০৪৭. সূরা মুহাম্মদ
আয়াতঃ ৩৮; রুকুঃ ০৪; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَصَدُّوا۟
عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ أَضَلَّ أَعْمَـٰلَهُمْ﴾
১। যারা
কুফরী করেছে১ এবং আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিয়েছে২ আল্লাহ তাদের সমস্ত কাজ-কর্ম
ব্যর্থ করে দিয়েছেন।৩
﴿وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟
ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَءَامَنُوا۟ بِمَا نُزِّلَ عَلَىٰ مُحَمَّدٍۢ وَهُوَ ٱلْحَقُّ مِن
رَّبِّهِمْ ۙ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ﴾
২। আর যারা
ঈমান এনেছে নেক কাজ করেছে এবং মুহাম্মদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে৪ তা মেনে
নিয়েছে- বস্তুত তা তো তাদের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত অকাট্য সত্য কথা- আল্লাহ
তাদের খারাপ কাজগুলো তাদের থেকে দূর করে দিয়েছেন৫ এবং
তাদের অবস্থা শুধরে দিয়েছেন।৬
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱلَّذِينَ
كَفَرُوا۟ ٱتَّبَعُوا۟ ٱلْبَـٰطِلَ وَأَنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّبَعُوا۟ ٱلْحَقَّ
مِن رَّبِّهِمْ ۚ كَذَٰلِكَ يَضْرِبُ ٱللَّهُ لِلنَّاسِ أَمْثَـٰلَهُمْ﴾
৩। কারণ হলো, যারা কুফরী
করেছে তারা বাতিলের আনুগত্য করেছে এবং ঈমান গ্রহণকারীগণ তাদের রবের পক্ষ থেকে আসা
সত্যের অনুসরণ করেছে। আল্লাহ এভাবে মানুষের সঠিক
মর্যাদা ও অবস্থান বলে দেন।৭
﴿فَإِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ
كَفَرُوا۟ فَضَرْبَ ٱلرِّقَابِ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَثْخَنتُمُوهُمْ فَشُدُّوا۟ ٱلْوَثَاقَ
فَإِمَّا مَنًّۢا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَآءً حَتَّىٰ تَضَعَ ٱلْحَرْبُ أَوْزَارَهَا
ۚ ذَٰلِكَ وَلَوْ يَشَآءُ ٱللَّهُ لَٱنتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَـٰكِن لِّيَبْلُوَا۟ بَعْضَكُم
بِبَعْضٍۢ ۗ وَٱلَّذِينَ قُتِلُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَلَن يُضِلَّ أَعْمَـٰلَهُمْ﴾
৪। অতএব এসব
কাফেরের সাথে যখনই তোমাদের মোকাবিলা হবে তখন প্রথম কাজ হবে তাদেরকে হত্যা করা। এভাবে
তোমরা যখন তাদেরকে আচ্ছাতম পর্যুদস্ত করে ফেলবে তখন বেশ শক্ত করে বাঁধো। এরপর
(তোমাদের ইখতিয়ার আছে) হয় অনুকম্পা দেখাও, নতুবা
মুক্তিপণ গ্রহণ করো যতক্ষণ না যুদ্ধবাজরা অস্ত্র সংবরণ করে।৮ এটা হচ্ছে তোমাদের করণীয় কাজ। আল্লাহ
চাইলে নিজেই তাদের সাথে বুঝাপড়া করতেন। কিন্তু
(তিনি এ পন্থা গ্রহণ করেছেন এ জন্য) যাতে তোমাদেরকে পরস্পরের দ্বারা পরীক্ষা করেন।৯ আর যারা
আল্লাহর পথে নিহত হবে আল্লাহ কখনো তাদের আমলসমূহ ধ্বংস করবেন না।১০
﴿سَيَهْدِيهِمْ وَيُصْلِحُ
بَالَهُمْ﴾
৫। তিনি তাদের
পথপ্রদর্শন করবেন। তাদের অবস্থা শুধরে দিবেন।
﴿وَيُدْخِلُهُمُ ٱلْجَنَّةَ
عَرَّفَهَا لَهُمْ﴾
৬। এবং
তাদেরকে সেই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পরিচয় তিনি তাদেরকে আগেই অবহিত করেছেন।১১
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوٓا۟ إِن تَنصُرُوا۟ ٱللَّهَ يَنصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ﴾
৭। হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, তোমরা
আল্লাহকে সাহায্য করো তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন১২ এবং
তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দিবেন।
﴿وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَتَعْسًۭا
لَّهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَـٰلَهُمْ﴾
৮। যারা কুফরী
করেছে তাদের জন্য রয়েছে শুধু ধ্বংস।১৩ আল্লাহ
তাদের কাজ-কর্ম পণ্ড করে দিয়েছেন।
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا۟
مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَـٰلَهُمْ﴾
৯। কারণ
আল্লাহ যে জিনিস নাযিল করেছেন তারা সে জিনিসকে অপছন্দ করেছে।১৪ অতএব,
আল্লাহ তাদের আমলসমূহ ধ্বংস করে দিয়েছেন।
﴿أَفَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى
ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ دَمَّرَ
ٱللَّهُ عَلَيْهِمْ ۖ وَلِلْكَـٰفِرِينَ أَمْثَـٰلُهَا﴾
১০। তারা কি
পৃথিবীতে ভ্রমণ করে সেসব লোকের পরিণাম দেখে না, যারা তাদের
পূর্বে অতীত হয়েছে? আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। এসব
কাফেরের জন্যও অনুরূপ পরিণাম নির্ধারিত হয়ে আছে।১৫
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ
مَوْلَى ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَأَنَّ ٱلْكَـٰفِرِينَ لَا مَوْلَىٰ لَهُمْ﴾
১১। এর কারণ, আল্লাহ নিজে
ঈমান গ্রহণকারীদের সহযোগী ও সাহায্যকারী। কিন্তু
কাফেরদের সহযোগী ও সাহায্যকারী কেউ নেই।১৬
﴿إِنَّ ٱللَّهَ يُدْخِلُ ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ
ۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ يَتَمَتَّعُونَ وَيَأْكُلُونَ كَمَا تَأْكُلُ ٱلْأَنْعَـٰمُ
وَٱلنَّارُ مَثْوًۭى لَّهُمْ﴾
১২। আল্লাহ
ঈমান গ্রহণকারী ও সৎকর্মশীলদের সে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে
ঝর্ণাধারা বয়ে যায়। আর কাফেররা দুনিয়ার ক’দিনের
জীবনের মজা লুটছে, জন্তু-জানোয়ারের মত পানাহার করছে।১৭ ওদের
চূড়ান্ত ঠিকানা জাহান্নাম।
﴿وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ
هِىَ أَشَدُّ قُوَّةًۭ مِّن قَرْيَتِكَ ٱلَّتِىٓ أَخْرَجَتْكَ أَهْلَكْنَـٰهُمْ فَلَا
نَاصِرَ لَهُمْ﴾
১৩। হে নবী, অতীতের কত
জনপদ তো তোমার সে জনপদ থেকে অধিক শক্তিশালী ছিল, যারা তোমাকে
বের করে দিয়েছিল। আমি তাদের এমনভাবে ধ্বংস
করেছি যে, তাদের কোন রক্ষাকারী ছিল না।১৮
﴿أَفَمَن كَانَ عَلَىٰ بَيِّنَةٍۢ
مِّن رَّبِّهِۦ كَمَن زُيِّنَ لَهُۥ سُوٓءُ عَمَلِهِۦ وَٱتَّبَعُوٓا۟ أَهْوَآءَهُم﴾
১৪। এমনকি কখনো
হয়, যে ব্যক্তি তার রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট
হিদায়াতের ওপর আছে সে ঐ সব লোকের মত হবে যাদের মন্দ কাজকর্মকে সুদৃশ্য বানিয়ে দেয়া
হয়েছে এবং তারা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে গিয়েছে?১৯
﴿مَّثَلُ ٱلْجَنَّةِ ٱلَّتِى
وُعِدَ ٱلْمُتَّقُونَ ۖ فِيهَآ أَنْهَـٰرٌۭ مِّن مَّآءٍ غَيْرِ ءَاسِنٍۢ وَأَنْهَـٰرٌۭ
مِّن لَّبَنٍۢ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُۥ وَأَنْهَـٰرٌۭ مِّنْ خَمْرٍۢ لَّذَّةٍۢ
لِّلشَّـٰرِبِينَ وَأَنْهَـٰرٌۭ مِّنْ عَسَلٍۢ مُّصَفًّۭى ۖ وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ
ٱلثَّمَرَٰتِ وَمَغْفِرَةٌۭ مِّن رَّبِّهِمْ ۖ كَمَنْ هُوَ خَـٰلِدٌۭ فِى ٱلنَّارِ
وَسُقُوا۟ مَآءً حَمِيمًۭا فَقَطَّعَ أَمْعَآءَهُمْ﴾
১৫। মুত্তাকীদের
জন্য যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার অবস্থা এই যে, তার মধ্যে
স্বচ্ছ ও নির্মল পানির নহর বইতে থাকবে।২০ এমন সব
দুধের নহর বইতে থাকবে যার স্বাদে সামান্য কোন পরিবর্তন বা বিকৃতিও আসবে না,২১ শরাবের
এমন নহর বইতে থাকবে পানকারীদের জন্য যা হবে অতীব সুস্বাদু২২ এবং বইতে
থাকবে স্বচ্ছ মধুর নহর।২৩ এছাড়াও
তাদের জন্য সেখানে থাকবে সব রকমেরফল এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে থাকবে ক্ষমা।২৪ (যে
ব্যক্তি এ জান্নাত লাভ করবে সেকি) ঐ ব্যক্তির মত হতে পারে যে চিরদিন জাহান্নামে
থাকবে, যাদের এমন গরম পানি পান করানো হবে যা তাদের নাড়িভূঁড়ি
ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে?
﴿وَمِنْهُم مَّن يَسْتَمِعُ
إِلَيْكَ حَتَّىٰٓ إِذَا خَرَجُوا۟ مِنْ عِندِكَ قَالُوا۟ لِلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْعِلْمَ
مَاذَا قَالَ ءَانِفًا ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ طَبَعَ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ
وَٱتَّبَعُوٓا۟ أَهْوَآءَهُمْ﴾
১৬। তাদের
মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা মনযোগ দিয়ে তোমার কথা শোনে এবং যখন তোমার কাছ থেকে
চলে যায় তখন যাদেরকে জ্ঞানের নিয়ামত দান করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করে যে, এই মাত্র
তিনি কী বললেন?২৫ এরাই সেসব লোক যাদের
অন্তরে আল্লাহ তাআ’লা মোহর লাগিয়ে দিয়েছেন। তারা
তাদের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে গিয়েছে।২৬
﴿وَٱلَّذِينَ ٱهْتَدَوْا۟
زَادَهُمْ هُدًۭى وَءَاتَىٰهُمْ تَقْوَىٰهُمْ﴾
১৭। আর যারা
হিদায়াত লাভ করেছে আল্লাহ তাদেরকে আরো অধিক হিদায়াত দান করেন।২৭ এবং তাদেরকে তাদের অংশের
তাকওয়া দান করেন।২৮
﴿فَهَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا
ٱلسَّاعَةَ أَن تَأْتِيَهُم بَغْتَةًۭ ۖ فَقَدْ جَآءَ أَشْرَاطُهَا ۚ فَأَنَّىٰ لَهُمْ
إِذَا جَآءَتْهُمْ ذِكْرَىٰهُمْ﴾
১৮। এখন কি এসব
লোক শুধু কিয়ামতের জন্যই অপেক্ষা করছে যে, তা তাদের ওপর
অকস্মাৎ এসে পড়ুক।২৯ তার
আলামত তো এসে গিয়েছে।৩০ যখন
কিয়ামতই এসে যাবে তখন তাদের জন্য উপদেশ গ্রহণের আর কি অবকাশ থাকবে?
﴿فَٱعْلَمْ أَنَّهُۥ لَآ
إِلَـٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ وَٱسْتَغْفِرْ لِذَنۢبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ
ۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَىٰكُمْ﴾
১৯। অতএব, হে নবী! ভাল
করে জেনে নাও, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ইবাদাতের যোগ্য নয়। নিজের
ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং মু’মিন নারী ও পুরুষদের জন্যও।৩১ আল্লাহ
তোমাদের তৎপরতা সম্পর্কে অবহিত এবং তোমাদের ঠিকানা সম্পর্কেও অবহিত।
﴿وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟
لَوْلَا نُزِّلَتْ سُورَةٌۭ ۖ فَإِذَآ أُنزِلَتْ سُورَةٌۭ مُّحْكَمَةٌۭ وَذُكِرَ فِيهَا
ٱلْقِتَالُ ۙ رَأَيْتَ ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌۭ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ نَظَرَ
ٱلْمَغْشِىِّ عَلَيْهِ مِنَ ٱلْمَوْتِ ۖ فَأَوْلَىٰ لَهُمْ﴾
২০। যারা ঈমান
আনায়ন করেছে তারা বলছিলো, এমন কোন সূরা কেন নাযিল করা হয় না
(যাতে যুদ্ধের নির্দেশ থাকবে)? কিন্তু যখন সুস্পষ্ট নির্দেশ
সম্বলিত সূরা নাযিল করা হলো এবং তার মধ্যে যুদ্ধের কথা বলা হলো তখন তোমরা দেখলে,
যাদের মনে রোগ ছিল তারা তোমার প্রতি সে ব্যক্তির মত তাকাচ্ছে যার
ওপর মৃত্যু চেপে বসেছে।৩২ তাদের এ
অবস্থার জন্য আফসোস।
﴿طَاعَةٌۭ وَقَوْلٌۭ مَّعْرُوفٌۭ
ۚ فَإِذَا عَزَمَ ٱلْأَمْرُ فَلَوْ صَدَقُوا۟ ٱللَّهَ لَكَانَ خَيْرًۭا لَّهُمْ﴾
২১। (তাদের
মুখে) আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি এবং ভাল ভাল কথা। কিন্তু
যখন অলংঘনীয় নির্দেশ দেয়া হলো তখন যদি তারা আল্লাহর সাথে কৃত নিজেদের অঙ্গীকারের
ব্যাপারে সত্যবাদী প্রমাণিত হতো তাহলে তা তাদের জন্যই কল্যাণকর হতো।
﴿فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِن تَوَلَّيْتُمْ
أَن تُفْسِدُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوٓا۟ أَرْحَامَكُمْ﴾
২২। এখন
তোমাদের থেকে এছাড়া অন্য কিছুর কি আশা করা যায় যে, তোমরা যদি
ইসলাম থেকে ফিরে যাও৩৩ তাহলে
পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং একে অপরের গলা কাটবে?৩৪
﴿أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ
لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَىٰٓ أَبْصَـٰرَهُمْ﴾
২৩। আল্লাহ তাআ’লা
এসব লোকের ওপর লা’নত করেছেন এবং তাদেরকে অন্ধ ও বধির বানিয়ে দিয়েছেন।
﴿أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلْقُرْءَانَ
أَمْ عَلَىٰ قُلُوبٍ أَقْفَالُهَآ﴾
২৪। তারা কি
কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেনি, নাকি তাদের মনের ওপর তালা
লাগানো আছে?৩৫
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱرْتَدُّوا۟
عَلَىٰٓ أَدْبَـٰرِهِم مِّنۢ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ ٱلْهُدَى ۙ ٱلشَّيْطَـٰنُ
سَوَّلَ لَهُمْ وَأَمْلَىٰ لَهُمْ﴾
২৫। প্রকৃত
ব্যাপার হলো, হিদায়াত সুস্পষ্ট হওয়ার পরও যারা তা থেকে
ফিরে গেল শয়তান তাদের জন্য এরূপ আচরণ সহজ বানিয়ে দিয়েছে এবং মিথ্যা আশাবাদকে দীর্ঘায়িত
করে রেখেছেন।
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا۟
لِلَّذِينَ كَرِهُوا۟ مَا نَزَّلَ ٱللَّهُ سَنُطِيعُكُمْ فِى بَعْضِ ٱلْأَمْرِ ۖ وَٱللَّهُ
يَعْلَمُ إِسْرَارَهُمْ﴾
২৬। এ কারণেই
তারা আল্লাহর নাযিলকৃত দ্বীনকে যারা পছন্দ করে না তাদের বলেছে, কিছু
ব্যাপারে আমরা তোমাদের অনুসরণ করবো।৩৬ আল্লাহ
তাদের এ সলা-পরামর্শ ভাল করেই জানেন।
﴿فَكَيْفَ إِذَا تَوَفَّتْهُمُ
ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَـٰرَهُمْ﴾
২৭। সে সময় কী
অবস্থা হবে যখন ফেরেশতারা তাদের রূহ কবজ করবে এবং তাদের মুখ ও ফিটের ওপর আঘাত করতে
করতে নিয়ে যাবে।৩৭ এসব
হওয়ার কারণ হচ্ছে,
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمُ ٱتَّبَعُوا۟
مَآ أَسْخَطَ ٱللَّهَ وَكَرِهُوا۟ رِضْوَٰنَهُۥ فَأَحْبَطَ أَعْمَـٰلَهُمْ﴾
২৮। তারা এমন
পন্থার অনুসরণ করেছে যা আল্লাহর অসন্তুষ্টি উৎপাদন করে এবং তাঁর সন্তুষ্টির পথ
অনুসরণ করা পছন্দ করেনি। এ কারণে তিনি তাদের সব
কাজ-কর্ম নষ্ট করে দিয়েছেন।৩৮
﴿أَمْ حَسِبَ ٱلَّذِينَ فِى
قُلُوبِهِم مَّرَضٌ أَن لَّن يُخْرِجَ ٱللَّهُ أَضْغَـٰنَهُمْ﴾
২৯। যেসব লোকের
মনে রোগ আছে তারা কি মনে করে নিয়েছে যে, আল্লাহ তাদের মনের ঈর্ষা
ও বিদ্বেষ প্রকাশ করবেন না?
﴿وَلَوْ نَشَآءُ لَأَرَيْنَـٰكَهُمْ
فَلَعَرَفْتَهُم بِسِيمَـٰهُمْ ۚ وَلَتَعْرِفَنَّهُمْ فِى لَحْنِ ٱلْقَوْلِ ۚ وَٱللَّهُ
يَعْلَمُ أَعْمَـٰلَكُمْ﴾
৩০। আমি চাইলে
তাদেরকে চাক্ষুষ দেখিয়ে দিতাম আর তুমি তাদের চেহারা দেখেই চিনতে পারতে। তবে তাদের
বাচনভঙ্গি থেকে তুমি তাদেরকে অবশ্যই চিনে ফেলবে। আল্লাহ
তোমাদের সব আমল ভাল করেই জানেন।
﴿وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّىٰ
نَعْلَمَ ٱلْمُجَـٰهِدِينَ مِنكُمْ وَٱلصَّـٰبِرِينَ وَنَبْلُوَا۟ أَخْبَارَكُمْ﴾
৩১। আমি
তোমাদের কে অবশ্যই পরীক্ষা করবো যাতে আমি তোমাদের অবস্থা যাচাই করে দেখে নিতে পারি
তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী এবং কে ধৈর্যশীল।
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟
وَصَدُّوا۟ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَشَآقُّوا۟ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ
لَهُمُ ٱلْهُدَىٰ لَن يَضُرُّوا۟ ٱللَّهَ شَيْـًۭٔا وَسَيُحْبِطُ أَعْمَـٰلَهُمْ﴾
৩২। যারা কুফরী
করেছে, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে এবং তাদের
সামনে সঠিক পথ স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর রাসূলের সাথে বিরোধ করেছে, প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। বরং
আল্লাহই তাদের সব কৃতকর্ম ধ্বংস করে দিবেন।৩৯
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوٓا۟ أَطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُوا۟ ٱلرَّسُولَ وَلَا تُبْطِلُوٓا۟ أَعْمَـٰلَكُمْ﴾
৩৩। হে মু’মিনগণ!
তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রাসূলের আনুগত্য করো এবং
নিজেদের আমল ধ্বংস করো না।৪০
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟
وَصَدُّوا۟ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ ثُمَّ مَاتُوا۟ وَهُمْ كُفَّارٌۭ فَلَن يَغْفِرَ ٱللَّهُ
لَهُمْ﴾
৩৪। কুফর
অবলম্বনকারী, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টিকারী এবং কুফরীসহ,
মৃত্যুবরণকারীকে আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।
﴿فَلَا تَهِنُوا۟ وَتَدْعُوٓا۟
إِلَى ٱلسَّلْمِ وَأَنتُمُ ٱلْأَعْلَوْنَ وَٱللَّهُ مَعَكُمْ وَلَن يَتِرَكُمْ أَعْمَـٰلَكُمْ﴾
৩৫। তোমরা
দুর্বল হয়ো না এবং সন্ধির জন্য আহ্বান করো না।৪১ তোমরাই
বিজয়ী থাকবে। আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন। তিনি
তোমাদের আমল কখনো নষ্ট করবেন না।
﴿إِنَّمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا
لَعِبٌۭ وَلَهْوٌۭ ۚ وَإِن تُؤْمِنُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ يُؤْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلَا
يَسْـَٔلْكُمْ أَمْوَٰلَكُمْ﴾
৩৬। দুনিয়ার এ
জীবন তাতো খেল তামাশা মাত্র।৪২ তোমরা যদি ঈমানদার হও এবং
তাকওয়ার পথে চলতে থাক তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদেরকে তোমাদের ন্যায্য প্রতিদান
অবশ্যই দিবেন। আর তিনি তোমাদের সম্পদ চাইবেন না।৪৩
﴿إِن يَسْـَٔلْكُمُوهَا فَيُحْفِكُمْ
تَبْخَلُوا۟ وَيُخْرِجْ أَضْغَـٰنَكُمْ﴾
৩৭। তিনি যদি
কখনো তোমাদের সম্পদ চান এবং সবটাই চান তাহলে তোমরা কৃপণতা করবে এবং তিনি তোমাদের
ঈর্ষা পরায়ণতা প্রকাশ করে দিবেন।৪৪
﴿هَـٰٓأَنتُمْ هَـٰٓؤُلَآءِ
تُدْعَوْنَ لِتُنفِقُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَمِنكُم مَّن يَبْخَلُ ۖ وَمَن يَبْخَلْ
فَإِنَّمَا يَبْخَلُ عَن نَّفْسِهِۦ ۚ وَٱللَّهُ ٱلْغَنِىُّ وَأَنتُمُ ٱلْفُقَرَآءُ
ۚ وَإِن تَتَوَلَّوْا۟ يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُوٓا۟ أَمْثَـٰلَكُم﴾
৩৮। দেখো, তোমাদেরকে
আল্লাহর পথে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে অথচ তোমাদের মধ্যকার কিছু
লোক কৃপণতা করেছে। যারা কৃপণতা করে তারা
প্রকৃতপক্ষে নিজের সাথেই কৃপণতা করছে। আল্লাহ
যারা কৃপণতা করে তারা প্রকৃতপক্ষে নিজের সাথেই কৃপণতা করছে। আল্লাহ
তো অভাব শূন্য। তোমরাই তার মুখাপেক্ষী। তোমরা যদি
মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আল্লাহ তোমাদের স্থানে অন্য কোন জাতিকে নিয়ে আসবেন। তারা
তোমাদের মত হবে না।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।