০৩৩. সূরা আল আহযাব
আয়াতঃ ৭৩; রুকুঃ ০৯; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ
ٱتَّقِ ٱللَّهَ وَلَا تُطِعِ ٱلْكَـٰفِرِينَ وَٱلْمُنَـٰفِقِينَ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ
عَلِيمًا حَكِيمًۭا﴾
১। হে নবী!১ আল্লাহকে
ভয় করো এবং কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না।
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই
﴿وَٱتَّبِعْ مَا يُوحَىٰٓ
إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًۭا﴾
২। তোমার
রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যে বিষয়ের ইঙ্গিত করা হচ্ছে তার অনুসরণ করো। তোমরা যা
কিছু করো আল্লাহ তা সবই জানেন।৩
﴿وَتَوَكَّلْ عَلَى ٱللَّهِ
ۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِيلًۭا﴾
৩। আল্লাহর
প্রতি নির্ভর করো। কর্ম সম্পাদনের জন্য আল্লাহই
যথেষ্ট।৪
﴿مَّا جَعَلَ ٱللَّهُ لِرَجُلٍۢ
مِّن قَلْبَيْنِ فِى جَوْفِهِۦ ۚ وَمَا جَعَلَ أَزْوَٰجَكُمُ ٱلَّـٰٓـِٔى تُظَـٰهِرُونَ
مِنْهُنَّ أُمَّهَـٰتِكُمْ ۚ وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَآءَكُمْ أَبْنَآءَكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ
قَوْلُكُم بِأَفْوَٰهِكُمْ ۖ وَٱللَّهُ يَقُولُ ٱلْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِى ٱلسَّبِيلَ﴾
৪। আল্লাহ
কোন ব্যক্তির দেহাভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় রাখেননি।৫ তোমাদের
যেসব স্ত্রীকে তোমরা ‘যিহার’ করো তাদেরকে আল্লাহ তোমাদের জননীও করেননি৬ এবং
তোমাদের পালক পুত্রদেরকেও তোমাদের প্রকৃত পুত্র করেননি।৭ এসব তো
হচ্ছে এমন ধরনের কথা যা তোমরা স্বমুখে উচ্চারণ করো, কিন্তু
আল্লাহ এমন কথা বলেন যা প্রকৃত সত্য এবং তিনিই সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন।
﴿ٱدْعُوهُمْ لِـَٔابَآئِهِمْ
هُوَ أَقْسَطُ عِندَ ٱللَّهِ ۚ فَإِن لَّمْ تَعْلَمُوٓا۟ ءَابَآءَهُمْ فَإِخْوَٰنُكُمْ
فِى ٱلدِّينِ وَمَوَٰلِيكُمْ ۚ وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌۭ فِيمَآ أَخْطَأْتُم بِهِۦ
وَلَـٰكِن مَّا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًۭا رَّحِيمًا﴾
৫। পালক
পুত্রদেরকে তাদের পিতার সাথে সম্পর্কিত করে ডাকো। এটি
আল্লাহর কাছে বেশী ন্যায়সঙ্গত কথা।৮ আর যদি
তোমরা তাদের পিতৃ পরিচয় না জানো, তাহলে তারা তোমাদের
দ্বীনী ভাই এবং বন্ধু।৯ না জেনে
যে কথা তোমরা বলো সেজন্য তোমাদের পাকড়াও করা হবে না, কিন্তু
তোমরা অন্তরে যে সংকল্প করো সেজন্য অবশ্যই পাকড়াও হবে।১০ আল্লাহ ক্ষমাকারী ও দয়াময়।১১
﴿ٱلنَّبِىُّ أَوْلَىٰ بِٱلْمُؤْمِنِينَ
مِنْ أَنفُسِهِمْ ۖ وَأَزْوَٰجُهُۥٓ أُمَّهَـٰتُهُمْ ۗ وَأُو۟لُوا۟ ٱلْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ
أَوْلَىٰ بِبَعْضٍۢ فِى كِتَـٰبِ ٱللَّهِ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُهَـٰجِرِينَ إِلَّآ
أَن تَفْعَلُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَوْلِيَآئِكُم مَّعْرُوفًۭا ۚ كَانَ ذَٰلِكَ فِى ٱلْكِتَـٰبِ
مَسْطُورًۭا﴾
৬।
নিঃসন্দেহে নবী ঈমানদারদের কাছে তাদের নিজেদের তুলনায় অগ্রাধিকারী,১২ আর
নবীদের স্ত্রীগণ তাদের মা।১৩ কিন্তু
আল্লাহর কিতাবের দৃষ্টিতে সাধারণ মু’মিন ও মুহাজিরদের তুলনায় আত্মীয়রা পরস্পরের
বেশি হকদার। তবে নিজেদের বন্ধু-বান্ধবদের
সাথে কোন সদ্ব্যবহার (করতে চাইলে তা) তোমরা করতে পারো।১৪ আল্লাহর
কিতাবে এ বিধান লেখা আছে।
﴿وَإِذْ أَخَذْنَا مِنَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ
مِيثَـٰقَهُمْ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٍۢ وَإِبْرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَى ٱبْنِ مَرْيَمَ
ۖ وَأَخَذْنَا مِنْهُم مِّيثَـٰقًا غَلِيظًۭا﴾
৭। আর হে নবী!
স্মরণ করো সেই অঙ্গীকারের কথা যা আমি নিয়েছি সকল নবীর কাছ থেকে, তোমার কাছ
থেকে এবং নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও মারইয়াম
পুত্র ঈসার কাছ থেকেও। সবার কাছ থেকে আমি নিয়েছি
পাকাপোক্ত অলংঘনীয় অঙ্গীকার১৫
﴿لِّيَسْـَٔلَ ٱلصَّـٰدِقِينَ
عَن صِدْقِهِمْ ۚ وَأَعَدَّ لِلْكَـٰفِرِينَ عَذَابًا أَلِيمًۭا﴾
৮। যাতে
সত্যবাদীদেরকে (তাদের রব) তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন১৬ এবং
কাফেরদের জন্য তো তিনি যন্ত্রণাদায়ক আযাব প্রস্তুত করেই রেখেছেন।১৭
﴿ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ ٱذْكُرُوا۟ نِعْمَةَ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ جَآءَتْكُمْ جُنُودٌۭ فَأَرْسَلْنَا
عَلَيْهِمْ رِيحًۭا وَجُنُودًۭا لَّمْ تَرَوْهَا ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ
بَصِيرًا﴾
৯। হে
ঈমানদারগণ১৮ স্মরণ করো আল্লাহর অনুগ্রহ, যা (এই মাত্র) তিনি করলেন তোমাদের প্রতি, যখন সেনাদল
তোমাদের ওপর চড়াও হলো আমি পাঠালাম তাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ধুলিঝড় এবং এমন
সেনাবাহিনী রওয়ানা করলাম যা তোমরা দেখোনি।১৯ তোমরা
তখন যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা সব দেখছিলেন।
﴿إِذْ جَآءُوكُم مِّن فَوْقِكُمْ
وَمِنْ أَسْفَلَ مِنكُمْ وَإِذْ زَاغَتِ ٱلْأَبْصَـٰرُ وَبَلَغَتِ ٱلْقُلُوبُ ٱلْحَنَاجِرَ
وَتَظُنُّونَ بِٱللَّهِ ٱلظُّنُونَا۠﴾
১০। যখন তারা
ওপর ও নিচে থেকে তোমাদের ওপর চড়াও হলো,২০ যখন ভয়ে
চোখ বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল, প্রাণ হয়ে পড়েছিল ওষ্ঠাগত এবং
তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা প্রকার ধারণা পোষণ করতে শুরু করেছিলে
﴿هُنَالِكَ ٱبْتُلِىَ ٱلْمُؤْمِنُونَ
وَزُلْزِلُوا۟ زِلْزَالًۭا شَدِيدًۭا﴾
১১। তখন মু’মিনদেরকে
নিদারুণ পরীক্ষা করা হলো এবং ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়া হলো।২১
﴿وَإِذْ يَقُولُ ٱلْمُنَـٰفِقُونَ
وَٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌۭ مَّا وَعَدَنَا ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ إِلَّا
غُرُورًۭا﴾
১২। স্মরণ করো
যখন মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে রোগ ছিল তারা পরিষ্কার বলছিল, আল্লাহ ও
তাঁর রাসূল আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন২২ তা ধোঁকা
ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
﴿وَإِذْ قَالَت طَّآئِفَةٌۭ
مِّنْهُمْ يَـٰٓأَهْلَ يَثْرِبَ لَا مُقَامَ لَكُمْ فَٱرْجِعُوا۟ ۚ وَيَسْتَـْٔذِنُ
فَرِيقٌۭ مِّنْهُمُ ٱلنَّبِىَّ يَقُولُونَ إِنَّ بُيُوتَنَا عَوْرَةٌۭ وَمَا هِىَ بِعَوْرَةٍ
ۖ إِن يُرِيدُونَ إِلَّا فِرَارًۭا﴾
১৩। যখন তাদের
মধ্য থেকে একটি দল বললো, “হে ইয়াসরিববাসীরা! তোমাদের জন্য এখন
অবস্থান করার কোন সুযোগ নেই, ফিরে চলো।”২৩ যখন
তাদের একপক্ষ নবীর কাছে এই বলে ছুটি চাচ্ছিল যে, “আমাদের গৃহ
বিপদাপন্ন,”২৪ অথচ তা বিপদাপন্ন ছিল
না২৫ আসলে তারা (যুদ্ধক্ষেত্র থেকে) পালাতে চাচ্ছিল।
﴿وَلَوْ دُخِلَتْ عَلَيْهِم
مِّنْ أَقْطَارِهَا ثُمَّ سُئِلُوا۟ ٱلْفِتْنَةَ لَـَٔاتَوْهَا وَمَا تَلَبَّثُوا۟
بِهَآ إِلَّا يَسِيرًۭا﴾
১৪। যদি শহরের
বিভিন্ন দিক থেকে শত্রুরা ঢুকে পড়তো এবং সেসময় তাদেরকে ফিতনা সৃষ্টি করার জন্য
আহবান জানানো হতো,২৬ তাহলে তারা তাতেই
লিপ্ত হয়ে যেতো এবং ফিতনায় শরীক হবার ব্যাপারে তারা খুব কমই ইতস্তত করতো।
﴿وَلَقَدْ كَانُوا۟ عَـٰهَدُوا۟
ٱللَّهَ مِن قَبْلُ لَا يُوَلُّونَ ٱلْأَدْبَـٰرَ ۚ وَكَانَ عَهْدُ ٱللَّهِ مَسْـُٔولًۭا﴾
১৫। তারা
ইতিপূর্বে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, তারা
পৃষ্টপ্রদর্শন করবে না এবং আল্লাহর সাথে করা অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা তো
হবেই।২৭
﴿قُل لَّن يَنفَعَكُمُ ٱلْفِرَارُ
إِن فَرَرْتُم مِّنَ ٱلْمَوْتِ أَوِ ٱلْقَتْلِ وَإِذًۭا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِيلًۭا﴾
১৬। হে নবী!
তাদেরকে বলো, যদি তোমরা মৃত্যু বা হত্যা থেকে পলায়ন করো,
তাহলে এ পলায়নে তোমাদের কোন লাভ হবে না। এরপর জীবন
উপভোগ করার সামান্য সুযোগই তোমরা পাবে।২৮
﴿قُلْ مَن ذَا ٱلَّذِى يَعْصِمُكُم
مِّنَ ٱللَّهِ إِنْ أَرَادَ بِكُمْ سُوٓءًا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ رَحْمَةًۭ ۚ وَلَا
يَجِدُونَ لَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَلِيًّۭا وَلَا نَصِيرًۭا﴾
১৭। তাদেরকে
বলো, কে তোমাদের রক্ষা করতে পারে আল্লাহর হাত
থেকে যদি তিনি তোমাদের ক্ষতি করতে চান? আর কে তাঁর রহমতকে
ঠেকিয়ে রাখতে পারে যদি তিনি চান তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করতে? আল্লাহর মোকাবিলায় তো তারা কোন পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী লাভ করতে পারে না।
﴿قَدْ يَعْلَمُ ٱللَّهُ ٱلْمُعَوِّقِينَ
مِنكُمْ وَٱلْقَآئِلِينَ لِإِخْوَٰنِهِمْ هَلُمَّ إِلَيْنَا ۖ وَلَا يَأْتُونَ ٱلْبَأْسَ
إِلَّا قَلِيلًا﴾
১৮। আল্লাহ
তোমাদের মধ্য থেকে তাদেরকে খুব ভালো করেই জানেন যারা (যুদ্ধের কাজে) বাঁধা দেয়, যারা নিজেদের
ভাইদেরকে বলে, “এসো আমাদের দিকে”২৯ যারা
যুদ্ধে অংশ নিলেও নিয়ে থাকে শুধুমাত্র নামকাওয়াস্তে।
﴿أَشِحَّةً عَلَيْكُمْ ۖ فَإِذَا
جَآءَ ٱلْخَوْفُ رَأَيْتَهُمْ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ تَدُورُ أَعْيُنُهُمْ كَٱلَّذِى
يُغْشَىٰ عَلَيْهِ مِنَ ٱلْمَوْتِ ۖ فَإِذَا ذَهَبَ ٱلْخَوْفُ سَلَقُوكُم بِأَلْسِنَةٍ
حِدَادٍ أَشِحَّةً عَلَى ٱلْخَيْرِ ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ لَمْ يُؤْمِنُوا۟ فَأَحْبَطَ ٱللَّهُ
أَعْمَـٰلَهُمْ ۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرًۭا﴾
১৯। যারা
তোমাদের সাথে সহযোগিতা করার ব্যাপারে বড়ই কৃপণ।৩০ বিপদের
সময় এমনভাবে চোখ উলটিয়ে তোমাদের দিকে তাকাতে থাকে যেন কোন মৃত্যুপথযাত্রী মূর্ছিত
হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিপদ চলে গেলে এই লোকেরাই আবার স্বার্থলোভী হয়ে তীক্ষ্ণ ভাষায়
তোমাদেরকে বিদ্ধ করতে থাকে।৩১ তারা
কখনো ঈমান আনেনি, তাই আল্লাহ তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড ধ্বংস
করে দিয়েছেন৩২ এবং এমনটি করা
আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ।৩৩
﴿يَحْسَبُونَ ٱلْأَحْزَابَ
لَمْ يَذْهَبُوا۟ ۖ وَإِن يَأْتِ ٱلْأَحْزَابُ يَوَدُّوا۟ لَوْ أَنَّهُم بَادُونَ فِى
ٱلْأَعْرَابِ يَسْـَٔلُونَ عَنْ أَنۢبَآئِكُمْ ۖ وَلَوْ كَانُوا۟ فِيكُم مَّا قَـٰتَلُوٓا۟
إِلَّا قَلِيلًۭا﴾
২০। তারা মনে
করছে আক্রমণকারী দল এখনো চলে যায়নি। আর যদি
আক্রমণকারীরা আবার এসে যায়, তাহলে তাদের মন চায় এ সময়
তারা কোথাও মরুভূমিতে বেদুইনের মধ্যে গিয়ে বসতো এবং সেখান থেকে তোমাদের খবরাখবর
নিতো। তবুও যদি তারা তোমাদের মধ্যে থাকেও তাহলে
যুদ্ধে খুব কমই অংশ নেবে।
﴿لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى
رَسُولِ ٱللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌۭ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْـَٔاخِرَ
وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا﴾
২১। আসলে
তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে ছিল একটি উত্তম আদর্শ৩৪ এমন
প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ ও শেষ দিনের আকাঙ্ক্ষী এবং বেশী করে আল্লাহকে
স্মরণ করে।৩৫
﴿وَلَمَّا رَءَا ٱلْمُؤْمِنُونَ
ٱلْأَحْزَابَ قَالُوا۟ هَـٰذَا مَا وَعَدَنَا ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَصَدَقَ ٱللَّهُ
وَرَسُولُهُۥ ۚ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّآ إِيمَـٰنًۭا وَتَسْلِيمًۭا﴾
২২। আর সাচ্চা মু’মিনদের
(অবস্থা সে সময় এমন ছিল,)৩৬ যখন
আক্রমণকারী সেনাদলকে দেখলো তারা চিৎকার করে উঠলো, “এতো সেই
জিনিসই যার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আমাদের দিয়েছিলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা পুরোপুরি সত্য ছিল।”৩৭ এ ঘটনা
তাদের ঈমান ও আত্মসমর্পণ আরো বেশী বাড়িয়ে দিল।৩৮
﴿مِّنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌۭ
صَدَقُوا۟ مَا عَـٰهَدُوا۟ ٱللَّهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضَىٰ نَحْبَهُۥ وَمِنْهُم
مَّن يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا۟ تَبْدِيلًۭا﴾
২৩। ঈমানদারদের
মধ্যে এমন লোক আছে যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে দেখালো। তাদের কেউ
নিজের নজরানা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময় আসার প্রতীক্ষায় আছে।৩৯ তারা
তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি।
﴿لِّيَجْزِىَ ٱللَّهُ ٱلصَّـٰدِقِينَ
بِصِدْقِهِمْ وَيُعَذِّبَ ٱلْمُنَـٰفِقِينَ إِن شَآءَ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّ
ٱللَّهَ كَانَ غَفُورًۭا رَّحِيمًۭا﴾
২৪। (এসব কিছু
হলো এজন্য) যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যতার পুরস্কার দেন এবং
মুনাফিকদেরকে চাইলে শাস্তি দেন এবং চাইলে তাদের তাওবা কবুল করে নেন। অবশ্যই
আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
﴿وَرَدَّ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ
كَفَرُوا۟ بِغَيْظِهِمْ لَمْ يَنَالُوا۟ خَيْرًۭا ۚ وَكَفَى ٱللَّهُ ٱلْمُؤْمِنِينَ
ٱلْقِتَالَ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ قَوِيًّا عَزِيزًۭا﴾
২৫। আল্লাহ
কাফেরদের মুখ ফিরিয়ে দিয়েছেন, তারা বিফল হয়ে নিজেদের
অন্তর্জ্বালা সহকারে এমনিই ফিরে গেছে এবং মু’মিনদের পক্ষ থেকে লড়াই করার জন্য
আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ
বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত।
﴿وَأَنزَلَ ٱلَّذِينَ ظَـٰهَرُوهُم
مِّنْ أَهْلِ ٱلْكِتَـٰبِ مِن صَيَاصِيهِمْ وَقَذَفَ فِى قُلُوبِهِمُ ٱلرُّعْبَ فَرِيقًۭا
تَقْتُلُونَ وَتَأْسِرُونَ فَرِيقًۭا﴾
২৬। তারপর আহলি
কিতাবদের মধ্য থেকে যারাই এর আক্রমণকারীদের সাথে সহযোগিতা করেছিল৪০ তাদের
দুর্গ থেকে আল্লাহ তাদেরকে নামিয়ে এনেছেন এবং তাদের অন্তরে তিনি এমন ভীতি সঞ্চার
করেছেন যার ফলে আজ তাদের একটি দলকে তোমরা হত্যা করছো এবং অন্য একটি দলকে করছো
বন্দী।
﴿وَأَوْرَثَكُمْ أَرْضَهُمْ
وَدِيَـٰرَهُمْ وَأَمْوَٰلَهُمْ وَأَرْضًۭا لَّمْ تَطَـُٔوهَا ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ
كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرًۭا﴾
২৭। তিনি
তোমাদেরকে তাদের জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পদের
ওয়ারিস করে দিয়েছেন এবং এমন এলাকা তোমাদের দিয়েছেন যাকে তোমরা কখনো পদানত করোনি। আল্লাহ
সর্বময় ক্ষমতা সম্পন্ন।
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ
قُل لِّأَزْوَٰجِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ
أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًۭا جَمِيلًۭا﴾
২৮। হে নবী!৪১ তোমার
স্ত্রীদেরকে বলো, যদি তোমরা দুনিয়া এবং তার ভূষণ চাও,
তাহলে এসো আমি তোমাদের কিছু দিয়ে ভালোভাবে বিদায় করে দিই।
﴿وَإِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ
ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَٱلدَّارَ ٱلْـَٔاخِرَةَ فَإِنَّ ٱللَّهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنَـٰتِ
مِنكُنَّ أَجْرًا عَظِيمًۭا﴾
২৯। আর যদি
তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও আখেরাতের প্রত্যাশী হও,
তাহলে জেনে রাখো তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল তাদের জন্য আল্লাহ
মহা প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।৪২
﴿يَـٰنِسَآءَ ٱلنَّبِىِّ
مَن يَأْتِ مِنكُنَّ بِفَـٰحِشَةٍۢ مُّبَيِّنَةٍۢ يُضَـٰعَفْ لَهَا ٱلْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ
ۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرًۭا﴾
৩০। হে নবীর
স্ত্রীগণ! তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ কোন সুস্পষ্ট অশ্লীল কাজ করবে তাকে দ্বিগুণ
শাস্তি দেয়া হবে।৪৩ আল্লাহর
জন্য এটা খুবই সহজ কাজ।৪৪
﴿وَمَن يَقْنُتْ مِنكُنَّ
لِلَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتَعْمَلْ صَـٰلِحًۭا نُّؤْتِهَآ أَجْرَهَا مَرَّتَيْنِ وَأَعْتَدْنَا
لَهَا رِزْقًۭا كَرِيمًۭا﴾
৩১। আর তোমাদের
মধ্য থেকে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে এবং সৎকাজ করবে তাকে আমি দু’বার
প্রতিদান দেবো৪৫ এবং আমি তার জন্য
সম্মানজনক রিযিকের ব্যবস্থা করে রেখেছি।
শাস্তিও হবে বেশী কঠিন।
﴿يَـٰنِسَآءَ ٱلنَّبِىِّ
لَسْتُنَّ كَأَحَدٍۢ مِّنَ ٱلنِّسَآءِ ۚ إِنِ ٱتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِٱلْقَوْلِ
فَيَطْمَعَ ٱلَّذِى فِى قَلْبِهِۦ مَرَضٌۭ وَقُلْنَ قَوْلًۭا مَّعْرُوفًۭا﴾
৩২। হে নবীর
স্ত্রীগণ! তোমরা সাধারণ নারীদের মতো নও।৪৬ যদি
তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাকো, তাহলে মিহি স্বরে কথা বলো না,
যাতে মনের গলদে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে, বরং পরিষ্কার সোজা ও স্বাভাবিকভাবে কথা বলো।৪৭
﴿وَقَرْنَ فِى بُيُوتِكُنَّ
وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ ٱلْجَـٰهِلِيَّةِ ٱلْأُولَىٰ ۖ وَأَقِمْنَ ٱلصَّلَوٰةَ
وَءَاتِينَ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِعْنَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ
لِيُذْهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجْسَ أَهْلَ ٱلْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًۭا﴾
৩৩। নিজেদের
গৃহ মধ্যে অবস্থান করো।৪৮ এবং
পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না।৪৯ নামায
কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য
করো। আল্লাহ তো চান,
﴿وَٱذْكُرْنَ مَا يُتْلَىٰ
فِى بُيُوتِكُنَّ مِنْ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ وَٱلْحِكْمَةِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ لَطِيفًا
خَبِيرًا﴾
৩৪। আল্লাহর
আয়াত ও জ্ঞানের যেসব কথা তোমাদের গৃহে শুনানো হয়।৫১ তা মনে
রেখো। অবশ্যই
﴿إِنَّ ٱلْمُسْلِمِينَ وَٱلْمُسْلِمَـٰتِ
وَٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ وَٱلْقَـٰنِتِينَ وَٱلْقَـٰنِتَـٰتِ وَٱلصَّـٰدِقِينَ
وَٱلصَّـٰدِقَـٰتِ وَٱلصَّـٰبِرِينَ وَٱلصَّـٰبِرَٰتِ وَٱلْخَـٰشِعِينَ وَٱلْخَـٰشِعَـٰتِ
وَٱلْمُتَصَدِّقِينَ وَٱلْمُتَصَدِّقَـٰتِ وَٱلصَّـٰٓئِمِينَ وَٱلصَّـٰٓئِمَـٰتِ وَٱلْحَـٰفِظِينَ
فُرُوجَهُمْ وَٱلْحَـٰفِظَـٰتِ وَٱلذَّٰكِرِينَ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا وَٱلذَّٰكِرَٰتِ
أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةًۭ وَأَجْرًا عَظِيمًۭا﴾
৩৫। একথা
সুনিশ্চিত যে,৫৩ যে পুরুষ ও নারী
মুসলিম,৫৪ মু’মিন,৫৫ হুকুমের অনুগত,৫৬ সত্যবাদী,৫৭ সবরকারী,৫৮ আল্লাহর
সামনে বিনত,৫৯ সাদকাদানকারী,৬০ রোযা
পালনকারী,৬১ নিজেদের লজ্জাস্থানের
হেফাজতকারী৬২ এবং আল্লাহকে বেশী
বেশী স্মরণকারী৬৩ আল্লাহ তাদের জন্য
মাগফিরাত এবং
﴿وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍۢ
وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلْخِيَرَةُ
مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَـٰلًۭا مُّبِينًۭا﴾
৩৬। যখন আল্লাহ
ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ের ফায়সালা দিয়ে দেন তখন কোন মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীর৬৫ সেই ব্যাপারে নিজে ফায়সালা
করার কোন অধিকার নেই। আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর
﴿وَإِذْ تَقُولُ لِلَّذِىٓ
أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَٱتَّقِ
ٱللَّهَ وَتُخْفِى فِى نَفْسِكَ مَا ٱللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى ٱلنَّاسَ وَٱللَّهُ
أَحَقُّ أَن تَخْشَىٰهُ ۖ فَلَمَّا قَضَىٰ زَيْدٌۭ مِّنْهَا وَطَرًۭا زَوَّجْنَـٰكَهَا
لِكَىْ لَا يَكُونَ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ حَرَجٌۭ فِىٓ أَزْوَٰجِ أَدْعِيَآئِهِمْ
إِذَا قَضَوْا۟ مِنْهُنَّ وَطَرًۭا ۚ وَكَانَ أَمْرُ ٱللَّهِ مَفْعُولًۭا﴾
৩৭। হে নবী!৬৭ স্মরণ
করো, যখন আল্লাহ এবং তুমি যার প্রতি অনুগ্রহ করেছিলে৬৮ তাকে
তুমি বলছিলে, “তোমার স্ত্রীকে ত্যাগ করো না এবং আল্লাহকে ভয়
করো।”৬৯ সে সময়
তুমি তোমার মনের মধ্যে যে কথা গোপন করছিলে আল্লাহ তা প্রকাশ করতে চাচ্ছিলেন,
তুমি লোকভয় করছিলে, অথচ আল্লাহ এর বেশী হকদার
যে, তুমি তাঁকে ভয় করবে।৭০ তারপর
তখন তার ওপর থেকে যায়েদের সকল প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল৭১ তখন আমি
সেই (তালাকপ্রাপ্তা মহিলার) বিয়ে তোমার সাথে দিয়ে দিলাম,৭২ যাতে মু’মিনদের
জন্য তাদের পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে কোন প্রকার সংকীর্ণতা না থাকে যখন
তাদের ওপর থেকে তাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়।৭৩ আর
আল্লাহর হুকুম তো কার্যকর হয়েই থাকে।
﴿مَّا كَانَ عَلَى ٱلنَّبِىِّ
مِنْ حَرَجٍۢ فِيمَا فَرَضَ ٱللَّهُ لَهُۥ ۖ سُنَّةَ ٱللَّهِ فِى ٱلَّذِينَ خَلَوْا۟
مِن قَبْلُ ۚ وَكَانَ أَمْرُ ٱللَّهِ قَدَرًۭا مَّقْدُورًا﴾
৩৮। নবীর জন্য
এমন কোন কাজে কোন বাঁধা নেই যা আল্লাহ তার জন্য নির্ধারণ করেছেন৭৪ ইতিপূর্বে
যেসব নবী অতীত হয়ে গেছেন তাদের ব্যাপারে এটিই ছিল আল্লাহর নিয়ম, আর আল্লাহর হুকুম হয় একটি চূড়ান্ত স্থিরীকৃত সিদ্ধান্ত।৭৫
﴿ٱلَّذِينَ يُبَلِّغُونَ رِسَـٰلَـٰتِ
ٱللَّهِ وَيَخْشَوْنَهُۥ وَلَا يَخْشَوْنَ أَحَدًا إِلَّا ٱللَّهَ ۗ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ
حَسِيبًۭا﴾
৩৯। (এ হচ্ছে
আল্লাহর নিয়ম তাদের জন্য) যারা আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে থাকে, তাঁকেই ভয়
করে এবং এক আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না আর হিসেব গ্রহণের জন্য কেবলমাত্র
আল্লাহই যথেষ্ট।৭৬
﴿مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ
أَحَدٍۢ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَـٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ ۗ
وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمًۭا﴾
৪০। (হে
লোকেরা!) মুহাম্মাদ তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে কারোর পিতা নয় কিন্তু সে আল্লাহর
রাসূল এবং শেষ নবী আর আল্লাহ সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন।৭৭
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ ٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ ذِكْرًۭا كَثِيرًۭا﴾
৪১। হে
ঈমানদারগণ! আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করো
﴿وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةًۭ وَأَصِيلًا﴾
৪২। এবং সকাল
সাঁঝে তাঁর মহিমা ঘোষণা করতে থাকো।৭৮
﴿هُوَ ٱلَّذِى يُصَلِّى عَلَيْكُمْ
وَمَلَـٰٓئِكَتُهُۥ لِيُخْرِجَكُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ ۚ وَكَانَ بِٱلْمُؤْمِنِينَ
رَحِيمًۭا﴾
৪৩। তিনিই
তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য দোয়া করে, যাতে তিনি
তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের মধ্যে নিয়ে আসেন, তিনি
মু’মিনদের প্রতি বড়ই মেহেরবান।৭৯
﴿تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهُۥ
سَلَـٰمٌۭ ۚ وَأَعَدَّ لَهُمْ أَجْرًۭا كَرِيمًۭا﴾
৪৪। যেদিন তারা
তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে, তাদের অভ্যর্থনা হবে সালামের মাধ্যমে
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ
إِنَّآ أَرْسَلْنَـٰكَ شَـٰهِدًۭا وَمُبَشِّرًۭا وَنَذِيرًۭا﴾
৪৫। এবং তাদের
জন্য আল্লাহ বড়ই সম্মানজনক প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।৮০ হে নবী!৮১ আমি
তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে,৮২
﴿وَدَاعِيًا إِلَى ٱللَّهِ
بِإِذْنِهِۦ وَسِرَاجًۭا مُّنِيرًۭا﴾
৪৬। সুসংবাদদাতা
ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে৮৩ আল্লাহর অনুমতিক্রমে
তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে৮৪ এবং
উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে।
﴿وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
بِأَنَّ لَهُم مِّنَ ٱللَّهِ فَضْلًۭا كَبِيرًۭا﴾
৪৭। সুসংবাদ
দাও তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে (তোমার প্রতি) যে, তাদের জন্য
আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ।
﴿وَلَا تُطِعِ ٱلْكَـٰفِرِينَ
وَٱلْمُنَـٰفِقِينَ وَدَعْ أَذَىٰهُمْ وَتَوَكَّلْ عَلَى ٱللَّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ
وَكِيلًۭا﴾
৪৮। আর কখনো
দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের
পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি। আল্লাহই
যথেষ্ট এজন্য যে, মানুষ তাঁর হাতে তার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ
করে দেবে।
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوٓا۟ إِذَا نَكَحْتُمُ ٱلْمُؤْمِنَـٰتِ ثُمَّ طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ
أَن تَمَسُّوهُنَّ فَمَا لَكُمْ عَلَيْهِنَّ مِنْ عِدَّةٍۢ تَعْتَدُّونَهَا ۖ فَمَتِّعُوهُنَّ
وَسَرِّحُوهُنَّ سَرَاحًۭا جَمِيلًۭا﴾
৪৯। হে
ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করো এবং তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার আগে
তালাক দিয়ে দাও৮৫ তখন তোমাদের পক্ষ
থেকে তাদের জন্য কোনো ইদ্দত অপরিহার্য নয়, যা পুরা হবার দাবী
তোমরা করতে পারো। কাজেই তাদেরকে কিছু অর্থ দাও
এবং ভালোভাবে বিদায়
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ
إِنَّآ أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَٰجَكَ ٱلَّـٰتِىٓ ءَاتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ
يَمِينُكَ مِمَّآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّـٰتِكَ
وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَـٰلَـٰتِكَ ٱلَّـٰتِى هَاجَرْنَ مَعَكَ وَٱمْرَأَةًۭ
مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِىِّ إِنْ أَرَادَ ٱلنَّبِىُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا
خَالِصَةًۭ لَّكَ مِن دُونِ ٱلْمُؤْمِنِينَ ۗ قَدْ عَلِمْنَا مَا فَرَضْنَا عَلَيْهِمْ
فِىٓ أَزْوَٰجِهِمْ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَـٰنُهُمْ لِكَيْلَا يَكُونَ عَلَيْكَ حَرَجٌۭ
ۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًۭا رَّحِيمًۭا﴾
৫০। হে নবী!
আমি তোমার জন্য হালাল করে দিয়েছি তোমার স্ত্রীদেরকে যাদের মহর তুমি আদায় করে
দিয়েছো৮৭ এবং এমন নারীদেরকে যারা আল্লাহ
প্রদত্ত বাঁদীদের মধ্য থেকে তোমার মালিকানাধীন হয়েছে আর তোমার চাচাত, ফুফাত, মামাত, খালাত বোনদেরকে,
যারা তোমার সাথে হিজরত করেছে এবং এমন মু’মিন নারীকে যে নিজেকে নবীর
কাছে নিবেদন করেছে যদি নবী তাকে বিয়ে করতে চায়,৮৮ এ
সুবিধাদান বিশেষ করে তোমার জন্য, অন্য মু’মিনদের জন্য নয়।৮৯ সাধারণ মু’মিনদের
ওপর তাদের স্ত্রী ও বাঁদীদের ব্যাপারে আমি যে সীমারেখা নির্ধারণ করেছি তা আমি জানি,
(তোমাকে এ সীমারেখা থেকে এজন্য আলাদা রেখেছি) যাতে তোমার কোন
অসুবিধা না হয়,৯০ আর আল্লাহ ক্ষমাশীল
﴿تُرْجِى مَن تَشَآءُ مِنْهُنَّ
وَتُـْٔوِىٓ إِلَيْكَ مَن تَشَآءُ ۖ وَمَنِ ٱبْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ
عَلَيْكَ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَن تَقَرَّ أَعْيُنُهُنَّ وَلَا يَحْزَنَّ وَيَرْضَيْنَ
بِمَآ ءَاتَيْتَهُنَّ كُلُّهُنَّ ۚ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِى قُلُوبِكُمْ ۚ وَكَانَ
ٱللَّهُ عَلِيمًا حَلِيمًۭا﴾
৫১। তোমাকে
ইখতিয়ার দেয়া হচ্ছে, তোমার স্ত্রীদের মধ্য থেকে যাকে চাও নিজের
থেকে আলাদা করে রাখো, যাকে চাও নিজের সাথে রাখো এবং যাকে
চাও আলাদা রাখার পরে নিজের কাছে ডেকে নাও। এতে
তোমার কোন ক্ষতি নেই। এভাবে বেশী আশা করা যায় যে, তাদের চোখ
শীতল থাকবে এবং তারা দুঃখিত হবে না আর যা কিছুই তুমি তাদেরকে দেবে তাতে তারা সবাই
সন্তুষ্ট থাকবে।৯১ আল্লাহ
জানেন
﴿لَّا يَحِلُّ لَكَ ٱلنِّسَآءُ
مِنۢ بَعْدُ وَلَآ أَن تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِنْ أَزْوَٰجٍۢ وَلَوْ أَعْجَبَكَ حُسْنُهُنَّ
إِلَّا مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ ۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ رَّقِيبًۭا﴾
৫২। এরপর
তোমার জন্য অন্য নারীরা হালাল নয় এবং এদের জায়গায় অন্য স্ত্রীদের আনবে এ অনুমতিও
নেই, তাদের সৌন্দর্য তোমাকে যতই মুগ্ধ করুক না
কেন,৯৩ তবে বাঁদীদের মধ্য থেকে তোমার অনুমতি
আছে।৯৪ আল্লাহ সবকিছু
দেখাশুনা করছেন।
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ لَا تَدْخُلُوا۟ بُيُوتَ ٱلنَّبِىِّ إِلَّآ أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَىٰ
طَعَامٍ غَيْرَ نَـٰظِرِينَ إِنَىٰهُ وَلَـٰكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَٱدْخُلُوا۟ فَإِذَا
طَعِمْتُمْ فَٱنتَشِرُوا۟ وَلَا مُسْتَـْٔنِسِينَ لِحَدِيثٍ ۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ
يُؤْذِى ٱلنَّبِىَّ فَيَسْتَحْىِۦ مِنكُمْ ۖ وَٱللَّهُ لَا يَسْتَحْىِۦ مِنَ ٱلْحَقِّ
ۚ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَـٰعًۭا فَسْـَٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٍۢ ۚ ذَٰلِكُمْ
أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ ۚ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا۟ رَسُولَ
ٱللَّهِ وَلَآ أَن تَنكِحُوٓا۟ أَزْوَٰجَهُۥ مِنۢ بَعْدِهِۦٓ أَبَدًا ۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ
كَانَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِيمًا﴾
৫৩। হে
ঈমানদারগণ! নবী গৃহে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করো না,৯৫ খাবার
সময়ের অপেক্ষায়ও থেকো না। হ্যাঁ, যদি তোমাদের
খাবার জন্য ডাকা হয়, তাহলে অবশ্যই এসো৯৬ কিন্তু
খাওয়া হয়ে গেলে চলে যাও, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না।৯৭ তোমাদের
এসব আচরণ নবীকে কষ্ট দেয় কিন্তু তিনি লজ্জায় কিছু বলেন না এবং আল্লাহ হককথা বলতে
লজ্জা করেন না। নবীর স্ত্রীদের কাছে যদি
তোমাদের কিছু চাইতে হয় তাহলে পর্দার পেছন থেকে চাও। এটা
তোমাদের এবং তাদের মনের পবিত্রতার জন্য বেশী উপযোগী।৯৮ তোমাদের
জন্য আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া মোটেই জায়েয নয়৯৯ এবং তাঁর
পরে তাঁর স্ত্রীদেরকে বিয়ে করাও জায়েয নয়,১০০ এটা
আল্লাহর দৃষ্টিতে মস্তবড় গোনাহ।
﴿إِن تُبْدُوا۟ شَيْـًٔا أَوْ
تُخْفُوهُ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمًۭا﴾
৫৪। তোমরা
কোন কথা প্রকাশ বা গোপন করো আল্লাহ সবকিছুই জানেন।১০১
﴿لَّا جُنَاحَ عَلَيْهِنَّ
فِىٓ ءَابَآئِهِنَّ وَلَآ أَبْنَآئِهِنَّ وَلَآ إِخْوَٰنِهِنَّ وَلَآ أَبْنَآءِ
إِخْوَٰنِهِنَّ وَلَآ أَبْنَآءِ أَخَوَٰتِهِنَّ وَلَا نِسَآئِهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتْ
أَيْمَـٰنُهُنَّ ۗ وَٱتَّقِينَ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ
شَهِيدًا﴾
৫৫। নবীর
স্ত্রীদের গৃহে তাদের বাপ, ছেলে ভাই-ভাতিজা, ভাগনা১০২ সাধারণ মেলামেশার
মহিলারা১০৩ এবং তাদের মালিকাধীন
দাসদাসীরা১০৪ এলে কোন ক্ষতি নেই। (হে
নারীগণ!) তোমাদের আল্লাহর নাফরমানি থেকে দূরে থাকা উচিত। আল্লাহ
প্রত্যেকটি জিনিসের প্রতি দৃষ্টি রাখেন।১০৫
﴿إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَـٰٓئِكَتَهُۥ
يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِىِّ ۚ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ صَلُّوا۟ عَلَيْهِ
وَسَلِّمُوا۟ تَسْلِيمًا﴾
৫৬। আল্লাহ ও
তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ পাঠান।১০৬ হে
ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠাও।১০৭
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يُؤْذُونَ
ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْـَٔاخِرَةِ وَأَعَدَّ
لَهُمْ عَذَابًۭا مُّهِينًۭا﴾
৫৭। যারা আল্লাহ
ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদেরকে আল্লাহ দুনিয়ায় ও আখেরাতে অভিশপ্ত করেছেন এবং
তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক আযাবের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।১০৮
﴿وَٱلَّذِينَ يُؤْذُونَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ بِغَيْرِ مَا ٱكْتَسَبُوا۟ فَقَدِ ٱحْتَمَلُوا۟ بُهْتَـٰنًۭا وَإِثْمًۭا
مُّبِينًۭا﴾
৫৮। আর যারা মু’মিন
পুরুষ ও মহিলাদেরকে কোন অপরাধ ছাড়াই কষ্ট দেয় তারা একটি বড় অপবাদ১০৯ ও
সুস্পষ্ট গোনাহর বোঝা নিজেদের ঘাড়ে চাপিয়ে নিয়েছে।
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ
قُل لِّأَزْوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن
جَلَـٰبِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ ٱللَّهُ
غَفُورًۭا رَّحِيمًۭا﴾
৫৯। হে নবী!
তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মু’মিনদের নারীদেরকে বলে দাও
তারা যেন তাদের চাদরের প্রান্ত তাদের ওপর টেনে নেয়।১১০ এটি অধিকতর
উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চিনে নেয়া যায় এবং কষ্ট না
দেয়া হয়।১১১ আল্লাহ
ক্ষমাশীল ও করুণাময়।১১২
﴿لَّئِن لَّمْ يَنتَهِ ٱلْمُنَـٰفِقُونَ
وَٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌۭ وَٱلْمُرْجِفُونَ فِى ٱلْمَدِينَةِ لَنُغْرِيَنَّكَ
بِهِمْ ثُمَّ لَا يُجَاوِرُونَكَ فِيهَآ إِلَّا قَلِيلًۭا﴾
৬০। যদি
মুনাফিকরা এবং যাদের মনে গলদ১১৩ আছে তারা
আর যারা মদীনায় উত্তেজনাকর গুজব ছড়ায়,১১৪ তারা
নিজেদের তৎপরতা থেকে বিরত না হয়, তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে
পদক্ষেপ নেবার জন্য তোমাকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দেবো; তারপর
খুব কমই তারা এ নগরীতে তোমার সাথে থাকতে পারবে।
﴿مَّلْعُونِينَ ۖ أَيْنَمَا
ثُقِفُوٓا۟ أُخِذُوا۟ وَقُتِّلُوا۟ تَقْتِيلًۭا﴾
৬১। তাদের ওপর
লানত বর্ষিত হবে চারদিক থেকে, যেখানেই পাওয়া যাবে
তাদেরকে পাকড়াও করা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে।
﴿سُنَّةَ ٱللَّهِ فِى ٱلَّذِينَ
خَلَوْا۟ مِن قَبْلُ ۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ ٱللَّهِ تَبْدِيلًۭا﴾
৬২। এটিই
আল্লাহর সুন্নাত, এ ধরনের লোকদের ব্যাপারে পূর্ব থেকে এটিই
চলে আসছে এবং তুমি আল্লাহর সুন্নাতে কোন পরিবর্তন পাবে না।১১৫
﴿يَسْـَٔلُكَ ٱلنَّاسُ عَنِ
ٱلسَّاعَةِ ۖ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ ٱللَّهِ ۚ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ
تَكُونُ قَرِيبًا﴾
৬৩। লোকেরা
তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, কিয়ামত কবে আসবে?১১৬ বলো,
একমাত্র আল্লাহই এর জ্ঞান রাখেন। তুমি কী
জানো, হয়তো তা নিকটেই এসে গেছে।
﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَعَنَ ٱلْكَـٰفِرِينَ
وَأَعَدَّ لَهُمْ سَعِيرًا﴾
৬৪। মোটকথা এ
বিষয়টি নিশ্চিত যে, আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসপ্ত করেছেন এবং
তাদের জন্য উৎক্ষিপ্ত আগুনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন,
﴿خَـٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًۭا
ۖ لَّا يَجِدُونَ وَلِيًّۭا وَلَا نَصِيرًۭا﴾
৬৫। যার মধ্যে তারা
থাকবে চিরকাল, কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।
﴿يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ
فِى ٱلنَّارِ يَقُولُونَ يَـٰلَيْتَنَآ أَطَعْنَا ٱللَّهَ وَأَطَعْنَا ٱلرَّسُولَا۠﴾
৬৬। যেদিন
তাদের চেহারা আগুনে ওলট পালট করা হবে তখন তারা বলবে “হায়! যদি আমরা আল্লাহ ও তাঁর
রাসূলের আনুগত্য করতাম।”
﴿وَقَالُوا۟ رَبَّنَآ إِنَّآ
أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَآءَنَا فَأَضَلُّونَا ٱلسَّبِيلَا۠﴾
৬৭। আরো বলবে, “হে আমাদের
রব! আমরা আমাদের সরদারদের ও বড়দের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদের সঠিক পথ থেকে
বিচ্যুত করেছে।
﴿رَبَّنَآ ءَاتِهِمْ ضِعْفَيْنِ
مِنَ ٱلْعَذَابِ وَٱلْعَنْهُمْ لَعْنًۭا كَبِيرًۭا﴾
৬৮। হে আমাদের
রব! তাদেরকে দ্বিগুণ আযাব দাও এবং তাদের প্রতি কঠোর লানত বর্ষণ করো।”১১৭
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ لَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِينَ ءَاذَوْا۟ مُوسَىٰ فَبَرَّأَهُ ٱللَّهُ مِمَّا
قَالُوا۟ ۚ وَكَانَ عِندَ ٱللَّهِ وَجِيهًۭا﴾
৬৯। হে
ঈমানদারগণ!১১৮ তাদের মতো হয়ে যেয়ো না যারা মূসাকে
কষ্ট দিয়েছিল, তারপর আল্লাহ তাদের তৈরি করা কথা থেকে তাকে
দায়মুক্ত করেন এবং সে আল্লাহর কাছে ছিল সম্মানিত।১১৯
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ
ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَقُولُوا۟ قَوْلًۭا سَدِيدًۭا﴾
৭০। হে
ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।
﴿يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَـٰلَكُمْ
وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا
عَظِيمًا﴾
৭১। আল্লাহ
তোমাদের কার্যকলাপ ঠিকঠাক করে দেবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ মাফ করে দেবেন। যে
ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে সে বড় সাফল্য অর্জন করে।
﴿إِنَّا عَرَضْنَا ٱلْأَمَانَةَ
عَلَى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَٱلْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَن يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ
مِنْهَا وَحَمَلَهَا ٱلْإِنسَـٰنُ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ ظَلُومًۭا جَهُولًۭا﴾
৭২। আমি এ
আমানতকে আকাশসমূহ, পৃথিবী ও পর্বতরাজির ওপর পেশ করি, তারা একে বহন করতে রাজি হয়নি এবং তা থেকে ভীত হয়ে পড়ে। কিন্তু
মানুষ একে বহন করেছে, নিঃসন্দেহে সে বড় জালেম
﴿لِّيُعَذِّبَ ٱللَّهُ ٱلْمُنَـٰفِقِينَ
وَٱلْمُنَـٰفِقَـٰتِ وَٱلْمُشْرِكِينَ وَٱلْمُشْرِكَـٰتِ وَيَتُوبَ ٱللَّهُ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ
وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ ۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًۭا رَّحِيمًۢا﴾
৭৩। এ আমানতের
বোঝা উঠাবার অনির্বায ফল হচ্ছে এই যে, আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও
নারী এবং মুশরিক পুরুষ ও নারীদেরকে সাজা দেবেন এবং মু’মিন পুরুষ ও নারীদের তাওবা
কবুল করবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।