০২৯. সূরা আল আনকাবূত
আয়াতঃ ৬৯; রুকুঃ ০৭; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿الم﴾
১।
আলিম-লাম-মীম।
﴿أَحَسِبَ النَّاسُ أَن
يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ﴾
২। লোকেরা কি
মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু
বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না?১
﴿وَلَقَدْ فَتَنَّا
الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۖ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا
وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ﴾
৩। অথচ আমি
তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি২ আল্লাহ
অবশ্যই দেখবেন৩ কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক।
﴿أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ
يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ أَن يَسْبِقُونَا ۚ سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ﴾
৪। আর যারা
খারাপ কাজ করছে৪ তারা কি মনে করে বসেছে তারা আমার
থেকে এগিয়ে চলে যাবে?৫ বড়ই ভুল সিদ্ধান্ত তারা করছে।
﴿مَن كَانَ يَرْجُو
لِقَاءَ اللَّهِ فَإِنَّ أَجَلَ اللَّهِ لَآتٍ ۚ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ﴾
৫। যে কেউ
আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করার আশা করে (তার জানা উচিত), আল্লাহর
নির্ধারিত সময় আসবেই।৬ আর আল্লাহ
সবকিছু শোনেন ও জানেন।৭
﴿وَمَن جَاهَدَ
فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ﴾
৬। যে
ব্যক্তিই প্রচেষ্টা-সংগ্রাম করবে সে নিজের ভালোর জন্যই করবে।৮ আল্লাহ
অবশ্যই বিশ্ববাসীদের প্রতি মুখাপেক্ষিতাহীন।৯
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَنُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ
وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَحْسَنَ الَّذِي كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
৭। আর যারা
ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদের দুষ্কৃতিগুলো আমি তাদের থেকে দূর করে দেবো এবং
তাদেরকে তাদের সর্বোত্তম কাজগুলোর প্রতিদান দেবো।১০
﴿وَوَصَّيْنَا
الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا ۖ وَإِن جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ
لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا ۚ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا
كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
৮। আমি
মানুষকে নিজের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু
যদি তারা তোমার ওপর চাপ দেয় যে, তুমি এমন কোন (মা’বুদকে)
আমার সাথে শরীক করো যাকে তুমি (আমার শরীক হিসেবে)জানো না, তাহলে
তাদের আনুগত্য করো না।১১ আমার দিকেই
তোমাদের সবাইকে ফিরে আসতে হবে, তখন আমি তোমাদের জানাবো
তোমরা কি করছিলে।১২
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَنُدْخِلَنَّهُمْ فِي الصَّالِحِينَ﴾
৯। আর যারা
ঈমান আনবে ও সৎকাজ করে থাকবে তাদেরকে আমি নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করবো।
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَن
يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ
كَعَذَابِ اللَّهِ وَلَئِن جَاءَ نَصْرٌ مِّن رَّبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا
مَعَكُمْ ۚ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ﴾
১০। লোকদের
মধ্যে এমন কেউ আছে যে বলে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি১৩ কিন্তু যখন
সে আল্লাহর ব্যাপারে নিগৃহীত হয়েছে তখন লোকদের চাপিয়ে দেয়া পরীক্ষাকে আল্লাহর
আযাবের মতো মনে করে নিয়েছে।১৪ এখন যদি
তোমার রবের পক্ষ থেকে বিজয় ও সাহায্য এসে যায়, তাহলে এ
ব্যক্তিই বলবে, “আমরা তো তোমাদের সাথে ছিলাম”।১৫ বিশ্ববাসীদের
মনের অবস্থা কি আল্লাহ ভালোভাবে জানেন না?
﴿وَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ
الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْمُنَافِقِينَ﴾
১১। আর আল্লাহ
তো অবশ্যই দেখবেন কারা ঈমান এনেছে এবং কারা মুনাফিক।১৬
﴿وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا
لِلَّذِينَ آمَنُوا اتَّبِعُوا سَبِيلَنَا وَلْنَحْمِلْ خَطَايَاكُمْ وَمَا هُم
بِحَامِلِينَ مِنْ خَطَايَاهُم مِّن شَيْءٍ ۖ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ﴾
১২। এ কাফেররা
মু’মিনদেরকে বলে, তোমরা আমাদের পথ অনুসরণ করো এবং আমরা
তোমাদের গুনাহখাতাগুলো নিজেদের ওপর চাপিয়ে নেবো,১৭ অথচ তাদের
গুনাহখাতার কিছুই তারা নিজের ওপর চাপিয়ে নেবে না,১৮ তারা ডাহা
মিথ্যা বলছে।
﴿وَلَيَحْمِلُنَّ
أَثْقَالَهُمْ وَأَثْقَالًا مَّعَ أَثْقَالِهِمْ ۖ وَلَيُسْأَلُنَّ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ عَمَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ﴾
১৩। হ্যাঁ
নিশ্চয়ই তারা নিজেদের বোঝাও বইবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে অন্য অনেক বোঝাও।১৯ আর তারা যে
মিথ্যাচার চালিয়ে এসেছে কিয়ামতের দিন নিশ্চয়ই তাদেরকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা
হবে।২০
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا
نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِ فَلَبِثَ فِيهِمْ أَلْفَ سَنَةٍ إِلَّا خَمْسِينَ عَامًا
فَأَخَذَهُمُ الطُّوفَانُ وَهُمْ ظَالِمُونَ﴾
১৪। আমি নূহকে
তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই২১ এবং সে
তাদের মধ্যে থাকে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর।২২ শেষ
পর্যন্ত তুফান তাদেরকে ঘিরে ফেলে এমন অবস্থায় যখন তারা জালেম ছিল।২৩
﴿فَأَنجَيْنَاهُ
وَأَصْحَابَ السَّفِينَةِ وَجَعَلْنَاهَا آيَةً لِّلْعَالَمِينَ﴾
১৫। তারপর আমি
নূহকে ও নৌকা আরোহীদেরকে২৪ রক্ষা করি
এবং একে বিশ্ববাসীর জন্য একটি শিক্ষণীয় নিদর্শন করে রাখি।২৫
﴿وَإِبْرَاهِيمَ إِذْ
قَالَ لِقَوْمِهِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاتَّقُوهُ ۖ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن
كُنتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
১৬। আর
ইবরাহীমকে পাঠাই২৬ যখন সে তার
সম্প্রদায়কে বলে, “আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাঁকে ভয় করো।২৭ এটা
তোমাদের জন্য ভালো যদি তোমরা জানো।
﴿إِنَّمَا تَعْبُدُونَ
مِن دُونِ اللَّهِ أَوْثَانًا وَتَخْلُقُونَ إِفْكًا ۚ إِنَّ الَّذِينَ
تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوا عِندَ
اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ ۖ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ﴾
১৭। তোমরা
আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে পূজা করছো তারাতো নিছক মূর্তি আর তোমরা একটি মিথ্যা
তৈরি করছো।২৮ আসলে
আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তোমরা পূজা করো তারা তোমাদের কোন রিযিকও দেবার ক্ষমতা
রাখে না, আল্লাহর কাছে রিযিক চাও, তাঁরই বন্দেগী করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তারই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।২৯
﴿وَإِن تُكَذِّبُوا
فَقَدْ كَذَّبَ أُمَمٌ مِّن قَبْلِكُمْ ۖ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا
الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
১৮। আর যদি
তোমরা মিথ্যা আরোপ করো, তাহলে পূর্বে বহু জাতি মিথ্যা আরোপ
করেছে৩০ এবং
রাসূলের ওপর পরিষ্কারভাবে পয়গাম পৌঁছিয়ে দেয়া ছাড়া আর কোন দায়িত্ব নেই।”
﴿أَوَلَمْ يَرَوْا كَيْفَ
يُبْدِئُ اللَّهُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ
يَسِيرٌ﴾
১৯। এরা৩১ কি কখনো
লক্ষ করেনি আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তার পুনরাবৃত্তি করেন? নিশ্চয়ই এ
(পুনরাবৃত্তি) আল্লাহর জন্য সহজতর।৩২
﴿قُلْ سِيرُوا فِي
الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ بَدَأَ الْخَلْقَ ۚ ثُمَّ اللَّهُ يُنشِئُ
النَّشْأَةَ الْآخِرَةَ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
২০। এদেরকে
বলো, পৃথিবীর বুকে চলাফেরা করো এবং দেখো তিনি
কিভাবে সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর আল্লাহ দ্বিতীয়বারও জীবন
দান করবেন। অবশ্যই আল্লাহ সব জিনিসের ওপর শক্তিশালী।৩৩
﴿يُعَذِّبُ مَن يَشَاءُ
وَيَرْحَمُ مَن يَشَاءُ ۖ وَإِلَيْهِ تُقْلَبُونَ﴾
২১। যাকে চান
শাস্তি দেন এবং যার প্রতি চান করুণা বর্ষণ করেন, তাঁরই দিকে
তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
﴿وَمَا أَنتُم
بِمُعْجِزِينَ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ ۖ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ
اللَّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ﴾
২২। তোমরা না
পৃথিবীতে অক্ষমকারী, না আকাশে৩৪ এবং
আল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করার মতো কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী তোমাদের নেই।৩৫
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا
بِآيَاتِ اللَّهِ وَلِقَائِهِ أُولَٰئِكَ يَئِسُوا مِن رَّحْمَتِي وَأُولَٰئِكَ
لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
২৩। যারা
আল্লাহর আয়াত এবং তার সাথে সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারা আমার
রহমত থেকে নিরাশ হয়ে গেছে৩৬ এবং তাদের
জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
﴿فَمَا كَانَ جَوَابَ
قَوْمِهِ إِلَّا أَن قَالُوا اقْتُلُوهُ أَوْ حَرِّقُوهُ فَأَنجَاهُ اللَّهُ مِنَ
النَّارِ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ﴾
২৪। তারপর৩৭ সেই জাতির
জবাব এ ছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, তারা বললো, “একে হত্যা করো অথবা পুড়িয়ে ফেলো।”৩৮ শেষ পর্য্ন্ত
আল্লাহ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করেন।৩৯ অবশ্যই এর
মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে।৪০
﴿وَقَالَ إِنَّمَا
اتَّخَذْتُم مِّن دُونِ اللَّهِ أَوْثَانًا مَّوَدَّةَ بَيْنِكُمْ فِي الْحَيَاةِ
الدُّنْيَا ۖ ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُ بَعْضُكُم بِبَعْضٍ وَيَلْعَنُ
بَعْضُكُم بَعْضًا وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُم مِّن نَّاصِرِينَ﴾
২৫। আর সে
বললো,৪১ “তোমরা দুনিয়ার
জীবনের তো আল্লাহকে বাদ দিয়ে মূর্তিগুলোকে নিজেদের মধ্যে প্রীতি-ভালোবাসার মাধ্যমে
পরিণত করে নিয়েছো।৪২ কিন্তু
কিয়ামতের দিন তোমরা পরস্পরকে অস্বীকার এবং পরস্পরের প্রতি অভিসম্পাত করবে৪৩ আর আগুন
তোমাদের আবাস হবে এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী হবে না।”
﴿فَآمَنَ لَهُ لُوطٌ ۘ
وَقَالَ إِنِّي مُهَاجِرٌ إِلَىٰ رَبِّي ۖ إِنَّهُ هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾
২৬। সে সময়
লূত তাকে মেনে নেয়৪৪ এবং
ইবরাহীমকে বলে, আমি আমার রবের দিকে হিজরাত করছি,৪৫ তিনি
পরাক্রমশালী ও জ্ঞানী।৪৬
﴿وَوَهَبْنَا لَهُ
إِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَجَعَلْنَا فِي ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتَابَ
وَآتَيْنَاهُ أَجْرَهُ فِي الدُّنْيَا ۖ وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ
الصَّالِحِينَ﴾
২৭। আর আমি
তাকে ইসহাক ও ইয়া’কুব (এর মতো সন্তান) দান করি৪৭ এবং তার
বংশধরদের মধ্যে রেখে দিই নবুওয়াত ও কিতাব৪৮ এবং তাকে
দুনিয়ায় এর প্রতিদান দিই আর আখেরাতে সে নিশ্চিতভাবেই সৎকর্মশালীদের অন্তর্ভুক্ত
হবে।৪৯
﴿وَلُوطًا إِذْ قَالَ
لِقَوْمِهِ إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ
مِّنَ الْعَالَمِينَ﴾
২৮। আর আমি
লূত কে পাঠাই৫০ যখন সে তার
সম্প্রদায়কে বললো, “তোমরা তো এমন অশ্লীল কাজ করছো যা তোমাদের
পূর্বে বিশ্ববাসীদের মধ্যে কেউ করেনি।
﴿أَئِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ
الرِّجَالَ وَتَقْطَعُونَ السَّبِيلَ وَتَأْتُونَ فِي نَادِيكُمُ الْمُنكَرَ ۖ
فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِ إِلَّا أَن قَالُوا ائْتِنَا بِعَذَابِ اللَّهِ إِن
كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ﴾
২৯। তোমাদের
অবস্থা কি এ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, তোমরা পুরুষদের কাছে
যাচ্ছো,৫১ রাহাজানি
করছো এবং নিজেদের মজলিসে খারাপ কাজ করছো?৫২ তারপর তার
সম্প্রদায়ের কাছে এ ছাড়া আর কোন জবাব ছিল না যে, তারা বললো,
“নিয়ে এসো আল্লাহর আযাব যদি তুমি সত্যবাদী হও”।
﴿قَالَ رَبِّ انصُرْنِي
عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِينَ﴾
৩০। লূত বললো, “হে আমার রব!
এ বিপর্যয় সৃষ্টিকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করো।”
﴿وَلَمَّا جَاءَتْ
رُسُلُنَا إِبْرَاهِيمَ بِالْبُشْرَىٰ قَالُوا إِنَّا مُهْلِكُو أَهْلِ هَٰذِهِ
الْقَرْيَةِ ۖ إِنَّ أَهْلَهَا كَانُوا ظَالِمِينَ﴾
৩১। আর যখন
আমার প্রেরিতগণ ইবরাহীমের কাছে সুসংবাদ নিয়ে পৌঁছলো,৫৩ তারা তাকে
বললো, “আমরা এ জনপদের লোকদেরকে ধ্বংস করে দেবো,৫৪ এর
অধিবাসীরা বড়ই জালেম হয়ে গেছে।”
﴿قَالَ إِنَّ فِيهَا
لُوطًا ۚ قَالُوا نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَن فِيهَا ۖ لَنُنَجِّيَنَّهُ وَأَهْلَهُ
إِلَّا امْرَأَتَهُ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ﴾
৩২। ইবরাহীম
বললো, “সেখানে তো লূত আছে।”৫৫ তারা বললো, “আমরা
ভালোভাবেই জানি সেখানে কে কে আছে, আমরা তাকে ও তার
পরিবারবর্গকে রক্ষা করবো তার স্ত্রীকে ছাড়া;” সে ছিল পেছনে
অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।৫৬
﴿وَلَمَّا أَن جَاءَتْ
رُسُلُنَا لُوطًا سِيءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًا وَقَالُوا لَا تَخَفْ وَلَا
تَحْزَنْ ۖ إِنَّا مُنَجُّوكَ وَأَهْلَكَ إِلَّا امْرَأَتَكَ كَانَتْ مِنَ
الْغَابِرِينَ﴾
৩৩। তারপর যখন
আমার প্রেরিতগণ লূতের কাছে পৌঁছলো তাদের আগমনে সে অত্যন্ত বিব্রত ও সংকুচিত হৃদয়
হয়ে পড়লো।৫৭ তারা বললো, “ভয় করো না
এবং দুঃখও করো না।৫৮ আমরা
তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবো, তোমার
স্ত্রীকে ছাড়া, সে পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
﴿إِنَّا مُنزِلُونَ
عَلَىٰ أَهْلِ هَٰذِهِ الْقَرْيَةِ رِجْزًا مِّنَ السَّمَاءِ بِمَا كَانُوا
يَفْسُقُونَ﴾
৩৪। আমরা এ
জনপদের লোকদের ওপর আকাশ থেকে আযাব নাযিল করতে যাচ্ছি তারা যে পাপাচার করে আসছে তার
কারণে।”
﴿وَلَقَد تَّرَكْنَا
مِنْهَا آيَةً بَيِّنَةً لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ﴾
৩৫। আর আমি সে
জনপদের একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি৫৯ তাদের জন্য
যারা বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করে।৬০
﴿وَإِلَىٰ مَدْيَنَ
أَخَاهُمْ شُعَيْبًا فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَارْجُوا الْيَوْمَ
الْآخِرَ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ﴾
৩৬। আর
মাদইয়ানের দিকে আমি পাঠালাম তাদের ভাই শুআ’ইবকে।৬১ সে বললো, “হে আমার
সম্প্রদায়ের লোকেরা! আল্লাহর বন্দেগী করো, শেষ দিনের
প্রত্যাশী হও৬২ এবং যমীনে বিপর্যয়
সৃষ্টিকারী হয়ে বাড়াবাড়ি করে বেড়িও না।”
﴿فَكَذَّبُوهُ
فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا فِي دَارِهِمْ جَاثِمِينَ﴾
৩৭। কিন্তু
তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো।৬৩ শেষে একটি
প্রচণ্ড ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করলো এবং তারা নিজেদের ঘরের মধ্যে৬৪ মরে পড়ে
থাকলো।
﴿وَعَادًا وَثَمُودَ
وَقَد تَّبَيَّنَ لَكُم مِّن مَّسَاكِنِهِمْ ۖ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ
أَعْمَالَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَكَانُوا مُسْتَبْصِرِينَ﴾
৩৮। আর আদ ও
সামূদ কে আমি ধ্বংস করেছি। তারা যেখানে থাকতো সেসব
জায়গা তোমরা দেখেছো৬৫ তাদের কার্যাবলীকে শয়তান তাদের জন্য সুদৃশ্য বানিয়ে
দিল এবং তাদেরকে সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করলো অথচ তারা ছিল বুদ্ধি সচেতন।৬৬
﴿وَقَارُونَ وَفِرْعَوْنَ
وَهَامَانَ ۖ وَلَقَدْ جَاءَهُم مُّوسَىٰ بِالْبَيِّنَاتِ فَاسْتَكْبَرُوا فِي
الْأَرْضِ وَمَا كَانُوا سَابِقِينَ﴾
৩৯। আর কারূন, ফেরাঊন ও
হামানকে আমি ধ্বংস করি। মূসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট
নিদর্শন নিয়ে আসে কিন্তু তারা পৃথিবীতে অহংকার করে অথচ তারা অগ্রগমনকারী ছিল না।৬৭
﴿فَكُلًّا أَخَذْنَا
بِذَنبِهِ ۖ فَمِنْهُم مَّنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُم مَّنْ
أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُم مَّنْ خَسَفْنَا بِهِ الْأَرْضَ وَمِنْهُم مَّنْ
أَغْرَقْنَا ۚ وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَٰكِن كَانُوا أَنفُسَهُمْ
يَظْلِمُونَ﴾
৪০। শেষ
পর্যন্ত প্রত্যেককে আমি তার গুনাহের জন্য পাকড়াও করি। তারপর
তাদের মধ্যে থেকে কারোর ওপর আমি পাথর বর্ষণকারী বাতাস প্রবাহিত করি৬৮ এবং কাউকে
একটি প্রচণ্ড বিষ্ফোরণ আঘাত হানে৬৯ আবার কাউকে
আমি ভূগর্ভে প্রোথিত করি৭০ এবং কাউকে ডুবিয়ে
দিই।৭১ আল্লাহ
তাদের প্রতি জুলুমকারী ছিলেন না কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করছিল।৭২
﴿مَثَلُ الَّذِينَ
اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ أَوْلِيَاءَ كَمَثَلِ الْعَنكَبُوتِ اتَّخَذَتْ
بَيْتًا ۖ وَإِنَّ أَوْهَنَ الْبُيُوتِ لَبَيْتُ الْعَنكَبُوتِ ۖ لَوْ كَانُوا
يَعْلَمُونَ﴾
৪১। যারা
আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নিয়েছে তাদের দৃষ্টান্ত হলো মাকড়সা। সে নিজের
একটি ঘর তৈরি করে এবং সব ঘরের চেয়ে বেশি দুর্বল হয় মাকড়সার ঘর। হায় যদি
এরা জানতো!৭৩
﴿إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ
مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾
৪২। এরা
আল্লাহকে বাদ দিয়ে যে জিনিসকেই ডাকে আল্লাহ তাকে খুব ভালোভাবেই জানেন এবং তিনিই
পরাক্রান্ত ও জ্ঞানী।৭৪
﴿وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ
نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ ۖ وَمَا يَعْقِلُهَا إِلَّا الْعَالِمُونَ﴾
৪৩। মানুষকে
উপদেশ দেবার জন্য আমি এ দৃষ্টান্তগুলো দিয়েছি কিন্তু এগুলো একমাত্র তারাই বুঝে
যারা জ্ঞান সম্পন্ন।
﴿خَلَقَ اللَّهُ
السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً
لِّلْمُؤْمِنِينَ﴾
৪৪। আল্লাহ
আসমান ও যমীনকে সত্য-ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন,৭৫ প্রকৃতপক্ষে
এর মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে মু’মিনদের জন্য।৭৬
﴿اتْلُ مَا أُوحِيَ
إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ ۖ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ
وَالْمُنكَرِ ۗ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا
تَصْنَعُونَ﴾
৪৫। (হে নবী!)
তোমার প্রতি অহির মাধ্যমে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তা তেলাওয়াত করো এবং নামায কায়েম
করো,৭৭ নিশ্চিতভাবেই
নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।৭৮ আর আল্লাহর
স্মরণ এর চাইতেও বড় জিনিস।৭৯ আল্লাহ
জানেন তোমরা যা কিছু করো।
﴿وَلَا تُجَادِلُوا
أَهْلَ الْكِتَابِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِلَّا الَّذِينَ ظَلَمُوا
مِنْهُمْ ۖ وَقُولُوا آمَنَّا بِالَّذِي أُنزِلَ إِلَيْنَا وَأُنزِلَ إِلَيْكُمْ
وَإِلَٰهُنَا وَإِلَٰهُكُمْ وَاحِدٌ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ﴾
৪৬। আর৮০ উত্তম
পদ্ধতিতে ছাড়া আহলে কিতাবের সাথে বিতর্ক করো না,৮১ তবে তাদের
মধ্যে যারা জালেম৮২ তাদেরকে
বলে, “আমরা ঈমান এনেছি আমাদের প্রতি যা পাঠানো
হয়েছে তার প্রতি এবং তোমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছিল তার প্রতিও, আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ একজনই এবং
﴿وَكَذَٰلِكَ أَنزَلْنَا
إِلَيْكَ الْكِتَابَ ۚ فَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يُؤْمِنُونَ بِهِ ۖ
وَمِنْ هَٰؤُلَاءِ مَن يُؤْمِنُ بِهِ ۚ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا
الْكَافِرُونَ﴾
৪৭। (হে নবী)
আমি এভাবেই তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি,৮৪ এ জন্য
যাদেরকে আমি প্রথমে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে৮৫ এবং এদের অনেকেও এতে বিশ্বাস
করছে,৮৬ আর আমার
আয়াত একমাত্র কাফেররাই অস্বীকার করে।৮৭
﴿وَمَا كُنتَ تَتْلُو مِن
قَبْلِهِ مِن كِتَابٍ وَلَا تَخُطُّهُ بِيَمِينِكَ ۖ إِذًا لَّارْتَابَ
الْمُبْطِلُونَ﴾
৪৮। (হে নবী)
ইতিপূর্বে তুমি কোন কিতাব পড়তে না এবং স্বহস্তে লিখতেও না, যদি এমনটি
হতো, তাহলে মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করতে পারতো।৮৮
﴿بَلْ هُوَ آيَاتٌ
بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ ۚ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا
إِلَّا الظَّالِمُونَ﴾
৪৯। আসলে
এগুলো হচ্ছে উজ্জ্বল নিদর্শন এমন লোকদের মনের মধ্যে যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে৮৯ এবং
জালেমরা ছাড়া আর কেউ আমার আয়াত অস্বীকার করে না।
﴿وَقَالُوا لَوْلَا
أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَاتٌ مِّن رَّبِّهِ ۖ قُلْ إِنَّمَا الْآيَاتُ عِندَ اللَّهِ
وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ﴾
৫০। এরা বলে “কেনই
বা এই ব্যক্তির ওপর নিদর্শনাবলী অবর্তীর্ণ করা হয়নি৯০ এর রবের
পক্ষ থেকে?” বলো, “নিদর্শনাবলী
তো রয়েছে আল্লাহর কাছে এবং আমি কেবলমাত্র পরিষ্কারভাবে সতর্ককারী।”
﴿أَوَلَمْ يَكْفِهِمْ
أَنَّا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ يُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ
لَرَحْمَةً وَذِكْرَىٰ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ﴾
৫১। আর এদের
জন্য কি এ (নিদর্শন) যথেষ্ঠ নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব
নাযিল করেছি, যা তাদেরকে পড়ে শুনানো হয়?৯১ আসলে যারা
ঈমান আনে তাদের জন্য এর মধ্যে রয়েছে রহমত ও নসিহত।৯২
﴿قُلْ كَفَىٰ بِاللَّهِ
بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ شَهِيدًا ۖ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ
وَالَّذِينَ آمَنُوا بِالْبَاطِلِ وَكَفَرُوا بِاللَّهِ أُولَٰئِكَ هُمُ
الْخَاسِرُونَ﴾
৫২। (হে নবী!)
বলো, “আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষ্যের জন্য
আল্লাহই যথেষ্ঠ। তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর
মধ্যে সবকিছু জানেন। যারা বাতিলকে মানে ও
আল্লাহকে অমান্য করে তারাই ক্ষতিগুস্ত।”
﴿وَيَسْتَعْجِلُونَكَ
بِالْعَذَابِ ۚ وَلَوْلَا أَجَلٌ مُّسَمًّى لَّجَاءَهُمُ الْعَذَابُ
وَلَيَأْتِيَنَّهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ﴾
৫৩। এরা তোমার
কাছে দাবী করছে আযাব দ্রুত আনার জন্য।৯৩ যদি একটি
সময় নির্ধারিত না করে দেয়া হতো, তাহলে তাদের ওপর আযাব
এসেই যেতো এবং নিশ্চিতভাবেই (ঠিক সময় মতো) তা অকস্মাৎ এমন অবস্থায় এসে যাবেই যখন
তারা জানতেও পারবে না।
﴿يَسْتَعْجِلُونَكَ
بِالْعَذَابِ وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ﴾
৫৪। এরা তোমার
কাছে আযাব দ্রুত আনার দাবী করছে অথচ জাহান্নাম এ কাফেরদেরকে ঘেরাও করে নিয়েছে
﴿يَوْمَ يَغْشَاهُمُ
الْعَذَابُ مِن فَوْقِهِمْ وَمِن تَحْتِ أَرْجُلِهِمْ وَيَقُولُ ذُوقُوا مَا
كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
৫৫। (এবং এরা
জানতে পারবে) সেদিন যখন আযাব এদেরকে ওপর থেকে ঢেকে ফেলবে এবং পায়ের নীচে থেকেও আর
বলবে, যেসব কাজ তোমরা করতে এবার তার মজা বোঝো।
﴿يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ
آمَنُوا إِنَّ أَرْضِي وَاسِعَةٌ فَإِيَّايَ فَاعْبُدُونِ﴾
৫৬। হে আমার
বান্দারা, যারা ঈমান এনেছো! আমার যমীন প্রশস্ত,
কাজেই তোমরা আমারই বন্দেগী করো।৯৪
﴿كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ
الْمَوْتِ ۖ ثُمَّ إِلَيْنَا تُرْجَعُونَ﴾
৫৭। প্রত্যেক
জীবকেই মৃত্যুও স্বাদ পেতে হবে। তারপর তোমাদের সবাইকে আমার
দিকে ফিরিয়ে আনা হবে৯৫
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَنُبَوِّئَنَّهُم مِّنَ الْجَنَّةِ غُرَفًا تَجْرِي مِن
تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ نِعْمَ أَجْرُ الْعَامِلِينَ﴾
৫৮। যারা ঈমান
এনেছে এবং যারা সৎকাজ করেছে তাদেরকে আমি জান্নাতের উঁচু ও উন্নত ইমারতের মধ্যে
রাখবো, যেগুলোর নিচে দিয়ে নদী বয়ে যেতে থাকবে। সেখানে
তারা থাকবে চিরকাল। কতই না উত্তম প্রতিদান
কর্মশীলদের জন্য৯৬
﴿الَّذِينَ صَبَرُوا
وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ﴾
৫৯।-তাদের
জন্য যারা সবর করেছে৯৭ এবং যারা
নিজেদের রবের প্রতি আস্থা রাখে।৯৮
﴿وَكَأَيِّن مِّن
دَابَّةٍ لَّا تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ ۚ وَهُوَ
السَّمِيعُ الْعَلِيمُ﴾
৬০। কত
জীব-জানোয়ার আছে যারা নিজেদের জীবিকা বহন করে না। আল্লাহই
তাদেরকে জীবিকা দেন এবং তোমাদের জীবিকাদাতাও তিনিই, তিনি সবকিছু
শোনেন ও জানেন।৯৯
﴿وَلَئِن سَأَلْتَهُم
مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ
لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ﴾
৬১। যদি১০০ তুমি
তাদেরকে জিজ্ঞেস করো পৃথিবী ও আকাশসমূহ কে সৃষ্টি করেছেন এবং চন্দ্র ও সূর্যকে কে
নিয়ন্ত্রিত করে রেখেছেন তাহলে অবশ্যই তারা বলবে আল্লাহ, এরপর এরা
প্রতারিত হচ্ছে কোন দিক থেকে?
﴿اللَّهُ يَبْسُطُ
الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ لَهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ
شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
৬২। আল্লাহই
তার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা রিযিক প্রসারিত করে দেন এবং যাকে ইচ্ছা
সংকীর্ণ করে দেন। নিশ্চিতভাবে আল্লাহ সব জিনিস জানেন।
﴿وَلَئِن سَأَلْتَهُم
مَّن نَّزَّلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ مِن بَعْدِ
مَوْتِهَا لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ۚ قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا
يَعْقِلُونَ﴾
৬৩। আর যদি
তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, কে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন এবং
তার সাহায্যে মৃত পতিত ভূমিকে সঞ্জীবিত করেছেন, তাহলে তারা
অবশ্যই বলবে আল্লাহ। বলো, সমস্ত
প্রশংসা আল্লাহর জন্য১০১ কিন্তু
অধিকাংশ লোক বোঝে না।
﴿وَمَا هَٰذِهِ
الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَهْوٌ وَلَعِبٌ ۚ وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ
لَهِيَ الْحَيَوَانُ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ﴾
৬৪। আর এ
দুনিয়ার জীবন একটি খেলা ও মন ভুলানোর সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।১০২
﴿فَإِذَا رَكِبُوا فِي
الْفُلْكِ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ إِلَى
الْبَرِّ إِذَا هُمْ يُشْرِكُونَ﴾
৬৫। আসল
জীবনের গৃহতো হচ্ছে পরকালীন গৃহ, হায়! যদি তারা জানতো।১০৩ যখন তারা
নৌযানে আরোহণ করে তখন নিজেদের দ্বীনকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করে নিয়ে
তার কাছে প্রার্থনা করে। তারপর যখন তিনি তাদেরকে
উদ্ধার করে স্থলে ভিড়িয়ে দেন তখন সহসা তারা শিরক করতে থাকে,
﴿لِيَكْفُرُوا بِمَا
آتَيْنَاهُمْ وَلِيَتَمَتَّعُوا ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ﴾
৬৬। যাতে
আল্লাহ প্রদত্ত নাজাতের ওপর তার অনুগ্রহ অস্বীকার করতে এবং দুনিয়ার জীবনের মজা ভোগ
করতে পারে।১০৪ বেশ, শিগগীর তারা
জেনে যাবে।
﴿أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا
جَعَلْنَا حَرَمًا آمِنًا وَيُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنْ حَوْلِهِمْ ۚ
أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَةِ اللَّهِ يَكْفُرُونَ﴾
৬৭। তারা কি
দেখে না, আমি একটি নিরাপদ হারম বানিয়ে দিয়েছি,
অথচ তাদের আশেপাশে লোকদেরকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়?১০৫ এরপরও কি
তারা বাতিলকে মেনে নেবে এবং আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকার করবে?
﴿وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ
افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُ ۚ
أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوًى لِّلْكَافِرِينَ﴾
৬৮। তার চেয়ে
বড় জালেম আর কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা
সত্যকে মিথ্যা বলে,যখন তা তার সামনে এসে গেছে?১০৬ জাহান্নামই
কি এ ধরনের কাফেরদের আবাস নয়?
﴿وَالَّذِينَ جَاهَدُوا
فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ﴾
৬৯। যারা আমার
জন্য সংগ্রাম-সাধনা করবে তাদেরকে আমি আমার পথ দেখাবো।১০৭ আর অবশ্যই আল্লাহ
সৎকর্মশালীদেরই সাথে আছেন।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।