০৭১. সূরা নূহ
আয়াতঃ ২৮; রুকুঃ ০২; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿إِنَّآ أَرْسَلْنَا نُوحًا
إِلَىٰ قَوْمِهِۦٓ أَنْ أَنذِرْ قَوْمَكَ مِن قَبْلِ أَن يَأْتِيَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ﴾
১। আমি নূহকে তাঁর জাতির কাছে পাঠিয়েছিলাম (এ নির্দেশ
দিয়ে) যে, একটি কষ্টদায়ক আযাব আসার আগেই তুমি তাদেরকে সাবধান করে দাও।১
﴿قَالَ يَـٰقَوْمِ إِنِّى
لَكُمْ نَذِيرٌۭ مُّبِينٌ﴾
২। সে বললো, হে আমার জাতি, আমি
তোমাদের জন্য একজন সতর্ককারী
﴿أَنِ ٱعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ
وَٱتَّقُوهُ وَأَطِيعُونِ﴾
৩। (বার্তাবাহক, আমি তোমাদের জানিয়ে
দিচ্ছি) যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত করো, তাঁকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো,২
﴿يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ
وَيُؤَخِّرْكُمْ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّى ۚ إِنَّ أَجَلَ ٱللَّهِ إِذَا جَآءَ لَا
يُؤَخَّرُ ۖ لَوْ كُنتُمْ تَعْلَمُونَ﴾
৪। আল্লাহ তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন৩ এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের
অবকাশ দেবেন।৪ প্রকৃত ব্যাপার হলো, আল্লাহর নির্ধারিত সময়
যখন এসে যায় তখন তা থেকে বাঁচা যায় না।৫ আহ্! যদি তোমরা তা জানতে।৬
﴿قَالَ رَبِّ إِنِّى دَعَوْتُ
قَوْمِى لَيْلًۭا وَنَهَارًۭا﴾
৫। সে৭ বললোঃ হে আমার বর, আমি আমার কওমের লোকদের
রাত-দিন আহবান করেছি।
﴿فَلَمْ يَزِدْهُمْ دُعَآءِىٓ
إِلَّا فِرَارًۭا﴾
৬। কিন্তু আমার আহবান তাদের দূরে সরে যাওয়াকে কেবল
বাড়িয়েই তুলেছে।৮
﴿وَإِنِّى كُلَّمَا دَعَوْتُهُمْ
لِتَغْفِرَ لَهُمْ جَعَلُوٓا۟ أَصَـٰبِعَهُمْ فِىٓ ءَاذَانِهِمْ وَٱسْتَغْشَوْا۟ ثِيَابَهُمْ
وَأَصَرُّوا۟ وَٱسْتَكْبَرُوا۟ ٱسْتِكْبَارًۭا﴾
৭। তুমি যাতে তাদের ক্ষমা করে দাও৯ এ উদ্দেশ্যে আমি যখনই তাদের আহবান করেছি
তখনই তারা কানে আঙুল দিয়েছে,১০ এবং কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নিয়েছে, নিজেদের আচরণে অনড় থেকেছে
এবং অতিমাত্রায় ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছে।১১
﴿ثُمَّ إِنِّى دَعَوْتُهُمْ
جِهَارًۭا﴾
৮। অতঃপর আমি তাদেরকে উচ্চকণ্ঠে আহবান জানিয়েছি।
﴿ثُمَّ إِنِّىٓ أَعْلَنتُ
لَهُمْ وَأَسْرَرْتُ لَهُمْ إِسْرَارًۭا﴾
৯। তারপর প্রকাশ্যে তাদের কাছে তাবলীগ করেছি এবং গোপনে
চুপে চুপে বুঝিয়েছি।
﴿فَقُلْتُ ٱسْتَغْفِرُوا۟
رَبَّكُمْ إِنَّهُۥ كَانَ غَفَّارًۭا﴾
১০। আমি বলেছি তোমরা নিজেদের প্রতিপালকের কাছে
ক্ষমা চাও। নিঃসন্দেহে তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।
﴿يُرْسِلِ ٱلسَّمَآءَ عَلَيْكُم
مِّدْرَارًۭا﴾
১১। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর
বৃষ্টি বর্ষাবেন।
﴿وَيُمْدِدْكُم بِأَمْوَٰلٍۢ
وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّـٰتٍۢ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَـٰرًۭا﴾
১২। সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন, তোমাদের জন্য বাগান
সৃষ্টি করবেন আর নদী-নালা প্রবাহিত করে দিবেন।১২
﴿مَّا لَكُمْ لَا تَرْجُونَ
لِلَّهِ وَقَارًۭا﴾
১৩। তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর মাহাত্ম্য,
শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা আছে বলে মনে করছো না।১৩
﴿وَقَدْ خَلَقَكُمْ أَطْوَارًا﴾
১৪। অথচ তিনিই তোমাদের পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি
করেছেন।১৪
﴿أَلَمْ تَرَوْا۟ كَيْفَ خَلَقَ
ٱللَّهُ سَبْعَ سَمَـٰوَٰتٍۢ طِبَاقًۭا﴾
১৫। তোমরা কি দেখো না, আল্লাহ কিভাবে সাত স্তরে
বিন্যস্ত করে আসমান সৃষ্টি করেছেন?
﴿وَجَعَلَ ٱلْقَمَرَ فِيهِنَّ
نُورًۭا وَجَعَلَ ٱلشَّمْسَ سِرَاجًۭا﴾
১৬। ওগুলোর মধ্যে চাঁদকে আলো এবং সূর্যকে
প্রদীপ হিসেবে স্থাপন করেছেন।
﴿وَٱللَّهُ أَنۢبَتَكُم مِّنَ
ٱلْأَرْضِ نَبَاتًۭا﴾
১৭। আল্লাহ তাআ’লা তোমাদেরকে মাটি থেকে
বিস্ময়কররূপে উৎপন্ন করেছেন।১৫
﴿ثُمَّ يُعِيدُكُمْ فِيهَا
وَيُخْرِجُكُمْ إِخْرَاجًۭا﴾
১৮। আবার এ মাটির মধ্যে তোমাদের ফিরিয়ে নেবেন
এবং অকস্মাৎ এ মাটি থেকেই তোমাদের বের করে আনবেন।
﴿وَٱللَّهُ جَعَلَ لَكُمُ
ٱلْأَرْضَ بِسَاطًۭا﴾
১৯। আল্লাহ ভূপৃষ্ঠকে তোমাদের জন্য বিছানার
মত করে পেতে দিয়েছেন।
﴿لِّتَسْلُكُوا۟ مِنْهَا سُبُلًۭا
فِجَاجًۭا﴾
২০। যেন তোমরা এর প্রশস্ত পথে চলতে পারো
﴿قَالَ نُوحٌۭ رَّبِّ إِنَّهُمْ
عَصَوْنِى وَٱتَّبَعُوا۟ مَن لَّمْ يَزِدْهُ مَالُهُۥ وَوَلَدُهُۥٓ إِلَّا خَسَارًۭا﴾
২১। নূহ বললোঃ হে প্রভু, তারা আমার কথা
প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ঐসব নেতার অনুসরণ করেছে যারা সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পেয়ে
আরো বেশী ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে।
﴿وَمَكَرُوا۟ مَكْرًۭا كُبَّارًۭا﴾
২২। এসব লোক সাংঘাতিক ষড়যন্ত্র-জাল বিস্তার
করে রেখেছে।১৬
﴿وَقَالُوا۟ لَا تَذَرُنَّ
ءَالِهَتَكُمْ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّۭا وَلَا سُوَاعًۭا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًۭا﴾
২৩। তারা বলেছে, তোমরা নিজেদের
দেব-দেবীদের কোন অবস্থায় পরিত্যাগ করো না। আর ওয়াদ, সুওয়াআ’, ইয়াগুস, ইয়াউক এবং নাসরকেও১৭ পরিত্যাগ করো না।
﴿وَقَدْ أَضَلُّوا۟ كَثِيرًۭا
ۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّـٰلِمِينَ إِلَّا ضَلَـٰلًۭا﴾
২৪। অথচ এসব দেব-দেবী বহু লোককে গোমরাহীতে
নিক্ষেপ করেছে। তুমিও এসব জালেমদের জন্য গোমরাহী ছাড়া আর কিছুই
বৃদ্ধি করো না।১৮
﴿مِّمَّا خَطِيٓـَٔـٰتِهِمْ
أُغْرِقُوا۟ فَأُدْخِلُوا۟ نَارًۭا فَلَمْ يَجِدُوا۟ لَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ أَنصَارًۭا﴾
২৫। নিজেদের অপরাধের কারণেই তাদের নিমজ্জিত
করা হয়েছিল তারপর আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।১৯ অতঃপর তারা আল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করার
জন্য কোন সাহায্যকারী পায়নি।২০
﴿وَقَالَ نُوحٌۭ رَّبِّ لَا
تَذَرْ عَلَى ٱلْأَرْضِ مِنَ ٱلْكَـٰفِرِينَ دَيَّارًا﴾
২৬। আর নূহ বললোঃ হে আমার রব, এ কাফেরদের কাউকে পৃথিবীর
বুকে বসবাসের জন্য রেখো না।
﴿إِنَّكَ إِن تَذَرْهُمْ يُضِلُّوا۟
عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوٓا۟ إِلَّا فَاجِرًۭا كَفَّارًۭا﴾
২৭। তুমি যদি এদের ছেড়ে দাও তাহলে এরা তোমার
বান্দাদের বিভ্রান্ত করবে এবং এদের বংশে যারাই জন্মলাভ করবে তারাই হবে দুষ্কৃতকারী
ও কাফের।
﴿رَّبِّ ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ
وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِىَ مُؤْمِنًۭا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ وَلَا تَزِدِ
ٱلظَّـٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارًۢا﴾
২৮। হে আমার রব, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যারা মু’মিন হিসেবে আমার ঘরে
প্রবেশ করেছে তাদেরকে এবং সব মু’মিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করে দাও। জালেমদের জন্য ধ্বংস
ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করো না।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।