সূরা আত তাগাবুন-বাংলা অনুবাদ

Share:

 

০৬৪. সূরা আত তাগাবুন

আয়াতঃ ১৮;  রুকুঃ ০২; মাদানী

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾

পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে

﴿يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۖ لَهُ ٱلْمُلْكُ وَلَهُ ٱلْحَمْدُ ۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ﴾

আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে তার সবই আল্লাহর তাসবীহ করছে তিনিই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং সব প্রশংসাও তারই 

﴿هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ فَمِنكُمْ كَافِرٌۭ وَمِنكُم مُّؤْمِنٌۭ ۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ﴾

তিনি সবকিছু করতে সক্ষম তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে কেউ কাফের এবং কেউ মু’মিন তোমরা যা করছো আল্লাহ‌ তা দেখছেন 

﴿خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّ وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ ۖ وَإِلَيْهِ ٱلْمَصِيرُ﴾

তিনি আসমান ও যমীনকে যথাযথরূপে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তোমাদেরকে আকার-আকৃতি দান করেছেন এবং অতি উত্তম আকার-আকৃতি দান করেছেন অবশেষে তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে 

﴿يَعْلَمُ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَ ۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ﴾

আসমান ও যমীনের সবকিছু সম্পর্কেই তিনি জানেন আর তোমরা যা গোপন করো এবং যা প্রকাশ করো তাও তিনি জানেন মানুষের অন্তরের কথাও তিনি খুব ভাল করে জানেন 

﴿أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَؤُا۟ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن قَبْلُ فَذَاقُوا۟ وَبَالَ أَمْرِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ﴾

এরপূর্বে যেসব মানুষ কুফরী করেছে এবং নিজেদের অপকর্মের পরিণামও ভোগ করেছে তাদের খবর কি তোমাদের কাছে পৌঁছেনি? তাদের জন্য নির্দিষ্ট আছে অতীব কষ্টদায়ক শাস্তি১০

﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُۥ كَانَت تَّأْتِيهِمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَـٰتِ فَقَالُوٓا۟ أَبَشَرٌۭ يَهْدُونَنَا فَكَفَرُوا۟ وَتَوَلَّوا۟ ۚ وَّٱسْتَغْنَى ٱللَّهُ ۚ وَٱللَّهُ غَنِىٌّ حَمِيدٌۭ﴾

তারা এরূপ পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে এ কারণে যে, তাদের কাছে যেসব রাসূল এসেছেন তাঁরা স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ নিয়ে তাদের কাছে এসেছিলেন১১ কিন্তু তারা বলেছিলঃ মানুষ কি আমাদের হিদায়াত দান করবে?১২ এভাবে তারা মানতে অস্বীকৃতি জানালো এবং মুখ ফিরিয়ে নিল তখন আল্লাহও তাদের তোয়াক্কা করলেন না আল্লাহ‌ তো আদৌ কারো মুখাপেক্ষীই নন তিনি আপন সত্তায় প্রশংসিত১৩

﴿زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَن لَّن يُبْعَثُوا۟ ۚ قُلْ بَلَىٰ وَرَبِّى لَتُبْعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلْتُمْ ۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٌۭ﴾

অস্বীকারীরা দাবী করে বলেছে যে, মরার পরে আর কখনো তাদের জীবিত করে উঠানো হবে না১৪ তাদের বলে দাও, আমার রবের শপথ, তোমাদের অবশ্যই উঠানো হবে১৫ তারপর (দুনিয়ায়) তোমরা যা করেছো তা অবশ্যই তোমাদেরকে অবহিত করা হবে১৬ এরূপ করা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ১৭ 

﴿فَـَٔامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَٱلنُّورِ ٱلَّذِىٓ أَنزَلْنَا ۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌۭ﴾

তাই ঈমান আনো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং সেই ‘নূর’ বা আলোর প্রতি যা আমি নাযিল করেছি১৮ আর তোমরা যা কিছু করছো আল্লাহ‌ সে সম্পর্কে পূর্ণরূপে অবহিত 

﴿يَوْمَ يَجْمَعُكُمْ لِيَوْمِ ٱلْجَمْعِ ۖ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلتَّغَابُنِ ۗ وَمَن يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ وَيَعْمَلْ صَـٰلِحًۭا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّـَٔاتِهِۦ وَيُدْخِلْهُ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ خَـٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًۭا ۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ﴾

(এ বিষয়ে তোমরা টের পাবে সেইদিন যখন একত্র করার দিন তোমাদের সবাইকে তিনি একত্র করবেন১৯ সেদিনটি হবে তোমাদের পরস্পরের হার-জিতের দিন২০ যে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করে২১ আল্লাহ তাআ’লা তার গোনাহ মুছে ফেলবেন আর তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝরণা বইতে থাকবে এসব লোক চিরস্থায়ীভাবে সেখানে থাকবে এটাই বড় সফলতা 

﴿وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَآ أُو۟لَـٰٓئِكَ أَصْحَـٰبُ ٱلنَّارِ خَـٰلِدِينَ فِيهَا ۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ﴾

১০ আর যারা কুফরী করেছে এবং আয়াতসমুহকে মিথ্যা বলেছে২২ তারাই দোযখের বাসিন্দা হবে তারা চিরস্থায়ীভাবে সেখানে থাকবে তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট স্থান

﴿مَآ أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِ ۗ وَمَن يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُۥ ۚ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ﴾

১১ আল্লাহর২৩ অনুমোদন ছাড়া কখনো কোন মুসিবত আসে না২৪ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করে আল্লাহ‌ তার দিলকে হিদায়াত দান করেন২৫ আল্লাহ সব কিছু জানেন২৬ 

﴿وَأَطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُوا۟ ٱلرَّسُولَ ۚ فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَإِنَّمَا عَلَىٰ رَسُولِنَا ٱلْبَلَـٰغُ ٱلْمُبِينُ﴾

১২ আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য করো কিন্তু তোমরা যদি আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে সত্যকে স্পষ্টভাবে পৌঁছিয়ে দেয়া ছাড়া আমার রাসুলের আর কোন দায়িত্ব নেই২৭ 

﴿ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُؤْمِنُونَ﴾

১৩ তিনিই আল্লাহ‌ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই ঈমানদারদের আল্লাহ‌র ওপরেই ভরসা করা উচিত২৮ 

﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِنَّ مِنْ أَزْوَٰجِكُمْ وَأَوْلَـٰدِكُمْ عَدُوًّۭا لَّكُمْ فَٱحْذَرُوهُمْ ۚ وَإِن تَعْفُوا۟ وَتَصْفَحُوا۟ وَتَغْفِرُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌ﴾

১৪ হে সেই সব লোক যারা ঈমান এনেছো, তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক আর যদি তোমরা ক্ষমা ও সহনশীলতার আচরণ করো এবং ক্ষমা করে দাও তাহলে আল্লাহ‌ অতীব ক্ষমাশীল, অতীব দয়ালু২৯ 

﴿إِنَّمَآ أَمْوَٰلُكُمْ وَأَوْلَـٰدُكُمْ فِتْنَةٌۭ ۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥٓ أَجْرٌ عَظِيمٌۭ﴾

১৫ তোমাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি একটি পরীক্ষা আর কেবলমাত্র আল্লাহর কাছে আছে বিরাট প্রতিদান৩০

﴿فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ مَا ٱسْتَطَعْتُمْ وَٱسْمَعُوا۟ وَأَطِيعُوا۟ وَأَنفِقُوا۟ خَيْرًۭا لِّأَنفُسِكُمْ ۗ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِۦ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ﴾

১৬ তাই যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় করে চলো৩১ শোন, আনুগত্য করো এবং নিজেদের সম্পদ ব্যয় করো এটা তোমাদের জন্যই ভালো যে মনের সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত থাকলো সেই সফলতা লাভ করবে৩২ 

﴿إِن تُقْرِضُوا۟ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًۭا يُضَـٰعِفْهُ لَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۚ وَٱللَّهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ﴾

১৭ যদি তোমরা আল্লাহকে করযে হাসানা দাও তাহলে তিনি তোমাদেরকে তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবেন৩৩ এবং তোমাদের ভূল-ত্রুটি ক্ষমা করবেন আল্লাহ‌ সঠিক মূল্যায়ণকারী ও অতীব সহনশীল৩৪ 

﴿عَـٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ﴾

১৮ সামনে উপস্থিত ও অনুপস্থিত সবকিছুই তিনি জানেন তিনি মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী

--- সমাপ্ত ---

কোন মন্তব্য নেই

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।