০৬১. সূরা আস সাফ
আয়াতঃ ১৪; রুকুঃ ০২; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى
ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ﴾
১। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর তাসবীহ
করেছে। তিনি মহাপরাক্রমশালী ও
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ﴾
২। হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা নিজেরা করো না?
﴿كَبُرَ مَقْتًا عِندَ ٱللَّهِ
أَن تَقُولُوا۟ مَا لَا تَفْعَلُونَ﴾
৩। আল্লাহর কাছে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ যে, তোমরা এমন কথা বলো যা করো
না।২
﴿إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلَّذِينَ
يُقَـٰتِلُونَ فِى سَبِيلِهِۦ صَفًّۭا كَأَنَّهُم بُنْيَـٰنٌۭ مَّرْصُوصٌۭ﴾
৪। আল্লাহ সেই সব লোকদের ভালবাসেন যারা তাঁর পথে এমনভাবে
কাতারবন্দী হয়ে লড়াই করে যেন তারা সীসা গলিয়ে ঢালাই করা এক মজবুত দেয়াল।৩
﴿وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِۦ
يَـٰقَوْمِ لِمَ تُؤْذُونَنِى وَقَد تَّعْلَمُونَ أَنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُمْ
ۖ فَلَمَّا زَاغُوٓا۟ أَزَاغَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمْ ۚ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ
ٱلْفَـٰسِقِينَ﴾
৫। তোমরা মূসার সেই কথাটি স্মরণ করো যা তিনি তাঁর কওমকে
বলেছিলেন। “হে আমার কাওমের লোক, তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দাও? অথচ তোমরা ভাল করেই জানো যে, আমি তোমাদের জন্য
আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।৪ এরপর যেই তারা বাঁকা
পথ ধরলো অমনি আল্লাহও তাদের দিল বাঁকা করে দিলেন। আল্লাহ কাফেকদের
হিদায়াত দান করেন না।৫
﴿وَإِذْ قَالَ عِيسَى ٱبْنُ
مَرْيَمَ يَـٰبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ إِنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًۭا
لِّمَا بَيْنَ يَدَىَّ مِنَ ٱلتَّوْرَىٰةِ وَمُبَشِّرًۢا بِرَسُولٍۢ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِى
ٱسْمُهُۥٓ أَحْمَدُ ۖ فَلَمَّا جَآءَهُم بِٱلْبَيِّنَـٰتِ قَالُوا۟ هَـٰذَا سِحْرٌۭ
مُّبِينٌۭ﴾
৬। আর স্মরণ
করো৬ ঈসা ইবনে
মারইয়ামের সেই কথা যা তিনি বলেছিলেনঃ হে বনী ইসরাঈল, আমি
তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল। আমি সেই
তাওরাতের সত্যতা প্রতিপাদনকারী যা আমার পূর্বে এসেছে৭ এবং একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা
যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমাদ।৮ কিন্তু যখন তিনি তাদের কাছে
সুস্পষ্ট প্রমাণ পেশ করলেন তখন তারা বললঃ এটা তো স্পষ্ট প্রতারণা।৯
﴿وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ
ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعَىٰٓ إِلَى ٱلْإِسْلَـٰمِ ۚ وَٱللَّهُ
لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ﴾
৭। সেই
ব্যক্তির চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে যে আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা বানিয়ে বলে।১০ অথচ তাকে
শুধু ইসলামের (আল্লাহর আনুগত্য করার) দিকে আহ্বান করা হচ্ছে।১১ আল্লাহ এ
রকম জালেমদের হিদায়াত দেন না।
﴿يُرِيدُونَ لِيُطْفِـُٔوا۟
نُورَ ٱللَّهِ بِأَفْوَٰهِهِمْ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْكَـٰفِرُونَ﴾
৮। এরা তাদের
মুখের ফুঁ দিয়ে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। অথচ
আল্লাহর ফায়সালা হলো তিনি তার নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন। কাফেররা
তা যতই অপছন্দ করুক না কেন।১২
﴿هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ
بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ
ٱلْمُشْرِكُونَ﴾
৯। তিনিই সেই
মহান সত্তা যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত এবং ‘দ্বীনে হক’ দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি এ
দ্বীনকে অন্য সকল দ্বীনের ওপর বিজয়ী করেন, চাই তা
মুশরিকদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন।১৩
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَـٰرَةٍۢ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍۢ﴾
১০। হে ঈমান
আনয়নকারীগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি ব্যবসায়ের১৪ সন্ধান
দেবো যা তোমাদেরকে কঠিন আযাব থেকে মুক্তি দেবে?
﴿تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ
وَتُجَـٰهِدُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمْوَٰلِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌۭ
لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
১১। তোমরা
আল্লাহ ও তার রাসূলের১৫ প্রতি ঈমান আন এবং
আল্লাহর পথে অর্থ-সম্পদ ও জান-প্রাণ দিয়ে জিহাদ করো এটাই তোমাদের জন্য অতীব
কল্যাণকর যদি তোমরা তা জান।১৬
﴿يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ
وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ وَمَسَـٰكِنَ طَيِّبَةًۭ
فِى جَنَّـٰتِ عَدْنٍۢ ۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ﴾
১২। আল্লাহ
তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন এবং তোমাদেরকে এমনসব বাগানে প্রবেশ করাবেন যার নীচে
দিয়ে ঝর্ণাধারা বয়ে চলবে। আর চিরস্থায়ী বসবাসের জায়গা
জান্নাতের মধ্যে তোমাদেরকে সর্বোত্তম ঘর দান করবেন। এটাই বড়
সফলতা।১৭
﴿وَأُخْرَىٰ تُحِبُّونَهَا
ۖ نَصْرٌۭ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَتْحٌۭ قَرِيبٌۭ ۗ وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ﴾
১৩। আর আরেক
জিনিস যা তোমরা আকাংখা করো আল্লাহ তাও তোমাদের দেবেন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য
এবং অতি নিকটবর্তী সময়ে বিজয়।১৮ হে নবী!
ঈমানদারদেরকে এর সুসংবাদ দান করো।
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ كُونُوٓا۟ أَنصَارَ ٱللَّهِ كَمَا قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّـۧنَ
مَنْ أَنصَارِىٓ إِلَى ٱللَّهِ ۖ قَالَ ٱلْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ ۖ
فَـَٔامَنَت طَّآئِفَةٌۭ مِّنۢ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ وَكَفَرَت طَّآئِفَةٌۭ ۖ فَأَيَّدْنَا
ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ عَلَىٰ عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوا۟ ظَـٰهِرِينَ﴾
১৪। হে
ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও। ঠিক তেমনি, যখন ঈসা ইবনে
মারইয়াম হাওয়ারীদের১৯ উদ্দেশ্য করে বলেছিলেনঃ
আল্লাহর দিকে (আহবান করার ক্ষেত্রে) কে আমার সাহায্যকারী? তখন
হাওয়ারীরা জবাব দিয়েছিলোঃ আমরা আছি আল্লাহর সাহায্যকারী।২০ সেই সময় বনী ইসরাঈল জাতির
একটি দল ঈমান আনয়ন করেছল এবং আরেকটি দল অস্বীকার করেছিল। অতঃপর আমি
ঈমান আনয়নকারীদেরকে তাদের শত্রুদিগের বিরুদ্ধে শক্তি যোগালাম এবং তারাই বিজয়ী হয়ে
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।