০৩১. সূরা লুকমান
আয়াতঃ ৩৪; রুকুঃ ০৪; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿الم﴾
১।
আলিফ-লাম-মীম।
﴿تِلْكَ ءَايَـٰتُ
ٱلْكِتَـٰبِ ٱلْحَكِيمِ﴾
২। এগুলো
জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত।১
﴿هُدًۭى وَرَحْمَةًۭ لِّلْمُحْسِنِينَ﴾
৩।
পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের জন্য২
﴿ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ
ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُم بِٱلْـَٔاخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ﴾
৪। যারা
নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাতে বিশ্বাস করে।৩
﴿أُو۟لَـٰٓئِكَ عَلَىٰ هُدًۭى
مِّن رَّبِّهِمْ ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ﴾
৫।এরাই তাদের
রবের পক্ষ থেকে সঠিক পথে রয়েছে এবং এরাই সাফল্য লাভ করবে।৪
﴿وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَشْتَرِى
لَهْوَ ٱلْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍۢ وَيَتَّخِذَهَا
هُزُوًا ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌۭ مُّهِينٌۭ﴾
৬। আর
মানুষদেরই মধ্যে এমনও কেউ আছে,৫ যে
মনোমুগ্ধকর কথা৬ কিনে আনে লোকদেরকে
জ্ঞান ছাড়াই৭ আল্লাহর পথ থেকে
বিচ্যুত করার জন্য এবং এ পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়।৮ এ ধরনের
লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব।৯
﴿وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ
ءَايَـٰتُنَا وَلَّىٰ مُسْتَكْبِرًۭا كَأَن لَّمْ يَسْمَعْهَا كَأَنَّ فِىٓ أُذُنَيْهِ
وَقْرًۭا ۖ فَبَشِّرْهُ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
৭। তাকে যখন
আমার আয়াত শুনানো হয় তখন সে বড়ই দর্পভরে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে তা শুনেইনি, যেন তার কান
কালা। বেশ, সুখবর শুনিয়ে
দাও তাকে একটি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের।
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟
وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَهُمْ جَنَّـٰتُ ٱلنَّعِيمِ﴾
৮। তবে যারা
ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত,১০
﴿خَـٰلِدِينَ فِيهَا ۖ وَعْدَ
ٱللَّهِ حَقًّۭا ۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ﴾
৯। যেখানে
তারা থাকবে চিরকাল। এ হচ্ছে আল্লাহর অকাট্য
প্রতিশ্রুতি এবং তিনি পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়।১১
﴿خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ بِغَيْرِ
عَمَدٍۢ تَرَوْنَهَا ۖ وَأَلْقَىٰ فِى ٱلْأَرْضِ رَوَٰسِىَ أَن تَمِيدَ بِكُمْ وَبَثَّ
فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍۢ ۚ وَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءًۭ فَأَنۢبَتْنَا
فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍۢ كَرِيمٍ﴾
১০। তিনি১২ আকাশসমূহ
সৃষ্টি করেছেন স্তম্ভ ছাড়াই, যা তোমরা দেখতে পাও।১৩ তিনি
পৃথিবীতে পাহাড় গেড়ে দিয়েছেন, যাতে তা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না
পড়ে।১৪ তিনি সব ধরনের
জীব-জন্তু পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমি আকাশ
থেকে পানি বর্ষণ করি এবং জমিতে নানা ধরনের উত্তম জিনিস উৎপন্ন
﴿هَـٰذَا خَلْقُ ٱللَّهِ فَأَرُونِى
مَاذَا خَلَقَ ٱلَّذِينَ مِن دُونِهِۦ ۚ بَلِ ٱلظَّـٰلِمُونَ فِى ضَلَـٰلٍۢ مُّبِينٍۢ﴾
১১। এতো হচ্ছে
আল্লাহর সৃষ্টি, এখন আমাকে একটু দেখাও তো দেখি অন্যেরা কি
সৃষ্টি করেছে?১৫ - আসল কথা হচ্ছে এ
জালেমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে।১৬
﴿وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا لُقْمَـٰنَ
ٱلْحِكْمَةَ أَنِ ٱشْكُرْ لِلَّهِ ۚ وَمَن يَشْكُرْ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِۦ
ۖ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِىٌّ حَمِيدٌۭ﴾
১২। আমি১৭ লুকমানকে
দান করেছিলাম সূক্ষ্মজ্ঞান। যাতে সে
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয়।১৮ যে
ব্যক্তি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে তার কৃতজ্ঞতা হবে তার নিজেরই জন্য লাভজনক। আর যে
ব্যক্তি কুফরী করবে, সে ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ
অমুখাপেক্ষী এবং নিজে নিজেই প্রশংসিত।১৯
﴿وَإِذْ قَالَ لُقْمَـٰنُ
لِٱبْنِهِۦ وَهُوَ يَعِظُهُۥ يَـٰبُنَىَّ لَا تُشْرِكْ بِٱللَّهِ ۖ إِنَّ ٱلشِّرْكَ
لَظُلْمٌ عَظِيمٌۭ﴾
১৩। স্মরণ করো
যখন লুকমান নিজের ছেলেকে উপদেশ দিচ্ছিল, সে বললো, “হে পুত্র! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না।২০ যথার্থই শিরক
অনেক বড় জুলুম।২১
﴿وَوَصَّيْنَا ٱلْإِنسَـٰنَ
بِوَٰلِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُۥ وَهْنًا عَلَىٰ وَهْنٍۢ وَفِصَـٰلُهُۥ فِى عَامَيْنِ
أَنِ ٱشْكُرْ لِى وَلِوَٰلِدَيْكَ إِلَىَّ ٱلْمَصِيرُ﴾
১৪। -আর২২ প্রকৃতপক্ষে
আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার হক চিনে নেবার জন্য নিজেই তাকিদ করেছি। তার মা
দুর্বলতা সহ্য করে তাকে নিজের গর্ভে ধারণ করে এবং দু’বছর লাগে তার দুধ ছাড়তে।২৩ (এ জন্য
আমি তাকে উপদেশ দিয়েছি) আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং নিজের পিতা-মাতার
প্রতিও, আমার দিকেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে।
﴿وَإِن جَـٰهَدَاكَ عَلَىٰٓ
أَن تُشْرِكَ بِى مَا لَيْسَ لَكَ بِهِۦ عِلْمٌۭ فَلَا تُطِعْهُمَا ۖ وَصَاحِبْهُمَا
فِى ٱلدُّنْيَا مَعْرُوفًۭا ۖ وَٱتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَىَّ ۚ ثُمَّ إِلَىَّ
مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
১৫। কিন্তু
যদি তারা তোমার প্রতি আমার সাথে এমন কাউকে শরীক করার জন্য চাপ দেয় যাকে তুমি জানো
না,২৪ তাহলে তুমি তাদের কথা
কখনোই মেনে নিয়ো না। দুনিয়ায় তাদের সাথে সদাচার
করতে থাকো কিন্তু মেনে চলো সে ব্যক্তির পথ যে আমার দিকে ফিরে এসেছে। তারপর
তোমাদের সবাইকে ফিরে আসতে হবে আমারই দিকে।২৫ সে সময়
তোমরা কেমন কাজ করছিলে তা আমি তোমাদের জানিয়ে দেবো।২৬
﴿يَـٰبُنَىَّ إِنَّهَآ إِن
تَكُ مِثْقَالَ حَبَّةٍۢ مِّنْ خَرْدَلٍۢ فَتَكُن فِى صَخْرَةٍ أَوْ فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
أَوْ فِى ٱلْأَرْضِ يَأْتِ بِهَا ٱللَّهُ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَطِيفٌ خَبِيرٌۭ﴾
১৬। (আর
লুকমান২৭ বলেছিল) “হে পুত্র! কোন জিনিস যদি
সরিষার দানা পরিমাণও হয় এবং তা লুকিয়ে থাকে পাথরের মধ্যে, আকাশে
বা পৃথিবীতে কোথাও, তাহলে আল্লাহ তা বের করে নিয়ে আসবেন।২৮ তিনি
সূক্ষ্মদর্শী এবং সবকিছু জানেন।
﴿يَـٰبُنَىَّ أَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ
وَأْمُرْ بِٱلْمَعْرُوفِ وَٱنْهَ عَنِ ٱلْمُنكَرِ وَٱصْبِرْ عَلَىٰ مَآ أَصَابَكَ
ۖ إِنَّ ذَٰلِكَ مِنْ عَزْمِ ٱلْأُمُورِ﴾
১৭। হে পুত্র!
নামায কায়েম করো, সৎকাজের হুকুম দাও, খারাপ
কাজে নিষেধ করো এবং যা কিছু বিপদই আসুক সেজন্য সবর করো।২৯ একথাগুলোর
জন্য বড়ই তাকিদ করা হয়েছে।৩০
﴿وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ
لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِى ٱلْأَرْضِ مَرَحًا ۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍۢ
فَخُورٍۢ﴾
১৮। আর
মানুষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কথা বলো না,৩১ পৃথিবীর
বুকে চলো না উদ্ধত ভঙ্গিতে, আল্লাহ পছন্দ করেন না আত্মম্ভরী
ও অহংকারীকে।৩২
﴿وَٱقْصِدْ فِى مَشْيِكَ وَٱغْضُضْ
مِن صَوْتِكَ ۚ إِنَّ أَنكَرَ ٱلْأَصْوَٰتِ لَصَوْتُ ٱلْحَمِيرِ﴾
১৯। নিজের
চলনে ভারসাম্য আনো৩৩ এবং নিজের আওয়াজ নীচু
করো। সব আওয়াজের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হচ্ছে
গাধার আওয়াজ।৩৪
﴿أَلَمْ تَرَوْا۟ أَنَّ ٱللَّهَ
سَخَّرَ لَكُم مَّا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ وَأَسْبَغَ عَلَيْكُمْ
نِعَمَهُۥ ظَـٰهِرَةًۭ وَبَاطِنَةًۭ ۗ وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يُجَـٰدِلُ فِى ٱللَّهِ
بِغَيْرِ عِلْمٍۢ وَلَا هُدًۭى وَلَا كِتَـٰبٍۢ مُّنِيرٍۢ﴾
২০। তোমরা কি
দেখো না, আল্লাহ যমীন ও আসমানের সমস্ত জিনিস
তোমাদের জন্য অনুগত ও বশীভুত করে রেখেছেন৩৫ এবং
তোমাদের প্রতি তার প্রকাশ্য ও গোপন নিয়ামতসমূহ৩৬ সম্পূর্ণ
করে দিয়েছেন? এরপর অবস্থা হচ্ছে এই যে, মানুষের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে,৩৭ তাদের
নেই কোনো প্রকার জ্ঞান, পথনির্দেশনা বা আলোক প্রদর্শনকারী
কিতাব।৩৮
﴿وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ ٱتَّبِعُوا۟
مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ قَالُوا۟ بَلْ نَتَّبِعُ مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ ءَابَآءَنَآ
ۚ أَوَلَوْ كَانَ ٱلشَّيْطَـٰنُ يَدْعُوهُمْ إِلَىٰ عَذَابِ ٱلسَّعِيرِ﴾
২১। আর যখন
তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার আনুগত্য করো
তখন তারা বলে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে যে রীতির ওপর পেয়েছি
তার আনুগত্য করবো। শয়তান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত
আগুনের দিকেও আহ্বান করতে থাকে তবুও কি তারা তারই আনুগত্য করবে?৩৯
﴿۞ وَمَن يُسْلِمْ وَجْهَهُۥٓ
إِلَى ٱللَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌۭ فَقَدِ ٱسْتَمْسَكَ بِٱلْعُرْوَةِ ٱلْوُثْقَىٰ ۗ وَإِلَى
ٱللَّهِ عَـٰقِبَةُ ٱلْأُمُورِ﴾
২২। যে
ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে৪০ এবং
কার্যত সে সৎকর্মশীল,৪১ সে তো
বাস্তবিকই শক্ত করে আঁকড়ে ধরে একটি নির্ভরযোগ্য আশ্রয়।৪২ আর যাবতীয় বিষয়ের শেষ ফায়সালা
রয়েছে আল্লাহরই হাতে।
﴿وَمَن كَفَرَ فَلَا يَحْزُنكَ
كُفْرُهُۥٓ ۚ إِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ فَنُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوٓا۟ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ
عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ﴾
২৩। এরপর যে
কুফরী করে তার কুফরী যেন তোমাকে বিষণ্ন না করে।৪৩ তাদেরকে
ফিরে তো আসতে হবে আমারই দিকে। তখন আমি
তাদেরকে জানিয়ে দেবো তারা কি সব কাজ করে এসেছে। অবশ্যই
আল্লাহ অন্তরের গোপন কথাও জানেন।
﴿نُمَتِّعُهُمْ قَلِيلًۭا
ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ إِلَىٰ عَذَابٍ غَلِيظٍۢ﴾
২৪। আমি
স্বল্পকাল তাদেরকে দুনিয়ায় ভোগ করার সুযোগ দিচ্ছি, তারপর
তাদেরকে টেনে নিয়ে যাবো একটি কঠিন শাস্তির দিকে।
﴿وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ
خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُ ۚ قُلِ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ
ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ﴾
২৫। যদি তুমি
তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী কে সৃষ্টি
করেছেন, তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে আল্লাহ। বলো, সমস্ত
প্রশংসা আল্লাহরই জন্য।৪৪ কিন্তু
তাদের মধ্য থেকে অধিকাংশ লোক জানে না।৪৫
﴿لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَنِىُّ ٱلْحَمِيدُ﴾
২৬। আকাশসমূহ
ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই।৪৬ নিঃসন্দেহ
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী ও নিজে নিজেই প্রশংসিত।৪৭
﴿وَلَوْ أَنَّمَا فِى ٱلْأَرْضِ
مِن شَجَرَةٍ أَقْلَـٰمٌۭ وَٱلْبَحْرُ يَمُدُّهُۥ مِنۢ بَعْدِهِۦ سَبْعَةُ أَبْحُرٍۢ
مَّا نَفِدَتْ كَلِمَـٰتُ ٱللَّهِ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ﴾
২৭। পৃথিবীতে
যত গাছ আছে তা সবই যদি কলম হয়ে যায় এবং সমুদ্র (দোয়াত হয়ে যায়), তাকে আরো
সাতটি সমুদ্র কালি সরবরাহ করে তবুও আল্লাহর কথা (লেখা) শেষ হবে না।৪৮ অবশ্যই
আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও জ্ঞানী।
﴿مَّا خَلْقُكُمْ وَلَا بَعْثُكُمْ
إِلَّا كَنَفْسٍۢ وَٰحِدَةٍ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌۢ بَصِيرٌ﴾
২৮। তোমাদের
সমগ্র মানবজাতিকে সৃষ্টি করা এবং তারপর পুনর্বার তাদেরকে জীবিত করা (তার জন্য)
নিছক একটিমাত্র প্রাণী (সৃষ্টি করা এবং তাকে পুনরুজ্জীবিত) করার মতই ব্যাপার। আসলে
আল্লাহ সবকিছুই শোনেন ও দেখেন।৪৯
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ
يُولِجُ ٱلَّيْلَ فِى ٱلنَّهَارِ وَيُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِى ٱلَّيْلِ وَسَخَّرَ ٱلشَّمْسَ
وَٱلْقَمَرَ كُلٌّۭ يَجْرِىٓ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى وَأَنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ
خَبِيرٌۭ﴾
২৯। তুমি কি
দেখো না, আল্লাহ রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে
নিয়ে আসেন এবং দিনকে রাতের মধ্যে? তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে
নিয়মের অধীন করে রেখেছেন,৫০ সবই চলছে
একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত।৫১ আর (তুমি
কি জানো না) তোমরা যা কিছুই করো না কেন আল্লাহ তা জানেন।
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ
هُوَ ٱلْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ ٱلْبَـٰطِلُ وَأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ
ٱلْعَلِىُّ ٱلْكَبِيرُ﴾
৩০। এ সবকিছু
এ কারণে যে, আল্লাহই হচ্ছেন সত্য৫২ এবং তাকে
বাদ দিয়ে অন্য যেসব জিনিসকে এরা ডাকে তা সবই মিথ্যা,৫৩ আর (এ
কারণে যে,) আল্লাহই সমুচ্চ ও শ্রেষ্ঠ।৫৪
﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱلْفُلْكَ
تَجْرِى فِى ٱلْبَحْرِ بِنِعْمَتِ ٱللَّهِ لِيُرِيَكُم مِّنْ ءَايَـٰتِهِۦٓ ۚ إِنَّ
فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّكُلِّ صَبَّارٍۢ شَكُورٍۢ﴾
৩১। তুমি কি
দেখো না সমুদ্রে নৌযান চলে আল্লাহর অনুগ্রহে, যাতে তিনি তোমাদের
দেখাতে পারেন তার কিছু নিদর্শন।৫৫ আসলে এর
মধ্যে রয়েছে বহু নিদর্শন প্রত্যেক সবর ও শোকরকারীর জন্য।৫৬
﴿وَإِذَا غَشِيَهُم مَّوْجٌۭ
كَٱلظُّلَلِ دَعَوُا۟ ٱللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّىٰهُمْ إِلَى
ٱلْبَرِّ فَمِنْهُم مُّقْتَصِدٌۭ ۚ وَمَا يَجْحَدُ بِـَٔايَـٰتِنَآ إِلَّا كُلُّ خَتَّارٍۢ
كَفُورٍۢ﴾
৩২। আর যখন
(সমুদ্রে) একটি তরঙ্গ তাদেরকে ছেয়ে ফেলে ছাউনির মতো তখন তারা আল্লাহকে ডাকে
নিজেদের আনুগত্যকে একদম তাঁর জন্য একান্ত করে নিয়ে। তারপর যখন
তিনি তাদেরকে উদ্ধার করে স্থলদেশে পৌঁছিয়ে দেন তখন তাদের কেউ কেউ মাঝপথ বেছে নেয়,৫৭ আর
প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতক ও অকৃতজ্ঞ ছাড়া আর কেউ আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে না।৫৮
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُوا۟
رَبَّكُمْ وَٱخْشَوْا۟ يَوْمًۭا لَّا يَجْزِى وَالِدٌ عَن وَلَدِهِۦ وَلَا مَوْلُودٌ
هُوَ جَازٍ عَن وَالِدِهِۦ شَيْـًٔا ۚ إِنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ حَقٌّۭ ۖ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ
ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِٱللَّهِ ٱلْغَرُورُ﴾
৩৩। হে
মানুষেরা! তোমাদের রবের ক্রোধ থেকে সতর্ক হও এবং সেদিনের ভয় করো যেদিন কোন পিতা
নিজের পুত্রের পক্ষ থেকে প্রতিদান দেবে না এবং কোন পুত্রই নিজের পিতার পক্ষ থেকে
কোন প্রতিদান দেবে না।৫৯ প্রকৃতপক্ষে
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য।৬০ কাজেই এ
দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদের প্রতারিত না করে৬১ এবং
প্রতারক যেন তোমাকে আল্লাহর ব্যাপারে প্রতারিত করতে সক্ষম না হয়।৬২
﴿إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥ عِلْمُ
ٱلسَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ ٱلْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِى ٱلْأَرْحَامِ ۖ وَمَا تَدْرِى
نَفْسٌۭ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًۭا ۖ وَمَا تَدْرِى نَفْسٌۢ بِأَىِّ أَرْضٍۢ تَمُوتُ
ۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌۢ﴾
৩৪। একমাত্র
আল্লাহই সেই সময়ের জ্ঞান রাখেন। তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তিনিই
জানেন মাতৃগর্ভে কি লালিত হচ্ছে। কোন
প্রাণসত্তা জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কোন ব্যক্তির জানা নেই তার
মৃত্যু হবে কোন যমীনে। আল্লাহই সকল জ্ঞানের অধিকারী
এবং তিনি সবকিছু জানেন।৬৩
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।