০৪২. সূরা আশ শূরা
আয়াতঃ ৫৩; রুকুঃ ০৫; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿حمٓ﴾
১। হা মীম।
﴿عٓسٓقٓ﴾
২। আইন সীন
ক্বাফ।
﴿كَذَٰلِكَ يُوحِىٓ إِلَيْكَ
وَإِلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكَ ٱللَّهُ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ﴾
৩। মহাপরাক্রমশালী
ও জ্ঞানময় আল্লাহ তোমার কাছে ও তোমার পূর্ববর্তীদের (রাসূল)
কাছে এভাবে অহী পাঠিয়ে আসছেন।১
﴿لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ﴾
৪। আসমান ও
যমীনে যা আছে সবই তাঁর। তিনি সর্বোন্নত ও মহান।২
﴿تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَٰتُ يَتَفَطَّرْنَ
مِن فَوْقِهِنَّ ۚ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيَسْتَغْفِرُونَ
لِمَن فِى ٱلْأَرْضِ ۗ أَلَآ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ﴾
৫। আসমান ওপর
থেকে ফেটে পড়ার উপক্রম হয়।৩ ফেরেশতারা প্রশংসাসহ তাদের
রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছে এবং পৃথবীবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে যায়।৪ জেনে রাখো, প্রকৃতই
আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।৫
﴿وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُوا۟
مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَ ٱللَّهُ حَفِيظٌ عَلَيْهِمْ وَمَآ أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍۢ﴾
৬। যারা
তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে নিজেদের অভিভাবক৬ বানিয়ে
নিয়েছে আল্লাহই তাদের তত্বাবধায়ক। তুমি
তাদের জিম্মাদার নও।৭
﴿وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَآ
إِلَيْكَ قُرْءَانًا عَرَبِيًّۭا لِّتُنذِرَ أُمَّ ٱلْقُرَىٰ وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنذِرَ
يَوْمَ ٱلْجَمْعِ لَا رَيْبَ فِيهِ ۚ فَرِيقٌۭ فِى ٱلْجَنَّةِ وَفَرِيقٌۭ فِى ٱلسَّعِيرِ﴾
৭। হে নবী, এভাবেই আমি
এই আরবী কুরআন অহী করে তোমার কাছে পাঠিয়েছি৮ যাতে
তুমি জনপদসমূহের কেন্দ্র (মক্কা নগরী) ও তার আশেপাশের অধিবাসীদের সতর্ক করে দাও৯ এবং
একত্রিত হওয়ার দিন সম্পর্কে ভয় দেখাও১০ যার
আগমনে কোন সন্দেহ নেই। এক দলকে জান্নাতে যেতে হবে
এবং অপর দলকে যেতে হবে দোজখে।
﴿وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَهُمْ
أُمَّةًۭ وَٰحِدَةًۭ وَلَـٰكِن يُدْخِلُ مَن يَشَآءُ فِى رَحْمَتِهِۦ ۚ وَٱلظَّـٰلِمُونَ
مَا لَهُم مِّن وَلِىٍّۢ وَلَا نَصِيرٍ﴾
৮। আল্লাহ যদি
চাইতেন তাহলে এদের সবাইকে এক উম্মতের অন্তর্ভুক্ত করে দিতেন। কিন্তু
তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতের মধ্যে শামিল করেন। জালেমদের
না আছে কোন অভিভাবক না আছে সাহায্যকারী।১১
﴿أَمِ ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِهِۦٓ
أَوْلِيَآءَ ۖ فَٱللَّهُ هُوَ ٱلْوَلِىُّ وَهُوَ يُحْىِ ٱلْمَوْتَىٰ وَهُوَ عَلَىٰ
كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌۭ﴾
৯। এরা কি
(এমনই নির্বোধ যে) তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য অভিভাবক বানিয়ে রেখেছে? অভিভাবক তো
একমাত্র আল্লাহ। তিনিই মৃতদের জীবিত করেন এবং
তিনি সব কিছুর ওপর শক্তিশালী।১২
﴿وَمَا ٱخْتَلَفْتُمْ فِيهِ
مِن شَىْءٍۢ فَحُكْمُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبِّى عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ
وَإِلَيْهِ أُنِيبُ﴾
১০। তোমাদের১৩ মধ্যে যে
ব্যাপারেই মতানৈক্য হোক না কেন তার ফায়সালা করা আল্লাহর কাজ।১৪ সেই
আল্লাহই আমার১৫ রব, আমি তাঁর ওপরেই ভরসা করেছি এবং তাঁর কাছেই আমি ফিরে যাই।১৬
﴿فَاطِرُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ
ۚ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَٰجًۭا وَمِنَ ٱلْأَنْعَـٰمِ أَزْوَٰجًۭا ۖ
يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ ۚ لَيْسَ كَمِثْلِهِۦ شَىْءٌۭ ۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ﴾
১১। আসমান ও
যমীনের স্রষ্টা, যিনি তোমাদের আপন প্রজাতি থেকে তোমাদের
জোড়া সৃষ্টি করেছেন, অনুরূপ অন্যান্য জীবজন্তুরও (তাদের নিজ
প্রজাতি থেকে) জোড়া বানিয়েছেন এবং এই নিয়মে তিনি তোমাদের প্রজন্মের বিস্তার ঘটান।
বিশ্ব-জাহানের কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।১৭ তিনি সব
কিছু শোনেন ও দেখেন।১৮
﴿لَهُۥ مَقَالِيدُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ ۖ يَبْسُطُ ٱلرِّزْقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقْدِرُ ۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَىْءٍ
عَلِيمٌۭ﴾
১২। আসমান ও
যমীনের ভাণ্ডারসমূহের চাবি তাঁরই হাতে, যাকে ইচ্ছা অঢেল রিযিক
দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা মেপে দেন। তিনি সব
কিছু জানেন।১৯
﴿شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ
مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحًۭا وَٱلَّذِىٓ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِۦٓ
إِبْرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓ ۖ أَنْ أَقِيمُوا۟ ٱلدِّينَ وَلَا ﴿تَتَفَرَّقُوا۟
فِيهِ ۚ كَبُرَ عَلَى ٱلْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ ۚ ٱللَّهُ يَجْتَبِىٓ
إِلَيْهِ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِىٓ إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ﴾
১৩। তিনি
তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই সব নিয়ম-কানুন নির্ধারিত করেছেন যার নির্দেশ তিনি নূহকে
দিয়েছিলেন এবং (হে মুহাম্মাদ) যা এখন আমি তোমার কাছে অহীর মাধ্যমে পাঠিয়েছি। আর যার
আদেশ দিয়েছিলাম আমি ইবরাহীম আ., মূসা আ. ও ঈসাকে আ.। তার সাথে
তাগিদ করেছিলাম এই বলে যে, এ দ্বীনকে কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে
পরস্পর ভিন্ন হয়ো না।২০ (হে
মুহাম্মাদ) এই কথাটিই এসব মুশরিকের কাছে অত্যন্ত অপছন্দনীয় যার দিকে তুমি তাদের
আহবান জানাচ্ছো। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা আপন করে
নেন এবং তিনি তাদেরকেই নিজের কাছে আসার পথ দেখান যারা তাঁর প্রতি রুজু
﴿وَمَا تَفَرَّقُوٓا۟ إِلَّا
مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْ ۚ وَلَوْلَا كَلِمَةٌۭ سَبَقَتْ
مِن رَّبِّكَ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى لَّقُضِىَ بَيْنَهُمْ ۚ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ
﴿أُورِثُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ مِنۢ بَعْدِهِمْ لَفِى شَكٍّۢ مِّنْهُ مُرِيبٍۢ﴾
১৪। মানুষের
কাছে যখন জ্ঞান এসে গিয়েছিল তারপরই তাদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে।২২ আর তা
হওয়ার কারণ তারা একে অপরের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছিলো।২৩ একটি
নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মূলতবী রাখা হবে একথা যদি তোমার রব
পূর্বেই ঘোষণা না করতেন তাহলে তাদের বিবাদের চূড়ান্ত ফায়সালা করে দেয়া হতো।২৪ প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, পূর্ববর্তীদের
পরে যাদের কিতাবের উত্তরাধিকারী করা হয়েছে তারা সে ব্যাপারে বড় অস্বস্তিকর
সন্দেহের মধ্যে পড়ে আছে।২৫
﴿فَلِذَٰلِكَ فَٱدْعُ ۖ وَٱسْتَقِمْ
كَمَآ أُمِرْتَ ۖ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَآءَهُمْ ۖ وَقُلْ ءَامَنتُ بِمَآ أَنزَلَ
ٱللَّهُ مِن كِتَـٰبٍۢ ۖ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُ ۖ ٱللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ
ۖ لَنَآ أَعْمَـٰلُنَا وَلَكُمْ أَعْمَـٰلُكُمْ ۖ لَا حُجَّةَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ
ۖ ٱللَّهُ يَجْمَعُ بَيْنَنَا ۖ وَإِلَيْهِ ٱلْمَصِيرُ﴾
১৫। যেহেতু
এরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাই হে মুহাম্মাদ এখন
তুমি সেই দ্বীনের দিকেই আহবান জানাও এবং যেভাবে তুমি আদিষ্ট হয়েছো সেভাবে দৃঢ়তার
সাথে তা আঁকড়ে ধরো এবং এসব লোকের ইচ্ছা আকাংখার অনুসরণ করো না।২৬ এদের বলে
দাও, “আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন আমি তার ওপর ঈমান এনেছি।২৭ আমাকে
আদেশ দেয়া হয়েছে যেন তোমাদের মধ্যে ইনসাফ করি।২৮ আল্লাহই
আমাদেরও রব এবং তোমাদেরও রব তিনিই। আমাদের
কাজকর্ম আমাদের জন্য আর তোমাদের কাজকর্ম তোমাদের জন্য।২৯ আমাদের ও
তোমাদের মাঝে কোন বিবাদ নেই।৩০ একদিন
আল্লাহ আমাদের সবাইকে একত্রিত করবেন। তাঁর
কাছেই সবাইকে যেতে হবে।”
﴿وَٱلَّذِينَ يُحَآجُّونَ
فِى ٱللَّهِ مِنۢ بَعْدِ مَا ٱسْتُجِيبَ لَهُۥ حُجَّتُهُمْ دَاحِضَةٌ عِندَ رَبِّهِمْ
وَعَلَيْهِمْ غَضَبٌۭ وَلَهُمْ عَذَابٌۭ شَدِيدٌ﴾
১৬। আল্লাহর
আহবানে সাড়া দান করার পরে যারা (সাড়া দানকারীদের সাথে) আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে
বিবাদ করে৩১ আল্লাহর কাছে তাদের যুক্তি ও আপত্তি বাতিল। তাদের ওপর
আল্লাহর গযব, আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব।
﴿ٱللَّهُ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ
ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ وَٱلْمِيزَانَ ۗ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ قَرِيبٌۭ﴾
১৭। এই কিতাব ও
মিযান যথাযথভাবে আল্লাহই নাযিল করেছেন।৩২ তুমি তো
জানো না, চূড়ান্ত ফায়সালার সময় হয়তো অতি নিকটবর্তী হয়ে পড়েছে।৩৩
﴿يَسْتَعْجِلُ بِهَا ٱلَّذِينَ
لَا يُؤْمِنُونَ بِهَا ۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مُشْفِقُونَ مِنْهَا وَيَعْلَمُونَ
أَنَّهَا ٱلْحَقُّ ۗ أَلَآ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُمَارُونَ فِى ٱلسَّاعَةِ لَفِى ضَلَـٰلٍۭ
بَعِيدٍ﴾
১৮। যারা তা
আসবে বলে বিশ্বাস করে না তারাই তার জন্য তাড়াহুড়া করে। কিন্তু
যারা তা বিশ্বাস করে তারা তাকে ভয় করে। তারা জানে, অবশ্যই তা
আসবে। ভাল করে শুনে নাও, যারা সেই
সময়ের আগমনের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি করার জন্য বিতর্ক করে তারা গোমরাহীর মধ্যে
বহুদূর অগ্রসর হয়েছে।
﴿ٱللَّهُ لَطِيفٌۢ بِعِبَادِهِۦ
يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ ۖ وَهُوَ ٱلْقَوِىُّ ٱلْعَزِيزُ﴾
১৯। আল্লাহ
তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াবান।৩৪ যাকে যা
ইচ্ছা তাই দান করেন।৩৫ তিনি মহা
শক্তিমান ও মহা পরাক্রমশালী।৩৬
﴿مَن كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ
ٱلْـَٔاخِرَةِ نَزِدْ لَهُۥ فِى حَرْثِهِۦ ۖ وَمَن كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ ٱلدُّنْيَا
نُؤْتِهِۦ مِنْهَا وَمَا لَهُۥ فِى ٱلْـَٔاخِرَةِ مِن نَّصِيبٍ﴾
২০। যে
আখেরাতের কৃষিক্ষেত্র চায় আমি তার কৃষিক্ষেত্র বাড়িয়ে দেই। আর যে
দুনিয়ার কৃষিক্ষেত্র চায় তাকে দুনিয়ার অংশ থেকেই দিয়ে থাকি। কিন্তু
আখেরাতে তার কোন অংশ নেই।৩৭
﴿أَمْ لَهُمْ شُرَكَـٰٓؤُا۟
شَرَعُوا۟ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَنۢ بِهِ ٱللَّهُ ۚ وَلَوْلَا كَلِمَةُ
ٱلْفَصْلِ لَقُضِىَ بَيْنَهُمْ ۗ وَإِنَّ ٱلظَّـٰلِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ﴾
২১। এসব লোক কি
আল্লাহর এমন কোন শরীকে বিশ্বাস করে যে এদের জন্য দ্বীনের মত এমন একটি পদ্ধতি
নির্ধারিত করে দিয়েছে আল্লাহ যার অনুমোদন দেননি?৩৮ যদি
ফায়সালার বিষয়টি পূর্বেই মীমাংসিত হয়ে না থাকতো তাহলে তাদের বিবাদের ব্যাপারে
সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়া হতো।৩৯ এ
জালেমদের জন্য নিশ্চিত কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
﴿تَرَى ٱلظَّـٰلِمِينَ مُشْفِقِينَ
مِمَّا كَسَبُوا۟ وَهُوَ وَاقِعٌۢ بِهِمْ ۗ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ
فِى رَوْضَاتِ ٱلْجَنَّاتِ ۖ لَهُم مَّا يَشَآءُونَ عِندَ رَبِّهِمْ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ
ٱلْفَضْلُ ٱلْكَبِيرُ﴾
২২। তোমরা
দেখতে পাবে, সে সময় এসব জালেম তাদের কৃতকর্মের ভয়াবহ
পরিণামের আশঙ্কা করতে থাকবে। আর সে
পরিণাম তাদের জন্য আসবেই। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে
এবং সৎকাজ করেছে তারা জান্নাতের বাগ-বাগিচার মধ্যে অবস্থান করবে। তারা যা-ই
চাইবে তা-ই তাদের রবের কাছে পাবে। এটাই বড়
মেহেরবানী।
﴿ذَٰلِكَ ٱلَّذِى يُبَشِّرُ
ٱللَّهُ عِبَادَهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ ۗ قُل لَّآ أَسْـَٔلُكُمْ
عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا ٱلْمَوَدَّةَ فِى ٱلْقُرْبَىٰ ۗ وَمَن يَقْتَرِفْ حَسَنَةًۭ
نَّزِدْ لَهُۥ فِيهَا حُسْنًا ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ شَكُورٌ﴾
২৩। এটাই সেই
জিনিস যার সুসংবাদ আল্লাহ তাঁর সেই সব বান্দাদের দেন যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ
করেছে। হে নবী, এসব লোককে
বলে দাও, এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই
না।৪০ তবে আত্মীয়তার
ভালবাসা অবশ্যই চাই।৪১ যে
কল্যাণ উপার্জন করবে আমি তার জন্য তার সেই কল্যাণের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দেব। নিশ্চয়ই
আল্লাহ বড় ক্ষমাশীল ও নেক কাজের
﴿أَمْ يَقُولُونَ ٱفْتَرَىٰ
عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًۭا ۖ فَإِن يَشَإِ ٱللَّهُ يَخْتِمْ عَلَىٰ قَلْبِكَ ۗ وَيَمْحُ
ٱللَّهُ ٱلْبَـٰطِلَ وَيُحِقُّ ٱلْحَقَّ بِكَلِمَـٰتِهِۦٓ ۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ
ٱلصُّدُورِ﴾
২৪। এ লোকেরা
কি বলে, এই ব্যক্তি আল্লাহর বিরুদ্ধে অপবাদ তৈরী
করেছে?৪৩ আল্লাহ ইচ্ছা করলে
তোমার দিলের ওপর মোহর মেরে দিতেন।৪৪ তিনি
বাতিলকে নিশ্চিহ্ন করে দেন এবং নিজের আদেশে সত্যকে সত্য প্রমাণ করে দেখান।৪৫ তিনি
মনের গোপন বিষয়ও জানেন।৪৬
﴿وَهُوَ ٱلَّذِى يَقْبَلُ
ٱلتَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِۦ وَيَعْفُوا۟ عَنِ ٱلسَّيِّـَٔاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ﴾
২৫। তিনিই সেই
মহান সত্তা যিনি তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং মন্দ কাজসমূহ ক্ষমা করেন। অথচ
তোমাদের সব কাজকর্ম সম্পর্কে তাঁর জানা আছে।৪৭
﴿وَيَسْتَجِيبُ ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَيَزِيدُهُم مِّن فَضْلِهِۦ ۚ وَٱلْكَـٰفِرُونَ
لَهُمْ عَذَابٌۭ شَدِيدٌۭ﴾
২৬। তিনি
ঈমানদার ও নেক আমলকারীদের দোয়া কবুল করেন এবং নিজের দয়ায় তাদের আরো অধিক দেন। কাফেরদের
জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।
﴿وَلَوْ بَسَطَ ٱللَّهُ ٱلرِّزْقَ
لِعِبَادِهِۦ لَبَغَوْا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَـٰكِن يُنَزِّلُ بِقَدَرٍۢ مَّا يَشَآءُ
ۚ إِنَّهُۥ بِعِبَادِهِۦ خَبِيرٌۢ بَصِيرٌۭ﴾
২৭। আল্লাহ যদি
তাঁর সব বান্দাদেরকে অঢেল রিযিক দান করতেন তাহলে তারা পৃথিবীতে বিদ্রোহের তুফান
সৃষ্টি করতো। কিন্তু তিনি একটি হিসাব অনুসারে যতটা
ইচ্ছা নাযিল করেন। নিশ্চয়ই তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে
অবহিত এবং তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন।৪৮
﴿وَهُوَ ٱلَّذِى يُنَزِّلُ
ٱلْغَيْثَ مِنۢ بَعْدِ مَا قَنَطُوا۟ وَيَنشُرُ رَحْمَتَهُۥ ۚ وَهُوَ ٱلْوَلِىُّ ٱلْحَمِيدُ﴾
২৮। তিনিই সে
মহান সত্তা যিনি মানুষের নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং রহমত বিস্তার
করে দেন। তিনি প্রশংসার যোগ্য অভিভাবক।৪৯
﴿وَمِنْ ءَايَـٰتِهِۦ خَلْقُ
ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَثَّ فِيهِمَا مِن دَآبَّةٍۢ ۚ وَهُوَ عَلَىٰ جَمْعِهِمْ
إِذَا يَشَآءُ قَدِيرٌۭ﴾
২৯। এই আসমান ও
যমীনের সৃষ্টি এবং এ দু’জায়গায় তিনি যেসব প্রাণীকুল ছড়িয়ে রেখেছেন এসব তাঁর
নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত।৫০ যখন
ইচ্ছা তিনি এদেরকে একত্র করতে পারেন।৫১
﴿وَمَآ أَصَـٰبَكُم مِّن
مُّصِيبَةٍۢ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُوا۟ عَن كَثِيرٍۢ﴾
৩০। তোমাদের
ওপর যে মসিবতই এসেছে তা তোমাদের কৃতকর্মের কারণে এসেছে। বহু
সংখ্যক অপরাধকে তো আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন।৫২
﴿وَمَآ أَنتُم بِمُعْجِزِينَ
فِى ٱلْأَرْضِ ۖ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِىٍّۢ وَلَا نَصِيرٍۢ﴾
৩১। তোমরা
তোমাদের আল্লাহকে পৃথিবীতে অচল ও অক্ষম করে দিতে সক্ষম নও এবং আল্লাহ ছাড়া
তোমাদের আর কোন সহযোগী ও সাহায্যকারী নেই।
﴿وَمِنْ ءَايَـٰتِهِ ٱلْجَوَارِ
فِى ٱلْبَحْرِ كَٱلْأَعْلَـٰمِ﴾
৩২। সমুদ্রের
বুকে পাহাড়ের মত দৃশ্যমান এসব জাহাজ তাঁর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত।
﴿إِن يَشَأْ يُسْكِنِ ٱلرِّيحَ
فَيَظْلَلْنَ رَوَاكِدَ عَلَىٰ ظَهْرِهِۦٓ ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّكُلِّ
صَبَّارٍۢ شَكُورٍ﴾
৩৩। আল্লাহ
চাইলে বাতাসকে থামিয়ে দেবেন আর তখন সেগুলো সমুদ্রের বুকে নিশ্চল দাঁড়িয়ে যাবে। ---এর
মধ্যে সেই সব লোকদের প্রত্যেকের জন্য বড় বড় নিদর্শন রয়েছে যারা পূর্ণ মাত্রায়
ধৈর্যশীল ও
﴿أَوْ يُوبِقْهُنَّ بِمَا
كَسَبُوا۟ وَيَعْفُ عَن كَثِيرٍۢ﴾
৩৪। অথবা তার
আরোহীদের বহু সংখ্যক গোনাহ ক্ষমা করেও তাদেরকে কতিপয় কৃতকর্মের অপরাধে ডুবিয়ে
দেবেন।
﴿وَيَعْلَمَ ٱلَّذِينَ يُجَـٰدِلُونَ
فِىٓ ءَايَـٰتِنَا مَا لَهُم مِّن مَّحِيصٍۢ﴾
৩৫। আমার
নিদর্শনসমূহ নিয়ে যারা বিতর্ক করে সেই সময় তারা জানতে পারবে, তাদের আশ্রয়
লাভের কোন জায়গা নেই।৫৪
﴿فَمَآ أُوتِيتُم مِّن شَىْءٍۢ
فَمَتَـٰعُ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا ۖ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌۭ وَأَبْقَىٰ لِلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ﴾
৩৬। যা-ই
তোমাদের দেয়া হয়েছে তা কেবল দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের উপকরণ মাত্র।৫৫ আর
আল্লাহর কাছে যা আছে তা যেমন উত্তম তেমনি চিরস্থায়ী।৫৬ তা সেই
সব লোকের জন্য যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের রবের উপর নির্ভর করে,৫৭
﴿وَٱلَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ
كَبَـٰٓئِرَ ٱلْإِثْمِ وَٱلْفَوَٰحِشَ وَإِذَا مَا غَضِبُوا۟ هُمْ يَغْفِرُونَ﴾
৩৭। যারা বড় বড়
গোনাহ এবং লজ্জাহীনতার কাজ থেকে বিরত থাকে৫৮ এবং
ক্রোধ উৎপত্তি হলে ক্ষমা করে,৫৯
﴿وَٱلَّذِينَ ٱسْتَجَابُوا۟
لِرَبِّهِمْ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَمْرُهُمْ شُورَىٰ بَيْنَهُمْ وَمِمَّا رَزَقْنَـٰهُمْ
يُنفِقُونَ﴾
৩৮। যারা তাদের
রবের নির্দেশ মেনে চলে,৬০ নামায কায়েম করে এবং নিজেদের
সব কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে চালায়,৬১ আমি
তাদের যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে৬২
﴿وَٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَابَهُمُ
ٱلْبَغْىُ هُمْ يَنتَصِرُونَ﴾
৩৯। এবং তাদের
বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করা হলে তার মোকাবিলা করে।৬৩
﴿وَجَزَٰٓؤُا۟ سَيِّئَةٍۢ
سَيِّئَةٌۭ مِّثْلُهَا ۖ فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِ ۚ إِنَّهُۥ
لَا يُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِينَ﴾
৪০। খারাপের৬৪ প্রতিদান
সমপর্যায়ের খারাপ।৬৫ অতঃপর যে মাফ করে দেয় এবং
সংশোধন করে তাকে পুরস্কৃত করা আল্লাহর দায়িত্ব।৬৬ আল্লাহ
জালেমদের পছন্দ করেন না।৬৭
﴿وَلَمَنِ ٱنتَصَرَ بَعْدَ
ظُلْمِهِۦ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ مَا عَلَيْهِم مِّن سَبِيلٍ﴾
৪১। যারা জুলুম
হওয়ার পরে প্রতিশোধ গ্রহণ করে তাদের তিরস্কার করা যায় না।
﴿إِنَّمَا ٱلسَّبِيلُ عَلَى
ٱلَّذِينَ يَظْلِمُونَ ٱلنَّاسَ وَيَبْغُونَ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ
لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ﴾
৪২। তিরস্কারের
উপযুক্ত তো তারা যারা অন্যদের ওপর জুলুম করে এবং পৃথিবীতে অন্যায় বাড়াবাড়ি করে। এসব লোকের
জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।
﴿وَلَمَن صَبَرَ وَغَفَرَ
إِنَّ ذَٰلِكَ لَمِنْ عَزْمِ ٱلْأُمُورِ﴾
৪৩। তবে যে
ধৈর্যের সাথে কাজ করে এবং ক্ষমা প্রদর্শন করে তার সে কাজ মহত্তর সংকল্পদীপ্ত কাজের
অন্তর্ভুক্ত।৬৮
﴿وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا
لَهُۥ مِن وَلِىٍّۢ مِّنۢ بَعْدِهِۦ ۗ وَتَرَى ٱلظَّـٰلِمِينَ لَمَّا رَأَوُا۟ ٱلْعَذَابَ
يَقُولُونَ هَلْ إِلَىٰ مَرَدٍّۢ مِّن سَبِيلٍۢ﴾
৪৪। আল্লাহ
নিজেই যাকে গোমরাহীর মধ্যে নিক্ষেপ করেন আল্লাহ ছাড়া তাকে সামলানোর আর কেউ নেই।৬৯ তোমরা
দেখতে পাবে এসব জালেমরা যখন আযাব দেখবে তখন বলবে এখন কি ফিরে যাবারও কোন পথ আছে?৭০
﴿وَتَرَىٰهُمْ يُعْرَضُونَ
عَلَيْهَا خَـٰشِعِينَ مِنَ ٱلذُّلِّ يَنظُرُونَ مِن طَرْفٍ خَفِىٍّۢ ۗ وَقَالَ ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوٓا۟ إِنَّ ٱلْخَـٰسِرِينَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ وَأَهْلِيهِمْ
يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۗ أَلَآ إِنَّ ٱلظَّـٰلِمِينَ فِى عَذَابٍۢ مُّقِيمٍۢ﴾
৪৫। তুমি দেখতে
পাবে এদের জাহান্নামের সামনে আনা হলে অপমানে আনত হতে থাকবে এবং দৃষ্টির আড়ালে
বাঁকা চোখে তাকে দেখতে থাকবে।৭১ যারা
ঈমান এনেছিলো সেই সময় তারা বলবেঃ প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা আজ কিয়ামতের
দিন নিজেরাই নিজেদেরকে এবং নিজেদের সংশ্লিষ্টদেরকে ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে।
﴿وَمَا كَانَ لَهُم مِّنْ
أَوْلِيَآءَ يَنصُرُونَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ ۗ وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ
مِن سَبِيلٍ﴾
৪৬। সাবধান!
জালেমরা চিরস্থায়ী আযাব ভোগ করতে থাকবে এবং তাদের কোন সহযোগী ও অভিভাবক থাকবে না, যারা আল্লাহর
মোকাবিলায় তাদের সাহায্য করবে। আল্লাহ
নিজেই যাকে গোমরাহীর মধ্যে নিক্ষেপ করেন তার বাঁচার কোন পথ নেই।
﴿ٱسْتَجِيبُوا۟ لِرَبِّكُم
مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌۭ لَّا مَرَدَّ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِ ۚ مَا لَكُم مِّن
مَّلْجَإٍۢ يَوْمَئِذٍۢ وَمَا لَكُم مِّن نَّكِيرٍۢ﴾
৪৭। তোমরা
তোমাদের রবের কথায় সাড়া দাও ----সেই দিনটি আসার আগেই আল্লাহর পক্ষ থেকে যাকে
ফিরিয়ে দেয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।৭২ সেই দিন তোমাদের
জন্য কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য চেষ্টাকারীও কেউ
থাকবে না।৭৩
﴿فَإِنْ أَعْرَضُوا۟ فَمَآ
أَرْسَلْنَـٰكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا ۖ إِنْ عَلَيْكَ إِلَّا ٱلْبَلَـٰغُ ۗ وَإِنَّآ
إِذَآ أَذَقْنَا ٱلْإِنسَـٰنَ مِنَّا رَحْمَةًۭ فَرِحَ بِهَا ۖ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌۢ
بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَإِنَّ ٱلْإِنسَـٰنَ كَفُورٌۭ﴾
৪৮। এখন যদি
এরা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে হে নবী, আমি তো
আপনাকে তাদের জন্য রক্ষক হিসেবে পাঠাইনি।৭৪ কথা
পৌঁছিয়ে দেয়াই কেবল তোমার দায়িত্ব। মানুষের
অবস্থা এই যে, যখন আমি তাকে আমার রহমতের স্বাদ আস্বাদন
করাই তখন সে তার জন্য গর্বিত হয়ে ওঠে। আর যখন তা
নিজ হাতে কৃত কোন কিছু মুসিবত আকারে তার ওপর আপতিত হয় তখন সে চরম অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়।৭৫
﴿لِّلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ ۚ يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَـٰثًۭا وَيَهَبُ
لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ﴾
৪৯। যমীন ও
আসমানের বাদশাহীর অধিকর্তা আল্লাহ৭৬ তিনি যা
ইচ্ছা সৃষ্টি করেন।
﴿أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًۭا
وَإِنَـٰثًۭا ۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًا ۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۭ قَدِيرٌۭ﴾
৫০। যাকে ইচ্ছা
কন্যা সন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র ও কন্যা উভয়টিই দেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। তিনি সব
কিছু জানেন এবং সব কিছু করতে সক্ষম।৭৭
﴿وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن
يُكَلِّمَهُ ٱللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَآئِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًۭا
فَيُوحِىَ بِإِذْنِهِۦ مَا يَشَآءُ ۚ إِنَّهُۥ عَلِىٌّ حَكِيمٌۭ﴾
৫১। কোন৭৮ মানুষই এ
মর্যাদার অধিকারী নয় যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। তিনি কথা
বলেন হয় অহীর (ইঙ্গিত) মাধ্যমে,৭৯ অথবা
পর্দার আড়াল থেকে,৮০ কিংবা তিনি কোন
বার্তাবাহক (ফেরেশতা) পাঠান এবং সে তাঁর হুকুমে তিনি যা চান অহী হিসেবে দেয়।৮১ তিনি
সুমহান ও সুবিজ্ঞ।৮২
﴿وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَآ
إِلَيْكَ رُوحًۭا مِّنْ أَمْرِنَا ۚ مَا كُنتَ تَدْرِى مَا ٱلْكِتَـٰبُ وَلَا ٱلْإِيمَـٰنُ
وَلَـٰكِن جَعَلْنَـٰهُ نُورًۭا نَّهْدِى بِهِۦ مَن نَّشَآءُ مِنْ عِبَادِنَا ۚ وَإِنَّكَ
لَتَهْدِىٓ إِلَىٰ صِرَٰطٍۢ مُّسْتَقِيمٍۢ﴾
৫২। এভাবেই (হে
মুহাম্মাদ), আমি আমার নির্দেশে তোমার কাছে এক রূহকে অহী
করেছি।৮৩ তুমি আদৌ
জানতে না কিতাব কি এবং ঈমানই বা কি।৮৪ কিন্তু
সেই রূহকে আমি একটি আলো বানিয়ে দিয়েছি যা দিয়ে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে
ইচ্ছা পথ দেখিয়ে থাকি। নিশ্চিতভাবেই আমি তোমাকে
সোজা পথের দিক নির্দেশনা দান করছি।
﴿صِرَٰطِ ٱللَّهِ ٱلَّذِى
لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ أَلَآ إِلَى ٱللَّهِ تَصِيرُ
ٱلْأُمُورُ﴾
৫৩। সেই
আল্লাহর পথের দিকে যিনি যমীন ও আসমানের সব জিনিসের মালিক। সাবধান, সব কিছু
আল্লাহর দিকেই ফিরে যায়।৮৫
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।