সূরা আদ দাহর-বাংলা অনুবাদ

Share:

 

০৭৬. সূরা আদ দাহর

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾

পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে

﴿هَلْ أَتَىٰ عَلَى ٱلْإِنسَـٰنِ حِينٌۭ مِّنَ ٱلدَّهْرِ لَمْ يَكُن شَيْـًۭٔا مَّذْكُورًا﴾

মানুষের ওপরে কি অন্তহীন মহাকালের এমন একটি সময়ও অতিবাহিত হয়েছে যখন সে

﴿إِنَّا خَلَقْنَا ٱلْإِنسَـٰنَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍۢ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَـٰهُ سَمِيعًۢا بَصِيرًا﴾

আমি মানুষকে এক সংমিশ্রত বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি যাতে তার পরীক্ষা নিতে পারি এ উদ্দেশ্যে আমি তাকে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী করেছি

﴿إِنَّا هَدَيْنَـٰهُ ٱلسَّبِيلَ إِمَّا شَاكِرًۭا وَإِمَّا كَفُورًا﴾

আমি তাকে রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছি এরপর হয় সে শোকরগোজার হবে নয়তো হবে কুফরের পথ অনুসরণকারী

﴿إِنَّآ أَعْتَدْنَا لِلْكَـٰفِرِينَ سَلَـٰسِلَا۟ وَأَغْلَـٰلًۭا وَسَعِيرًا﴾

আমি কাফেরদের জন্য শিকল, বেড়ি এবং জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি

﴿إِنَّ ٱلْأَبْرَارَ يَشْرَبُونَ مِن كَأْسٍۢ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُورًا﴾

(বেহেশতে) নেককার লোকেরা পানপাত্র থেকে এমন শরাব পান করবে যাতে কর্পূর পানি সংমিশ্রিত থাকবে

﴿عَيْنًۭا يَشْرَبُ بِهَا عِبَادُ ٱللَّهِ يُفَجِّرُونَهَا تَفْجِيرًۭا﴾

এটি হবে একটি বহমান ঝর্ণা আল্লাহর বান্দারা যার পানির সাথে শরাব মিশিয়ে পান করবে এবং যেখানেই ইচ্ছা সহজেই তার শাখা-প্রশাখা বের করে নেবে

﴿يُوفُونَ بِٱلنَّذْرِ وَيَخَافُونَ يَوْمًۭا كَانَ شَرُّهُۥ مُسْتَطِيرًۭا﴾

এরা হবে সেসব লোক যারা (দুনিয়াতে) মানত পূরণ করে১০ সে দিনকে ভয় করে যার বিপদ সবখানে ছড়িয়ে থাকবে

﴿وَيُطْعِمُونَ ٱلطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ مِسْكِينًۭا وَيَتِيمًۭا وَأَسِيرًا﴾

আর আল্লাহর মহব্বতে১১ মিসকীন, ইয়াতীম এবং বন্দীকে১২ খাবার দান করে১৩

﴿إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ ٱللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنكُمْ جَزَآءًۭ وَلَا شُكُورًا﴾

এবং (তাদেরকে বলে) আমরা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই তোমাদের খেতে দিচ্ছি আমরা তোমাদের কাছে এর কোন প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা১৪ পেতে চাই না

﴿إِنَّا نَخَافُ مِن رَّبِّنَا يَوْمًا عَبُوسًۭا قَمْطَرِيرًۭا﴾

১০ আমরা তো আমাদের রবের পক্ষ থেকে সেদিনের আযাবের ভয়ে ভীত, যা হবে কঠিন বিপদ ভরা অতিশয় দীর্ঘ দিন

﴿فَوَقَىٰهُمُ ٱللَّهُ شَرَّ ذَٰلِكَ ٱلْيَوْمِ وَلَقَّىٰهُمْ نَضْرَةًۭ وَسُرُورًۭا﴾

১১ আল্লাহ তাআ’লা তাদেরকে সেদিনের অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে সজীবতা ও আনন্দ দান করবেন১৫

﴿وَجَزَىٰهُم بِمَا صَبَرُوا۟ جَنَّةًۭ وَحَرِيرًۭا﴾

১২ আর তাদের সবরের বিনিময়ে১৬ তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী পোশাক দান করবেন

﴿مُّتَّكِـِٔينَ فِيهَا عَلَى ٱلْأَرَآئِكِ ۖ لَا يَرَوْنَ فِيهَا شَمْسًۭا وَلَا زَمْهَرِيرًۭا﴾

১৩ তারা সেখানে উঁচু আসনের ওপরে হেলান দিয়ে বসবে সেখানে রোদের উত্তাপ কিংবা শীতের তীব্রতা তাদের কষ্ট দেবে না

﴿وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَـٰلُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوفُهَا تَذْلِيلًۭا﴾

১৪ জান্নাতের বৃক্ষরাজির ছায়া তাদের ওপর ঝুঁকে পড়ে ছায়া দিতে থাকবে আর তার ফলরাজি সবসময় তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে (তারা যেভাবে ইচ্ছা চয়ন করতে পারবে)

﴿وَيُطَافُ عَلَيْهِم بِـَٔانِيَةٍۢ مِّن فِضَّةٍۢ وَأَكْوَابٍۢ كَانَتْ قَوَارِيرَا۠﴾

১৫ তাদের সামনে রৌপ্য পাত্র১৭ ও সচ্ছ কাঁচের পাত্রসমূহ পরিবেশিত হতে থাকবে কাঁচ পাত্রও হবে রৌপ্য জাতীয় ধাতুর১৮

﴿قَوَارِيرَا۟ مِن فِضَّةٍۢ قَدَّرُوهَا تَقْدِيرًۭا﴾

১৬ যা (জান্নাতের ব্যবস্থাপকরা) যথাযথ পরিমাণে পূর্ণ করে রাখবে১৯

﴿وَيُسْقَوْنَ فِيهَا كَأْسًۭا كَانَ مِزَاجُهَا زَنجَبِيلًا﴾

১৭ সেখানে তাদের এমন সুরা পাত্র পান করানো হবে যাতে শুকনো আদার সংমিশ্রণ থাকবে

﴿عَيْنًۭا فِيهَا تُسَمَّىٰ سَلْسَبِيلًۭا﴾

১৮ এটি জান্নাতের একটি ঝর্ণা যা সালসাবীল নামে অভিহিত২০

﴿وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَٰنٌۭ مُّخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيْتَهُمْ حَسِبْتَهُمْ لُؤْلُؤًۭا مَّنثُورًۭا﴾

১৯ তাদের সেবার জন্য এমন সব কিশোর বালক সদা তৎপর থাকবে যারা চিরদিনই কিশোর থাকবে তুমি তাদের দেখলে মনে করবে যেন ছড়ানো ছিটানো মুক্তা২১

﴿وَإِذَا رَأَيْتَ ثَمَّ رَأَيْتَ نَعِيمًۭا وَمُلْكًۭا كَبِيرًا﴾

২০ তুমি সেখানে যে দিকেই তাকাবে সেদিকেই শুধু নিয়ামত আর ভোগের উপকরণের সমাহার দেখতে পাবে এবং বিশাল সাম্রাজ্যের সাজ-সরঞ্জাম তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে২২

﴿عَـٰلِيَهُمْ ثِيَابُ سُندُسٍ خُضْرٌۭ وَإِسْتَبْرَقٌۭ ۖ وَحُلُّوٓا۟ أَسَاوِرَ مِن فِضَّةٍۢ وَسَقَىٰهُمْ رَبُّهُمْ شَرَابًۭا طَهُورًا﴾

২১ তাদের পরিধানে থাকবে মিহি রেশমের সবুজ পোশাক এবং মখমল ও সোনালী কিংখাবের বস্ত্ররাজি২৩ আর তাদেরকে রৌপ্যের কঙ্কন পরানো হবে২৪ আর তাদের রব তাদেরকে অতি পবিত্র শরাব পান করাবেন২৫

﴿إِنَّ هَـٰذَا كَانَ لَكُمْ جَزَآءًۭ وَكَانَ سَعْيُكُم مَّشْكُورًا﴾

২২ এ হচ্ছে তোমাদের জন্য প্রতিদান কারণ, তোমাদের কাজ কর্ম মূল্যবান প্রমাণিত হয়েছে২৬

﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا عَلَيْكَ ٱلْقُرْءَانَ تَنزِيلًۭا﴾

২৩ হে নবী, আমিই তোমার উপর এ কুরআন অল্প অল্প করে নাযিল করেছি২৭

﴿فَٱصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تُطِعْ مِنْهُمْ ءَاثِمًا أَوْ كَفُورًۭا﴾

২৪ তাই তুমি ধৈর্যের সাথে তোমার রবের হুকুম পালন করতে থাকো২৮ এবং এদের মধ্যকার কোন দুষ্কর্মশীল এবং সত্য অমান্যকারীর কথা শুনবে না২৯

﴿وَٱذْكُرِ ٱسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةًۭ وَأَصِيلًۭا﴾

২৫ সকাল সন্ধ্যায় তোমার রবের নাম স্মরণ করো

﴿وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَٱسْجُدْ لَهُۥ وَسَبِّحْهُ لَيْلًۭا طَوِيلًا﴾

২৬ রাতের বেলায়ও তার সামনে সিজদায় অবনত হও রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর তাসবীহ অর্থাৎ পবিত্রতা বর্ণনা করতে থাকো৩০

﴿إِنَّ هَـٰٓؤُلَآءِ يُحِبُّونَ ٱلْعَاجِلَةَ وَيَذَرُونَ وَرَآءَهُمْ يَوْمًۭا ثَقِيلًۭا﴾

২৭ এসব লোক তো দ্রুত লাভ করা যায় এমন জিনিসকে (দুনিয়াকে) ভালবাসে এবং ভবিষ্যতে যে কঠিন দিন আসছে তাকে উপেক্ষা করে চলছে৩১

﴿نَّحْنُ خَلَقْنَـٰهُمْ وَشَدَدْنَآ أَسْرَهُمْ ۖ وَإِذَا شِئْنَا بَدَّلْنَآ أَمْثَـٰلَهُمْ تَبْدِيلًا﴾

২৮ আমিই এদের সৃষ্টি করেছি এবং এদের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও সন্ধিস্থল মজবুত করেছি আর যখনই চাইবো তাদের আকার-আকৃতি পরিবর্তন করে দেব৩২

﴿إِنَّ هَـٰذِهِۦ تَذْكِرَةٌۭ ۖ فَمَن شَآءَ ٱتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ سَبِيلًۭا﴾

২৯ এটি একটি উপদেশ বাণী এখন কেউ চাইলে তার রবের দিকে যাওয়ার পথ অবলম্বন করতে

﴿وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًۭا﴾

৩০ তোমাদের চাওয়ায় কিছুই হয় না যদি আল্লাহ‌ না চান

﴿يُدْخِلُ مَن يَشَآءُ فِى رَحْمَتِهِۦ ۚ وَٱلظَّـٰلِمِينَ أَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًۢا﴾

৩১ আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সুবিজ্ঞ যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে তাঁর রহমতের মধ্যে শামিল করেন আর

--- সমাপ্ত ---

কোন মন্তব্য নেই

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।