০৪৮. সূরা আল ফাতহ
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًۭا
مُّبِينًۭا﴾
১। হে নবী, আমি তোমাকে
সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি১
﴿لِّيَغْفِرَ لَكَ ٱللَّهُ
مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنۢبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُۥ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ
صِرَٰطًۭا مُّسْتَقِيمًۭا﴾
২। যাতে
আল্লাহ তোমার আগের ও পরের সব ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে দেন,২ তোমার
জন্য তাঁর নিয়ামতকে পূর্ণতা দান করেন,৩
﴿وَيَنصُرَكَ ٱللَّهُ نَصْرًا
عَزِيزًا﴾
৩। তোমাকে সরল
সহজ পথ দেখিয়ে দেন৪ এবং অত্যন্ত
বলিষ্ঠভাবে সাহায্য করেন।৫
﴿هُوَ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ
فِى قُلُوبِ ٱلْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوٓا۟ إِيمَـٰنًۭا مَّعَ إِيمَـٰنِهِمْ ۗ وَلِلَّهِ
جُنُودُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًۭا﴾
৪। তিনিই তো
সে সত্তা যিনি মু’মিনদের মনে প্রশান্তি নাযিল করেছেন৬ যাতে
তারা নিজেদের ঈমান আরো বাড়িয়ে নেয়।৭ আসমান ও যমীনের সমস্ত বাহিনী
আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। তিনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী।৮
﴿لِّيُدْخِلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ خَـٰلِدِينَ فِيهَا
وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ ۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عِندَ ٱللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًۭا﴾
৫। (এ কাজ
তিনি এ জন্য করেছেন) যাতে ঈমানদার নারী ও পুরুষদেরকে৯ চিরদিন
অবস্থানের জন্য এমন জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ
প্রবাহিত হতে থাকবে এবং তাদের মন্দ কর্মসমূহ দূর করবেন।১০ এটা
আল্লাহর কাছে বড় সফলতা।
﴿وَيُعَذِّبَ ٱلْمُنَـٰفِقِينَ
وَٱلْمُنَـٰفِقَـٰتِ وَٱلْمُشْرِكِينَ وَٱلْمُشْرِكَـٰتِ ٱلظَّآنِّينَ بِٱللَّهِ ظَنَّ
ٱلسَّوْءِ ۚ عَلَيْهِمْ دَآئِرَةُ ٱلسَّوْءِ ۖ وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلَعَنَهُمْ
وَأَعَدَّ لَهُمْ جَهَنَّمَ ۖ وَسَآءَتْ مَصِيرًۭا﴾
৬। আর যেসব
মুনাফিক নারী ও পুরুষ এবং মুশরিক নারী ও পুরুষ আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ
করে১১ তাদের
শাস্তি দেবেন। তারা নিজেরাই অকল্যাণর চক্রে
পড়ে গিয়েছে।১২ আল্লাহর গযব পড়েছে তাদের ওপর
তিনি লা’নত করেছেন তাদেরকে এবং তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন-যা
অত্যন্ত জঘন্য জায়গা।
﴿وَلِلَّهِ جُنُودُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا﴾
৭। আসমান ও
যমীনের সকল বাহিনী আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। তিনি
মহাজ্ঞানী ও কৌশলী।১৩
﴿إِنَّآ أَرْسَلْنَـٰكَ شَـٰهِدًۭا
وَمُبَشِّرًۭا وَنَذِيرًۭا﴾
৮। হে নবী, আমি তোমাকে
সাক্ষ্যদানকারী,১৪ সুসংবাদ দানকারী এবং
সতর্ককারী১৫ হিসেবে পাঠিয়েছি-
﴿لِّتُؤْمِنُوا۟ بِٱللَّهِ
وَرَسُولِهِۦ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةًۭ وَأَصِيلًا﴾
৯। যাতে হে
মানুষ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান
আন, তাঁকে সাহায্য কর, তাঁর প্রতি
সম্মান ও মর্যাদা দেখাও এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।১৬
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ
إِنَّمَا يُبَايِعُونَ ٱللَّهَ يَدُ ٱللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ ۚ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا
يَنكُثُ عَلَىٰ نَفْسِهِۦ ۖ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِمَا عَـٰهَدَ عَلَيْهُ ٱللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ
أَجْرًا عَظِيمًۭا﴾
১০। হে নবী
যারা তোমার হাতে বাইয়া’ত করছিলো প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কাছেই বাইয়া’ত করছিলো।১৭ তাদের
হাতের ওপর ছিল আল্লাহর হাত।১৮ যে
প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবে তার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার অশুভ পরিণাম তার নিজের ওপরেই বর্তাবে। আর যে
আল্লাহর সাথে কৃত এ প্রতিশ্রুতি পালন করবে,১৯ আল্লাহ
অচিরেই তাকে বড় পুরস্কার দান করবেন।
﴿سَيَقُولُ لَكَ ٱلْمُخَلَّفُونَ
مِنَ ٱلْأَعْرَابِ شَغَلَتْنَآ أَمْوَٰلُنَا وَأَهْلُونَا فَٱسْتَغْفِرْ لَنَا ۚ يَقُولُونَ
بِأَلْسِنَتِهِم مَّا لَيْسَ فِى قُلُوبِهِمْ ۚ قُلْ فَمَن يَمْلِكُ لَكُم مِّنَ ٱللَّهِ
شَيْـًٔا إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًۢا ۚ بَلْ كَانَ ٱللَّهُ
بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًۢا﴾
১১। হে নবী
সা.! বদ্দু আরবদের২০ মধ্যে যাদেরকে পিছনে
ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল এখন তারা এসে অবশ্যই তোমাকে বলবেঃ “আমাদেরকে আমাদের ধন-মাল ও
সন্তান-সন্ততিদের চিন্তা-ই ব্যস্ত রেখেছিল, আপনি আমাদের জন্য
মাগফিরাতের দোয়া করুন।” এ লোকেরা নিজেদের মুখে সেসব
কথা বলছে যা তাদের অন্তরে থাকে না।২১ তাদেরকে
বলো ঠিক আছে। ইহাই যদি সত্য হয়ে থাকে তা
হলে তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালাকে কার্যকর হওয়া থেকে বাধাদানের সামান্য
ক্ষমতা কি কারো আছে যদি তিনি তোমাদের কোন ক্ষতি করতে চান; অথবা চান কোন
কল্যাণ দান করতে? তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে তো আল্লাহই
ভালভাবে অবহিত২২
﴿بَلْ ظَنَنتُمْ أَن لَّن
يَنقَلِبَ ٱلرَّسُولُ وَٱلْمُؤْمِنُونَ إِلَىٰٓ أَهْلِيهِمْ أَبَدًۭا وَزُيِّنَ ذَٰلِكَ
فِى قُلُوبِكُمْ وَظَنَنتُمْ ظَنَّ ٱلسَّوْءِ وَكُنتُمْ قَوْمًۢا بُورًۭا﴾
১২। (কিন্তু
আসল কথা তো তা নয় যা তোমরা বলছো); বরং তোমরা মনে করি নিয়েছ
যে, রাসূল ও মু’মিনগণ নিজেদের ঘরে কখনই ফিরতে পারবে না। এ খেয়ালটা
তোমাদের অন্তরে খুব ভাল লেগেছিল২৩ এবং
তোমরা খুবই খারাপ ধারণা মনে স্থান দিয়েছো, আসলে তোমরা খুবই
খারাপ মন-মানসিকতার লোক।২৪
﴿وَمَن لَّمْ يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ
وَرَسُولِهِۦ فَإِنَّآ أَعْتَدْنَا لِلْكَـٰفِرِينَ سَعِيرًۭا﴾
১৩। আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলের প্রতি যারা ঈমান আনেনি এমন কাফেরদের জন্য আমরা দাউ দাউ করে জ্বলা
অগ্নি কুণ্ডলি তৈরী করে রেখেছি।২৫
﴿وَلِلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ ۚ يَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ
غَفُورًۭا رَّحِيمًۭا﴾
১৪। আকাশ
মণ্ডলী ও পৃথিবীর বাদশাহীর (প্রভুত্ব ও প্রশাসন ক্ষমতা) একচ্ছত্র মালিক একমাত্র
আল্লাহ। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন এবং যাকে
ইচ্ছা শাস্তি দেন। আল্লাহ-ইক্ষমাশীল ও করুণাময়।২৬
﴿سَيَقُولُ ٱلْمُخَلَّفُونَ
إِذَا ٱنطَلَقْتُمْ إِلَىٰ مَغَانِمَ لِتَأْخُذُوهَا ذَرُونَا نَتَّبِعْكُمْ ۖ يُرِيدُونَ
أَن يُبَدِّلُوا۟ كَلَـٰمَ ٱللَّهِ ۚ قُل لَّن تَتَّبِعُونَا كَذَٰلِكُمْ قَالَ ٱللَّهُ
مِن قَبْلُ ۖ فَسَيَقُولُونَ بَلْ تَحْسُدُونَنَا ۚ بَلْ كَانُوا۟ لَا يَفْقَهُونَ
إِلَّا قَلِيلًۭا﴾
১৫। তোমরা যখন
গনীমতের মাল লাভ করার জন্য যেতে থাকবে তখন এ পিছনে রেখে যাওয়া লোকেরা তোমাকে
অবশ্যই বলবে যে, আমাদেরকেও তোমাদের সাথে যেতে দাও।২৭ এরা
আল্লাহর ফরমান পরিবর্তন করে দিতে চায়।২৮ এদের
স্পষ্ট ভাষায় বলে দাওঃ ‘তোমরা কখনই আমাদের সাথে যেতে পারো না, আল্লাহ তো আগেই একথা বলে দিয়েছেন।”২৯ এর বলবেঃ
“না, তোমরাই বরং আমাদের প্রতি হিংসা পোষণ কর।” (অথচ এটা
কোন হিংসার কথা নয়) আসলে এরা সঠিক কথা খুব কমই বুঝে।
﴿قُل لِّلْمُخَلَّفِينَ مِنَ
ٱلْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُو۟لِى بَأْسٍۢ شَدِيدٍۢ تُقَـٰتِلُونَهُمْ
أَوْ يُسْلِمُونَ ۖ فَإِن تُطِيعُوا۟ يُؤْتِكُمُ ٱللَّهُ أَجْرًا حَسَنًۭا ۖ وَإِن
تَتَوَلَّوْا۟ كَمَا تَوَلَّيْتُم مِّن قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًۭا﴾
১৬। এ পিছনে
রেখে যাওয়া বদ্দু আরবদেরকে বলে দাওঃ “খুব শীঘ্রই তোমাদেরকে এমন সব লোকের সাথে লড়াই
করার জন্য ডাকা হবে যারা বড়ই শক্তি সম্পন্ন।”
তোমাদেরকে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে, কিংবা তারা অনুগত হয়ে
যাবে।৩০ সে সময়
তোমরা জিহাদের নির্দেশ পালন করলে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম সওয়াব দিবেন। আর যদি
তোমরা পিছনে হটে যাও যেমন পূর্বে হটে গিয়েছিলে, তাহলে আল্লাহ
তোমাদেরকে কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি দেবেন।
﴿لَّيْسَ عَلَى ٱلْأَعْمَىٰ
حَرَجٌۭ وَلَا عَلَى ٱلْأَعْرَجِ حَرَجٌۭ وَلَا عَلَى ٱلْمَرِيضِ حَرَجٌۭ ۗ وَمَن يُطِعِ
ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ يُدْخِلْهُ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ ۖ
وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا أَلِيمًۭا﴾
১৭। যদি অন্ধ, পংগু ও
রোগাক্রান্ত লোক জিহাদে না আসে তাহলে কোন দোষ নেই।৩১ যে কেউ
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে সেসব
জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যেসবের নিম্নদেশে ঝর্ণাধারাসমূহ
প্রবাহমান থাকবে। আর যে মুখ ফিরিয়ে থাকবে
আল্লাহ তাকে মর্মান্তিক আযাব দেবেন।
﴿لَّقَدْ رَضِىَ ٱللَّهُ عَنِ
ٱلْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ ٱلشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِى قُلُوبِهِمْ
فَأَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَـٰبَهُمْ فَتْحًۭا قَرِيبًۭا﴾
১৮। আল্লাহ মু’মিনদের
প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নিচে তোমরা কাছে বাইয়া’ত করছিলো।৩২ তিনি
তাদের মনের অবস্থা জানতেন। তাই তিনি
তাদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করেছেন,৩৩ পুরস্কার
স্বরূপ তাদেরকে আশু বিজয় দান করেছেন।
﴿وَمَغَانِمَ كَثِيرَةًۭ يَأْخُذُونَهَا
ۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًۭا﴾
১৯। এবং প্রচুর
গনীমতের সম্পদ দান করেছেন যা তারা অচিরেই লাভ করবে।৩৪ আল্লাহ
মহা পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।
﴿وَعَدَكُمُ ٱللَّهُ مَغَانِمَ
كَثِيرَةًۭ تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَـٰذِهِۦ وَكَفَّ أَيْدِىَ ٱلنَّاسِ عَنكُمْ
وَلِتَكُونَ ءَايَةًۭ لِّلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَٰطًۭا مُّسْتَقِيمًۭا﴾
২০। আল্লাহর
তোমাদরকে অঢেল গনীমতের সম্পদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যা তোমরা লাভ করবে।৩৫ তিনি
তোমাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিজয় দিয়েছেন৩৬ এবং
তোমাদের বিরুদ্ধে মানুষের হাত উত্তোলনকে থামিয়ে দিয়েছেন৩৭ যাতে মু’মিনদের
জন্য তা একটি নিদর্শন হয়ে থাকে।৩৮ আর
আল্লাহ তোমাদেরকে সোজা পথের হিদায়াত দান করেন।৩৯
﴿وَأُخْرَىٰ لَمْ تَقْدِرُوا۟
عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ ٱللَّهُ بِهَا ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرًۭا﴾
২১। এছাড়া তিনি
তোমাদেরকে আরো গনীমতের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যা তোমরা এখনো পর্যন্ত লাভ করতে পারনি। কিন্তু
আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।৪০ আল্লাহ
সবকিছুর ওপরে ক্ষমতাবান।
﴿وَلَوْ قَـٰتَلَكُمُ ٱلَّذِينَ
كَفَرُوا۟ لَوَلَّوُا۟ ٱلْأَدْبَـٰرَ ثُمَّ لَا يَجِدُونَ وَلِيًّۭا وَلَا نَصِيرًۭا﴾
২২। এ
মুহূর্তেই এসব কাফের যদি তোমাদের সাথে লড়াই বাধিয়ে বসতো তাহলে অবশ্যই
পৃষ্ঠপ্রদর্শন করতো এবং কোন সহযোগী ও সাহায্যকারী পেতো না।৪১
﴿سُنَّةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِى
قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلُ ۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ ٱللَّهِ تَبْدِيلًۭا﴾
২৩। এটা
আল্লাহর বিধান যা পূর্ব থেকেই চলে আসছে।৪২ তুমি
আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাবে না।
﴿وَهُوَ ٱلَّذِى كَفَّ أَيْدِيَهُمْ
عَنكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنۢ بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ
ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا﴾
২৪। তিনিই সেই
সত্তা যিনি মক্কা ভূমিতে তাদের হাত তোমাদের থেকে আর তোমাদের হাত তাদের থেকে ফিরিয়ে
দিয়েছেন তাদের ওপর তোমাদেরকে আধিপত্য দান করার পর। তোমরা যা
কিছু করছিলে আল্লাহ তা দেখছিলেন।
﴿هُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟
وَصَدُّوكُمْ عَنِ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ وَٱلْهَدْىَ مَعْكُوفًا أَن يَبْلُغَ مَحِلَّهُۥ
ۚ وَلَوْلَا رِجَالٌۭ مُّؤْمِنُونَ وَنِسَآءٌۭ مُّؤْمِنَـٰتٌۭ لَّمْ تَعْلَمُوهُمْ
أَن تَطَـُٔوهُمْ فَتُصِيبَكُم مِّنْهُم مَّعَرَّةٌۢ بِغَيْرِ عِلْمٍۢ ۖ لِّيُدْخِلَ
ٱللَّهُ فِى رَحْمَتِهِۦ مَن يَشَآءُ ۚ لَوْ تَزَيَّلُوا۟ لَعَذَّبْنَا ٱلَّذِينَ
كَفَرُوا۟ مِنْهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا﴾
২৫। এরাই তো
সেসব লোক যারা কুফরী করেছে, তোমাদেরকে মসজিদে হারামে
যেতে বাধা দিয়েছে এবং কুরবানীর উটসমূহকে কুরবানী গাহে পৌঁছতে দেয়নি।৪৩ যদি
(মক্কায়) এমন নারী পুরুষ না থাকতো যাদেরকে তোমরা চিন না অজান্তে তাদেরকে পদদলিত
করে ফেলবে এবং তাদের কারণে তোমরা বদনাম কুড়াবে এমন আশঙ্কা না থাকতো (তাহলে যুদ্ধ
থামানো হতো না। তা বন্ধ করা হয়েছে এ কারণে)
যে, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা যেন তাঁর রহমতের মধ্যে
স্থান দেন। সেসব মু’মিন যদি আলাদা হয়ে যেতো তাহলে
(মক্কাবাসীদের মধ্যে) যারা কাফের ছিল আমি অবশ্যই তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিতাম।৪৪
﴿إِذْ جَعَلَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟
فِى قُلُوبِهِمُ ٱلْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ ٱلْجَـٰهِلِيَّةِ فَأَنزَلَ ٱللَّهُ سَكِينَتَهُۥ
عَلَىٰ رَسُولِهِۦ وَعَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ ٱلتَّقْوَىٰ وَكَانُوٓا۟
أَحَقَّ بِهَا وَأَهْلَهَا ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمًۭا﴾
২৬। এ কারণেই
যখন ঐ সব কাফেররা তাদের মনে জাহেলী সংকীর্ণতার স্থান দিল৪৫ তখন
আল্লাহ তাঁর রাসূল ও ঈমানদারদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করলেন৪৬ এবং
তাদেরকে তাকওয়ার নীতির ওপর সুদৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠিত রাখলেন। তারাই এ
জন্য বেশী উপযুক্ত ও হকদার ছিল। আল্লাহ সব জিনিস সম্পর্কেই
পরিজ্ঞাত।
﴿لَّقَدْ صَدَقَ ٱللَّهُ رَسُولَهُ
ٱلرُّءْيَا بِٱلْحَقِّ ۖ لَتَدْخُلُنَّ ٱلْمَسْجِدَ ٱلْحَرَامَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ
ءَامِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ ۖ فَعَلِمَ مَا
لَمْ تَعْلَمُوا۟ فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَٰلِكَ فَتْحًۭا قَرِيبًا﴾
২৭। প্রকৃতপক্ষে
আল্লাহ তাঁর রাসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- যা ছিল সরাসরি হক।৪৭ ইনশাআল্লাহ৪৮ তোমরা
পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে।৪৯ নিজেদের
মাথা মুণ্ডন করবে, চুল কাটাবে৫০ এবং
তোমাদের কোন ভয় থাকবে না। তোমরা যা
জানতে না তিনি তা জানতেন। তাই স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ
করার পূর্বে তিনি তোমাদেরকে এ আসন্ন বিজয় দান করেছেন।
﴿هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ
بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ ۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ
شَهِيدًۭا﴾
২৮। আল্লাহই তো
সে মহান সত্তা যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যেন তাকে
সমস্ত দ্বীনের ওপর বিজয়ী করে দেন। আর এ
বাস্তবতা সম্পর্কে আল্লাহর সাক্ষ্যই যথেষ্ট।৫১
﴿مُّحَمَّدٌۭ رَّسُولُ ٱللَّهِ
ۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلْكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيْنَهُمْ ۖ تَرَىٰهُمْ
رُكَّعًۭا سُجَّدًۭا يَبْتَغُونَ فَضْلًۭا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضْوَٰنًۭا ۖ سِيمَاهُمْ
فِى وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ ٱلسُّجُودِ ۚ ذَٰلِكَ مَثَلُهُمْ فِى ٱلتَّوْرَىٰةِ ۚ
وَمَثَلُهُمْ فِى ٱلْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْـَٔهُۥ فَـَٔازَرَهُۥ فَٱسْتَغْلَظَ
فَٱسْتَوَىٰ عَلَىٰ سُوقِهِۦ يُعْجِبُ ٱلزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ ٱلْكُفَّارَ ۗ
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةًۭ
وَأَجْرًا عَظِيمًۢا﴾
২৯। মুহাম্মাদ
আল্লাহর রাসূল। আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের
বিরুদ্ধে আপোষহীন৫২ এবং নিজেরা পরস্পর
দয়া পরবশ।৫৩ তোমরা
যখনই দেখবে তখন তাদেরকে রুকূ ও সিজদা এবং আল্লাহর করুণা ও সন্তুষ্টি কামনায় তৎপর পাবে। তাদের
চেহারায় সিজদার চিহ্ন বর্তমান যা দিয়ে তাদেরকে আলাদা চিনে নেয়া যায়।৫৪ তাদের এ
পরিচয় তাওরাতে দেয়া হয়েছে।৫৫ আর
ইনযীলে তাদের উপমা পেশ করা হয়েছে এই বলে৫৬ যে,
একটি শস্যক্ষেত যা প্রথমে অঙ্কুরোদগম ঘটালো। পরে তাকে
শক্তি যোগালো তারপর তা শক্ত ও মজবুত হয়ে স্বীয় কাণ্ডে ভর করে দাঁড়ালো। যা কৃষককে
খুশী করে কিন্তু কাফের তার পরিপুষ্টি লাভ দেখে মনোকষ্ট পায়। এ শ্রেণীর
লোক যারা ঈমান আনয়ন করছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।৫৭
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।