০৬৩. সূরা আল মুনাফিকুন
আয়াতঃ ১১; রুকুঃ ০২; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿إِذَا جَآءَكَ ٱلْمُنَـٰفِقُونَ
قَالُوا۟ نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُولُ ٱللَّهِ ۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّكَ لَرَسُولُهُۥ
وَٱللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّ ٱلْمُنَـٰفِقِينَ لَكَـٰذِبُونَ﴾
১। হে নবী, এ মুনাফিকরা যখন তোমার কাছে আসে তখন
বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি
অবশ্যই আল্লাহর রাসূল। আল্লাহ জানেন, তুমি অবশ্যই তাঁর রাসূল। কিন্তু আল্লাহ
সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।১
﴿ٱتَّخَذُوٓا۟ أَيْمَـٰنَهُمْ
جُنَّةًۭ فَصَدُّوا۟ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ ۚ إِنَّهُمْ سَآءَ مَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ﴾
২। তারা নিজেদের শপথসমূহকে ঢাল বানিয়ে রেখেছে।২ এভাবে তারা নিজেরা
আল্লাহর পথ থেকে বিরত থাকছে এবং অন্যদেরকেও বিরত রাখছে।৩ এরা যা করছে তা কত মন্দ কাজ!
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ ءَامَنُوا۟
ثُمَّ كَفَرُوا۟ فَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ﴾
৩। এ সবের কারণ এই যে, তারা ঈমান আনার পর আবার
কুফরী করেছে। তাই তাদের হৃদয়ে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। এখন তারা কিছুই বুঝে
না।৪
﴿وَإِذَا رَأَيْتَهُمْ تُعْجِبُكَ
أَجْسَامُهُمْ ۖ وَإِن يَقُولُوا۟ تَسْمَعْ لِقَوْلِهِمْ ۖ كَأَنَّهُمْ خُشُبٌۭ مُّسَنَّدَةٌۭ
ۖ يَحْسَبُونَ كُلَّ صَيْحَةٍ عَلَيْهِمْ ۚ هُمُ ٱلْعَدُوُّ فَٱحْذَرْهُمْ ۚ قَـٰتَلَهُمُ
ٱللَّهُ ۖ أَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ﴾
৪। তুমি যখন এদের প্রতি তাকিয়ে দেখ, তখন তাদের দেহাবয় তোমার
কাছে খুবই আকর্ষণীয় মনে হয়। আর যখন কথা বলে তখন তাদের কথা তোমার
শুনতেই ইচ্ছা করে।৫ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা দেয়ালের গায়ে খাড়া
করে রাখা কাঠের গুড়ির মত।৬ যে কোন জোরদার
আওয়াজকে এরা নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে।৭ এরাই কট্টর দুশমন।৮ এদের ব্যাপারে সাবধান
থাক।৯ এদের ওপর আল্লাহর গযব।১০ এদেরকে উল্টো কোনদিকে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে?১১
﴿وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا۟
يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُولُ ٱللَّهِ لَوَّوْا۟ رُءُوسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّونَ
وَهُم مُّسْتَكْبِرُونَ﴾
৫। যখন তাদের বলা হয়, এসো আল্লাহর রাসূল যাতে
তোমাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন তখন তারা মাথা ঝাঁকুনি দেয় আর তুমি দেখবে যে,
তারা অহমিকা ভরে আসতে বিরত থাকে।১২
﴿سَوَآءٌ عَلَيْهِمْ أَسْتَغْفَرْتَ
لَهُمْ أَمْ لَمْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ لَن يَغْفِرَ ٱللَّهُ لَهُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ
لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلْفَـٰسِقِينَ﴾
৬। হে নবী, তুমি তাদের
জন্য মাগফিরাতের দোয়া কর বা না কর, উভয় অবস্থাই তাদের জন্য
সমান। আল্লাহ কখনো তাদের মাফ করবেন না।১৩ আল্লাহ ফাসিকদের কখনো হিদায়াত
দান করেন না।১৪
﴿هُمُ ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ
لَا تُنفِقُوا۟ عَلَىٰ مَنْ عِندَ رَسُولِ ٱللَّهِ حَتَّىٰ يَنفَضُّوا۟ ۗ وَلِلَّهِ
خَزَآئِنُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَلَـٰكِنَّ ٱلْمُنَـٰفِقِينَ لَا يَفْقَهُونَ﴾
৭। এরাই তো
সেই সব লোক যারা বলে, আল্লাহর রাসূলের সাথীদের জন্য খরচ
করা বন্ধ করে দাও যাতে তারা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। অথচ আসমান
ও যমীনের সমস্ত ধন ভাণ্ডারের মালিকানা একমাত্র আল্লাহর। কিন্তু এই
মুনাফিকরা তা বুঝে না।
﴿يَقُولُونَ لَئِن رَّجَعْنَآ
إِلَى ٱلْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ ٱلْأَعَزُّ مِنْهَا ٱلْأَذَلَّ ۚ وَلِلَّهِ ٱلْعِزَّةُ
وَلِرَسُولِهِۦ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَـٰكِنَّ ٱلْمُنَـٰفِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ﴾
৮। এরা বলে, আমরা মদীনায়
ফিরে যেতে পারলে যে সম্মানিত সে হীন ও নীচদেরকে সেখান থেকে বের করে দেবে।১৫ অথচ সম্মান ও মর্যাদা তো কেবল
আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য।১৬ কিন্তু
এসব মুনাফিক তা জানে না।
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَٰلُكُمْ وَلَآ أَوْلَـٰدُكُمْ عَن ذِكْرِ ٱللَّهِ
ۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَـٰسِرُونَ﴾
৯। হে১৭ সেই সব লোক যারা ঈমান এসেছো, তোমাদের
ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল করে না দেয়।১৮ যারা
এরূপ করবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।
﴿وَأَنفِقُوا۟ مِن مَّا رَزَقْنَـٰكُم
مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ أَحَدَكُمُ ٱلْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَآ أَخَّرْتَنِىٓ
إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ قَرِيبٍۢ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ﴾
১০। আমি
তোমাদের যে রিযিক দিয়েছি তোমাদের কারো মৃত্যুর সময় আসার পূর্বেই তা থেকে খরচ করো। সে সময় সে
বলবেঃ হে আমার রব, তুমি আমাকে আরো কিছুটা অবকাশ দিলে না কেন?
তাহলে আমি দান করতাম এবং নেককার লোকদের মধ্যে শামিল হয়ে যেতাম। অথচ যখন
কারো কাজের অবকাশ পূর্ণ হয়ে যাওয়ার সময় এসে যায় তখন আল্লাহ
﴿وَلَن يُؤَخِّرَ ٱللَّهُ
نَفْسًا إِذَا جَآءَ أَجَلُهَا ۚ وَٱللَّهُ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾
১১। তাকে আর
কোন অবকাশ মোটেই দেন না। তোমরা যা কিছু কর সে বিষয়ে
আল্লাহ পুরোপুরি অবহিত।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।