّن يُرَدُّ إِلَىٰ أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِن بَعْدِ عِلْمٍ
شَيْئًا ۚ وَتَرَى الْأَرْضَ هَامِدَةً فَإِذَا أَنزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ اهْتَزَّتْ
وَرَبَتْ وَأَنبَتَتْ مِن كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ﴾
৫। হে
লোকেরা! যদি তোমাদের মৃত্যু পরের জীবনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে, তাহলে তোমরা জেনে রাখো, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি
মাটি থেকে, তারপর
শুক্র থেকে,৫ তারপর রক্তপিণ্ড থেকে, তারপর গোশতের টুকরা থেকে, যা আকৃতি বিশিষ্টও হয় এবং
আকৃতিহীনও।৬ (এ আমি
বলছি) তোমাদের কাছে সত্যকে সুস্পষ্ট করার জন্য। আমি যে
শুক্রকে চাই একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত গর্ভাশয়ে স্থিত রাখি, তারপর একটি শিশুর আকারে
তোমাদের বের করে আনি, (তারপর তোমাদের প্রতিপালন করি) যাতে তোমরা নিজেদের পূর্ণ
যৌবনে পৌঁছে যাও। আর তোমাদের কাউকে কাউকে তার
পূর্বেই ডেকে ফিরিয়ে নেয়া হয় এবং কাউকে হীনতম বয়সের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যাতে সবকিছু জানার পর আবার
কিছুই না জানে।৭ আর তোমরা দেখছো
যমীন বিশুষ্ক পড়ে আছে তারপর যখনই আমি তার ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করেছি তখনই সে সবুজ
শ্যামল হয়েছে, স্ফীত হয়ে
উঠেছে এবং সব রকমের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদগত করতে শুরু করেছে।
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ
هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّهُ يُحْيِي الْمَوْتَىٰ وَأَنَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
৬। এসব কিছু
এজন্য যে, আল্লাহ
সত্য,৮ তিনি মৃতদেরকে জীবিত করেন এবং
তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তিশালী।
﴿وَأَنَّ السَّاعَةَ آتِيَةٌ
لَّا رَيْبَ فِيهَا وَأَنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ مَن فِي الْقُبُورِ﴾
৭। আর এ
(একথার প্রমাণ) যে, কিয়ামতের
সময় অবশ্যই আসবে, এতে কোনো
প্রকার সন্দেহের অবকাশ নেই এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে উঠাবেন যারা কবরে চলে গেছে।৯
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَن يُجَادِلُ
فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلَا هُدًى وَلَا كِتَابٍ مُّنِيرٍ﴾
৮। আরো কিছু
লোক এমন আছে যারা কোনো জ্ঞান১০ পথনির্দেশনা১১ ও আলো বিকিরণকারী কিতাব১২ ছাড়াই ঘাড় শক্ত করে১৩
﴿ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ
عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۖ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ ۖ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
عَذَابَ الْحَرِيقِ﴾
৯। আল্লাহর
ব্যাপারে বিতর্ক করে, যাতে লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করা যায়।১৪ এমন ব্যক্তির জন্য রয়েছে
দুনিয়ায় লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে আগুনের আযাবের জ্বালা আস্বাদন করাবো।
﴿ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ
يَدَاكَ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ﴾
১০। এ হচ্ছে
তোমার ভবিষ্যত, যা তোমার
হাত তোমার জন্য তৈরি করেছে, নয়তো আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি যুলুম
করেন না।
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَن يَعْبُدُ
اللَّهَ عَلَىٰ حَرْفٍ ۖ فَإِنْ أَصَابَهُ خَيْرٌ اطْمَأَنَّ بِهِ ۖ وَإِنْ أَصَابَتْهُ
فِتْنَةٌ انقَلَبَ عَلَىٰ وَجْهِهِ خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةَ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ
الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ﴾
১১। আর
মানুষের মধ্যে এমনও কেউ আছে, যে এক কিনারায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর বন্দেগী
করে,১৫ যদি তাতে তার উপকার হয় তাহলে
নিশ্চিন্ত হয়ে যায় আর যদি কোনো বিপদ আসে তাহলে পিছনের দিকে ফিরে যায়১৬ তার দুনিয়াও গেলো এবং
আখেরাতও। এ হচ্ছে সুস্পষ্ট ক্ষতি।১৭
﴿يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ
مَا لَا يَضُرُّهُ وَمَا لَا يَنفَعُهُ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الضَّلَالُ الْبَعِيدُ﴾
১২। তারপর সে
আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকে যারা তার না ক্ষতি করতে পারে, না উপকার, এ হচ্ছে ভ্রষ্টতার চূড়ান্ত।
﴿يَدْعُو لَمَن ضَرُّهُ أَقْرَبُ
مِن نَّفْعِهِ ۚ لَبِئْسَ الْمَوْلَىٰ وَلَبِئْسَ الْعَشِيرُ﴾
১৩। সে
তাদেরকে ডাকে যাদের ক্ষতি তাদের উপকারের চাইতে নিকটতর১৮ নিকৃষ্ট তার অভিভাবক এবং
নিকৃষ্ট তার সহযোগী।১৯
﴿إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ
آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۚ إِنَّ
اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ﴾
১৪।
(পক্ষান্তরে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে২০ আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে
প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হবে; আল্লাহ যা চান তাই করেন।২১
﴿مَن كَانَ يَظُنُّ أَن لَّن
يَنصُرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ فَلْيَمْدُدْ بِسَبَبٍ إِلَى السَّمَاءِ
ثُمَّ لْيَقْطَعْ فَلْيَنظُرْ هَلْ يُذْهِبَنَّ كَيْدُهُ مَا يَغِيظُ﴾
১৫। যে
ব্যক্তি ধারণা করে, আল্লাহ
দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাকে কোনো সাহায্য করবেন না তার একটি রশির সাহায্যে আকাশে
পৌঁছে গিয়ে ছিদ্র করা উচিত তারপর দেখা উচিত তার কৌশল এমন কোনো জিনিসকে রদ করতে
পারে কিনা যা তার বিরক্তি ও ক্ষোভের কারণ।২২
﴿وَكَذَٰلِكَ أَنزَلْنَاهُ
آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَأَنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَن يُرِيدُ﴾
১৬। --এ
ধরনেরই সুস্পষ্ট কথা সহযোগে আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আল্লাহ যাকে চান তাকে সৎপথ
দেখান।
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا
وَالَّذِينَ هَادُوا وَالصَّابِئِينَ وَالنَّصَارَىٰ وَالْمَجُوسَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا
إِنَّ اللَّهَ يَفْصِلُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ
شَيْءٍ شَهِيدٌ﴾
১৭। যারা ঈমান
এনেছে২৩ ও যারা ইহুদী হয়েছে২৪ এবং সাবেয়ী,২৫ খৃস্টান২৬ ও অগ্নি পূজারীরা২৭ আর যারা শিরক করেছে২৮ তাদের সবার মধ্যে আল্লাহ
কিয়ামতের দিন ফায়সালা করবেন।২৯ সব জিনিসই আল্লাহর দৃষ্টিতে
আছে।
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ
يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ
وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ ۖ وَكَثِيرٌ
حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ ۗ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ ۚ إِنَّ
اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ ﴾
১৮। তুমি কি
দেখো না আল্লাহর সামনে সিজদানত৩০ সবকিছই যা
আছে আকাশে৩১ ও পৃথিবীতে- সূর্য, চন্দ্র, তারকা, পাহাড়, গাছপালা, জীবজন্তু এবং বহু মানুষ৩২ ও এমন বহু লোক যাদের প্রতি
আযাব অবধারিত হয়ে গেছে?৩৩ আর যাকে আল্লাহ লাঞ্ছিত ও হেয়
করেন তার সম্মান দাতা কেউ নেই৩৪ আল্লাহ
যাকিছু চান তাই করেন।৩৫
﴿هَٰذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوا
فِي رَبِّهِمْ ۖ فَالَّذِينَ كَفَرُوا قُطِّعَتْ لَهُمْ ثِيَابٌ مِّن نَّارٍ يُصَبُّ
مِن فَوْقِ رُءُوسِهِمُ الْحَمِيمُ﴾
১৯। এ দু’টি
পক্ষ এদের মধ্যে রয়েছে এদের রবের ব্যাপারে বিরোধ।৩৬ এদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে
তাদের জন্য আগুনের পোশাক কাটা হয়ে গেছে,৩৭
﴿يُصْهَرُ بِهِ مَا فِي بُطُونِهِمْ
وَالْجُلُودُ﴾
২০। তাদের
মাথায় ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে, যার ফলে শুধু তাদের চামড়াই নয়, পেটের ভেতরের অংশও গলে যাবে।
﴿وَلَهُم مَّقَامِعُ مِنْ
حَدِيدٍ﴾
২১। আর তাদের
শাস্তি দেবার জন্য থাকবে লোহার মুগুর।
﴿كُلَّمَا أَرَادُوا أَن يَخْرُجُوا
مِنْهَا مِنْ غَمٍّ أُعِيدُوا فِيهَا وَذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ﴾
২২। যখনই তারা
কাতর হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হবার চেষ্টা করবে তখনই আবার তার মধ্যে তাদেরকে ঠেলে
দেয়া হবে, বলা হবে, এবার দহন জ্বালার স্বাদ নাও।
﴿إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ
آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ يُحَلَّوْنَ
فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا ۖ وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ﴾
২৩।
(অন্যদিকে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ
করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হতে থাকবে। সেখানে
তাদেরকে সোনার কাঁকন ও মুক্তো দিয়ে সাজানো হবে৩৮ এবং তাদের পোশাক হবে রেশমের।
﴿وَهُدُوا إِلَى الطَّيِّبِ
مِنَ الْقَوْلِ وَهُدُوا إِلَىٰ صِرَاطِ الْحَمِيدِ﴾
২৪। তাদেরকে
পবিত্র কথা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৩৯ এবং তাদেরকে দেখানো হয়েছে
শ্রেষ্ঠ গুণাবলী সম্পন্ন আল্লাহর পথ।৪০
﴿إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا
وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الَّذِي جَعَلْنَاهُ لِلنَّاسِ
سَوَاءً الْعَاكِفُ فِيهِ وَالْبَادِ ۚ وَمَن يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُّذِقْهُ
مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
২৫। যারা
কুফরী করেছে৪১ এবং যারা (আজ) আল্লাহর পথে
চলতে বাধা দিচ্ছে আর সেই মসজিদে হারামের যিয়ারতে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে৪২ যাকে আমি তৈরি করেছি সব
লোকের জন্য যাতে স্থানীয় বাসিন্দা ও বহিরাগতদের অধিকার সমান।৪৩ (তাদের নীতি অবশ্যই শাস্তিযোগ্য)
এখানে (মসজিদে হারামে) যে-ই সত্যতা থেকে সরে গিয়ে জুলুমের পথ অবলম্বন করবে৪৪ তাকেই আমি যন্ত্রণাদায়ক
আযাবের স্বাদ আস্বাদান করাবো।
﴿وَإِذْ بَوَّأْنَا لِإِبْرَاهِيمَ
مَكَانَ الْبَيْتِ أَن لَّا تُشْرِكْ بِي شَيْئًا وَطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ
وَالْقَائِمِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ﴾
২৬। স্মরণ
করো সে সময়ের কথা যখন আমি ইবরাহীমের জন্য এ ঘরের (কাবাঘর) জায়গা নির্ধারণ
করেছিলাম (এ নির্দেশনা সহকারে) যে, আমার সাথে কোনো জিনিসকে শরীক করবে না
এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও রুকূ-সিজদা-কিয়ামকারীদের জন্য পবিত্র রাখো৪৫
﴿وَأَذِّن فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ
يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَىٰ كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِن كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ﴾
২৭। এবং
লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও, তারা প্রত্যেকে দূর-দূরান্ত
থেকে পায়ে হেঁটে ও উটের পিঠে চড়ে৪৬
﴿لِّيَشْهَدُوا مَنَافِعَ
لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم
مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ ۖ فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ﴾
২৮। তোমার
কাছে আসবে,৪৭ যাতে এখানে তাদের জন্য যে
কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায়৪৮ এবং তিনি
তাদেরকে যেসব পশু দান করেছেন তার উপর কয়েকটি নির্ধারিত দিনে আল্লাহর নাম নেয়৪৯ নিজেরাও খাও এবং
দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াও।৫০
﴿ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ
وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ﴾
২৯। তারপর
নিজেদের ময়লা দূর করে,৫১ নিজেদের মানত পূর্ণ করে৫২ এবং এ প্রাচীন গৃহের তাওয়াফ
করে।৫৩
﴿ذَٰلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ
حُرُمَاتِ اللَّهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ عِندَ رَبِّهِ ۗ وَأُحِلَّتْ لَكُمُ الْأَنْعَامُ
إِلَّا مَا يُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ ۖ فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا
قَوْلَ الزُّورِ﴾
৩০। এ ছিল
(কাবা নির্মাণের উদ্দেশ্য) এবং যে কেউ আল্লাহ প্রতিষ্ঠিত পবিত্রত অনুষ্ঠানগুলোকে
সম্মান করবে, তার রবের
কাছে এ হবে তারই জন্য ভালো।৫৪ আর তোমাদের জন্য গৃহপালিত
চতুষ্পদ জন্তু হালাল করে দেয়া হয়েছে৫৫ সেগুলো
ছাড়া যেগুলো তোমাদের বলে দেয়া হয়েছে।৫৬ কাজেই মূর্তিসমূহের আবর্জনা
থেকে বাঁচো৫৭ মিথ্যা কথা থেকে দূরে থাকো,৫৮
﴿حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ
مُشْرِكِينَ بِهِ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ
الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ﴾
৩১।
একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর বান্দা হয়ে যাও, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না এবং যে
ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করে সে যেন আকাশ থেকে পড়ে গেলো। এখন হয়
তাকে পাখি ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে অথবা বাতাস তাকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ছুঁড়ে দেবে
যেখানে সে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে।৫৯
﴿ذَٰلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ
شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى الْقُلُوبِ﴾
৩২। এ হচ্ছে
আসল ব্যাপার (এটি বুঝে নাও), আর যে ব্যক্তি আল্লাহ নির্ধারিত রীতিনীতির৬০ প্রতি সম্মান দেখায়, তার সে কাজ তার অন্তরের
আল্লাহভীতির পরিচায়ক।৬১
﴿لَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ
إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ مَحِلُّهَا إِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيقِ﴾
৩৩। একটি
নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের ঐ সমস্ত (কুরবানীর পশু) থেকে উপকারলাভের অধিকার
আছে।৬২ তারপর
ওগুলোর (কুরবানী করার) জায়গা এ প্রাচীন ঘরের নিকটেই।৬৩
﴿وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا
مَنسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ
ۗ فَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا ۗ وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ﴾
৩৪। প্রত্যেক
উম্মতের জন্য আমি কুরবানীর একটি নিয়ম ঠিক করে দিয়েছি, যাতে (সে উম্মতের) লোকেরা সে
পশুদের ওপর আল্লাহর নাম নেয় যেগুলো তিনি তাদেরকে দিয়েছেন।৬৪ (এ বিভিন্ন নিয়মের উদ্দেশ্য
একই) কাজেই তোমাদের ইলাহও সে একজনই এবং তোমরা তাঁরই ফরমানের অনুগত হয়ে যাও। আর হে
নবী! সুসংবাদ দিয়ে দাও বিনয়ের নীতি অবলম্বন কারীদেরকে,৬৫
﴿الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ
وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَالصَّابِرِينَ عَلَىٰ مَا أَصَابَهُمْ وَالْمُقِيمِي الصَّلَاةِ
وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ﴾
৩৫। যাদের
অবস্থা এই যে, আল্লাহর
নাম স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে, যে বিপদই তাদের ওপর আসে তার
ওপর তারা সবর করে, নামায
কায়েম করে এবং যাকিছু রিযিক তাদেরকে আমি দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।৬৬
﴿وَالْبُدْنَ جَعَلْنَاهَا
لَكُم مِّن شَعَائِرِ اللَّهِ لَكُمْ فِيهَا خَيْرٌ ۖ فَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهَا
صَوَافَّ ۖ فَإِذَا وَجَبَتْ جُنُوبُهَا فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ
وَالْمُعْتَرَّ ۚ كَذَٰلِكَ سَخَّرْنَاهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
৩৬। আর
কুরবানীর উটকে৬৭ আমি করেছি
তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্তরভুক্ত; তোমাদের জন্য রয়েছে তার
মধ্যে কল্যাণ।৬৮ কাজেই
তোমাদেরকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে৬৯ তাদের ওপর
আল্লাহর নাম নাও।৭০ আর যখন
(কুরবানীর পরে) তাদের পিঠ মাটির সাথে লেগে যায়৭১ তখন তা থেকে নিজেরাও খাও এবং
তাদেরকেও খাওয়াও যারা পরিতুষ্ট হয়ে বসে আছে এবং তাদেরকেও যারা নিজেদের অভাব পেশ
করে। এ পশুগুলোকে আমি এভাবেই তোমাদের জন্য
বশীভূত করেছি, যাতে
তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।৭২
﴿لَن يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا
وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَٰكِن يَنَالُهُ التَّقْوَىٰ مِنكُمْ ۚ كَذَٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ
لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ ۗ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ﴾
৩৭। তাদের
গোশতও আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তাদের রক্তও না। কিন্তু
তাঁর কাছে পৌঁছে যায় তোমাদের তাকওয়া।৭৩ তিনি তাদেরকে তোমাদের জন্য
এমনভাবে অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর দেয়া পথনির্দেশনার ভিত্তিতে তোমরা তাঁর
শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো।৭৪ আর হে নবী! সৎকর্মশীলদেরকে
সুসংবাদ দিয়ে দাও।
﴿إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ
عَنِ الَّذِينَ آمَنُوا ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُورٍ﴾
৩৮। নিশ্চয়ই৭৫ আল্লাহ ঈমানদারদের সংরক্ষণ
করেন৭৬ নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো
বিশ্বাসঘাতক কৃতঘ্নকে পছন্দ করেন না।৭৭
﴿أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ
بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ﴾
৩৯। অনুমতি
দেয়া হলো তাদেরকে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে, কেননা তারা মজলুম৭৮ এবং আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে
সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেন।৭৯
﴿الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن
دِيَارِهِم بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَن يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ ۗ وَلَوْلَا دَفْعُ
اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ
وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا ۗ وَلَيَنصُرَنَّ اللَّهُ مَن
يَنصُرُهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ﴾
৪০। তাদেরকে
নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বের করে দেয়া হয়েছে৮০ শুধুমাত্র এ অপরাধে যে, তারা বলেছিল, “আল্লাহ আমাদের রব।”৮১ যদি আল্লাহ লোকদেরকে একের
মাধ্যমে অন্যকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা না করতেন, তাহলে যেখানে আল্লাহর নাম
বেশী করে উচ্চারণ করা হয় সেসব আশ্রম, গীর্জা, ইবাদাতখানা৮২ ও মসজিদ ধ্বংস করে দেয়া হতো।৮৩ আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে
সাহায্য করবেন যারা তাঁকে সাহায্য করবে।৮৪ আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও
পরাক্রান্ত।
﴿الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ
فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ
وَنَهَوْا عَنِ الْمُنكَرِ ۗ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ﴾
৪১। এরা এমন
সব লোক যাদেরকে আমি যদি পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দান করি তাহলে এরা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং
খারাপ কাজ নিষেধ করবে।৮৫ আর সমস্ত বিষয়ের পরিণাম
আল্লাহর হাতে।৮৬
﴿وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَعَادٌ وَثَمُودُ﴾
৪২। হে নবী!
যদি তারা তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে,৮৭ তাহলে
ইতিপূর্বে নূহের জাতি, আদ, সামূদ, ইবরাহীমের জাতি, লূতের জাতি ও মাদয়ানবাসীরাও
মিথ্যা আরোপ করেছিল
﴿وَقَوْمُ إِبْرَاهِيمَ وَقَوْمُ
لُوطٍ﴾
৪৩। এবং মূসার
প্রতিও মিথ্যা আরোপ করা হয়েছিল। এসব সত্য
অস্বীকারকারীকে আমি প্রথমে অবকাশ দিয়েছি তারপর পাকড়াও করেছি।৮৮
﴿وَأَصْحَابُ مَدْيَنَ ۖ وَكُذِّبَ
مُوسَىٰ فَأَمْلَيْتُ لِلْكَافِرِينَ ثُمَّ أَخَذْتُهُمْ ۖ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ﴾
৪৪। এখন দেখে
নাও আমার শাস্তি কেমন ছিল।৮৯
﴿فَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ
أَهْلَكْنَاهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ فَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَىٰ عُرُوشِهَا وَبِئْرٍ مُّعَطَّلَةٍ
وَقَصْرٍ مَّشِيدٍ﴾
৪৫। কত
দুষ্কৃতকারী জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি এবং আজ তারা নিজেদের ছাদের ওপর উলটে পড়ে
আছে, কত কূয়া৯০ অচল এবং কত প্রাসাদ
ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে।
﴿أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ
فَتَكُونَ لَهُمْ قُلُوبٌ يَعْقِلُونَ بِهَا أَوْ آذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَا ۖ فَإِنَّهَا
لَا تَعْمَى الْأَبْصَارُ وَلَٰكِن تَعْمَى الْقُلُوبُ الَّتِي فِي الصُّدُورِ﴾
৪৬। তারা কি
পৃথিবীর বুকে ভ্রমণ করেনি, যার ফলে তারা উপলব্ধিকারী হৃদয় ও শ্রবণকারী কানের অধিকারী
হতো? আসল
ব্যাপার হচ্ছে, চোখ অন্ধ
হয় না বরং হৃদয় অন্ধ হয়ে যায়, যা বুকের মধ্যে আছে।৯১
﴿وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ
وَلَن يُخْلِفَ اللَّهُ وَعْدَهُ ۚ وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ
مِّمَّا تَعُدُّونَ﴾
৪৭। তারা
আযাবের জন্য তাড়াহুড়ো করছে৯২ আল্লাহ
কখনো তাঁর প্রতিশ্রুতি ভংগ করবেন না। কিন্তু
তোমার রবের কাছের একটি দিন তোমাদের গণনার হাজার বছরের সমান হয়।৯৩
﴿وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ
أَمْلَيْتُ لَهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ ثُمَّ أَخَذْتُهَا وَإِلَيَّ الْمَصِيرُ﴾
৪৮। কতই জনপদ
ছিল দুরাচার, আমি প্রথমে
তাদেরকে অবকাশ দিয়েছি তারপর পাকড়াও করেছি। আর সবাইকে
তো ফিরে আমারই কাছে আসতে হবে।
﴿قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ
إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ﴾
৪৯। হে
মুহাম্মাদ! বলে দাও, “ওহে
লোকেরা, আমি তো
তোমাদের জন্য শুধুমাত্র (খারাপ সময় আসার আগেই) একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।৯৪
﴿فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا
الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ﴾
৫০। কাজেই
যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদের জন্য রয়েছে মাগফেরাত ও সম্মানজনক জীবিকা।৯৫
﴿وَالَّذِينَ سَعَوْا فِي
آيَاتِنَا مُعَاجِزِينَ أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ﴾
৫১। আর যারা
আমার আয়াতকে খাটো করার চেষ্টা করবে তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী।
﴿وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ
مِن رَّسُولٍ وَلَا نَبِيٍّ إِلَّا إِذَا تَمَنَّىٰ أَلْقَى الشَّيْطَانُ فِي أُمْنِيَّتِهِ
فَيَنسَخُ اللَّهُ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ ثُمَّ يُحْكِمُ اللَّهُ آيَاتِهِ ۗ وَاللَّهُ
عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
৫২। আর হে
মুহাম্মাদ! তোমার পূর্বে আমি এমন কোনো রাসূল ও নবী পাঠাইনি৯৬ (যার সাথে এমন ঘটনা ঘটেনি যে)
যখন সে তামান্না করেছে।৯৭ শয়তান তার তামান্নায় বিঘ্ন
সৃষ্টি করেছে।৯৮ এভাবে
শয়তান যাকিছু বিঘ্ন সৃষ্টি করে আল্লাহ তা দূর করে দেন এবং নিজের আয়াত সমূহকে
সুপ্রতিষ্ঠিত করেন,৯৯ আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।১০০
﴿لِّيَجْعَلَ مَا يُلْقِي
الشَّيْطَانُ فِتْنَةً لِّلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ
ۗ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ﴾
৫৩। (তিনি
এজন্য এমনটি হতে দেন) যাতে শয়তানের নিক্ষিপ্ত অনিষ্টকে পরীক্ষায় পরিণত করেন তাদের
জন্য যাদের অন্তরে (মুনাফিকীর) রোগ রয়েছে এবং যাদের হৃদয়বৃত্তি
মিথ্যা-কলূষিত-আসলে এ জালেমরা শত্রুতায় অনেক দূরে পৌঁছে গেছে
﴿وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا
الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ
ۗ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ﴾
৫৪। --এবং
যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জেনে নেয় যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে এটা
সত্য এবং তারা এর প্রতি ঈমান আনে এবং এর সামনে তাদের অন্তর ঝুঁকে পড়ে; যারা ঈমান আনে তাদেরকে অবশ্যই
আল্লাহ চিরকাল সত্য-সরল পথ দেখিয়ে থাকেন।১০১
﴿وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ
كَفَرُوا فِي مِرْيَةٍ مِّنْهُ حَتَّىٰ تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً أَوْ يَأْتِيَهُمْ
عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيمٍ﴾
৫৫।
অস্বীকারকারীরা তো তার পক্ষ থেকে সন্দেহের মধ্যেই পড়ে থাকবে যতক্ষণ না তাদের ওপর
কিয়ামত এসে পড়বে অকস্মাত অথবা নাযিল হয়ে যাবে একটি ভাগ্যাহত১০২ দিনের শাস্তি।
﴿الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ لِّلَّهِ
يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ ۚ فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فِي جَنَّاتِ
النَّعِيمِ﴾
৫৬। সেদিন
বাদশাহী হবে আল্লাহর এবং তিনি তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন। যারা
ঈমানদার ও সৎকর্মশীল হবে তারা যাবে নিয়ামত পরিপূর্ণ জান্নাতে
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا
بِآيَاتِنَا فَأُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ﴾
৫৭। আর যারা
কুফরী করে থাকবে এবং আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে থাকবে তাদের জন্য হবে লাঞ্ছনাকর
শাস্তি।
﴿وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي
سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ قُتِلُوا أَوْ مَاتُوا لَيَرْزُقَنَّهُمُ اللَّهُ رِزْقًا حَسَنًا
ۚ وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ﴾
৫৮। আর যারা
আল্লাহর পথে হিজরত করেছে তারপর নিহত হয়েছে বা মারা গেছে, আল্লাহ তাদেরকে ভালো জীবিকা
দেবেন এবং নিশ্চয়ই আল্লাহই সবচেয়ে ভালো রিযিকদাতা।
﴿لَيُدْخِلَنَّهُم مُّدْخَلًا
يَرْضَوْنَهُ ۗ وَإِنَّ اللَّهَ لَعَلِيمٌ حَلِيمٌ﴾
৫৯। তিনি
তাদেরকে এমন জায়গায় পৌঁছিয়ে দেবেন যা তাদেরকে খুশী করে দেবে, নিসন্দেহে আল্লাহ সবকিছু
জানেন ও পরম ধৈর্যশীল।১০৩
﴿ذَٰلِكَ وَمَنْ عَاقَبَ بِمِثْلِ
مَا عُوقِبَ بِهِ ثُمَّ بُغِيَ عَلَيْهِ لَيَنصُرَنَّهُ اللَّهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَعَفُوٌّ
غَفُورٌ﴾
৬০। এতো
হচ্ছে তাদের অবস্থা, আর যে
ব্যক্তি প্রতিশোধ নেয় ঠিক যেমন তার সাথে করা হয়েছে তেমনি এবং তারপর তার ওপর
বাড়াবাড়িও করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন,১০৪ আল্লাহ গোনাহমাফকারী ও ক্ষমাশীল।১০৫
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ
يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ اللَّهَ
سَمِيعٌ بَصِيرٌ﴾
৬১। এসব১০৬ এজন্য যে, আল্লাহই রাতকে দিনের মধ্যে
প্রবেশ করান এবং দিনকে প্রবেশ করান রাতের মধ্যে১০৭ এবং তিনি সবকিছু শোনেন ও
দেখেন।১০৮
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ
هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللَّهَ
هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ﴾
৬২। এসব এজন্য
যে, আল্লাহই
সত্য এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে এরা যাদেরকে ডাকে তারা সবাই মিথ্যা।১০৯ আর আল্লাহই পরাক্রমশালী ও
মহান।
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ
أَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَتُصْبِحُ الْأَرْضُ مُخْضَرَّةً ۗ إِنَّ اللَّهَ لَطِيفٌ
خَبِيرٌ﴾
৬৩। তুমি কি
দেখো না, আল্লাহ
আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন এবং তার বদৌলতে জমি সবুজ শ্যামল হয়ে ওঠে?১১০ আসলে তিনি সূক্ষ্মদর্শী ও সর্বজ্ঞ।১১১
﴿لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ
وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ﴾
৬৪। যা কিছু
আকাশে ও পৃথিবীতে আছে সব তাঁরই। নিসন্দেহে তিনিই অমুখাপেক্ষী
ও প্রশংসার্হ।১১২
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ
سَخَّرَ لَكُم مَّا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ
السَّمَاءَ أَن تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ
لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ﴾
৬৫। তুমি কি
দেখো না, তিনি
পৃথিবীর সবকিছুকে তোমাদের জন্য অনুগত করে রেখেছেন এবং তিনিই নৌযানকে নিয়মের অধীন
করেছেন যার ফলে তাঁর হুকুমে তা সমুদ্রে বিচরণ করে আর তিনিই আকাশকে এমনভাবে ধরে
রেখেছেন যার ফলে তাঁর হুকুম ছাড়া তা পৃথিবীর ওপর পতিত হতে পারে না।১১৩ আসলে আল্লাহ লোকদের জন্য বড়ই
স্নেহশীল ও মেহেরবান।
﴿وَهُوَ الَّذِي أَحْيَاكُمْ
ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ۗ إِنَّ الْإِنسَانَ لَكَفُورٌ﴾
৬৬। তিনিই
তোমাদের জীবন দান করেছেন, তিনিই তোমাদের মৃত্যু দান করেন এবং তিনিই আবার তোমাদের
জীবিত করবেন; সত্য বলতে
কি, মানুষ বড়ই
সত্য অস্বীকারকারী।১১৪
﴿لِّكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا
مَنسَكًا هُمْ نَاسِكُوهُ ۖ فَلَا يُنَازِعُنَّكَ فِي الْأَمْرِ ۚ وَادْعُ إِلَىٰ رَبِّكَ
ۖ إِنَّكَ لَعَلَىٰ هُدًى مُّسْتَقِيمٍ﴾
৬৭। প্রত্যেক১১৫ উম্মতের জন্য আমি একটি
ইবাদাতের পদ্ধতি১১৬ নির্দিষ্ট করেছি, যা তারা অনুসরণ করে; কাজেই হে মুহাম্মাদ! এ
ব্যাপারে তারা যেন তোমার সাথে ঝগড়া না করে।১১৭ তুমি তোমার রবের দিকে দাওয়াত
দাও। অবশ্যই তুমি সঠিক সরল পথে আছো।১১৮
﴿وَإِن جَادَلُوكَ فَقُلِ
اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾
৬৮। আর যদি
তারা তোমার সাথে ঝগড়া করে তাহলে বলে দাও, “যাকিছু তোমরা করছো আল্লাহ
তা খুব ভালোই জানেন। তোমরা যেসব বিষয়ে মতভেদ
করছো
﴿اللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ
يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ﴾
৬৯। আল্লাহ
কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে সেসব বিষয়ে ফায়সালা করে দেবেন।”
﴿أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ
يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۗ إِنَّ ذَٰلِكَ فِي كِتَابٍ ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ
عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ﴾
৭০। তুমি কি
জানো না, আকাশ ও
পৃথিবীর প্রত্যেকটি জিনিসই আল্লাহ জানেন? সবকিছু একটি কিতাবে লিখিত আছে। আল্লাহর
জন্য এটা মোটেই কঠিন নয়।১১৯
﴿وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ
اللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَمَا لَيْسَ لَهُم بِهِ عِلْمٌ ۗ وَمَا
لِلظَّالِمِينَ مِن نَّصِيرٍ﴾
৭১। তারা
আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর ইবাদাত করে যাদের জন্য না তিনি কোনো প্রমাণ পত্র
অবতীর্ণ করেছেন আর না তারা নিজেরাই তাদের ব্যাপারে কোনো জ্ঞান রাখে।১২০ এ জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী
নেই।১২১
﴿وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ
آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ تَعْرِفُ فِي وُجُوهِ الَّذِينَ كَفَرُوا الْمُنكَرَ ۖ يَكَادُونَ
يَسْطُونَ بِالَّذِينَ يَتْلُونَ عَلَيْهِمْ آيَاتِنَا ۗ قُلْ أَفَأُنَبِّئُكُم بِشَرٍّ
مِّن ذَٰلِكُمُ ۗ النَّارُ وَعَدَهَا اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ﴾
৭২। আর যখন
তাদেরকে আমার পরিষ্কার আয়াত শুনিয়ে দেয়া হয় তখন তোমরা দেখো সত্য অস্বীকারকারীদের
চেহারা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে এবং মনে হতে থাকে এ-ই বুঝি যারা তাদেরকে আমার আয়াত শুনায়
তাদের ওপর তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে। তাদেরকে বলো, “আমি কি তোমাদের বলবো, এর চেয়ে খারাপ জিনিস কি?১২২ আগুন। আল্লাহ
এরি প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য দিয়ে রেখেছেন, যারা সত্য গ্রহণ করতে
অস্বীকার করে এবং তা বড়ই খারাপ আবাস।
﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ
مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوا لَهُ ۚ إِنَّ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَن يَخْلُقُوا
ذُبَابًا وَلَوِ اجْتَمَعُوا لَهُ ۖ وَإِن يَسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَيْئًا لَّا يَسْتَنقِذُوهُ
مِنْهُ ۚ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوبُ﴾
৭৩। হে
লোকেরা! একটি উপমা দেয়া হচ্ছে, মনোযোগ দিয়ে শোনো। আল্লাহকে
বাদ দিয়ে যেসব উপাস্যকে তোমরা ডাকো তারা সবাই মিলে একটি মাছি সৃষ্টি করতে চাইলেও
করতে পারবে না। বরং যদি মাছি তাদের কাছ থেকে কোনো
জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাহলে তারা তা ছাড়িয়েও নিতে পারবে না। সাহায্য
প্রার্থীও দুর্বল এবং যার কাছে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে সেও দুর্বল।১২৩
﴿مَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ
قَدْرِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ﴾
৭৪। তারা
আল্লাহর কদরই বুঝলো না যেমন তা বুঝা উচিত। আসল
ব্যাপার হচ্ছে, একমাত্র
আল্লাহই শক্তিমান ও মর্যাদাসম্পন্ন।
﴿اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ
رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ﴾
৭৫। আসলে
আল্লাহ (নিজের ফরমান পাঠাবার জন্য) ফেরেশতাদের মধ্য থেকেও বাণীবাহক বাছাই করেন এবং
মানুষদের মধ্য থেকেও।১২৪ তিনি সবকিছু শোনেন ও দেখেন।
﴿يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ
وَمَا خَلْفَهُمْ ۗ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ﴾
৭৬। যাকিছু
তাদের সামনে আছে তাও তিনি জানেন এবং যাকিছু আছে তাদের অগোচরেও তাও তিনি জানেন১২৫ এবং যাবতীয় বিষয় তাঁরই দিকে
ফিরে আসে।১২৬
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا وَاعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
৭৭। হে
ঈমানদারগণ! রুকূ ও সিজদা করো, নিজের রবের বন্দেগী করো এবং নেক কাজ করো, হয়তো তোমাদের ভাগ্যে সফলতা
আসবে।১২৭
﴿وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ
حَقَّ جِهَادِهِ ۚ هُوَ اجْتَبَاكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
ۚ مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ ۚ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِينَ مِن قَبْلُ وَفِي
هَٰذَا لِيَكُونَ الرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ
ۚ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ
ۖ فَنِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ﴾
৭৮। আল্লাহর
পথে জিহাদ করো যেমন জিহাদ করলে তার হক আদায় হয়।১২৮ তিনি নিজের কাজের জন্য
তোমাদেরকে বাছাই করে নিয়েছেন১২৯ এবং দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো সংকীর্ণতা
আরোপ করেননি।১৩০ তোমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাতের ওপর প্রতিষ্ঠিত
হয়ে যাও।১৩১ আল্লাহ আগেও তোমাদের নাম রেখেছিলেন “মুসলিম” এবং এর
(কুরআন) মধ্যেও (তোমাদের নাম এটিই)১৩২ যাতে রাসূল তোমাদের ওপর সাক্ষী হন এবং তোমরা সাক্ষী
হও লোকদের ওপর।১৩৩ কাজেই নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহর সাথে
সম্পৃক্ত হয়ে যাও।১৩৪ তিনি তোমাদের অভিভাবক, বড়ই ভালো অভিভাবক তিনি, বড়ই ভালো সাহায্যকারী তিনি।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।