০২৪. সূরা আন নূর
আয়াতঃ ১১৮; রুকুঃ ০৬; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿سُورَةٌ أَنزَلْنَاهَا وَفَرَضْنَاهَا
وَأَنزَلْنَا فِيهَا آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ لَّعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ﴾
১। এটি একটি
সূরা, আমি এটি
নাযিল করেছি এবং একে ফরয করে দিয়েছি আর এর মধ্যে সুস্পষ্ট নির্দেশসমূহ নাযিল করেছি,১ হয়তো তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে।
﴿الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي
فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ ۖ وَلَا تَأْخُذْكُم بِهِمَا
رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ
ۖ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ﴾
২।
ব্যভিচারিনী ও ব্যভিচারী উভয়ের প্রত্যেককে এক শত বেত্রাঘাত করো।২ আর আল্লাহর দীনের ব্যাপারে
তাদের প্রতি কোন মমত্ববোধ ও করুণা যেন তোমাদের মধ্যে না জাগে যদি তোমরা আল্লাহ ও
শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনো।৩ আর তাদেরকে
শাস্তি দেবার সময় মু’মিনদের একটি দল যেন উপস্থিত থাকে।৪
﴿الزَّانِي لَا يَنكِحُ إِلَّا
زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَالزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَا إِلَّا زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ
ۚ وَحُرِّمَ ذَٰلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ﴾
৩। ব্যভিচারী
যেন ব্যভিচারিনী বা মুশরিক নারী ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে এবং ব্যভিচারিনীকে যেন
ব্যভিচারী বা মুশরিক ছাড়া আর কেউ বিয়ে না করে। আর এটা
হারাম করে দেয়া হয়েছে মু’মিনদের জন্য।৫
﴿وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ
ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا
تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ﴾
৪। আর যারা
সতী-সাধ্বী নারীর ওপর অপবাদ লাগায়, তারপর চারজন সাক্ষী আনে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করো
এবং তাদের সাক্ষ্য কখনো গ্রহণ করো না। তারা
নিজেরাই ফাসেক।
﴿إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا
مِن بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৫। তবে যারা
এরপর তাওবা করে এবং শুধরে যায়, অবশ্যই আল্লাহ (তাদের পক্ষে) ক্ষমাশীল ও
মেহেরবান।৬
﴿وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ
وَلَمْ يَكُن لَّهُمْ شُهَدَاءُ إِلَّا أَنفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ أَرْبَعُ
شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ ۙ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ﴾
৬। আর যারা
নিজেদের স্ত্রীদেরকে অভিযোগ দেয় এবং তাদের কাছে তারা নিজেরা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন
সাক্ষী থাকে না, তাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির সাক্ষ্য হচ্ছে (এই যে, সে) চার বার আল্লাহর নামে কসম
খেয়ে সাক্ষ্য দেবে যে, সে (নিজের অভিযোগে) সত্যবাদী
﴿وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ
اللَّهِ عَلَيْهِ إِن كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ﴾
৭। এবং পঞ্চম
বার বলবে, তার প্রতি
আল্লাহর লা’নত হোক যদি সে (নিজের অভিযোগে) মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে।
﴿وَيَدْرَأُ عَنْهَا الْعَذَابَ
أَن تَشْهَدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ ۙ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ﴾
৮। আর
স্ত্রীর শাস্তি এভাবে রহিত হতে পারে যদি সে চার বার আল্লাহর নামে কসম খেয়ে সাক্ষ্য
দেয় যে, এ
ব্যক্তি(তার অভিযোগে) মিথ্যাবাদী
﴿وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ
اللَّهِ عَلَيْهَا إِن كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ﴾
৯। এবং
পঞ্চমবার বলে, তার নিজের
ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসুক যদি এ ব্যক্তি (তার অভিযোগে) সত্যবাদী হয়।৭
﴿وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ
عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ وَأَنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ حَكِيمٌ﴾
১০। তোমাদের
প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া না থাকলে এবং আল্লাহ বড়ই মনোযোগ দানকারী ও
জ্ঞানী না হলে (স্ত্রীদের প্রতি অভিযোগের ব্যাপারে তোমাদেরকে বড়ই জটিলতার সম্মুখীন
করতো)।
﴿إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا
بِالْإِفْكِ عُصْبَةٌ مِّنكُمْ ۚ لَا تَحْسَبُوهُ شَرًّا لَّكُم ۖ بَلْ هُوَ خَيْرٌ
لَّكُمْ ۚ لِكُلِّ امْرِئٍ مِّنْهُم مَّا اكْتَسَبَ مِنَ الْإِثْمِ ۚ وَالَّذِي تَوَلَّىٰ
كِبْرَهُ مِنْهُمْ لَهُ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
১১। যারা এ
মিথ্যা অপবাদ তৈরী করে এনেছে৮ তারা তোমাদেরই ভিতরের একটি অংশ।৯ এ ঘটনাকে
নিজেদের পক্ষে খারাপ মনে করো না বরং এও তোমাদের জন্য ভালই।১০ যে এর
মধ্যে যতটা অংশ নিয়েছে সে ততটাই গোনাহ কামাই করেছে আর যে ব্যক্তি এর
দায়দায়িত্বের বড় অংশ নিজের মাথায় নিয়েছে১১ তার জন্য
তো রয়েছে মহাশাস্তি।
﴿لَّوْلَا إِذْ سَمِعْتُمُوهُ
ظَنَّ الْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بِأَنفُسِهِمْ خَيْرًا وَقَالُوا هَٰذَا إِفْكٌ
مُّبِينٌ﴾
১২। যখন তোমরা
এটা শুনেছিলে তখনই কেন মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীরা নিজেদের সম্পর্কে সুধারণা
করেনি১২ এবং কেন
বলে দাওনি এটা সুস্পষ্ট মিথ্যা দোষারোপ?১৩
﴿لَّوْلَا جَاءُوا عَلَيْهِ
بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ ۚ فَإِذْ لَمْ يَأْتُوا بِالشُّهَدَاءِ فَأُولَٰئِكَ عِندَ
اللَّهِ هُمُ الْكَاذِبُونَ﴾
১৩। তারা
(নিজেদের অপবাদের প্রমাণ স্বরূপ) চারজন সাক্ষী আনেনি কেন? এখন যখন তারা সাক্ষী আনেনি
তখন আল্লাহর কাছে তারাই মিথ্যুক।১৪
﴿وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ
عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ لَمَسَّكُمْ فِي مَا أَفَضْتُمْ
فِيهِ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
১৪। যদি
তোমাদের প্রতি দুনিয়ায় ও আখেরাতে আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হতো তাহলে যেসব কথায়
তোমরা লিপ্ত হয়ে গিয়েছিলে সেগুলোর কারণে তোমাদের ওপরে মহাশাস্তি নেমে আসতো।
﴿إِذْ تَلَقَّوْنَهُ بِأَلْسِنَتِكُمْ
وَتَقُولُونَ بِأَفْوَاهِكُم مَّا لَيْسَ لَكُم بِهِ عِلْمٌ وَتَحْسَبُونَهُ هَيِّنًا
وَهُوَ عِندَ اللَّهِ عَظِيمٌ﴾
১৫। (একটু
ভেবে দেখো তো¸ সে সময়
তোমরা কেমন মারাত্মক ভুল করেছিলে) যখন তোমরা এক মুখ থেকে আর এক মুখে এ মিথ্যা
ছড়িয়ে বেড়াচ্ছিলে এবং তোমরা নিজেদের মুখে এমন সব কথা বলে যাচ্ছিলে যা সম্পর্কে
তোমাদের কিছুই জানা ছিল না। তোমরা একে একটা মামুলি কথা
মনে করেছিলে অথচ আল্লাহর কাছে এটা ছিল গুরুতর বিষয়।
﴿وَلَوْلَا إِذْ سَمِعْتُمُوهُ
قُلْتُم مَّا يَكُونُ لَنَا أَن نَّتَكَلَّمَ بِهَٰذَا سُبْحَانَكَ هَٰذَا بُهْتَانٌ
عَظِيمٌ﴾
১৬। একথা
শোনার সাথে সাথেই তোমরা বলে দিলে না কেন, “এমন কথা মুখ দিয়ে বের করা
আমাদের শোভা পায় না, সুব্হানাল্লাহ! এ তো একটি জঘন্য অপবাদ।”
﴿يَعِظُكُمُ اللَّهُ أَن تَعُودُوا
لِمِثْلِهِ أَبَدًا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ﴾
১৭। আল্লাহ
তোমাদের উপদেশ দেন, যদি তোমরা মু’মিন
হয়ে থাকো,
﴿وَيُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ
الْآيَاتِ ۚ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
১৮। তাহলে
ভবিষ্যতে কখনো এ ধরনের কাজ করো না। আল্লাহ
তোমাদের পরিষ্কার নির্দেশ দেন এবং তিনি সবজ্ঞ ও বিজ্ঞানময়।১৫
﴿إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ
أَن تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا
وَالْآخِرَةِ ۚ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ﴾
১৯। যারা চায় মু’মিনদের
সমাজে অশ্লীলতার প্রসার ঘটুক তারা দুনিয়ায় ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে।১৬ আল্লাহ জানেন
এবং তোমরা জানো না।১৭
﴿وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ
عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ وَأَنَّ اللَّهَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ﴾
২০। যদি
আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর করুণা তোমাদের প্রতি না হতো এবং আল্লাহ যদি স্নেহশীল ও
দয়ার্দ্র না হতেন (তাহলে যে জিনিস এখনই তোমাদের মধ্যে ছড়ানো হয়েছিলো তার পরিণাম
হতো অতি ভয়াবহ।)
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ وَمَن يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ
فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ ۚ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ
وَرَحْمَتُهُ مَا زَكَىٰ مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ أَبَدًا وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يُزَكِّي
مَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
২১। হে
ঈমানদানগণ! শয়তানের পদাংক অনুসরণ করে চলো না। যে কেউ
তার অনুসরণ করবে তাকে সে অশ্লীলতা ও খারাপ কাজ করার হুকুম দেবে। যদি
তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না থাকতো তাহলে তোমাদের একজনও পবিত্র হতে
পারতো না।১৮ কিন্তু আল্লাহই যাকে চান তাকে
পবিত্র করে দেন এবং আল্লাহ শ্রবণকারী ও জ্ঞাত।১৯
﴿وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ
مِنكُمْ وَالسَّعَةِ أَن يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ
فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا ۗ أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغْفِرَ
اللَّهُ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
২২। তোমাদের
মধ্য থেকে যারা প্রাচুর্য ও সামর্থের অধিকারী তারা যেন এ মর্মে কসম খেয়ে না বসে যে, তারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, গরীব-মিসকীন ও আল্লাহর পথে
গৃহত্যাগকারীদেরকে সাহায্য করবে না। তাদেরকে
ক্ষমা করা ও তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করা উচিত। তোমরা কি
চাও না আল্লাহ তোমাদের মাফ করেন? আর আল্লাহ ক্ষমাশীলতা ও দয়া গুণে
গুণান্বিত।২০
﴿إِنَّ الَّذِينَ يَرْمُونَ
الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ لُعِنُوا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
২৩। যারা সতী
সাধ্বী, সরলমনা২১ মু’মিন
মহিলাদের প্রতি অপবাদ দেয় তারা দুনিয়ায় ও আখেরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য রয়েছে
মহাশাস্তি।
﴿يَوْمَ تَشْهَدُ عَلَيْهِمْ
أَلْسِنَتُهُمْ وَأَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
২৪। তারা যেন
সেদিনের কথা ভুলে না যায় যেদিন তাদের নিজেদের কন্ঠ এবং তাদের নিজেদের হাত-পা তাদের
কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।২১(ক)
﴿يَوْمَئِذٍ يُوَفِّيهِمُ
اللَّهُ دِينَهُمُ الْحَقَّ وَيَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ الْمُبِينُ﴾
২৫। সেদিন
তারা যে প্রতিদানের যোগ্য হবে, তা আল্লাহ তাদেরকে পুরোপুরি দেবেন এবং
তারা জানবে, আল্লাহই
সত্য এবং সত্যকে সত্য হিসেবে প্রকাশকারী।
﴿الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ
وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ ۖ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ
لِلطَّيِّبَاتِ ۚ أُولَٰئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ ۖ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ
كَرِيمٌ﴾
২৬।
দুশ্চরিত্রা মহিলারা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা
মহিলাদের জন্য। সচ্চরিত্রা মহিলারা সচ্চরিত্র পুরুষদের
জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা মহিলাদের জন্য। লোকে যা
বলে তা থেকে তারা পূত-পবিত্র।২২ তাদের জন্য
রয়েছে মাগফিরাত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবিকা।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّىٰ تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا
عَلَىٰ أَهْلِهَا ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ﴾
২৭। হে
ঈমানদাগণ!২৩ নিজেদের
গৃহ ছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না যতক্ষণ না গৃহবাসীদের সম্মতি লাভ করো২৪ এবং
তাদেরকে সালাম করো। এটিই তোমাদের জন্য ভালো
পদ্ধতি, আশা করা
যায় তোমরা এদিকে নজর রাখবে।২৫
﴿فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فِيهَا
أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوهَا حَتَّىٰ يُؤْذَنَ لَكُمْ ۖ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا
فَارْجِعُوا ۖ هُوَ أَزْكَىٰ لَكُمْ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ﴾
২৮। তারপর যদি
সেখানে কাউকে না পাও, তাহলে তাতে প্রবেশ করো না যতক্ষণ না তোমাদের অনুমতি না দেয়া
হয়।২৬ আর যদি তোমাদের বলা হয়, ফিরে যাও তাহলে ফিরে যাবে, এটিই তোমাদের জন্য বেশী শালীন
ও পরিচ্ছন্ন পদ্ধতি২৭ এবং যা কিছু তোমরা করো আল্লাহ
তা খুব ভালোভাবেই জানেন।
﴿لَّيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ
أَن تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ مَسْكُونَةٍ فِيهَا مَتَاعٌ لَّكُمْ ۚ وَاللَّهُ يَعْلَمُ
مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ﴾
২৯। তবে
তোমাদের জন্য কোন ক্ষতি নেই যদি তোমরা এমন গৃহে প্রবেশ করো যেখানে কেউ বাস করে না
এবং তার মধ্যে তোমাদের কোন কাজের জিনিস আছে২৮ তোমরা যা
কিছু প্রকাশ করো ও যা কিছু গোপন করো আল্লাহ সবই জানেন।
﴿قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا
مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ
خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ﴾
৩০। নবী! মু’মিন
পুরুষদের বলে দাও তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে২৯ এবং
নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে।৩০ এটি তাদের
জন্য বেশী পবিত্র পদ্ধতি। যা কিছু তারা করে আল্লাহ তা
জানেন।
﴿وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ
مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا
مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ
زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ
أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي
إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ
أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ
لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ
مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ
لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
৩১। আর হে
নবী! মু’মিন মহিলাদের বলে দাও তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে৩১ এবং তাদের
লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে৩২ আর৩৩ তাদের
সাজসজ্জা না দেখায়,৩৪ যা নিজে
নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া।৩৫ আর তারা
যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে।৩৬ তারা যেন
তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে, তবে নিম্নোক্তদের সামনে ছাড়া৩৭ স্বামী,বাপ,স্বামীর বাপ,৩৮ নিজের ছেলে, স্বামীর ছেলে,৩৯ ভাই,৪০ ভাইয়ের ছেলে,৪১ বোনের ছেলে,৪২ নিজের মেলামেশার মেয়েদের,৪৩ নিজের
মালিকানাধীনদের,৪৪ অধীনস্থ
পুরুষদের যাদের অন্য কোন রকম উদ্দেশ্য নেই৪৫ এবং এমন শিশুদের
সামনে ছাড়া যারা মেয়েদের গোপন বিষয় সম্পর্কে এখনো অজ্ঞ।৪৬ তারা যেন
নিজেদের যে সৌন্দর্য তারা লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে প্রকাশ করে দেবার
উদ্দেশ্য সজোরে পদক্ষেপ না করে।৪৭ হে মু’মিনগণ!
তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো,৪৮ আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।৪৯
﴿وَأَنكِحُوا الْأَيَامَىٰ
مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ ۚ إِن يَكُونُوا فُقَرَاءَ
يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ ۗ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ﴾
৩২। তোমাদের
মধ্যে যারা একা ও নিসংগ৫০ এবং তোমাদের গোলাম ও বাঁদীদের
মধ্যে যারা সৎ৫১ ও বিয়ের যোগ্য তাদের বিয়ে দাও।৫২ যদি তারা
গরীব হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ আপন মেহেরবানীতে তাদেরকে ধনী করে দেবেন,৫৩ আল্লাহর বড়ই প্রাচুর্যময় ও
সবজ্ঞ।
﴿وَلْيَسْتَعْفِفِ الَّذِينَ
لَا يَجِدُونَ نِكَاحًا حَتَّىٰ يُغْنِيَهُمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ ۗ وَالَّذِينَ يَبْتَغُونَ
الْكِتَابَ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ فَكَاتِبُوهُمْ إِنْ عَلِمْتُمْ فِيهِمْ
خَيْرًا ۖ وَآتُوهُم مِّن مَّالِ اللَّهِ الَّذِي آتَاكُمْ ۚ وَلَا تُكْرِهُوا فَتَيَاتِكُمْ
عَلَى الْبِغَاءِ إِنْ أَرَدْنَ تَحَصُّنًا لِّتَبْتَغُوا عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا
ۚ وَمَن يُكْرِههُّنَّ فَإِنَّ اللَّهَ مِن بَعْدِ إِكْرَاهِهِنَّ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৩৩। আরা যারা
বিয়ে করার সুযোগ পায় না তাদের পবিত্রতা ও সাধুতা অবলম্বন করা উচিত, যতক্ষণ না আল্লাহ নিজ
অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।৫৪ আর তোমাদের
মালিকানাধীনদের মধ্যে থেকে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তির আবেদন করে৫৫ তাদের সাথে
চুক্তিবদ্ধ হও৫৬ যদি তাদের মধ্যে কল্যাণের
সন্ধান পাও।৫৭ আর আল্লাহ তোমাদের যে সম্পদ
দিয়েছেন তা থেকে তাদেরকে দাও।৫৮ আর তোমাদের
বাঁদীরা যখন নিজেরাই সতী সাধ্বী থাকতে চায় তখন দুনিয়াবী স্বার্থলাভের উদ্দেশ্যে
তাদেরকে দেহ বিক্রয়ে বাধ্য করো না।৫৯ আর যে
তাদেরকে বাধ্য করে, তবে এ
জোর-জবরদস্তির পর আল্লাহ তাদের জন্য ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
﴿وَلَقَدْ أَنزَلْنَا إِلَيْكُمْ
آيَاتٍ مُّبَيِّنَاتٍ وَمَثَلًا مِّنَ الَّذِينَ خَلَوْا مِن قَبْلِكُمْ وَمَوْعِظَةً
لِّلْمُتَّقِينَ﴾
৩৪। আমি
দ্ব্যর্থহীন পথনির্দেশক আয়াত তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তোমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত
জাতিদের শিক্ষণীয় দৃষ্টান্তও তোমাদের সামনে উপস্থাপন করেছি এবং
মুত্তাকীদের জন্য উপদেশও দিয়েছি।৬০
﴿اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ ۚ مَثَلُ نُورِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌ ۖ الْمِصْبَاحُ فِي زُجَاجَةٍ
ۖ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوقَدُ مِن شَجَرَةٍ مُّبَارَكَةٍ زَيْتُونَةٍ
لَّا شَرْقِيَّةٍ وَلَا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ
نَارٌ ۚ نُّورٌ عَلَىٰ نُورٍ ۗ يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَيَضْرِبُ
اللَّهُ الْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
৩৫। আল্লাহ৬১ আকাশ
মন্ডলী ও পৃথিবীর আলো।৬২ (বিশ্ব-জাহানে) তাঁর আলোর উপমা
যেন একটি তাকে একটি প্রদীপ রাখা আছে, প্রদীপটি আছে একটি চিমনির
মধ্যে, চিমনিটি
দেখতে এমন যেন মুক্তোর মতো ঝকঝকে নক্ষত্র, আর এ প্রদীপটি যয়তুনের এমন
একটি মুবারক৬৩ গাছের তেল
দিয়ে উজ্জল করা হয়, যা
পূর্বেরও নয়, পশ্চিমেরও
নয়।৬৪ যার তেল আপনা আপনিই জ্বলে ওঠে, চাই আগুন তাকে স্পর্শ করুক বা
না করুক। (এভাবে) আলোর ওপরে আলো (বৃদ্ধির সমস্ত
উপকরণ একত্র হয়ে গেছে) ৬৫ আল্লাহ যাকে চান নিজের আলোর
দিকে পথনির্দেশ করেন।৬৬ তিনি উপমার
সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান। তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব
ভালো করেই জানেন।৬৭
﴿فِي بُيُوتٍ أَذِنَ اللَّهُ
أَن تُرْفَعَ وَيُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ يُسَبِّحُ لَهُ فِيهَا بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ﴾
৩৬। (তাঁর
আলোর পথ অবলম্বনকারী)ঐ সব ঘরে পাওয়া যায়, যেগুলোকে উন্নত করার ও
যেগুলোর মধ্যে নিজের নাম স্মরণ করার হুকুম আল্লাহ দিয়েছেন।৬৮ সেগুলোতে
এমন সব লোক সকাল সাঁঝে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।
﴿رِجَالٌ لَّا تُلْهِيهِمْ
تِجَارَةٌ وَلَا بَيْعٌ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ
ۙ يَخَافُونَ يَوْمًا تَتَقَلَّبُ فِيهِ الْقُلُوبُ وَالْأَبْصَارُ﴾
৩৭। যারা
ব্যবসায় ও বেচাকেনার ব্যস্ততার মধ্যেও আল্লাহর স্মরণ এবং নামায কায়েম ও যাকাত আদায়
করা থেকে গাফিল হয়ে যায় না। তারা সেদিনকে ভয় করতে থাকে
যেদিন হৃদয় বিপর্যস্ত ও দৃষ্টি পাথর হয়ে যাবার উপক্রম হবে।
﴿لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ
مَا عَمِلُوا وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِ ۗ وَاللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ
حِسَابٍ﴾
৩৮। (আর তারা
এসব কিছু এ জন্য করে) যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের সর্বোত্তম কর্মের প্রতিদান দেন
এবং তদুপরি নিজ অনুগ্রহ দান করেন। আল্লাহ
যাকে চান বেহিসেব দান করেন।৬৯
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَعْمَالُهُمْ
كَسَرَابٍ بِقِيعَةٍ يَحْسَبُهُ الظَّمْآنُ مَاءً حَتَّىٰ إِذَا جَاءَهُ لَمْ يَجِدْهُ
شَيْئًا وَوَجَدَ اللَّهَ عِندَهُ فَوَفَّاهُ حِسَابَهُ ۗ وَاللَّهُ سَرِيعُ الْحِسَابِ﴾
৩৯। কিন্তু
যারা কুফরী করে৭০ তাদের কর্মের উপমা হলো
পানিহীন মরুপ্রান্তরে মরীচিকা, তৃঞ্চাতুর পথিক তাকে পানি মনে করেছিল, কিন্তু যখন সে সেখানে পৌঁছুলো
কিছুই পেলো না বরং সেখানে সে আল্লাহকে উপস্থিত পেলো, যিনি তার পূর্ণ হিসেব মিটিয়ে
দিলেন এবং আল্লাহর হিসেব নিতে দেরী হয় না।৭১
﴿أَوْ كَظُلُمَاتٍ فِي بَحْرٍ
لُّجِّيٍّ يَغْشَاهُ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِ سَحَابٌ ۚ ظُلُمَاتٌ
بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ إِذَا أَخْرَجَ يَدَهُ لَمْ يَكَدْ يَرَاهَا ۗ وَمَن لَّمْ
يَجْعَلِ اللَّهُ لَهُ نُورًا فَمَا لَهُ مِن نُّورٍ﴾
৪০। অথবা তার
উপমা যেমন একটি গভীর সাগর বুকে অন্ধকার। ওপরে ছেয়ে
আছে একটি তরংগ, তার ওপরে
আর একটি তরংগ আর তার ওপরে মেঘমালা অন্ধকারের ওপর অন্ধকার আচ্ছন্ন। মানুষ
নিজের হাত বের করলে তাও দেখতে পায় না।৭২ যাকে
আল্লাহ আলো দেন না তার জন্য আর কোন আলো নেই।৭৩
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ
يُسَبِّحُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالطَّيْرُ صَافَّاتٍ ۖ كُلٌّ قَدْ
عَلِمَ صَلَاتَهُ وَتَسْبِيحَهُ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِمَا يَفْعَلُونَ﴾
৪১। তুমি৭৪ কি দেখ না, আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা
করেছে যারা আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীতে আছে তারা সবাই এবং যে পাখির ডানা বিস্তার করে
আকাশে ওড়ে? প্রত্যেকেই জানে তার নামাযের ও পবিত্রতা বর্ণনা করার পদ্ধতি। আর এরা যা
কিছু করে আল্লাহ তা জানেন।
﴿وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ ۖ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ﴾
৪২। আকাশ
মন্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে সবাই ফিরে যেতে হবে।
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ
يُزْجِي سَحَابًا ثُمَّ يُؤَلِّفُ بَيْنَهُ ثُمَّ يَجْعَلُهُ رُكَامًا فَتَرَى الْوَدْقَ
يَخْرُجُ مِنْ خِلَالِهِ وَيُنَزِّلُ مِنَ السَّمَاءِ مِن جِبَالٍ فِيهَا مِن بَرَدٍ
فَيُصِيبُ بِهِ مَن يَشَاءُ وَيَصْرِفُهُ عَن مَّن يَشَاءُ ۖ يَكَادُ سَنَا بَرْقِهِ
يَذْهَبُ بِالْأَبْصَارِ﴾
৪৩। তুমি কি
দেখ না, আল্লাহ মেঘমালাকে ধীর গতিতে সঞ্চালন করেন, তারপর তার খন্ডগুলোকে পরস্পর
সংযুক্ত করেন, তারপর তাকে
একত্র করে একটি ঘন মেঘে পরিণত করেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার খোল থেকে বৃষ্টি
বিন্দু একাধারে ঝরে পড়ছে। আর তিনি আকাশ থেকে তার মধ্যে
সমুন্নত পাহাড়গুলোর বদৌলতে ৭৫ শিলা বর্ষণ করেন, তারপর যাকে চান এর দ্বারা
ক্ষতিগ্রস্ত করেন এবং যাকে চান এর হাত থেকে বাঁচিয়ে নেন। তার
বিদ্যুৎচমক চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
﴿يُقَلِّبُ اللَّهُ اللَّيْلَ
وَالنَّهَارَ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّأُولِي الْأَبْصَارِ﴾
৪৪। তিনিই
রাত-দিনের পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন। দৃষ্টিসম্পন্নদের জন্য এর
মধ্যে রয়েছে একটি শিক্ষা।
﴿وَاللَّهُ خَلَقَ كُلَّ دَابَّةٍ
مِّن مَّاءٍ ۖ فَمِنْهُم مَّن يَمْشِي عَلَىٰ بَطْنِهِ وَمِنْهُم مَّن يَمْشِي عَلَىٰ
رِجْلَيْنِ وَمِنْهُم مَّن يَمْشِي عَلَىٰ أَرْبَعٍ ۚ يَخْلُقُ اللَّهُ مَا يَشَاءُ
ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
৪৫। আর আল্লাহ
প্রত্যেক প্রাণ বিশিষ্টকে এক ধরনের পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তাদের
মধ্য থেকে কেউ চলেছে পেটে ভর দিয়ে, কেউ চলেছে দু’পায়ে হেঁটে আবার কেউ চারপায়ে
ভর দিয়ে। যা কিছু তিনি চান পয়দা করেন, তিনি প্রত্যেক জিনিসের ওপর
শক্তিশালী।
﴿لَّقَدْ أَنزَلْنَا آيَاتٍ
مُّبَيِّنَاتٍ ۚ وَاللَّهُ يَهْدِي مَن يَشَاءُ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ﴾
৪৬। আমি
পরিষ্কার সত্য বিবৃতকারী আয়াত নাযিল করে দিয়েছি তবে আল্লাহই যাকে চান সত্য সরল পথ
দেখান।
﴿وَيَقُولُونَ آمَنَّا بِاللَّهِ
وَبِالرَّسُولِ وَأَطَعْنَا ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٌ مِّنْهُم مِّن بَعْدِ ذَٰلِكَ
ۚ وَمَا أُولَٰئِكَ بِالْمُؤْمِنِينَ﴾
৪৭। তারা বলে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ ও
রাসূলের প্রতি এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করেছি কিন্তু এরপর তাদের মধ্য থেকে একটি
দল (আনুগত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ ধরনের
লোকেরা কখনোই মু’মিন নয়।৭৬
﴿وَإِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ
وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِّنْهُم مُّعْرِضُونَ﴾
৪৮। যখন
তাদেরকে ডাকা হয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে, যাতে রাসূল তাদের পরস্পররে
মোকদ্দমার ফায়সালা করে দেন৭৭ তখন তাদের মধ্যকার একটি দল
পাশ কাটিয়ে যায়।৭৮
﴿وَإِن يَكُن لَّهُمُ الْحَقُّ
يَأْتُوا إِلَيْهِ مُذْعِنِينَ﴾
৪৯। তবে যদি
সত্য তাদের অনুকূল থাকে, তাহলে বড়ই বিনীত হয়ে রাসূলের কাছে আসে।৭৯
﴿أَفِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ
أَمِ ارْتَابُوا أَمْ يَخَافُونَ أَن يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَرَسُولُهُ ۚ بَلْ
أُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾
৫০। তাদের মনে
কি (মুনাফিকীর) রোগ আছে? না তারা সন্দেহের শিকার হয়েছে? না তারা ভয় করছে আল্লাহ ও
তাঁর রাসূল তাদের প্রতি যুলুম করবেন? আসলে তারা নিজেরাই যালেম।৮০
﴿إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ
إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَن يَقُولُوا سَمِعْنَا
وَأَطَعْنَا ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾
৫১। মু’মিনদের
কাজই হচ্ছে, যখন
তাদেরকে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ডাকা হয়, যাতে রাসূল তাদের মোকদ্দমার ফায়সালা করেন, তখন তারা বলেন, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। এ ধরনের
লোকেরাই সফলকাম হবে।
﴿وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ
وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ﴾
৫২। আর সফলকাম
তারাই যারা আল্লাহ ও রাসূলের হুকুম মেনে চলে এবং আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর
নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে।
﴿وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ
أَيْمَانِهِمْ لَئِنْ أَمَرْتَهُمْ لَيَخْرُجُنَّ ۖ قُل لَّا تُقْسِمُوا ۖ طَاعَةٌ
مَّعْرُوفَةٌ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾
৫৩। এ
মুনাফিকরা আল্লাহর নামে শক্ত কসম খেয়ে, বলে, “আপনি হুকুম দিলে আমরা অবশ্যই
ঘর থেকে বের হয়ে পড়বো। “তাদেরকে বলো, “কসম খেয়ো না, তোমাদের আনুগত্যের অবস্থা
জানা আছে।৮১ তোমাদের কার্যকালাপ সম্বন্ধে
আল্লাহ বেখবর নন।৮২
﴿قُلْ أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا
الرَّسُولَ ۖ فَإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُم مَّا حُمِّلْتُمْ
ۖ وَإِن تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا ۚ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
৫৪। বলো, “আল্লাহর অনুগত হও এবং রাসূলের
হুকুম মেনে চলো। কিন্তু যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। তাহলো
ভালোভাবে জেনে রাখো, রাসূলের
ওপর যে দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সে জন্য রাসূল দায়ী এবং তোমাদের ওপর যে
দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সে জন্য তোমরাই দায়ী। তাঁর
আনুগত্য করলে তোমরা নিজেরাই সৎ পথ পেয়ে যাবে, অন্যথায় পরিষ্কার ও
দ্ব্যর্থহীন হুকুম শুনিয়ে দেয়া ছাড়া রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই।”
﴿وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ
آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا
اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَىٰ
لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا ۚ يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ
بِي شَيْئًا ۚ وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ﴾
৫৫। আল্লাহ
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে ও সৎ কাজ করবে তাদেরকে
তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে খিলাফত দান করবেন যেমন তাদের পূর্বে অতিক্রান্ত
লোকদেরকে দান করেছিলেন, তাদের জন্য তাদের দীনকে মজবুত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে
দেবেন, যাকে
আল্লাহ তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের (বর্তমান) ভয়-ভীতির অবস্থাকে নিরাপত্তায়
পরিবর্তিত করে দেবেন। তারা শুধু আমার বন্দেগী করুক
এবং আমার সাথে কাউকে যেন শরীক না করে।৮৩ আর যারা
এরপর কুফরী করবে৮৪ তারাই ফাসেক।
﴿وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا
الزَّكَاةَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
৫৬। নামায
কায়েম করো, যাকাত দাও এবং
রাসূলের আনুগত্য করো,আশা করা যায়, তোমাদের প্রতি করুণা করা হবে।
﴿لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ
كَفَرُوا مُعْجِزِينَ فِي الْأَرْضِ ۚ وَمَأْوَاهُمُ النَّارُ ۖ وَلَبِئْسَ الْمَصِيرُ﴾
৫৭। যারা
কুফরী করছে তাদের সম্পর্কে এ ভুল ধারণা পোষণ করো না যে, তারা পৃথিবীতে আল্লাহকে অক্ষম
করে দেবে। তাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম এবং তা বড়ই
নিকৃষ্ট আশ্রয়।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لِيَسْتَأْذِنكُمُ الَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ وَالَّذِينَ لَمْ يَبْلُغُوا الْحُلُمَ
مِنكُمْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ۚ مِّن قَبْلِ صَلَاةِ الْفَجْرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُم
مِّنَ الظَّهِيرَةِ وَمِن بَعْدِ صَلَاةِ الْعِشَاءِ ۚ ثَلَاثُ عَوْرَاتٍ لَّكُمْ ۚ
لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلَا عَلَيْهِمْ جُنَاحٌ بَعْدَهُنَّ ۚ طَوَّافُونَ عَلَيْكُم بَعْضُكُمْ
عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ
حَكِيمٌ﴾
৫৮। হে
ঈমানদারগণ!৮৫ তোমাদের
মালিকানাধীন দাসদাসী৮৬ এবং তোমাদের এমন সব সন্তান
যারা এখনো বুদ্ধির সীমানায় পৌঁছেনি,৮৭ তাদের অবশ্যি তিনটি সময়ে
অনুমতি নিয়ে তোমাদের কাছে আসা উচিতঃ ফজরের নামাযের আগে, দুপুরে যখন তোমরা পোশাক ছেড়ে
রেখে দাও এবং এশার নামাযের পর। এ তিনটি তোমাদের গোপনীয়তার
সময়।৮৮ এরপরে তারা বিনা অনুমতিতে এলে
তোমাদের কোন গুনাহ নেই এবং তাদেরও না।৮৯ তোমাদের
পরস্পরের কাছে বারবার আসতেই হয়।৯০ এভাবে
আল্লাহ তোমাদের জন্য নিজের বাণী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন এবং তিনি সবকিছু জানেন ও
বিজ্ঞ।
﴿وَإِذَا بَلَغَ الْأَطْفَالُ
مِنكُمُ الْحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُوا كَمَا اسْتَأْذَنَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ
ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
৫৯। আর যখন
তোমাদের সন্তানরা বুদ্ধির সীমানায় পৌঁছে যায়৯১ তখন তাদের
তেমনি অনুমতি নিয়ে আসা উচিত যেমন তাদের বড়রা অনুমতি নিয়ে থাকে। এভাবে
আল্লাহ তাঁর আয়াত তোমাদের সামনে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন এবং তিনি সবকিছু জানেন ও
বিজ্ঞ।
﴿وَالْقَوَاعِدُ مِنَ النِّسَاءِ
اللَّاتِي لَا يَرْجُونَ نِكَاحًا فَلَيْسَ عَلَيْهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعْنَ ثِيَابَهُنَّ
غَيْرَ مُتَبَرِّجَاتٍ بِزِينَةٍ ۖ وَأَن يَسْتَعْفِفْنَ خَيْرٌ لَّهُنَّ ۗ وَاللَّهُ
سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
৬০। আর যেসব
যৌবন অতিক্রান্ত মহিলা৯২ বিয়ের আশা রাখে না, তারা যদি নিজেদের চাদর নামিয়ে
রেখে দেয়,৯৩ তাহলে
তাদের কোন গোনাহ নেই, তবে শর্ত হচ্ছে তারা সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী হবে না।৯৪ তবু তারাও
যদি লজ্জাশীলতা অবলম্বন করে তাহলে তা তাদের জন্য ভালো এবং আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও
জানেন।
﴿لَّيْسَ عَلَى الْأَعْمَىٰ
حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ وَلَا عَلَىٰ
أَنفُسِكُمْ أَن تَأْكُلُوا مِن بُيُوتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ آبَائِكُمْ أَوْ بُيُوتِ
أُمَّهَاتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ إِخْوَانِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَخَوَاتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ
أَعْمَامِكُمْ أَوْ بُيُوتِ عَمَّاتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَخْوَالِكُمْ أَوْ بُيُوتِ
خَالَاتِكُمْ أَوْ مَا مَلَكْتُم مَّفَاتِحَهُ أَوْ صَدِيقِكُمْ ۚ لَيْسَ عَلَيْكُمْ
جُنَاحٌ أَن تَأْكُلُوا جَمِيعًا أَوْ أَشْتَاتًا ۚ فَإِذَا دَخَلْتُم بُيُوتًا فَسَلِّمُوا
عَلَىٰ أَنفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ اللَّهِ مُبَارَكَةً طَيِّبَةً ۚ كَذَٰلِكَ
يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ﴾
৬১। কোন অন্ধ, খঞ্জ বা রুগ্ন (যদি কারোর
গৃহে খেয়ে নেয় তাহলে) কোন ক্ষতি নেই, আর তোমাদের কোন ক্ষতি নেই নিজেদের গৃহে
খেলে অথবা নিজেদের বাপ-দাদার গৃহে, নিজেদের মা-নানীর গৃহে, নিজেদের ভাইয়ের গৃহে, নিজেদের বোনের গৃহে, নিজেদের চাচার গৃহে, নিজেদের ফুফুর গৃহে, নিজেদের মামার গৃহে, নিজেদের খালার গৃহে অথবা এমন
সব গৃহে যার চাবি তোমাদের হাতে সোপর্দ করে দেয়া হয়েছে কিংবা নিজেদের বন্ধুদের গৃহে।৯৫ তোমরা এক
সাথে খাও বা আলাদা আলাদা, তাতে কোন ক্ষতি নেই।৯৬ তবে গৃহে
প্রবেশ করার সময় তোমরা নিজেদের লোকদের সালাম করো, আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত
হয়েছে কল্যাণের দোয়া, বড়ই বরকতপূর্ণ ও পবিত্র। এভাবে
আল্লাহ তোমাদের সামনে আয়াত বর্ণনা করেন, আশা করা যায় তোমরা বুঝে শুনে কাজ করবে।
﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ
الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَإِذَا كَانُوا مَعَهُ عَلَىٰ أَمْرٍ جَامِعٍ
لَّمْ يَذْهَبُوا حَتَّىٰ يَسْتَأْذِنُوهُ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ أُولَٰئِكَ
الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ۚ فَإِذَا اسْتَأْذَنُوكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ
فَأْذَن لِّمَن شِئْتَ مِنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمُ اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ
رَّحِيمٌ﴾
৬২। মু’মিন৯৭ তো আসলে
তারাই যারা অন্তর থেকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মানে এবং যখন কোন সামষ্টিক কাজে
রাসূলের সাথে থাকে তখন তার অনুমতি ছাড়া চলে যায় না।৯৮ যারা তোমার
কাছে অনুমতি চায় তারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী। কাজেই
তারা যখন তাদের কোন কাজের জন্য তোমার কাছে অনুমতি চায়৯৯ তখন যাকে
চাও তুমি অনুমতি দিয়ে দাও১০০ এবং এ ধরনের লোকদের জন্য
আল্লাহর কাছে মাগফিরাতের দোয়া করো।১০১ আল্লাহ
অবশ্যই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
﴿لَّا تَجْعَلُوا دُعَاءَ
الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاءِ بَعْضِكُم بَعْضًا ۚ قَدْ يَعْلَمُ اللَّهُ الَّذِينَ
يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذًا ۚ فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ
أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
৬৩। হে
মুসলমানরা! রাসূলের আহবানকে তোমাদের মধ্যে পরস্পরের আহবানের মতো মনে করো না।১০২ আল্লাহ
তাদেরকে ভালো করেই জানেন যারা তোমাদের মধ্যে একে অন্যের আড়ালে চুপিসারে সটকে পড়ে।১০৩ রাসূলের
হুকুমের বিরুদ্ধাচারণকারীদের ভয় করা উচিত যেন তারা কোন বিপর্যয়ের শিকার না হয়১০৪ অথবা তাদের
ওপর যন্ত্রণাদায়ক আযাব না এসে পড়ে।
﴿أَلَا إِنَّ لِلَّهِ مَا
فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ قَدْ يَعْلَمُ مَا أَنتُمْ عَلَيْهِ وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ
إِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوا ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
৬৪। সাবধান
হয়ে যাও, আকাশে ও
পৃথিবীতে যা কিছু সব আল্লাহরই। তোমরা যে নীতিই অবলম্বন করো
আল্লাহ তা জানেন। যেদিন লোকেরা তাঁর দিকে ফিরে যাবে সেদিন
তিনি তাদের বলে দেবেন তারা কি সব করে এসেছে। তিনি সব
জিনিসের জ্ঞান রাখেন।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।