সূরা আল মুযযাম্মিল-বাংলা অনুবাদ

Share:

 

০৭৩. সূরা আল মুযযাম্মিল

আয়াতঃ ২০;  রুকুঃ ০২; মাক্কী

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾

পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে

﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمُزَّمِّلُ﴾

হে বস্ত্র মুড়ি দিয়ে শয়নকারী

﴿قُمِ ٱلَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًۭا﴾

রাতের বেলা নামাযে রত থাকো তবে কিছু সময় ছাড়া

﴿نِّصْفَهُۥٓ أَوِ ٱنقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا﴾

অর্ধেক রাত, কিংবা তার চেয়ে কিছু কম করো 

﴿أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ ٱلْقُرْءَانَ تَرْتِيلًا﴾

অথবা তার ওপর কিছু বাড়িয়ে নাও আর কুরআন থেমে থেমে পাঠ করো

﴿إِنَّا سَنُلْقِى عَلَيْكَ قَوْلًۭا ثَقِيلًا﴾

আমি অতি শীঘ্র তোমার ওপর একটি গুরুভার বাণী নাযিল করবো

﴿إِنَّ نَاشِئَةَ ٱلَّيْلِ هِىَ أَشَدُّ وَطْـًۭٔا وَأَقْوَمُ قِيلًا﴾

প্রকৃতপক্ষে রাতের বেলা জেগে ওঠা প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশী কার্যকর এবং যথাযথভাবে কুরআন পড়ার জন্য উপযুক্ত সময় 

﴿إِنَّ لَكَ فِى ٱلنَّهَارِ سَبْحًۭا طَوِيلًۭا﴾

দিনের বেলা তো তোমার অনেক ব্যস্ততা রয়েছে 

﴿وَٱذْكُرِ ٱسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيلًۭا﴾

নিজ প্রভুর নাম স্মরণ করতে থাকো এবং সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাঁরই জন্য হয়ে যাও 

﴿رَّبُّ ٱلْمَشْرِقِ وَٱلْمَغْرِبِ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ فَٱتَّخِذْهُ وَكِيلًۭا﴾

তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের মালিক তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই তাই তাঁকেই নিজের উকীল হিসেবে গ্রহণ করো১০ 

﴿وَٱصْبِرْ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَٱهْجُرْهُمْ هَجْرًۭا جَمِيلًۭا﴾

১০ আর লোকেরা যা বলে বেড়াচ্ছে সে বিষয়ে ধৈর্যধারণ করো এবং ভদ্রভাবে তাদের থেকে আলাদা হয়ে যাও১১

﴿وَذَرْنِى وَٱلْمُكَذِّبِينَ أُو۟لِى ٱلنَّعْمَةِ وَمَهِّلْهُمْ قَلِيلًا﴾

১১ এসব মিথ্যা আরোপকারী, সম্পদশালী লোকদের সাথে বুঝাপড়ার ব্যাপারটা তুমি আমার ওপর ছেড়ে দাও১২ আর কিছু কালের জন্য এদেরকে এ অবস্থায়ই থাকতে দাও 

﴿إِنَّ لَدَيْنَآ أَنكَالًۭا وَجَحِيمًۭا﴾

১২ আমার কাছে (এদের জন্য) আছে শক্ত বেড়ি,১৩ জ্বলন্ত আগুন,

﴿وَطَعَامًۭا ذَا غُصَّةٍۢ وَعَذَابًا أَلِيمًۭا﴾

১৩ গলায় আটকে যাওয়া খাবার এবং যন্ত্রণাদায়ক আযাব 

﴿يَوْمَ تَرْجُفُ ٱلْأَرْضُ وَٱلْجِبَالُ وَكَانَتِ ٱلْجِبَالُ كَثِيبًۭا مَّهِيلًا﴾

১৪ এসব হবে সেদিন যেদিন পৃথিবী ও পর্বতমালা কেঁপে উঠবে এবং পাহাড় গুলোর অবস্থা হবে এমন যেন বালুর স্তূপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে১৪

﴿إِنَّآ أَرْسَلْنَآ إِلَيْكُمْ رَسُولًۭا شَـٰهِدًا عَلَيْكُمْ كَمَآ أَرْسَلْنَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ رَسُولًۭا﴾

১৫ আমি তোমাদের১৫ নিকট একজন রাসূল পাঠিয়েছি তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরূপ১৬ যেমন ফেরাউনের নিকট একজন রাসূল পাঠিয়ে ছিলাম

﴿فَعَصَىٰ فِرْعَوْنُ ٱلرَّسُولَ فَأَخَذْنَـٰهُ أَخْذًۭا وَبِيلًۭا﴾

১৬ দেখো, ফেরাউন যখন সে রাসূলের কথা মানলো না তখন আমি তাকে কঠোরভাবে পাকড়াও করলাম 

﴿فَكَيْفَ تَتَّقُونَ إِن كَفَرْتُمْ يَوْمًۭا يَجْعَلُ ٱلْوِلْدَٰنَ شِيبًا﴾

১৭ তোমরা যদি মানতে অস্বীকার করো তাহলে সেদিন কিভাবে রক্ষা পাবে যেদিনটি শিশুকে বৃদ্ধ বানিয়ে দেবে?১৭

﴿ٱلسَّمَآءُ مُنفَطِرٌۢ بِهِۦ ۚ كَانَ وَعْدُهُۥ مَفْعُولًا﴾

১৮ যেদিনের কঠোরতায় আকাশ মণ্ডল বিদীর্ণ হয়ে যেতে থাকবে? আল্লাহর প্রতিশ্রুতি তো পূর্ণ হবেই

﴿إِنَّ هَـٰذِهِۦ تَذْكِرَةٌۭ ۖ فَمَن شَآءَ ٱتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ سَبِيلًا﴾

১৯ এ একটি উপদেশ বাণী অতএব যে চায় সে তার প্রভুর পথ অবলম্বন করুক

﴿إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُومُ أَدْنَىٰ مِن ثُلُثَىِ ٱلَّيْلِ وَنِصْفَهُۥ وَثُلُثَهُۥ وَطَآئِفَةٌۭ مِّنَ ٱلَّذِينَ مَعَكَ ۚ وَٱللَّهُ يُقَدِّرُ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ ۚ عَلِمَ أَن لَّن تُحْصُوهُ فَتَابَ عَلَيْكُمْ ۖ فَٱقْرَءُوا۟ مَا تَيَسَّرَ مِنَ ٱلْقُرْءَانِ ۚ عَلِمَ أَن سَيَكُونُ مِنكُم مَّرْضَىٰ ۙ وَءَاخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِى ٱلْأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِن فَضْلِ ٱللَّهِ ۙ وَءَاخَرُونَ يُقَـٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ۖ فَٱقْرَءُوا۟ مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ ۚ وَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَقْرِضُوا۟ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًۭا ۚ وَمَا تُقَدِّمُوا۟ لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍۢ تَجِدُوهُ عِندَ ٱللَّهِ هُوَ خَيْرًۭا وَأَعْظَمَ أَجْرًۭا ۚ وَٱسْتَغْفِرُوا۟ ٱللَّهَ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۢ﴾

২০ হে নবী,১৮ তোমার রব জানেন যে, তুমি কোন সময় রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কোন সময় অর্ধাংশ এবং কোন সময় এক তৃতীয়াংশ সময় ইবাদতে দাঁড়িয়ে কাটিয়ে দাও১৯ তোমার সঙ্গী একদল লোকও এ কাজ করে২০ রাত এবং দিনের সময়ের হিসেব আল্লাহই রাখেন তিনি জানেন, তোমরা সময়ের সঠিক হিসেব রাখতে পারো না তাই তিনি তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এখন থেকে কুরআন শরীফের যতটুকু স্বাচ্ছন্দে পড়তে পারবে ততটুকুই পড়বে২১ তিনি জানেন, তোমাদের মধ্যকার কিছু লোক হবে অসুস্থ, কিছু লোক আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে ভ্রমণরত,২২ এবং কিছু লোক আল্লাহর পথে লড়াই করে২৩ তাই কুরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায় ততটাই পড়তে থাকো নামায কায়েম করো, যাকাত দাও২৪ এবং আল্লাহকে “কর্জে হাসানা” দিতে থাকো২৫ তোমরা নিজের জন্য যে পরিমাণ কল্যাণ অগ্রিম পাঠিয়ে দেবে তা আল্লাহর কাছে প্রস্তুত পাবে সেটিই অধিক উত্তম এবং পুরস্কার হিসেবে অনেক বড়২৬ আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও নিশ্চয় আল্লাহ‌ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু

--- সমাপ্ত ---

কোন মন্তব্য নেই

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।