০৪০. সূরা আল মু’মিন
আয়াতঃ ৮৫; রুকুঃ ০৯; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿حمٓ﴾
১। হা-মীম।
﴿تَنزِيلُ ٱلْكِتَـٰبِ مِنَ
ٱللَّهِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ﴾
২। এ কিতাব
আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত যিনি মহাপরাক্রমশালী, সবকিছু
সম্পর্কে অতিশয় জ্ঞাত,
﴿غَافِرِ ٱلذَّنۢبِ وَقَابِلِ
ٱلتَّوْبِ شَدِيدِ ٱلْعِقَابِ ذِى ٱلطَّوْلِ ۖ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ إِلَيْهِ
ٱلْمَصِيرُ﴾
৩। গোনাহ
মাফকারী, তাওবা কবুলকারী, কঠোর
শাস্তিদাতা এবং অত্যন্ত দয়ালু। তিনি ছাড়া
আর কোন
﴿مَا يُجَـٰدِلُ فِىٓ ءَايَـٰتِ
ٱللَّهِ إِلَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِى ٱلْبِلَـٰدِ﴾
৪। আল্লাহর আয়াত
সমূহ নিয়ে কেবল সে সবলোকই বিতর্ক২ সৃষ্টি
করে যারা কুফরী করেছে৩ এরপরও দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে
তাদের চলাফেরা যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে।৪
﴿كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ
نُوحٍۢ وَٱلْأَحْزَابُ مِنۢ بَعْدِهِمْ ۖ وَهَمَّتْ كُلُّ أُمَّةٍۭ بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُ
ۖ وَجَـٰدَلُوا۟ بِٱلْبَـٰطِلِ لِيُدْحِضُوا۟ بِهِ ٱلْحَقَّ فَأَخَذْتُهُمْ ۖ فَكَيْفَ
كَانَ عِقَابِ﴾
৫। এর পূর্বে
নূহের আ. কওম অস্বীকার করেছে এবং তাদের পরে আরো বহু দল ও গোষ্ঠী এ কাজ করেছে। প্রত্যেক
উম্মত তার রাসূলকে পাকড়াও করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা সবাই
বাতিলের হাতিয়ারের সাহায্যে হককে অবদমিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু
শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি। দেখে নাও, কত কঠিন ছিল
আমার শাস্তি।৫
﴿وَكَذَٰلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ
رَبِّكَ عَلَى ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَنَّهُمْ أَصْحَـٰبُ ٱلنَّارِ﴾
৬। অনুরূপ
যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য তোমার রবের এ সিদ্ধান্তও অবধারিত হয়ে গিয়েছে যে, তারা
জাহান্নামের বাসিন্দা হবে।
﴿ٱلَّذِينَ يَحْمِلُونَ ٱلْعَرْشَ
وَمَنْ حَوْلَهُۥ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيُؤْمِنُونَ بِهِۦ وَيَسْتَغْفِرُونَ
لِلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَىْءٍۢ رَّحْمَةًۭ وَعِلْمًۭا فَٱغْفِرْ
لِلَّذِينَ تَابُوا۟ وَٱتَّبَعُوا۟ سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ﴾
৭। আল্লাহর
আরশের ধারক ফেরেশতাগণ এবং যারা আরশের চার পাশে হাজির থাকে তারা সবাই প্রশংসাসহ
তাদের রবের পবিত্রতা বর্ণনা করে। তাঁর
প্রতি ঈমান পোষণ করে এবং ঈমানদারদের জন্য দোয়া করে।৬ তারা
বলেঃ হে আমাদের রব, তুমি তোমার রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সবকিছু
পরিবেষ্টন করে আছো।৭ তাই মাফ
করে দাও এবং দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করো৮ যারা তাওবা
করেছে এবং তোমার পথ অনুসরণ করেছে৯ তাদেরকে।
﴿رَبَّنَا وَأَدْخِلْهُمْ
جَنَّـٰتِ عَدْنٍ ٱلَّتِى وَعَدتَّهُمْ وَمَن صَلَحَ مِنْ ءَابَآئِهِمْ وَأَزْوَٰجِهِمْ
وَذُرِّيَّـٰتِهِمْ ۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ﴾
৮। হে আমাদের
রব উপরন্তু তাদেরকে তোমার প্রতিশ্রুত১০ চিরস্থায়ী
জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তাদের
বাপ, মা, স্ত্রী ও
সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল (তাদেরকেও সেখানে তাদের সাথে পৌঁছিয়ে দাও)।১১ তুমি
নিঃসন্দেহে সর্বশক্তিমান ও মহাকৌশলী।
﴿وَقِهِمُ ٱلسَّيِّـَٔاتِ
ۚ وَمَن تَقِ ٱلسَّيِّـَٔاتِ يَوْمَئِذٍۢ فَقَدْ رَحِمْتَهُۥ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ
ٱلْعَظِيمُ﴾
৯। আর তাদেরকে
মন্দ কাজসমূহ থেকে রক্ষা করো।১২ কিয়ামতের
দিন তুমি যাকে মন্দ ও অকল্যাণসমূহ১৩ থেকে
রক্ষা করেছো তার প্রতি তুমি বড় করুণা করেছো। এটাই বড়
সফলতা।
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟
يُنَادَوْنَ لَمَقْتُ ٱللَّهِ أَكْبَرُ مِن مَّقْتِكُمْ أَنفُسَكُمْ إِذْ تُدْعَوْنَ
إِلَى ٱلْإِيمَـٰنِ فَتَكْفُرُونَ﴾
১০। যারা কুফরী
করেছে কিয়ামতের দিন তাদের ডেকে বলা হবে, “আজ তোমরা নিজেদের ওপর
যতটা ক্রোধান্বিত হচ্ছো, আল্লাহ তোমাদের ওপর তার চেয়েও অধিক
ক্রোধান্বিত হতেন তখন যখন তোমাদেরকে ঈমানের দিকে আহ্বান জানানো হতো আর তোমরা উল্টা
কুফরী করতে।”১৪
﴿قَالُوا۟ رَبَّنَآ أَمَتَّنَا
ٱثْنَتَيْنِ وَأَحْيَيْتَنَا ٱثْنَتَيْنِ فَٱعْتَرَفْنَا بِذُنُوبِنَا فَهَلْ إِلَىٰ
خُرُوجٍۢ مِّن سَبِيلٍۢ﴾
১১। তারা বলবেঃ
হে আমাদের রব, প্রকৃতই তুমি আমাদেরকে দু’বার মৃত্যু
দিয়েছো এবং দু’বার জীবন দান করেছো।১৫ এখন আমরা অপরাধ স্বীকার করছি।১৬ এখন এখান
থেকে বের হওয়ার কোন উপায় কি আছে?১৭
﴿ذَٰلِكُم بِأَنَّهُۥٓ إِذَا
دُعِىَ ٱللَّهُ وَحْدَهُۥ كَفَرْتُمْ ۖ وَإِن يُشْرَكْ بِهِۦ تُؤْمِنُوا۟ ۚ فَٱلْحُكْمُ
لِلَّهِ ٱلْعَلِىِّ ٱلْكَبِيرِ﴾
১২। (জবাব দেয়া
হবে) এ অবস্থা যার মধ্যে তোমরা আছো, তা এ কারণে যে, যখন একমাত্র আল্লাহর দিকে ডাকা হতো তখন তোমরা তা মানতে অস্বীকার করতে। কিন্তু
যখন তাঁর সাথে অন্যদেরকেও শামিল করা হতো তখন মেনে নিতে। এখন তো
ফায়সালা মহান ও মর্যাদাবান আল্লাহর হাতে।১৮
﴿هُوَ ٱلَّذِى يُرِيكُمْ ءَايَـٰتِهِۦ
وَيُنَزِّلُ لَكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ رِزْقًۭا ۚ وَمَا يَتَذَكَّرُ إِلَّا مَن يُنِيبُ﴾
১৩। তিনিই তো
তোমাদের নিদর্শনসমূহ দেখান১৯ এবং
তোমাদের জন্য আসমান থেকে রিযিক নাযিল করেন২০ (কিন্তু
এসব নিদর্শন দেখে) কেবল তারাই শিক্ষা গ্রহণ করে যারা আল্লাহর দিকে
প্রত্যাবর্তনকারী২১
﴿فَٱدْعُوا۟ ٱللَّهَ مُخْلِصِينَ
لَهُ ٱلدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْكَـٰفِرُونَ﴾
১৪। (সুতরাং হে
প্রত্যাবর্তনকারীরা,) দ্বীনকে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করে২২ তাঁকেই ডাকো,
তোমাদের এ কাজ কাফেরদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন।
﴿رَفِيعُ ٱلدَّرَجَـٰتِ ذُو
ٱلْعَرْشِ يُلْقِى ٱلرُّوحَ مِنْ أَمْرِهِۦ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦ لِيُنذِرَ
يَوْمَ ٱلتَّلَاقِ﴾
১৫। তিনি উচ্চ
মর্যাদার অধিকারী,২৩ আরশের অধিপতি।২৪ তাঁর
বান্দাদের মধ্য থেকে যার কাছে ইচ্ছা নিজের হুকুমে ‘রূহ’ নাযিল করেন২৫ যাতে সে
সাক্ষাতের দিন২৬ সম্পর্কে সাবধান করে
দেয়।
﴿يَوْمَ هُم بَـٰرِزُونَ ۖ
لَا يَخْفَىٰ عَلَى ٱللَّهِ مِنْهُمْ شَىْءٌۭ ۚ لِّمَنِ ٱلْمُلْكُ ٱلْيَوْمَ ۖ لِلَّهِ
ٱلْوَٰحِدِ ٱلْقَهَّارِ﴾
১৬। সেটি এমন দিন
যখন সব মানুষের সবকিছু প্রকাশ হয়ে পড়বে। আল্লাহর
কাছে তাদের কোন কথাই গোপন থাকবে না। (সেদিন
ঘোষণা দিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে)। আজ রাজত্ব কার?২৭ (সমস্ত
সৃষ্টি বলে উঠবে) একমাত্র আল্লাহর যিনি কাহ্হার।
﴿ٱلْيَوْمَ تُجْزَىٰ كُلُّ
نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ ۚ لَا ظُلْمَ ٱلْيَوْمَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ﴾
১৭। (বলা হবে,) আজ প্রত্যেক
প্রাণীকে তার কৃতকর্মের প্রতিদান দেয়া হবে। আজ কারো
প্রতি কোন জুলুম হবে না।২৮ আল্লাহ
অতি দ্রুত হিসেব গ্রহণকারী।২৯ হে নবী,
﴿وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ ٱلْـَٔازِفَةِ
إِذِ ٱلْقُلُوبُ لَدَى ٱلْحَنَاجِرِ كَـٰظِمِينَ ۚ مَا لِلظَّـٰلِمِينَ مِنْ حَمِيمٍۢ
وَلَا شَفِيعٍۢ يُطَاعُ﴾
১৮। এসব লোকদের
সেদিন সম্পর্কে সাবধান করে দাও যা সন্নিকটবর্তী হয়েছে।৩০ যেদিন
কলিজা মুখের মধ্যে এসে যাবে আর সব মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত ও দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে
চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবে। জালেমদের জন্য না থাকবে কোন
অন্তরঙ্গ বন্ধু,৩১ না থাকবে কোন গ্রহণযোগ্য
শাফায়াতকারী।৩২
﴿يَعْلَمُ خَآئِنَةَ ٱلْأَعْيُنِ
وَمَا تُخْفِى ٱلصُّدُورُ﴾
১৯। আল্লাহ
চোখের চুরি ও মনের গোপন কথা পর্যন্ত জানেন।
﴿وَٱللَّهُ يَقْضِى بِٱلْحَقِّ
ۖ وَٱلَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا يَقْضُونَ بِشَىْءٍ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ
ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ﴾
২০। আল্লাহ্
সঠিক ও ন্যায় ভিত্তিক ফায়সালা করবেন। আর (এ
মুশরিকরা) আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকে, তারা কোন
কিছুরই ফায়সালাকারী নয়। নিঃসন্দেহে আল্লাহই সবকিছু
শোনেন ও দেখেন।৩৩
﴿أَوَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى
ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ كَانُوا۟ مِن قَبْلِهِمْ
ۚ كَانُوا۟ هُمْ أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةًۭ وَءَاثَارًۭا فِى ٱلْأَرْضِ فَأَخَذَهُمُ
ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ وَمَا كَانَ لَهُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن وَاقٍۢ﴾
২১। এসব লোক কি
কখনো পৃথিবীর বুকে ভ্রমণ করেনি তাহলে ইতিপূর্বে যারা অতীত হয়েছে তাদের পরিণাম
দেখতে পেতো? তারা এদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী ছিল এবং
এদের চেয়েও বেশী শক্তিশালী স্মৃতিচিহ্ন পৃথিবীর বুকে রেখে গিয়েছে। কিন্তু
গোনাহর কারণে আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও করেছেন। আল্লাহর
হাত থেকে তাদের রক্ষাকারী কাউকে পাওয়া যায়নি।
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَانَت
تَّأْتِيهِمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَـٰتِ فَكَفَرُوا۟ فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ ۚ إِنَّهُۥ
قَوِىٌّۭ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ﴾
২২। তাদের এহেন
পরিণতির কারণ হলো তাদের কাছে তাদের রাসূল স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ৩৪ নিয়ে
এসেছিলো আর তারা তা মানতে অস্বীকার করেছিলো। অবশেষে
আল্লাহ তাদের পাকড়াও করলেন। নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত
শক্তিশালী এবং কঠোর শাস্তিদাতা।
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ
بِـَٔايَـٰتِنَا وَسُلْطَـٰنٍۢ مُّبِينٍ﴾
২৩। আমি মূসাকে৩৫ ফেরাউন,
হামান৩৬ ও
কারূণের কাছে আমার নিদর্শনসমূহ এবং
﴿إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَهَـٰمَـٰنَ
وَقَـٰرُونَ فَقَالُوا۟ سَـٰحِرٌۭ كَذَّابٌۭ﴾
২৪। আমার পক্ষ
থেকে আদিষ্ট হওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ৩৭ সহ
পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তারা বললোঃ জাদুকর, মিথ্যাবাদী।
﴿فَلَمَّا جَآءَهُم بِٱلْحَقِّ
مِنْ عِندِنَا قَالُوا۟ ٱقْتُلُوٓا۟ أَبْنَآءَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ وَٱسْتَحْيُوا۟
نِسَآءَهُمْ ۚ وَمَا كَيْدُ ٱلْكَـٰفِرِينَ إِلَّا فِى ضَلَـٰلٍۢ﴾
২৫। অতঃপর যখন
সে আমার পক্ষ থেকে সত্য এনে হাজির করলো৩৮ তখন তারা
বললো, যারা ঈমান এনে তার সাথে সামিল হয়েছে তাদের ছেলেদের
হত্যা করো এবং মেয়েদের জীবিত রাখো।৩৯ কিন্তু
কাফেরদের চক্রান্ত ব্যর্থই হয়ে গেল।৪০
﴿وَقَالَ فِرْعَوْنُ ذَرُونِىٓ
أَقْتُلْ مُوسَىٰ وَلْيَدْعُ رَبَّهُۥٓ ۖ إِنِّىٓ أَخَافُ أَن يُبَدِّلَ دِينَكُمْ
أَوْ أَن يُظْهِرَ فِى ٱلْأَرْضِ ٱلْفَسَادَ﴾
২৬। একদিন৪১ ফেরাউন
তার সভাসদদের বললোঃ আমাকে ছাড়ো, আমি এ মূসাকে হত্যা করবো।৪২ সে তার
রবকে ডকে দেখুক। আমার আশঙ্কা হয়, সে তোমাদের
দ্বীনকে পাল্টে দেবে কিংবা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।”৪৩
﴿وَقَالَ مُوسَىٰٓ إِنِّى
عُذْتُ بِرَبِّى وَرَبِّكُم مِّن كُلِّ مُتَكَبِّرٍۢ لَّا يُؤْمِنُ بِيَوْمِ ٱلْحِسَابِ﴾
২৭। মূসা বললো, যেসব অহংকারী
হিসেবের দিনের প্রতি ঈমান পোষণ করে না, তাদের প্রত্যেকের
মোকাবিলায় আমি আমার ও তোমাদের রবের আশ্রয় গ্রহণ করেছি।৪৪
﴿وَقَالَ رَجُلٌۭ مُّؤْمِنٌۭ
مِّنْ ءَالِ فِرْعَوْنَ يَكْتُمُ إِيمَـٰنَهُۥٓ أَتَقْتُلُونَ رَجُلًا أَن يَقُولَ
رَبِّىَ ٱللَّهُ وَقَدْ جَآءَكُم بِٱلْبَيِّنَـٰتِ مِن رَّبِّكُمْ ۖ وَإِن يَكُ كَـٰذِبًۭا
فَعَلَيْهِ كَذِبُهُۥ ۖ وَإِن يَكُ صَادِقًۭا يُصِبْكُم بَعْضُ ٱلَّذِى يَعِدُكُمْ
ۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى مَنْ هُوَ مُسْرِفٌۭ كَذَّابٌۭ﴾
২৮। এ সময়
ফেরাউনের দরবারের এক ব্যক্তি যে তার ঈমান গোপন রেখেছিলো- বললোঃ তোমরা কি এক
ব্যক্তিকে শুধু এ কারণে হত্যা করবে যে, সে বলে, আল্লাহ আমার রব? অথচ সে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের
কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে।৪৫ সে
মিথাবাদী হয়ে থাকলে তার মিথ্যার দায়-দায়িত্ব তারই।৪৬ কিন্তু
সে যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে তাহলে যেসব ভয়ানক পরিণামের কথা সে বলছে তার কিছুটা তো
অবশ্যই তোমাদের ওপর আসবে। আল্লাহ
কোন সীমালংঘনকারী মিথ্যাবাদী লোককে হিদায়াত দান করেন না।৪৭
﴿يَـٰقَوْمِ لَكُمُ ٱلْمُلْكُ
ٱلْيَوْمَ ظَـٰهِرِينَ فِى ٱلْأَرْضِ فَمَن يَنصُرُنَا مِنۢ بَأْسِ ٱللَّهِ إِن جَآءَنَا
ۚ قَالَ فِرْعَوْنُ مَآ أُرِيكُمْ إِلَّا مَآ أَرَىٰ وَمَآ أَهْدِيكُمْ إِلَّا سَبِيلَ
ٱلرَّشَادِ﴾
২৯। হে আমার
কওমের লোকেরা, আজ তোমরা বাদশাহীর অধিকারী এবং ভূ-ভাগের
বিজয়ী শক্তি। কিন্তু আল্লাহর আযাব যদি
আমাদের ওপর এসে পড়ে তাহলে আমাদেরকে সাহায্য করার মতো কে আছে?৪৮ ফেরাউন
বললো, আমি যা ভাল মনে করছি সে মতামতই তোমাদের সামনে পেশ করছি। আর আমি
তোমাদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনাই দিচ্ছি।৪৯
﴿وَقَالَ ٱلَّذِىٓ ءَامَنَ
يَـٰقَوْمِ إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُم مِّثْلَ يَوْمِ ٱلْأَحْزَابِ﴾
৩০। যে ব্যক্তি
ঈমান এনেছিলো, বললোঃ হে আমার কওমের লোকেরা, আমার আশঙ্কা হচ্ছে, তোমাদের ওপরও সেদিনের মতো দিন
এসে না যায়, যা এর আগে বহু দলের ওপর এসেছিলো।
﴿مِثْلَ دَأْبِ قَوْمِ نُوحٍۢ
وَعَادٍۢ وَثَمُودَ وَٱلَّذِينَ مِنۢ بَعْدِهِمْ ۚ وَمَا ٱللَّهُ يُرِيدُ ظُلْمًۭا
لِّلْعِبَادِ﴾
৩১। যেমন দিন
এসেছিলো নূহ আ., আদ, সামূদ এবং তাদের
পরবর্তী কওমসমূহের ওপর। আর এটা সত্য যে, আল্লাহ তার
বান্দাদের ওপর জুলুম করার কোন ইচ্ছা রাখেন না।৫০
﴿وَيَـٰقَوْمِ إِنِّىٓ أَخَافُ
عَلَيْكُمْ يَوْمَ ٱلتَّنَادِ﴾
৩২। হে কওম, আমার ভয় হয়,
তোমাদের ওপর ফরিয়াদ ও অনুশোচনা করার দিন না এসে পড়ে,
﴿يَوْمَ تُوَلُّونَ مُدْبِرِينَ
مَا لَكُم مِّنَ ٱللَّهِ مِنْ عَاصِمٍۢ ۗ وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِنْ
هَادٍۢ﴾
৩৩। যখন তোমরা
একে অপরকে ডাকতে থাকবে এবং দৌঁড়িয়ে পালাতে থাকবে। কিন্তু
সেখানে আল্লাহর হাত থেকে বাঁচানোর কেউ থাকবে না। সত্য কথা
হচ্ছে এই যে, আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করে দেন তাকে কেউ পথ
দেখাতে পারে না।
﴿وَلَقَدْ جَآءَكُمْ يُوسُفُ
مِن قَبْلُ بِٱلْبَيِّنَـٰتِ فَمَا زِلْتُمْ فِى شَكٍّۢ مِّمَّا جَآءَكُم بِهِۦ ۖ
حَتَّىٰٓ إِذَا هَلَكَ قُلْتُمْ لَن يَبْعَثَ ٱللَّهُ مِنۢ بَعْدِهِۦ رَسُولًۭا ۚ كَذَٰلِكَ
يُضِلُّ ٱللَّهُ مَنْ هُوَ مُسْرِفٌۭ مُّرْتَابٌ﴾
৩৪। এর আগে
ইউসুফ তোমাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনসূমহ নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু
তোমরা তাঁর আনীত শিক্ষার ব্যাপারে সন্দেহই পোষণ করেছো। পরে তাঁর
ইন্তিকাল হলে তোমরা বললেঃ এখন আর আল্লাহ কোন রাসূল পাঠাবেন না।৫১ এভাবে৫২ আল্লাহ তাআ’লা
সেসব লোকদের গোমরাহীর মধ্যে নিক্ষেপ করেন যারা সীমালংঘনকারী ও সন্দেহ প্রবণ হয়।
﴿ٱلَّذِينَ يُجَـٰدِلُونَ
فِىٓ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَـٰنٍ أَتَىٰهُمْ ۖ كَبُرَ مَقْتًا عِندَ ٱللَّهِ
وَعِندَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ۚ كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ قَلْبِ مُتَكَبِّرٍۢ
جَبَّارٍۢ﴾
৩৫। এবং আল্লাহর
আয়াতসমূহের ব্যাপারে ঝগড়া করে। অথচ এ ব্যাপারে তাদের কাছে
কোন সনদ বা প্রমাণ আসেনি।৫৩ আল্লাহ ও
ঈমানদারদের কাছে এ আচরণ অত্যন্ত ক্রোধ উদ্রেককারী। এভাবে
আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী ও স্বেচ্ছাচারীর মনে মোহর লাগিয়ে দেন।৫৪
﴿وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَـٰهَـٰمَـٰنُ
ٱبْنِ لِى صَرْحًۭا لَّعَلِّىٓ أَبْلُغُ ٱلْأَسْبَـٰبَ﴾
৩৬। ফেরাউন
বললোঃ “হে হামান, আমার জন্য একটি সুউচ্চ ইমরাত নির্মাণ করো
যাতে আমি রাস্তাসমূহ পর্যন্ত পৌঁছতে পারি
﴿أَسْبَـٰبَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
فَأَطَّلِعَ إِلَىٰٓ إِلَـٰهِ مُوسَىٰ وَإِنِّى لَأَظُنُّهُۥ كَـٰذِبًۭا ۚ وَكَذَٰلِكَ
زُيِّنَ لِفِرْعَوْنَ سُوٓءُ عَمَلِهِۦ وَصُدَّ عَنِ ٱلسَّبِيلِ ۚ وَمَا كَيْدُ فِرْعَوْنَ
إِلَّا فِى تَبَابٍۢ﴾
৩৭। অর্থাৎ
আসমানের রাস্তা এবং মূসার ইলাহকে উঁকি দিয়ে দেখতে পারি। মূসাকে
মিথ্যাবাদী বলেই আমার মনে হয়।”৫৫ এভাবে
ফেরাউনের জন্য তার কুকর্মসমূহ সুদৃশ্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার সোজা পথে চলা
থামিয়ে দেয়া হয়েছে। ফেরাউনের সমস্ত চক্রান্ত
(তার নিজের) ধ্বংসের পথেই ব্যয়িত হয়েছে।
﴿وَقَالَ ٱلَّذِىٓ ءَامَنَ
يَـٰقَوْمِ ٱتَّبِعُونِ أَهْدِكُمْ سَبِيلَ ٱلرَّشَادِ﴾
৩৮। যে ব্যক্তি
ঈমান এনেছিলো, বললোঃ হে আমার কওমের লোকেরা, আমার কথা মেনে নাও। আমি
তোমাদেরকে সঠিক পথের সন্ধান দিচ্ছি।
﴿يَـٰقَوْمِ إِنَّمَا هَـٰذِهِ
ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا مَتَـٰعٌۭ وَإِنَّ ٱلْـَٔاخِرَةَ هِىَ دَارُ ٱلْقَرَارِ﴾
৩৯। হে কওম, দুনিয়ার এ
জীবন তো কয়েক দিনের জন্য।৫৬ একমাত্র
আখেরাতই চিরদিনের অবস্থানস্থল।
﴿مَنْ عَمِلَ سَيِّئَةًۭ فَلَا
يُجْزَىٰٓ إِلَّا مِثْلَهَا ۖ وَمَنْ عَمِلَ صَـٰلِحًۭا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ
مُؤْمِنٌۭ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ يَدْخُلُونَ ٱلْجَنَّةَ يُرْزَقُونَ فِيهَا بِغَيْرِ حِسَابٍۢ﴾
৪০। যে মন্দ
কাজ করবে সে যতটুকু মন্দ করবে ততটুকুরই প্রতিফল লাভ করবে। আর নারী
হোক বা পুরুষ যে নেক কাজ করবে সে যদি ঈমানদার হয় তাহলে তারা সবাই জান্নাতে প্রবেশ
করবে। সেখানে তাদেরকে বেহিসেব রিযিক দেয়া হবে।
﴿وَيَـٰقَوْمِ مَا لِىٓ أَدْعُوكُمْ
إِلَى ٱلنَّجَوٰةِ وَتَدْعُونَنِىٓ إِلَى ٱلنَّارِ﴾
৪১। হে কওম, কি ব্যাপার
যে, আমি তোমাদেরকে মুক্তির দিকে আহ্বান জানাচ্ছি আর তোমরা
আমাকে আগুনের দিকে আহ্বান জানাচ্ছো।
﴿تَدْعُونَنِى لِأَكْفُرَ
بِٱللَّهِ وَأُشْرِكَ بِهِۦ مَا لَيْسَ لِى بِهِۦ عِلْمٌۭ وَأَنَا۠ أَدْعُوكُمْ إِلَى
ٱلْعَزِيزِ ٱلْغَفَّـٰرِ﴾
৪২। তোমরা
আমাকে আহ্বান জানাচ্ছো যেন আমি আল্লাহর সাথে কুফরী করি এবং সেসব সত্তাকে তাঁর সাথে
শরীক করি যাদের আমি জানি না।৫৭ অথচ আমি
তোমাদের সে মহাপরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাচ্ছি।
﴿لَا جَرَمَ أَنَّمَا تَدْعُونَنِىٓ
إِلَيْهِ لَيْسَ لَهُۥ دَعْوَةٌۭ فِى ٱلدُّنْيَا وَلَا فِى ٱلْـَٔاخِرَةِ وَأَنَّ مَرَدَّنَآ
إِلَى ٱللَّهِ وَأَنَّ ٱلْمُسْرِفِينَ هُمْ أَصْحَـٰبُ ٱلنَّارِ﴾
৪৩। না, সত্য হচ্ছে
এই যে, তোমরা যেসব জিনিসের দিকে আমাকে ডাকছো, তাতে না আছে দুনিয়াতে কোন আবেদন না আছে আখেরাতে কোন আহ্বান।৫৮ আমাদেরকে
আল্লাহর দিকেই ফিরে যেতে হবে। আর
সীমালংঘনকারী৫৯ আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। এর
ব্যতিক্রম হতে পারে না।
﴿فَسَتَذْكُرُونَ مَآ أَقُولُ
لَكُمْ ۚ وَأُفَوِّضُ أَمْرِىٓ إِلَى ٱللَّهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ بَصِيرٌۢ بِٱلْعِبَادِ﴾
৪৪। আজ
তোমাদেরকে আমি যা বলছি অচিরেই এমন সময় আসবে যখন তোমরা তা স্মরণ করবে। আমি আমার
ব্যাপারটা আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। তিনি তাঁর
বান্দাদের রক্ষক।৬০
﴿فَوَقَىٰهُ ٱللَّهُ سَيِّـَٔاتِ
مَا مَكَرُوا۟ ۖ وَحَاقَ بِـَٔالِ فِرْعَوْنَ سُوٓءُ ٱلْعَذَابِ﴾
৪৫। শেষ
পর্যন্ত তারা ঐ ঈমানদারের বিরুদ্ধে যেসব জঘন্য চক্রান্ত করেছে আল্লাহ তাআ’লা তাকে
তা থেকে রক্ষা করেছেন।৬১ আর
ফেরাউনের সাংগপাংগরাই জঘন্য আযাবের চক্রে পড়ে গিয়েছে।৬২
﴿ٱلنَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا
غُدُوًّۭا وَعَشِيًّۭا ۖ وَيَوْمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدْخِلُوٓا۟ ءَالَ فِرْعَوْنَ
أَشَدَّ ٱلْعَذَابِ﴾
৪৬। দোযখের
আগুন, যে আগুনের সামনে তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় পেশ
করা হয়। কিয়ামত সংঘটিত হলে নিদের্শ দেয়া হবে, ফেরাউনের
অনুসারীদের কঠিন আযাবে নিক্ষেপ করো।৬৩
﴿وَإِذْ يَتَحَآجُّونَ فِى
ٱلنَّارِ فَيَقُولُ ٱلضُّعَفَـٰٓؤُا۟ لِلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوٓا۟ إِنَّا كُنَّا لَكُمْ
تَبَعًۭا فَهَلْ أَنتُم مُّغْنُونَ عَنَّا نَصِيبًۭا مِّنَ ٱلنَّارِ﴾
৪৭। তারপর একটু
চিন্তা করে দেখো সে সময়ের কথা যখন এসব লোক দোযখের মধ্যে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হবে। যারা
দুনিয়ায় দুর্বল ছিল তারা সেসব লোকদের বলবে যারা নিজেদের বড় মনে করতো, “আমরা তো
তোমাদের অনুসারী ছিলাম। এখন এখানে কি তোমরা আমাদেরকে
জাহান্নামের কষ্টের কিছু অংশ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করবে?”৬৪
﴿قَالَ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوٓا۟
إِنَّا كُلٌّۭ فِيهَآ إِنَّ ٱللَّهَ قَدْ حَكَمَ بَيْنَ ٱلْعِبَادِ﴾
৪৮। বড়ত্বের
দাবীদাররা বলবেঃ আমরা সবাই এখানে একই অবস্থায় আছি। আর আল্লাহ
তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে ফায়সালা করে দিয়েছেন।৬৫
﴿وَقَالَ ٱلَّذِينَ فِى ٱلنَّارِ
لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ ٱدْعُوا۟ رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًۭا مِّنَ ٱلْعَذَابِ﴾
৪৯। দোযখে
নিক্ষিপ্ত এসব লোক জাহান্নামের কর্মকর্তাদের বলবেঃ “তোমাদের রবের কাছে দোয়া করো
তিনি যেন একদিনের জন্য আমাদের আযাব হ্রাস করেন।”
﴿قَالُوٓا۟ أَوَلَمْ تَكُ
تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُم بِٱلْبَيِّنَـٰتِ ۖ قَالُوا۟ بَلَىٰ ۚ قَالُوا۟ فَٱدْعُوا۟ ۗ
وَمَا دُعَـٰٓؤُا۟ ٱلْكَـٰفِرِينَ إِلَّا فِى ضَلَـٰلٍ﴾
৫০। তারা বলবে, “তোমাদের রাসূলগণ
কি তোমাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আসেননি?” “তারা
বলবে হ্যাঁ।” জাহান্নামের কর্মকর্তারা
বলবেঃ “তাহলে তোমরাই দোয়া করো। তবে কাফেরদের দোয়া ব্যর্থই
হয়ে থাকে।”৬৬
﴿إِنَّا لَنَنصُرُ رُسُلَنَا
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُومُ ٱلْأَشْهَـٰدُ﴾
৫১। নিশ্চিত
জানো, আমি এ পার্থিব জীবনে আমার রাসূল ও
ঈমানদারদের অবশ্যই সাহায্য করি৬৭ এবং
যেদিন সাক্ষীদের পেশ করা হবে৬৮ সেদিনও
করবো।
﴿يَوْمَ لَا يَنفَعُ ٱلظَّـٰلِمِينَ
مَعْذِرَتُهُمْ ۖ وَلَهُمُ ٱللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوٓءُ ٱلدَّارِ﴾
৫২। যেদিন ওজর
ও যুক্তি পেশ জালেমদের কোন উপকারে আসবে না, তাদের ওপর
লা’নত পড়বে এবং তাদের জন্য হবে জঘন্যতম ঠিকানা।
﴿وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا مُوسَى
ٱلْهُدَىٰ وَأَوْرَثْنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ ٱلْكِتَـٰبَ﴾
৫৩। অবশেষে
দেখো, আমি মূসাকে পথনির্দেশনা দিয়েছিলাম৬৯ এবং বনী ইসরাঈলদের
এমন এক কিতাবের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছি
﴿هُدًۭى وَذِكْرَىٰ لِأُو۟لِى
ٱلْأَلْبَـٰبِ﴾
৫৪। যা ছিল
বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীদের জন্য হিদায়াত ও নসিহত।৭০
﴿فَٱصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ
حَقٌّۭ وَٱسْتَغْفِرْ لِذَنۢبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِٱلْعَشِىِّ وَٱلْإِبْكَـٰرِ﴾
৫৫। অতএব, হে নবী,
ধৈর্যধারণ করো।৭১ আল্লাহর
ওয়াদা সত্য,৭২ নিজের ভুল-ত্রুটির
জন্য মাফ চাও৭৩
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يُجَـٰدِلُونَ
فِىٓ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَـٰنٍ أَتَىٰهُمْ ۙ إِن فِى صُدُورِهِمْ إِلَّا
كِبْرٌۭ مَّا هُم بِبَـٰلِغِيهِ ۚ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ ۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ
ٱلْبَصِيرُ﴾
৫৬। এবং সকাল
সন্ধ্যা নিজের রবের প্রশংসার সাথে সাথে তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করতে থাকো।৭৪ প্রকৃত
ব্যাপার হচ্ছে, যারা তাদের কাছে আসা যুক্তি-প্রমাণ ছাড়া
আল্লাহর নিদর্শনসমূহের ব্যাপারে ঝগড়া করছে তাদের মন অহংকারে ভরা৭৫ কিন্তু
তারা যে বড়ত্বের অহংকার করে তারা তার ধারেও ঘেঁষতে পারবে না।৭৬ তাই
আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো৭৭ তিনি
সবকিছু দেখেন এবং শোনেন।
﴿لَخَلْقُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ أَكْبَرُ مِنْ خَلْقِ ٱلنَّاسِ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾
৫৭। মানুষ৭৮ সৃষ্টি
করার চেয়ে আসমান ও যমীন সৃষ্টি করা নিঃসন্দেহে অনেক বড় কাজ। কিন্তু
অধিকাংশ মানুষই জানে না।৭৯
﴿وَمَا يَسْتَوِى ٱلْأَعْمَىٰ
وَٱلْبَصِيرُ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَلَا ٱلْمُسِىٓءُ
ۚ قَلِيلًۭا مَّا تَتَذَكَّرُونَ﴾
৫৮। অন্ধ ও
দৃষ্টিশক্তির অধিকারী এক রকম হতে পারে না এবং ঈমানদার ও সৎকর্মশীল এবং
দুষ্কৃতিকারী সমান হতে পারে না, কিন্তু তোমরা কমই বুঝতে
পারো।৮০
﴿إِنَّ ٱلسَّاعَةَ لَـَٔاتِيَةٌۭ
لَّا رَيْبَ فِيهَا وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ﴾
৫৯। কিয়ামত
নিশ্চয়ই আসবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু
অধিকাংশ লোক তা বিশ্বাস করে না।৮১
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدْعُونِىٓ
أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِى سَيَدْخُلُونَ
جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾
৬০। তোমাদের৮২ রব বলেনঃ
আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো।৮৩ যেসব
মানুষ গর্বের কারণে আমার দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা অচিরেই লাঞ্ছিত ও
অপমানিত হয়ে জাহান্নামে
﴿ٱللَّهُ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ
ٱلَّيْلَ لِتَسْكُنُوا۟ فِيهِ وَٱلنَّهَارَ مُبْصِرًا ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَذُو فَضْلٍ
عَلَى ٱلنَّاسِ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ﴾
৬১। আল্লাহই তো
সেই মহান সত্তা যিনি তোমাদের জন্য রাত সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা রাতের বেলা আরাম
করতে পারো। আর দিনকে আলোকিত করেছেন। সত্য এই
যে, আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুকম্পাশীল। তবে
অধিকাংশ লোক শুকরিয়া আদায় করে না।৮৫
﴿ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمْ
خَـٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍۢ لَّآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ فَأَنَّىٰ تُؤْفَكُونَ﴾
৬২। সে আল্লাহই
(যিনি তোমাদের জন্য এসব করেছেন) তোমাদের রব, সবকিছুর
স্রষ্টা, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই।৮৬ তোমাদেরকে
কোন দিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে?৮৭
﴿كَذَٰلِكَ يُؤْفَكُ ٱلَّذِينَ
كَانُوا۟ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ يَجْحَدُونَ﴾
৬৩। এভাবেই
সেসব লোককে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে যারা আল্লাহর আয়াত সমূহ অস্বীকার করতো।৮৮
﴿ٱللَّهُ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ
ٱلْأَرْضَ قَرَارًۭا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءًۭ وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ
وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَـٰتِ ۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمْ ۖ فَتَبَارَكَ ٱللَّهُ
رَبُّ ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾
৬৪। আল্লাহই তো
সেই সত্তা যিনি পৃথিবীকে অবস্থানস্থল বানিয়েছেন৮৯ এবং ওপরে
আসমানকে গম্বুজ বানিয়ে দিয়েছেন।৯০ যিনি
তোমাদের আকৃতি নির্মাণ করেছেন এবং অতি উত্তম আকৃতি নির্মাণ করেছেন। যিনি
তোমাদেরকে পবিত্র জিনিসের রিযিক দিয়েছেন।৯১ সে
আল্লাহই (এগুলো যার কাজ) তোমাদের
﴿هُوَ ٱلْحَىُّ لَآ إِلَـٰهَ
إِلَّا هُوَ فَٱدْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ ۗ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾
৬৫। তিনি
চিরঞ্জীব।৯২ তিনি ছাড়া কোন উপাস্য
নেই। তোমাদের দ্বীন তাঁর জন্য নিবেদিত করে
তাঁকেই ডাকো।৯৩ গোটা
সৃষ্টি জগতের রব আল্লাহর জন্যই সব প্রশংসা।৯৪
﴿قُلْ إِنِّى نُهِيتُ أَنْ
أَعْبُدَ ٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ لَمَّا جَآءَنِىَ ٱلْبَيِّنَـٰتُ
مِن رَّبِّى وَأُمِرْتُ أَنْ أُسْلِمَ لِرَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾
৬৬। হে নবী, এসব লোককে
বলে দাও, আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের ডাকো আমাকে সেসব
সত্তার দাসত্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে।৯৫ (আমি কি
করে এ কাজ করতে পারি) আমার কাছে আমার রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী এসেছে। আমাকে
নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আমি যেন গোটা বিশ্ব-জাহানের রবের সামনে
আনুগত্যের মস্তক অবনত করি।
﴿هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن
تُرَابٍۢ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍۢ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍۢ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًۭا ثُمَّ
لِتَبْلُغُوٓا۟ أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا۟ شُيُوخًۭا ۚ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّىٰ
مِن قَبْلُ ۖ وَلِتَبْلُغُوٓا۟ أَجَلًۭا مُّسَمًّۭى وَلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ﴾
৬৭। তিনিই তো
সে সত্তা যিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর
শুক্র থেকে। তারপর রক্তের পিণ্ড থেকে। অতঃপর
তিনি তোমাদেরকে শিশুর আকৃতিতে বের করে আনেন। এরপর তিনি
তোমাদেরকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেন যাতে তোমরা নিজেদের পূর্ণ শক্তিতে উপনীত হতে পারো। তারপর আরো
বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেন যাতে তোমরা বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হও। তোমাদের
কাউকে আগেই ফিরিয়ে নেয়া হয়।৯৬ এসব কাজ করা হয় এজন্য যাতে
তোমরা তোমাদের নির্ধারিত সময়ের সীমায় পৌঁছতে পারো৯৭ এবং যাতে প্রকৃত সত্য উপলব্ধি
করতে পারো।৯৮
﴿هُوَ ٱلَّذِى يُحْىِۦ وَيُمِيتُ
ۖ فَإِذَا قَضَىٰٓ أَمْرًۭا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ﴾
৬৮। তিনিই
প্রাণ সঞ্চারকারী এবং তিনিই মৃত্যুদানকারী। তিনি কোন
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে শুধু একটি নির্দেশ দেন যে, তা হয়ে যাক,
আর তখনি তা হয়ে যায়।
﴿أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ
يُجَـٰدِلُونَ فِىٓ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ أَنَّىٰ يُصْرَفُونَ﴾
৬৯। তুমি কি
সেসব লোকদের দেখনি যারা আল্লাহর বিধানাবলী নিয়ে ঝগড়া করে, তাদেরকে কোথা
থেকে ফিরানো হচ্ছে?৯৯
﴿ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِٱلْكِتَـٰبِ
وَبِمَآ أَرْسَلْنَا بِهِۦ رُسُلَنَا ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ﴾
৭০। যারা এ
কিতাবকে অস্বীকার করে এবং আমি আমার রাসূলদের যা দিয়ে পাঠিয়েছিলাম১০০ তাও
অস্বীকার করে? এসব লোক অচিরেই জানতে পারবে
﴿إِذِ ٱلْأَغْلَـٰلُ فِىٓ
أَعْنَـٰقِهِمْ وَٱلسَّلَـٰسِلُ يُسْحَبُونَ﴾
৭১। যখন তাদের
গলায় থাকবে গ্রীবা বন্ধনী ও শৃঙ্খল,
﴿فِى ٱلْحَمِيمِ ثُمَّ فِى
ٱلنَّارِ يُسْجَرُونَ﴾
৭২। এসব ধরে
টানতে টানতে তাদেরকে ফুটন্ত পানির দিকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং দোযখের আগুনে নিক্ষেপ
করা হবে।১০১
﴿ثُمَّ قِيلَ لَهُمْ أَيْنَ
مَا كُنتُمْ تُشْرِكُونَ﴾
৭৩। অতঃপর
তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে; এখন তোমাদের সেসব ইলাহ কোথায় যাদেরকে
তোমরা শরীক করতে।১০২
﴿مِن دُونِ ٱللَّهِ ۖ قَالُوا۟
ضَلُّوا۟ عَنَّا بَل لَّمْ نَكُن نَّدْعُوا۟ مِن قَبْلُ شَيْـًۭٔا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ
ٱللَّهُ ٱلْكَـٰفِرِينَ﴾
৭৪। তারা জবাব
দেবে, তারা আমাদের থেকে হারিয়ে গেছে। এর আগে
আমরা যাদেরকে ডাকতাম তারা কিছুই না।১০৩ আল্লাহ
এভাবে কাফেরদের ভ্রষ্টতাকে কার্যকর করে দেবেন।
﴿ذَٰلِكُم بِمَا كُنتُمْ تَفْرَحُونَ
فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَبِمَا كُنتُمْ تَمْرَحُونَ﴾
৭৫। তাদের বলা
হবে, তোমাদের এ পরিণতির কারণ হচ্ছে, তোমরা পৃথিবীতে অসত্য নিয়ে মেতে ছিলে এবং সেজন্য গর্ব প্রকাশ করতে।১০৪
﴿ٱدْخُلُوٓا۟ أَبْوَٰبَ جَهَنَّمَ
خَـٰلِدِينَ فِيهَا ۖ فَبِئْسَ مَثْوَى ٱلْمُتَكَبِّرِينَ﴾
৭৬। এখন অগ্রসর
হয়ে জাহান্নামের দরজায় প্রবেশ করো। তোমাদেরকে
চিরদিন সেখানেই থাকতে হবে। অহংকারীদের জন্য তা অতীব
জঘন্য জায়গা।
﴿فَٱصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ
حَقٌّۭ ۚ فَإِمَّا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ ٱلَّذِى نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِلَيْنَا
يُرْجَعُونَ﴾
৭৭। হে নবী, ধৈর্য্য
অবলম্বন করো।১০৫ আল্লাহর
ওয়াদা সত্য। আমি তাদেরকে যে মন্দ পরিণতির
ভয় দেখাচ্ছি এখন তোমার সামনেই এদেরকে তার কোন অংশ দেখিয়ে দেই কিংবা (তার আগেই)
তোমাকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেই, সর্বাবস্থায় এদেরকে আমার
কাছে ফিরে আসতে হবে।১০৬
পারে না। মৃত্যুর পর তাকে আমার কাছেই
আসতে হবে। তখন সে তার কৃতকর্মের পুরো
শাস্তি ভোগ করবে।
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًۭا
مِّن قَبْلِكَ مِنْهُم مَّن قَصَصْنَا عَلَيْكَ وَمِنْهُم مَّن لَّمْ نَقْصُصْ عَلَيْكَ
ۗ وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن يَأْتِىَ بِـَٔايَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِ ۚ فَإِذَا
جَآءَ أَمْرُ ٱللَّهِ قُضِىَ بِٱلْحَقِّ وَخَسِرَ هُنَالِكَ ٱلْمُبْطِلُونَ﴾
৭৮। হে নবী,১০৭ তোমার
আগে আমি বহু রাসূল পাঠিয়েছিলাম। আমি তাদের
অনেকের কাহিনী তোমাকে বলেছি আবার অনেকের কাহিনী তোমাকে বলিনি। আল্লাহর
হুকুম ছাড়া কোন নিদর্শন দেখানোর ক্ষমতা কোন রাসূলেরই ছিল না।১০৮ অতঃপর
যখন আল্লাহর হুকুম এসেছে তখন ন্যায়সঙ্গতভাবে ফায়সালা করা হয়েছে এবং ভ্রান্ত কাজে
লিপ্ত ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।১০৯
﴿ٱللَّهُ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ
ٱلْأَنْعَـٰمَ لِتَرْكَبُوا۟ مِنْهَا وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ﴾
৭৯। আল্লাহই
তোমাদের জন্য এসব গৃহপালিত পশু সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা এসব পশুর কোনটির পিঠে
আরোহণ করতে পার এবং কোনটির গোশত খেতে পার।
﴿وَلَكُمْ فِيهَا مَنَـٰفِعُ
وَلِتَبْلُغُوا۟ عَلَيْهَا حَاجَةًۭ فِى صُدُورِكُمْ وَعَلَيْهَا وَعَلَى ٱلْفُلْكِ
تُحْمَلُونَ﴾
৮০। এসবের
মধ্যে তোমাদের জন্য আরো অনেক কল্যাণ নিহিত আছে। তোমাদের
মনে যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভূত হয় এসবের পিঠে আরোহণ করে তোমরা সেখানে পৌঁছতে
পার। এসব পশু এবং নৌকাতেও তোমাদের আরোহণ করতে
হয়।
﴿وَيُرِيكُمْ ءَايَـٰتِهِۦ
فَأَىَّ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ تُنكِرُونَ﴾
৮১। আল্লাহ
তোমাদেরকে তাঁর এসব নির্দশন দেখাচ্ছেন। তোমরা
তাঁর কোন কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে?১১০
﴿أَفَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى
ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَانُوٓا۟
أَكْثَرَ مِنْهُمْ وَأَشَدَّ قُوَّةًۭ وَءَاثَارًۭا فِى ٱلْأَرْضِ فَمَآ أَغْنَىٰ
عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ﴾
৮২। সুতরাং এরা
কি১১১ এ
পৃথিবীতে বিচরণ করেনি, তাহলে এরা এদের পূর্ববর্তী লোকদের
পরিণতি দেখতে পেত? তারা সংখ্যায় এদের চেয়ে বেশী ছিল, এদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী ছিল এবং পৃথিবীর বুকে এদের চেয়ে অধিক জাঁকালো
নিদর্শন রেখে গেছে। তারা যা অর্জন করেছিল, তা শেষ
পর্যন্ত তাদের কাজে লাগেনি।
﴿فَلَمَّا جَآءَتْهُمْ رُسُلُهُم
بِٱلْبَيِّنَـٰتِ فَرِحُوا۟ بِمَا عِندَهُم مِّنَ ٱلْعِلْمِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا۟
بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ﴾
৮৩। তাদের রাসূল
যখন সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে তাদের কাছে এসেছিলেন তখন তারা নিজের কাছে বিদ্যমান
জ্ঞান নিয়েই মগ্ন ছিল১১২ এবং যে জিনিস নিয়ে
তারা বিদ্রূপ করতো সে জিনিসের আবর্তেই তারা পড়ে গিয়েছিলো।
﴿فَلَمَّا رَأَوْا۟ بَأْسَنَا
قَالُوٓا۟ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَحْدَهُۥ وَكَفَرْنَا بِمَا كُنَّا بِهِۦ مُشْرِكِينَ﴾
৮৪। তারা যখন
আমার আযাব দেখতে পেল তখন চিৎকার করে বলে উঠলো, আমরা এক ও
লা-শরীক আল্লাহকে মেনে নিলাম। আর যেসব
উপাস্যদের আমরা শরীক করতাম তাদের অস্বীকার করলাম।১১৩
﴿فَلَمْ يَكُ يَنفَعُهُمْ
إِيمَـٰنُهُمْ لَمَّا رَأَوْا۟ بَأْسَنَا ۖ سُنَّتَ ٱللَّهِ ٱلَّتِى قَدْ خَلَتْ فِى
عِبَادِهِۦ ۖ وَخَسِرَ هُنَالِكَ ٱلْكَـٰفِرُونَ﴾
৮৫। কিন্তু
আমার আযাব দেখার পর তাদের ঈমান গ্রহণ কোন উপকারে আসার নয়। কারণ, এটাই আল্লাহর
সুনির্ধারিত বিধান যা সবসময় তাঁর বান্দাদের মধ্যে চালু ছিল। সেসময়
কাফেররা ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেল। সে সময়
কাফেররা ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেল।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।