০০৮. সূরা আল আনফাল
আয়াতঃ ৭৫; রুকুঃ ১০; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿بَسْأَلُونَكَ عَنِ
الْأَنفَالِ ۖ قُلِ الْأَنفَالُ لِلَّهِ
وَالرَّسُولِ ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَصْلِحُوا ذَاتَ
بَيْنِكُمْ ۖ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ﴾
১। লোকেরা
তোমার কাছে গনীমাতের মাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে? বলে দাও, এ গনীমতের মাল তো আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলের।কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, নিজেদের পারষ্পরিক সম্পর্কে
শুধরে নাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।১
﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ
الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ
آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ﴾
২। সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর
আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায়২ এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে।
﴿الَّذِينَ يُقِيمُونَ
الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ﴾
৩। তারা
নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ করে।
﴿أُولَٰئِكَ هُمُ
الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُمْ دَرَجَاتٌ عِندَ رَبِّهِمْ
وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ﴾
৪। এ ধরনের
লোকেরাই প্রকৃত মুমিন। তাদের
জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, ভূলত্রুটির ক্ষমা৩ ও উত্তম রিযিক।
﴿كَمَا أَخْرَجَكَ
رَبُّكَ مِن بَيْتِكَ بِالْحَقِّ وَإِنَّ فَرِيقًا مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ
لَكَارِهُونَ﴾
৫। (এই
গনীমাতের মালের ব্যাপারে ঠিক তেমনি অবস্থা দেখা দিচ্ছে যেমন অবস্থা সে সময় দেখা
দিয়েছিল যখন) তোমার রব তোমাকে সত্য সহকারে ঘর থেকে
বের করে এনেছিলেন এবং মুমিনদের একটি দলের কাছে এটা ছিল বড়ই অসহনীয়।
﴿يُجَادِلُونَكَ فِي
الْحَقِّ بَعْدَمَا تَبَيَّنَ كَأَنَّمَا يُسَاقُونَ إِلَى الْمَوْتِ وَهُمْ
يَنظُرُونَ﴾
৬। তারা এ
সত্যের ব্যাপারে তোমার সাথে ঝগড়া করছিল অথচ তা একেবারে পরিস্কার হয়ে ভেসে উঠেছিল। তাদের
অবস্থা এমন ছিল, যেন তরা দেখছিল তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাকিয়ে নিয়ে
যাওয়া হচ্ছে।৪
﴿وَإِذْ يَعِدُكُمُ
اللَّهُ إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ أَنَّهَا لَكُمْ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَيْرَ
ذَاتِ الشَّوْكَةِ تَكُونُ لَكُمْ وَيُرِيدُ اللَّهُ أَن يُحِقَّ الْحَقَّ
بِكَلِمَاتِهِ وَيَقْطَعَ دَابِرَ الْكَافِرِينَ﴾
৭। স্মরণ
করো সেই সময়ের কথা যখন আল্লাহ তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন, দু’টি দলের মধ্যে থেকে একটি
তোমরা পেয়ে যাবে।৫ তোমরা চাচ্ছিলে, তোমরা দুর্বল দলটি লাভ করবে।৬ কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ছিল, নিজের বাণীসমূহের সাহায্যে
তিনি সত্যকে সত্যরূপে প্রকাশিত করে দেখিয়ে দেবেন এবং কাফেরদের শিকড় কেটে দেবেন,
﴿لِيُحِقَّ الْحَقَّ
وَيُبْطِلَ الْبَاطِلَ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ﴾
৮। যাতে
সত্য সত্য রূপে এবং বাতিল বাতিল হিসেবে প্রমাণিত হয়ে যায়, অপরাধিদের কাছে তা যতই অসহনীয়
হোক না কেন।৭
﴿إِذْ تَسْتَغِيثُونَ
رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُم بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ
مُرْدِفِينَ﴾
৯। আর সেই
সময়ের কথা স্মরণ করো যখন তোমরা তোমাদের রবের কাছে ফরিয়াদ করছিলে। জবাবে
তিনি বললেন, তোমাদের
সাহায্য করার জন্য আমি একের পর একঃ এক হাজার ফেরেশতা পাঠাচ্ছি।
﴿وَمَا جَعَلَهُ اللَّهُ
إِلَّا بُشْرَىٰ وَلِتَطْمَئِنَّ بِهِ قُلُوبُكُمْ ۚ وَمَا النَّصْرُ
إِلَّا مِنْ عِندِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
১০। একথা
আল্লাহ তোমাদের শুধুমাত্র এ জন্য জানিয়ে দিলেন যাতে তোমরা সুখবর পাও এবং
তোমাদের হৃদয় নিশ্চিন্ততা অনুভব করে। নয়তো
সাহায্য যখনই আসে আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। অবশ্যই
আল্লাহ মহাপরাক্রমশীল ও মহাজ্ঞানী।
﴿إِذْ يُغَشِّيكُمُ
النُّعَاسَ أَمَنَةً مِّنْهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُم مِّنَ السَّمَاءِ مَاءً
لِّيُطَهِّرَكُم بِهِ وَيُذْهِبَ عَنكُمْ رِجْزَ الشَّيْطَانِ وَلِيَرْبِطَ عَلَىٰ
قُلُوبِكُمْ وَيُثَبِّتَ بِهِ الْأَقْدَامَ﴾
১১। আর সেই
সময়, যখন আল্লাহ
নিজের পক্ষ থেকে তন্দ্রার আকারে তোমাদের জন্য নিশ্চিন্ততা ও নির্ভীকতার পরিবেশ
সৃষ্টি করেছিলেন।৮ এবং আকাশ থেকে তোমাদের ওপর
পানি বর্ষণ করেছিলেন, যাতে তোমাদের পাক-পবিত্র করা যায়, শয়তান তোমাদের ওপর যে নাপাকী
ফেলে দিয়েছিল তা তোমাদের থেকে দুর করা যায়, তোমাদের সাহস যোগানো যায়
এবং তার মাধ্যমে তোমাদেরকে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।৯
﴿إِذْ يُوحِي رَبُّكَ
إِلَى الْمَلَائِكَةِ أَنِّي مَعَكُمْ فَثَبِّتُوا الَّذِينَ
آمَنُوا ۚ سَأُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُوا الرُّعْبَ
فَاضْرِبُوا فَوْقَ الْأَعْنَاقِ وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ﴾
১২। আর সেই
সময়, যখন তোমার
রব ফেরেশতাদেরকে ইঙ্গিত করেছিলেন, এই বলেঃ আমি তোমাদের সাথে আছি, তোমরা ঈমানদারদেরকে অবিচল
রাখো, আমি এখনই এ
কাফেরদের মনে আতংক সৃষ্টি করে দিচ্ছি। কাজেই
তোমরা তাদের ঘাড়ে আঘাত করো এবং প্রতিটি জোড়ে ও গ্রন্থী-সন্ধিতে ঘা মারো।১০
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ
شَاقُّوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ وَمَن يُشَاقِقِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ
فَإِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
১৩। এটা করার
কারণ, তারা
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিদ্রোহ পোষণ করেছে। আর যে
ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিদ্রোহ করে
আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আর
আল্লাহর পাকড়াও বড়ই কঠিন।১১
﴿ذَٰلِكُمْ فَذُوقُوهُ
وَأَنَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابَ النَّارِ﴾
১৪। -এটা১২ হচ্ছে তোমাদের শাস্তি, এখন এ মজা উপভোগ কর। আর
তোমাদের জানা উচিত, সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে
জাহান্নামের আযাব।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ
الْأَدْبَارَ﴾
১৫। হে
ঈমানদারগণ! যখন তোমরা একটি সেনাবাহিনীর আকারে কাফেরদের
মুখোমুখি হও তখন তাদের মোকাবিলায় পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না।
﴿وَمَن يُوَلِّهِمْ
يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُ إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلَىٰ
فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِّنَ اللَّهِ وَمَأْوَاهُ
جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ﴾
১৬। যে
ব্যক্তি এ অব্স্থায় পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সে আল্লাহর গযবে ঘেরাও হয়ে যাবে। তার আবাস
হবে জাহান্নাম এবং ফিরে যাবার জন্যে তা বড়ই খারাপ জায়গা।১৩ তবে হাঁ
যুদ্ধের কৌশল হিসেবে এমনটি করে থাকলে অথবা অন্য কোন সেনাদলের সাথে যোগ দেবার
জন্য করে থাকলে তা ভিন্ন কথা।
﴿فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ
وَلَٰكِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ ۚ وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ
وَلَٰكِنَّ اللَّهَ رَمَىٰ ۚ وَلِيُبْلِيَ الْمُؤْمِنِينَ مِنْهُ
بَلَاءً حَسَنًا ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
১৭। কাজেই
সত্য বলতে কি, তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা
করেছেন। আর তোমরা নিক্ষেপ করনি বরং
আল্লাহ নিক্ষেপ করেছেন।১৪ (আর এ কাজে মুমিনদের হাত ব্যবহার করা
হয়েছিল) এ জন্য যে আল্লাহ মুমিনদেরকে একটি
চমৎকার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সফলতার সাথে পার করে দেবেন। অবশ্যি
আল্লাহ সবকিছু শুনেনে ও জানেন।
﴿ذَٰلِكُمْ وَأَنَّ
اللَّهَ مُوهِنُ كَيْدِ الْكَافِرِينَ﴾
১৮। এ
ব্যাপারটি তো তোমাদের সাথে! আর কাফেরদের সাথে যে আচরণ
করা হবে তা হচ্ছে আল্লাহ তাদের কৌশলগুলো দুর্বল করে দেবেন।
﴿إِن تَسْتَفْتِحُوا
فَقَدْ جَاءَكُمُ الْفَتْحُ ۖ وَإِن تَنتَهُوا فَهُوَ خَيْرٌ
لَّكُمْ ۖ وَإِن تَعُودُوا نَعُدْ وَلَن تُغْنِيَ عَنكُمْ فِئَتُكُمْ
شَيْئًا وَلَوْ كَثُرَتْ وَأَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ﴾
১৯। (এ
কাফেরদের বলে দাও) যদি তোমরা ফায়সালা চেয়ে থাকো, তাহলে এই নাও ফায়সালা
তোমাদের সামনে এসে গেছে।১৫ এখন যদি ক্ষান্ত হও, তাহলে তো তোমাদের জন্যই ভাল
হবে। নয়তো যদি ফিরে আবার সেই
বোকামির পুনরাবৃত্তি করো তাহলে আমিও সেই শাস্তির পুনরাবৃত্তি করবো এবং তোমাদের
দলবল যত বেশীই হোক না কেন, তা তোমাদের কোন কাজে আসবে না। আল্লাহ
অবশ্যি মুমিনদের সাথে রয়েছেন।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَوَلَّوْا عَنْهُ وَأَنتُمْ
تَسْمَعُونَ﴾
২০। হে
ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং
হুকুম শোনার পর তা অমান্য করো না।
﴿وَلَا تَكُونُوا
كَالَّذِينَ قَالُوا سَمِعْنَا وَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ﴾
২১। তাদের
মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বললো, আমরা শুনেছি অথচ তারা শোনে
না।১৬
﴿إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ
عِندَ اللَّهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِينَ لَا يَعْقِلُونَ﴾
২২। অবশ্যি
আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ধরনের জানোয়ার হচ্ছে সেই সব বধির ও বোবা লোক১৭ যারা-বিবেক বুদ্ধি কাজে লাগায় না।
﴿وَلَوْ عَلِمَ اللَّهُ
فِيهِمْ خَيْرًا لَّأَسْمَعَهُمْ ۖ وَلَوْ أَسْمَعَهُمْ لَتَوَلَّوا
وَّهُم مُّعْرِضُونَ﴾
২৩। যদি
আল্লাহ জানতেন এদের মধ্যে সামান্য পরিমানও কল্যাণ আছে তাহলে নিশ্চয়ই তিনি তাদেরকে শুনতে
উদ্ধুদ্ধ করতেন। (কিন্তু
কল্যাণ ছাড়া) যদি তিনি তাদের শুনাতেন তাহলে তারা
নির্লিপ্ততার সাথে মুখ ফিরিয়ে নিতো।১৮
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا
يُحْيِيكُمْ ۖ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ
وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
২৪। হে
ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন রাসূল তোমাদের এমন
জিনিসের দিকে ডাকেন যা জীবন দান করবে। আর জেনে
রাখো আল্লাহ মানুষ ও তার দিলের মাঝখানে আড়াল হয়ে আছেন এবং তোমাদের তাঁর দিকেই
সমবেত করা হবে।১৯
﴿وَاتَّقُوا فِتْنَةً
لَّا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنكُمْ خَاصَّةً ۖ وَاعْلَمُوا
أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
২৫। আর সেই
ফিতনা থেকে দূরে থাকো, যার অনিষ্টকারিতা শুধুমাত্র তোমাদের
গোনাহগারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।২০ জেনে রাখো, আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
﴿وَاذْكُرُوا إِذْ
أَنتُمْ قَلِيلٌ مُّسْتَضْعَفُونَ فِي الْأَرْضِ تَخَافُونَ أَن يَتَخَطَّفَكُمُ
النَّاسُ فَآوَاكُمْ وَأَيَّدَكُم بِنَصْرِهِ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ
لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
২৬। স্মরণ
করো সেই সময়ের কথা যখন তোমরা ছিলে সামান্য কয়েকজন। পৃথিবীর
বুকে তোমাদের দুর্বল মনে করা হতো। লোকেরা
তোমাদের খতম করেই দেয় নাকি, এ ভয়ে তোমরা কাঁপতে। তারপর
আল্লাহ তোমাদের আশ্রয়স্থল যোগার করে দিলেন, নিজের সাহায্য দিয়ে তোমাদের
শক্তিশালী করলেন এবং তোমাদের ভাল ও পবিত্র জীবিকা দান করলেন, হয়তো তোমরা শোকরগুজার হবে।২১
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا لَا تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنتُمْ
تَعْلَمُونَ﴾
২৭। হে
ঈমানদরগণ! জেনে বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে
বিশ্বাসঘাতকতা করো না, নিজেদের আমানতসমূহের২২ খেয়ানত করো না।
﴿وَاعْلَمُوا أَنَّمَا
أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ اللَّهَ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ﴾
২৮। এবং জেনে
রেখো, তোমাদের
অর্থ-সম্পদ ও তোমাদের সন্তান-সন্তুতি আসলে পরীক্ষার সামগ্রী।২৩ আর আল্লাহর কাছে প্রতিদান দেবার জন্য অনেক
কিছুই আছে।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا إِن تَتَّقُوا اللَّهَ يَجْعَل لَّكُمْ فُرْقَانًا وَيُكَفِّرْ عَنكُمْ
سَيِّئَاتِكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ
الْعَظِيمِ﴾
২৯। হে
ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করার পথ অবলম্বন করো
তাহলে আল্লাহ তোমাদের কষ্টিপাথর দান করবেন২৪ এবং তোমাদের পাপগুলো তোমাদের থেকে দূর
করে দেবেন এবং তোমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ
অতিশয় অনুগ্রহশীল।
﴿وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ
الَّذِينَ كَفَرُوا لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ ۚ وَيَمْكُرُونَ
وَيَمْكُرُ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ﴾
৩০। সেই
সময়ের কথাও স্মরণ করার মত যখন সত্য অস্বীকারকারীরা তোমার বিরুদ্ধে নানান রকমের
চক্রান্ত আঁটছিল। তারা
চাচ্ছিল তোমাকে বন্দী করতে। হত্যা
করতে বা দেশ ছাড়া করতে।২৫ তারা নিজেদের কূট-কৌশল
প্রয়োগ করে চলছিল, অন্যদিকে
আল্লাহ ও তাঁর কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন আর আল্লাহ সবচেয়ে ভাল কৌশল, অবলম্বনকারী।
﴿وَإِذَا تُتْلَىٰ
عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا قَالُوا قَدْ سَمِعْنَا لَوْ نَشَاءُ لَقُلْنَا مِثْلَ
هَٰذَا ۙ إِنْ هَٰذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ﴾
৩১। যখন
তাদেরকে আমার আয়াত শুনানো হতো, তারা বলতো,হ্যাঁ আমরা শুনেছি, আমরা চাইলে এমন কথা আমরাও
শুনাতে পারি। এতো সেই সব পুরানো
কাহিনী, যা আগে
থেকে লোকেরা বলে আসছে।
﴿وَإِذْ قَالُوا
اللَّهُمَّ إِن كَانَ هَٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِندِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا
حِجَارَةً مِّنَ السَّمَاءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
৩২। আর সেই
কথাও স্মরণ যোগ্য যা তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! যদি এটা
যথার্থই সত্য হয়ে থাকে এবং তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে আমাদের ওপর আকাশ থেকে
পাথর বর্ষণ করো অথবা কোন যন্ত্রণাদায়ক আযাব আমাদের ওপর আনো।২৬
﴿وَمَا كَانَ اللَّهُ
لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنتَ فِيهِمْ ۚ وَمَا كَانَ اللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ
وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ﴾
৩৩। তুমিই
যখন তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলে তখন আল্লাহ তাদের ওপর আযাব নাযিল করতে চাচ্ছিলেন না। আর এটা
আল্লাহর রীতিও নয় যে, লোকেরা ক্ষমা চাইতে থাকেবে এবং তিনি
তাদেরকে আযাব দেবেন।২৭
﴿وَمَا لَهُمْ أَلَّا
يُعَذِّبَهُمُ اللَّهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَا
كَانُوا أَوْلِيَاءَهُ ۚ إِنْ أَوْلِيَاؤُهُ إِلَّا الْمُتَّقُونَ
وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ﴾
৩৪। কিন্তু
এখন কেন তিনি তাদের ওপর আযাব নাযিল করবেন না যখন তারা মসজিদে হারামের পথ রোধ
করেছে? অথচ তারা এ
মসজিদের বৈধ মুতাওয়াল্লীও নয়। এর বৈধ
মুতাওয়াল্লী হতে পারে একমাত্র তাকওয়াধারীরাই। কিন্তু
অধিকাংশ লোক একথা জানে না।
﴿وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ
عِندَ الْبَيْتِ إِلَّا مُكَاءً وَتَصْدِيَةً ۚ فَذُوقُوا الْعَذَابَ
بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ﴾
৩৫। বায়তুল্লাহর
কাছে তারা কি নামায পড়ে! তারা তো শুধু সিটি দেয় ও তালি
বজায়।২৮ কাজেই তোমরা যে সত্য অস্বীকার করে আসছিলে
তার প্রতিদানে এখন আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।২৯
﴿إِنَّ الَّذِينَ
كَفَرُوا يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ لِيَصُدُّوا عَن سَبِيلِ
اللَّهِ ۚ فَسَيُنفِقُونَهَا ثُمَّ تَكُونُ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً ثُمَّ
يُغْلَبُونَ ۗ وَالَّذِينَ كَفَرُوا إِلَىٰ جَهَنَّمَ يُحْشَرُونَ﴾
৩৬। যারা
সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথ রোধ করার জন্য
ব্যয় করেছে এবং এখনো আরো ব্যয় করতে থাকবে। কিন্তু
শেষ পর্যন্ত এ প্রচেষ্টা তাদের অনুশোচনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তারপর
তারা বিজিত হবে। আর এ
কাফেরদের ঘেরাও করে জাহান্নামের দিকে আনা হবে।
﴿لِيَمِيزَ اللَّهُ
الْخَبِيثَ مِنَ الطَّيِّبِ وَيَجْعَلَ الْخَبِيثَ بَعْضَهُ عَلَىٰ بَعْضٍ
فَيَرْكُمَهُ جَمِيعًا فَيَجْعَلَهُ فِي جَهَنَّمَ ۚ أُولَٰئِكَ هُمُ
الْخَاسِرُونَ﴾
৩৭। মূলত
আল্লাহ কলুষতাকে পবিত্রতা থেকে ছেঁটে আলাদা করবেন এবং সকল প্রকার কলুষতা মিলিয়ে
একত্র করবেন তারপর এ পুঁটলিটা জাহান্নামে ফেলে দেবেন। মূলত
এরাই হবে দেউলিয়া।৩০
﴿قُل لِّلَّذِينَ
كَفَرُوا إِن يَنتَهُوا يُغْفَرْ لَهُم مَّا قَدْ سَلَفَ وَإِن يَعُودُوا فَقَدْ
مَضَتْ سُنَّتُ الْأَوَّلِينَ﴾
৩৮। হে নবী! এ কাফেরদের বলে দাও, যদি এখনো তারা ফিরে আসে,তাহলে যা কিছু আগে হয়ে গেছে
তা মাফ করা হবে। কিন্তু যদি তারা আগের
আচরণের পুনরাবৃত্তি করে, তাহলে অতীতের জাতিগুলোর সাথে যা কিছু ঘটে
গেছে তা সবার জানা।
﴿وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ
لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ ۚ فَإِنِ
انتَهَوْا فَإِنَّ اللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ بَصِيرٌ﴾
৩৯। হে
ঈমানদারগণ! এ কাফেরদের সাথে এমন যুদ্ধ করো যেন
গোমরাহী ও বিশৃংখলা নির্মূল হয়ে যায় এবং দীন পুরোপুরি আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট
হয়ে যায়।৩১
﴿وَإِن تَوَلَّوْا
فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَوْلَاكُمْ ۚ نِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ
النَّصِيرُ﴾
৪০। তারপর
যদি তারা ফিতনা থেকে বিরত হয় তাহলে আল্লাহই তাদের আমল দেখবেন। আর যদি
তারা না মানে তাহলে জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের পৃষ্ঠপোষক এবং তিনি
সবচেয়ে ভাল সাহায্য-সহায়তা দানকারী।
﴿وَاعْلَمُوا أَنَّمَا
غَنِمْتُم مِّن شَيْءٍ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي
الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ إِن كُنتُمْ
آمَنتُم بِاللَّهِ وَمَا أَنزَلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ
الْتَقَى الْجَمْعَانِ ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
৪১। আর
তোমরা জেনে রাখো, তোমরা যা কিছু গনীমাতের মাল লাভ করেছো তার পাঁচ
ভাগের এক ভাগ আল্লাহ, তাঁর রাসূল, আত্মীয়স্বজন, এতীম মিসকীন ও মুসাফিরদের
জন্য নির্ধারিত।৩২ যদি তোমরা ঈমান এনে থাকো আল্লাহর প্রতি
এবং ফায়সালার দিন অর্থাৎ উভয় সেনাবাহিনীর সামনা সামানি মোকাবিলার দিন আমি নিজের
বান্দার ওপর যা নাযিল করেছিলাম তার প্রতি,৩৩ (অতএব সানন্দে এ অংশ আদায় করো) আল্লাহ
প্রত্যেকটি জিনিসের ওপর শক্তিশালী।
﴿إِذْ أَنتُم
بِالْعُدْوَةِ الدُّنْيَا وَهُم بِالْعُدْوَةِ الْقُصْوَىٰ وَالرَّكْبُ أَسْفَلَ
مِنكُمْ ۚ وَلَوْ تَوَاعَدتُّمْ لَاخْتَلَفْتُمْ فِي
الْمِيعَادِ ۙ وَلَٰكِن لِّيَقْضِيَ اللَّهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولًا
لِّيَهْلِكَ مَنْ هَلَكَ عَن بَيِّنَةٍ وَيَحْيَىٰ مَنْ حَيَّ عَن
بَيِّنَةٍ ۗ وَإِنَّ اللَّهَ لَسَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
৪২। স্মরণ
করো সেই সময়ের কথা যখন তোমরা উপত্যকার এদিকে ছিলে এবং তারা ছিল অন্যদিকে শিবির
তৈরী করে আর কাফেলা ছিল তোমাদের থেকে নিচের(উপকূল) দিকে। যদি
আগেভাগেই তোমাদের ও তাদের মধ্যে মোকাবিলার চুক্তি থাকতো তাহলে তোমরা অবশ্যি এ
সময় পাশ কাটিয়ে যেতে। কিন্তু
যা কিছু সংঘটিত হয়েছে তা এ জন্য ছিল যে, আল্লাহ যে বিষয়ের ফায়সালা করে
ফেলেছিলেন তা তিনি কার্যকর করবেনই। এভাবে
যাকে ধ্বংস হতে হবে সে সুষ্পষ্ট প্রমাণ সহকারে ধ্বংস হবে এবং যাকে জীবিত থাকতে হবে
সে সুষ্পষ্ট প্রমাণ সহকারে জীবিত থাকবে।৩৪ অবশ্যি আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও সবকিছু
জানেন।৩৫
﴿إِذْ يُرِيكَهُمُ
اللَّهُ فِي مَنَامِكَ قَلِيلًا ۖ وَلَوْ أَرَاكَهُمْ كَثِيرًا
لَّفَشِلْتُمْ وَلَتَنَازَعْتُمْ فِي الْأَمْرِ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ
سَلَّمَ ۗ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ﴾
৪৩। আর স্মরণ
করো, যখন হে নবী, আল্লাহ তোমাদের স্বপ্নের
মধ্যে তাদেরকে সামান্য সংখক দেখাচ্ছিলেন।৩৬ যদি তিনি তোমাকে তাদের সংখ্যা বেশী
দেখিয়ে দিতেন তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলতে এবং যুদ্ধ করার ব্যাপরে ঝগড়া
শুরু করে দিতে। কিন্তু আল্লাহই
তোমাদের এ থেকে রক্ষা করেছেন। অবশ্যি
তিনি মনের অবস্থাও জানেন।
﴿وَإِذْ يُرِيكُمُوهُمْ
إِذِ الْتَقَيْتُمْ فِي أَعْيُنِكُمْ قَلِيلًا وَيُقَلِّلُكُمْ فِي أَعْيُنِهِمْ
لِيَقْضِيَ اللَّهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولًا ۗ وَإِلَى اللَّهِ
تُرْجَعُ الْأُمُورُ﴾
৪৪। আর স্মরণ
করো, যখন
সমানাসমানি যুদ্ধের সময় আল্লাহ তোমাদের দৃষ্টিতে শত্রুদের সামান্য সংখ্যক
দেখিয়েছেন এবং তাদের দৃষ্টিতেও তোমাদের কম করে দেখিয়েছেন, যাতে যে বিষয়টি অনিবার্য ছিল
তাকে আল্লাহ প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন এবং শেষ পর্যন্ত সমস্ত আল্লাহর দিকেই ফিরে যায়।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا
لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
৪৫। হে
ঈমানদারগণ! যখন কোন দলের সাথে তোমাদের মোকাবিলা হয়, তোমরা দৃঢ়পদ থাকো এবং
আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো বেশী বেশী করে। আশা করা
যায়, এতে তোমরা
সাফল্য অর্জন করবে।
﴿وَأَطِيعُوا اللَّهَ
وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ
رِيحُكُمْ ۖ وَاصْبِرُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ﴾
৪৬। আর
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে বিবাদ করো না, তাহলে তোমাদের মধ্যে
দুর্বলতা দেখা দেবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তির দিন শেষ হয়ে যাবে। সবরের পথ
অবলম্বন করো,৩৭ অবশ্যি
আল্লাহ সবরকারীদের সাথে রয়েছেন।
﴿وَلَا تَكُونُوا
كَالَّذِينَ خَرَجُوا مِن دِيَارِهِم بَطَرًا وَرِئَاءَ النَّاسِ وَيَصُدُّونَ عَن
سَبِيلِ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ﴾
৪৭। আর
তোমরা এমন লোকদের মত আচরণ করো না, যারা অহংকার করতে করতে ও
লোকদেরকে নিজেদের মাহাত্ম্যা দেখাতে দেখাতে ঘর থেকে বের হয়েছে এবং যারা আল্লাহর
পথ থেকে (মানুষেকে) বিরত রাখে।৩৮ তারা যা কিছু করেছে তা আল্লাহর নাগালের
বাইরে নয়।
﴿وَإِذْ زَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ
أَعْمَالَهُمْ وَقَالَ لَا غَالِبَ لَكُمُ الْيَوْمَ مِنَ النَّاسِ وَإِنِّي جَارٌ
لَّكُمْ ۖ فَلَمَّا تَرَاءَتِ الْفِئَتَانِ نَكَصَ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ
وَقَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكُمْ إِنِّي أَرَىٰ مَا لَا تَرَوْنَ إِنِّي أَخَافُ
اللَّهَ ۚ وَاللَّهُ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
৪৮। সেই
সময়ের কথা একটু মনে করো যখন শয়তান এদের কার্যকলাপ ওদের চোখে ঔজ্জ্বল্যময় করে
দেখিয়েছিল এবং এদেরকে বলেছিল, আজ তোমাদের ওপর কেউ বিজয়ী হতে পারে না
এবং আমি তোমাদের সাথে আছি। কিন্তু
যখন উভয় বাহিনীর সামানাসামনি মোকাবিলা শুরু হলো তখনই সে পিছনের দিকে ফিরে গেলো
এবং বলতে লাগলোঃ তোমাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি এমন
কিছু দেখছি যা তোমরা দেখো না। আমি
আল্লাহকে ভয় পাচ্ছি। আল্লাহ
বড় কঠোর শাস্তিদাতা।
﴿إِذْ يَقُولُ
الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ غَرَّ هَٰؤُلَاءِ
دِينُهُمْ ۗ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ
حَكِيمٌ﴾
৪৯। যখন
মুনাফিকরা এবং যাদের দিলে রোগ আছে তারা সবাই বলছিল, এদের দীনই তো এদের মাথা
বিগড়ে দিয়েছে।৩৯ অথচ যদি কেউ আল্লাহর ওপর ভরসা করে তাহলে
আল্লাহ অবশ্যি বড়ই পরাক্রান্ত ও জ্ঞানী।
﴿وَلَوْ تَرَىٰ إِذْ
يَتَوَفَّى الَّذِينَ كَفَرُوا ۙ الْمَلَائِكَةُ يَضْرِبُونَ
وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَارَهُمْ وَذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ﴾
৫০। হায়, যদি তোমরা সেই অবস্থা দেখতে
পেতে যখন ফেরেশতারা নিহত কাফেরদের রূহ কবয করেছিল। তারা
তাদের চেহারায় ও পিঠে আঘাত করছিল এবং বলে চলছিল নাও এবং জ্বালাপোড়ার শাস্তি ভোগ
করো।
﴿ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ
أَيْدِيكُمْ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ﴾
৫১। এ হচ্ছে
সেই অপকর্মের প্রতিফল যা তোমরা আগেই করে রেখে এসেছো। নয়তো
আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর জুলুমকারী নন।
﴿كَدَأْبِ آلِ
فِرْعَوْنَ ۙ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَفَرُوا بِآيَاتِ
اللَّهِ فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ
شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
৫২। এ
ব্যাপারটি তাদের সাথে ঠিক তেমনিভাবে ঘটেছে যেমন ফেরাউনের লোকদেরও তাদের আগের
অন্যান্য লোকদের সাথে ঘটে এসেছে। তারা
আল্লাহর আয়াত সমূহ মেনে নিতে অস্বীকার করেছে। ফলে
তাদের গোনাহের ওপর আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও করেছেন। আল্লাহ
ক্ষমতাশালী এবং কঠোর শাস্তিদাতা।
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ
لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَىٰ قَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا
مَا بِأَنفُسِهِمْ ۙ وَأَنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
৫৩। এটা ঠিক
আল্লাহর এ রীতি অনুযায়ী হয়েছে, যে রীতি অনুযায়ী তিনি কোন জাতিকে কোন
নিয়ামত দান করে ততক্ষণ পর্যন্ত তার মধ্যে কোন পরিবর্তন সাধন করেন না যতক্ষন না
সেই জাতি নিজেই নিজের কর্মনীতির পরিবর্তন সাধন করে।৪০ আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
﴿كَدَأْبِ آلِ
فِرْعَوْنَ ۙ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَذَّبُوا
بِآيَاتِ رَبِّهِمْ فَأَهْلَكْنَاهُم بِذُنُوبِهِمْ وَأَغْرَقْنَا آلَ
فِرْعَوْنَ ۚ وَكُلٌّ كَانُوا ظَالِمِينَ﴾
৫৪। ফেরাউনের
লোকজন ও তাদের আগের জাতিদের সাথে যা কিছু ঘটেছে এ রীতি অনুযায়ীই ঘটেছে। তারা
নিজেদের রবের নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা সাব্যস্থ করেছে। ফলে
তাদের গুনাহের জন্য আমি তাদের কে ধ্বংস করেছি এবং ফেরাউনের লোক-লস্করকে ডুবিয়ে
দিয়েছি। এরা সবাই ছিল জালেম।
﴿إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ
عِندَ اللَّهِ الَّذِينَ كَفَرُوا فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ﴾
৫৫। অবশ্যি
আল্লাহর কাছে যমিনের ওপর বিচরনশীল জীবের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হচ্ছে তারাই যারা
সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে। তারপর
তারা আর কোন মতেই তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।
﴿الَّذِينَ عَاهَدتَّ
مِنْهُمْ ثُمَّ يَنقُضُونَ عَهْدَهُمْ فِي كُلِّ مَرَّةٍ وَهُمْ لَا يَتَّقُونَ﴾
৫৬। বিশেষ
করে তাদের মধ্যে থেকে এমন সব লোক যাদের সাথে তুমি চুক্তি করছো তারপর তারা
প্রত্যেকবার তা ভংগ করে এবং একটুও আল্লাহর ভয় করে না।৪১
﴿فَإِمَّا
تَثْقَفَنَّهُمْ فِي الْحَرْبِ فَشَرِّدْ بِهِم مَّنْ خَلْفَهُمْ لَعَلَّهُمْ
يَذَّكَّرُونَ﴾
৫৭। কাজেই এ
লোকদের যদি তোমরা যুদ্ধের মধ্যে পাও তাহলে তাদের এমনভাবে মার দেবে যেন তাদের পরে
অন্য যারা এমনি ধরনের আচরণ করতে চাইবে তারা দিশা হারিয়ে ফেলে।৪২ আশা করা যায়,চুক্তি ভংগকারীদের এ পরিণাম
থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করবে।
﴿وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن
قَوْمٍ خِيَانَةً فَانبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَىٰ سَوَاءٍ ۚ إِنَّ اللَّهَ
لَا يُحِبُّ الْخَائِنِينَ﴾
৫৮। আর যদি
কখনো কোন জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের খেয়ানত আশংকা থাকে তাহলে তার চুক্তি
প্রকাশ্যে তার সামনে ছুড়ে দাও।৪৩ নিসন্দেহে আল্লাহ
খেয়ানতকারীকে পছন্দ করেন না।
৫৯। সত্য
অস্বীকারকারীরা যেন এ ভূল ধারণা ও পোষণ না করে যে,তারা জিতে গেছে। নিশ্চয়ই
তারা আমাকে হারাতে পারবে না।
﴿وَأَعِدُّوا لَهُم مَّا
اسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ وَمِن رِّبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ
اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآخَرِينَ مِن دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ
يَعْلَمُهُمْ ۚ وَمَا تُنفِقُوا مِن شَيْءٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يُوَفَّ
إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لَا تُظْلَمُونَ﴾
৬০। আর
তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী সর্বাধিক পরিমাণ শক্তি ও সদাপ্রস্তুত ঘোড়া তাদের
মোকাবিলার জন্য যোগাড় করে রাখো।৪৪ এর মাধ্যমে তোমরা
ভীতসন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শত্রুকে, নিজের শত্রুকে এবং অন্য এমন সব শত্রুকে
যাদেরকে তোমরা চিন না। কিন্তু
আল্লাহ চেনেন। আল্লাহর
পথে তোমরা যা কিছু খরচ করবে তার পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হবে, এবং তোমাদের প্রতি কখনো
জুলুম করা হবে না।
﴿وَإِن جَنَحُوا
لِلسَّلْمِ فَاجْنَحْ لَهَا وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّهُ هُوَ
السَّمِيعُ الْعَلِيمُ﴾
৬১। আর হে
নবী! শত্রু যদি সন্ধিও শান্তির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তাহলে তুমিও সেদিকে ঝুঁকে
পড়ো এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভর করো। নিশ্চয়ই
তিনি সবকিছু শুনেন এবং জানেন।
﴿وَإِن يُرِيدُوا أَن
يَخْدَعُوكَ فَإِنَّ حَسْبَكَ اللَّهُ ۚ هُوَ الَّذِي أَيَّدَكَ
بِنَصْرِهِ وَبِالْمُؤْمِنِينَ﴾
৬২। যদি তারা
তোমাকে প্রতারিত করতে চায় তাহলে তোমার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।৪৫ তিনিই তো নিজের সাহায়তায় ও মুমিনদের
মাধ্যমে তোমাকে সমর্থন জানিয়েছেন
﴿وَأَلَّفَ بَيْنَ
قُلُوبِهِمْ ۚ لَوْ أَنفَقْتَ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مَّا
أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّهُ
عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
৬৩। এবং
মুমিনদের অন্তর পরষ্পরের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। তুমি
সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ ব্যয় করলেও এদের অন্তর জোড়া দিতে পারতে না।কিন্তু
আল্লাহ তাদের অন্তর জুড়ে দিয়েছেন।৪৬ অবশ্যি তিনি বড়ই পরাক্রমশালী ও জ্ঞানী।
﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ
حَسْبُكَ اللَّهُ وَمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ﴾
৬৪। হে নবী! তোমার জন্য ও তোমার অনুসারী ঈমানদারদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ
حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ ۚ إِن يَكُن مِّنكُمْ
عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ وَإِن يَكُن مِّنكُم
مِّائَةٌ يَغْلِبُوا أَلْفًا مِّنَ الَّذِينَ كَفَرُوا بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا
يَفْقَهُونَ﴾
৬৫। হে নবী! মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করো। তোমাদের
মধ্যে বিশজন সবরকারী থাকলে তার দুশ জনের ওপর বিজয়ী হবে। আর যদি এমনি
ধরনের একশ জন থাকে তাহলে তারা সত্য অস্বীকারকারীদের মধ্যে থেকে এক হাজার জনের ওপর
বিজয়ী হবে। কারণ তারা এমন এক
ধরনের লোক যাদের বোধশক্তি নেই।৪৭
﴿الْآنَ خَفَّفَ اللَّهُ
عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًا ۚ فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ
صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ وَإِن يَكُن مِّنكُمْ أَلْفٌ
يَغْلِبُوا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ مَعَ
الصَّابِرِينَ﴾
৬৬। বেশ, এখন আল্লাহ তোমাদের বোঝা
হালকা করে দিয়েছেন। এবং তিনি
জেনেছেন যে এখনো তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। কাজেই
যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন সবরকারী হয় তাহলে তারা দুশ জনের ওপর এবং এক হাজার লোক
এমনি পর্যায়ের হলে তারা দুহাজারের ওপর আল্লাহর হুকুমে বিজয়ী হবে।৪৮ আর আল্লাহ সবরকারীদের সাথে
আছেন।
﴿مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَن
يَكُونَ لَهُ أَسْرَىٰ حَتَّىٰ يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ ۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ
الدُّنْيَا وَاللَّهُ يُرِيدُ الْآخِرَةَ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
৬৭। সারা
দেশে শত্রুদেরকে ভালভাবে পর্যুদস্ত না করা পর্যন্ত কোন নবীর পক্ষে নিজের কাছে
বন্দীদের রাখা শোভনীয় নয়। তোমরা
চাও দুনিয়ার স্বার্থ। অথচ
আল্লাহর সামনে রয়েছে আখেরাত। আর
আল্লাহ পরাক্রমশালী ও বিজ্ঞ।
﴿لَّوْلَا كِتَابٌ مِّنَ
اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
৬৮। আল্লাহর
লিখন যদি আগেই না লেখা হয়ে যেতো, তাহলে তোমরা যা কিছু করেছো
সে জন্য তোমাদের কঠোর শাস্তি দেয়া হতো।
﴿فَكُلُوا مِمَّا
غَنِمْتُمْ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ
اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৬৯। কাজেই
তোমরা যা কিছু সম্পদ লাভ করেছো তা খাও, কেননা, তা হালাল ও পাক-পবিত্র এবং
আল্লাহকে ভয় করতে থাকো।৪৯ নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ
قُل لِّمَن فِي أَيْدِيكُم مِّنَ الْأَسْرَىٰ إِن يَعْلَمِ اللَّهُ فِي
قُلُوبِكُمْ خَيْرًا يُؤْتِكُمْ خَيْرًا مِّمَّا أُخِذَ مِنكُمْ وَيَغْفِرْ
لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৭০। হে নবী! তোমাদের হাতে যেসব বন্দী আছে তাদেরকে বলো, যদি আল্লাহ তোমাদের অন্তরে
ভাল কিছু দেখেন, তাহলে তিনি
তোমাদের থেকে যা নেয়া হয়েছে তা থেকে অনেক বেশী দেবেন এবং তোমাদের ভূলগুলোর মাফ
করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
﴿وَإِن يُرِيدُوا
خِيَانَتَكَ فَقَدْ خَانُوا اللَّهَ مِن قَبْلُ فَأَمْكَنَ
مِنْهُمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
৭১। কিন্তু
তারা যদি তোমার সাথে বিশ্বাস ভংগ করতে চায় তাহলে এর আগেও তারা আল্লাহর সাথে
বিশ্বাস ভংগ করেছে, কাজেই এরি সাজা আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন, যার ফলে তারা তোমার করায়ত্ব
হয়েছে। আর আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং তিনি
জ্ঞানী।
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا
وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا أُولَٰئِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ
بَعْضٍ ۚ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يُهَاجِرُوا مَا لَكُم مِّن
وَلَايَتِهِم مِّن شَيْءٍ حَتَّىٰ يُهَاجِرُوا ۚ وَإِنِ اسْتَنصَرُوكُمْ
فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم
مِّيثَاقٌ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ﴾
৭২। যারা
ঈমান এনেছে, হিজরাত
করেছে এবং আল্লাহর পথে নিজের জানমালের ঝুকি নিয়ে জিহাদ করেছে আর যারা
হিজরাতকারীদেরকে আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, আসলে তারাই পরস্পরের বন্ধু ও
অভিভাবক। আর যারা ঈমান এনেছে ঠিকই কিন্তু
হিজরাত করে (দারুল ইসলামে) আসেনি
তারা হিজরাত করে না আসা পর্যন্ত তাদের সাথে তোমাদের বন্ধুত্বের ও অভিভাবকত্বের
কোন সম্পর্ক নেই।৫০ তবে হাঁ দীনের ব্যাপারে যদি তারা তোমাদের
কাছে সাহায্য চায় তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের জন্য ফরয। কিন্তু
এমন কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয় যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে।৫১ তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা দেখেন।
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا
بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ إِلَّا تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌ فِي
الْأَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ﴾
৭৩। যারা
সত্য অস্বীকার করেছে তারা পরষ্পরের সাহায্য সহযোগীতা করে। যদি
তোমরা এটা না করো তাহলে পৃথিবীতে ফিতনা সৃষ্টি হবে ও বড় বিপর্যয় দেখা দেবে।৫২
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا
وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا
أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ
كَرِيمٌ﴾
৭৪। যারা
ঈমান এনেছে, আল্লাহর
পথে বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে এবং জিহাদ করেছে আর যারা আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য-সহায়তা
করেছে তারাই সাচ্চা মুমিন। তাদের
জন্যে রয়েছে ভূলের ক্ষমা ও সর্বোত্তম রিযিক।
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا مِن
بَعْدُ وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا مَعَكُمْ فَأُولَٰئِكَ
مِنكُمْ ۚ وَأُولُو الْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَىٰ بِبَعْضٍ فِي
كِتَابِ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
৭৫। আর যারা
পরে ঈমান এনেছে ও হিজরত করে এসেছে এবং৫৩ অবশ্যি আল্লাহ সব জিনিস জানেন।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।