০০৫. সূরা আল মায়িদাহ
আয়াতঃ ১২০; রুকুঃ ১৬; মাদানী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ
آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ ۚ أُحِلَّتْ لَكُم بَهِيمَةُ الْأَنْعَامِ إِلَّا مَا
يُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ غَيْرَ مُحِلِّي الصَّيْدِ وَأَنتُمْ حُرُمٌ ۗ إِنَّ اللَّهَ يَحْكُمُ
مَا يُرِيدُ﴾
১। হে ঈমানদারগণ! বন্ধনগুলো পরোপুরি মেনে
চলো।১ তোমাদের জন্য চতুষ্পদ গৃহপালিত পশু জাতীয়
সব পশুই হালাল করা হয়েছে২ তবে সামনে যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের জানানো হবে সেগুলো ছাড়া। কিন্তু ইহ্রাম বাধাঁ অবস্থায় শিকার করা নিজেদের জন্য
হালাল করে নিয়ো না।৩ নিসন্দেহে আল্লাহ যা ইচ্ছা আদেশ করেন।৪
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تُحِلُّوا شَعَائِرَ اللَّهِ وَلَا الشَّهْرَ الْحَرَامَ وَلَا الْهَدْيَ وَلَا
الْقَلَائِدَ وَلَا آمِّينَ الْبَيْتَ الْحَرَامَ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّن رَّبِّهِمْ
وَرِضْوَانًا ۚ وَإِذَا حَلَلْتُمْ فَاصْطَادُوا ۚ وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ
أَن صَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ أَن تَعْتَدُوا ۘ وَتَعَاوَنُوا عَلَى
الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا
اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
২। হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর আনুগত্য ও ভক্তির
নিদর্শনগুলোর অমর্যাদা করো না।৫ হারাম মাসগুলোর কোনটিকে হালাল করে নিয়ো না। কুরবানীর পশুগুলোর ওপর হস্তক্ষেপ করো না। যেসব পশুর গলাল আল্লাহর জন্য উৎর্গীত হবার আলামত স্বরূপ
পট্টি বাঁধা থাকে তাদের ওপরও হস্তক্ষেপ করো না।
আর যারা নিজেদের রবের অনুগ্রহ ও তাঁর সন্তুষ্টির সন্ধানে সম্মানিত গৃহের (কাবা)
দিকে যাচ্ছে তাদেরকেও উত্যক্ত করো না।৬ হাঁ, ইহরামের অবস্থা শেষ হয়ে গেলে আবশ্যি তোমরা
শিকার করতে পারো।৭ আর দেখো,
একটি দল তোমাদের জন্য মসজিদুল
হারামের পথ বন্ধ করে দিয়েছে, এ জন্য তোমাদের ক্রোধ যেন তোমাদেরকে
এতখানি উত্তেজিত না করে যে, তাদের বিরুদ্ধে তোমরা অবৈধ বাড়াবাড়ি করতে
শুরু করো।৮ নেকী ও আল্লাহভীতির সমস্ত কাজে সবার সাথে
সহযোগীতা করো এবং গুনাহ ও সীমালংঘনের কাজে কাউকে সহযোগীতা করো না। আল্লাহকে ভয় করো।
তাঁর শাস্তি বড়ই কঠোর।
﴿حُرِّمَتْ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةُ
وَالدَّمُ وَلَحْمُ الْخِنزِيرِ وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ بِهِ وَالْمُنْخَنِقَةُ
وَالْمَوْقُوذَةُ وَالْمُتَرَدِّيَةُ وَالنَّطِيحَةُ وَمَا أَكَلَ السَّبُعُ إِلَّا
مَا ذَكَّيْتُمْ وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِ وَأَن تَسْتَقْسِمُوا بِالْأَزْلَامِ
ۚ ذَٰلِكُمْ فِسْقٌ ۗ الْيَوْمَ يَئِسَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِن دِينِكُمْ فَلَا تَخْشَوْهُمْ
وَاخْشَوْنِ ۚ الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي
وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ۚ فَمَنِ اضْطُرَّ فِي مَخْمَصَةٍ غَيْرَ مُتَجَانِفٍ
لِّإِثْمٍ ۙ فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৩। তোমাদের জন্য হারাম করে দেয়া হয়াছে
মৃতজীব,৯ রক্ত, শূকরের গোশ্ত,
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর নামে
যবেহকৃত জীব১০ এবং কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে,
আহত হয়ে,
ওপর থেকে পড়ে গিয়ে বা ধাক্কা
খেয়ে মরা অথবা কোন হিংস্র প্রাণী চিরে ফেলেছে এমন জীব,
তোমরা জীবিত পেয়ে যাকে যবেহ
করে দিয়েছো সেটি ছাড়া।১১ আর যা কোন বেদীমূলে১২ যবেহ করা হয়েছে (তাও তোমাদের জন্য হারাম
করে দেয়া হয়েছে।)১৩ এ ছাড়াও শর নিক্ষেপের মাধ্যমে নিজেদের
ভাগ্য নির্ণয় করাও তোমাদের জন্য জায়েয নয়।১৪ এগুলো ফাসেকীর কাজ।
আজ তোমাদের দীনের ব্যাপারে কাফেররা পুরোপুরি নিরাশ হয়ে পড়েছে। কাজেই তোমরা তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো।১৫ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে
পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি সম্পূর্ণ করেছি এবং তোমাদের জন্য
ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি (কাজেই তোমাদের ওপর হালাল ও হারামের
যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা মেনে চলো।)১৬ তবে যদি কোন ব্যক্তি ক্ষুধার জ্বালায়
বাধ্য হয়ে ঐগুলোর মধ্য থেকে কোন একটি জিনিস খেয়ে নেয় গুনাহের প্রতি কোন আকর্ষণ
ছাড়াই, তাহলে নিসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।১৭
﴿يَسْأَلُونَكَ مَاذَا أُحِلَّ
لَهُمْ ۖ قُلْ أُحِلَّ لَكُمُ الطَّيِّبَاتُ ۙ وَمَا عَلَّمْتُم مِّنَ الْجَوَارِحِ
مُكَلِّبِينَ تُعَلِّمُونَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَكُمُ اللَّهُ ۖ فَكُلُوا مِمَّا أَمْسَكْنَ
عَلَيْكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ
سَرِيعُ الْحِسَابِ﴾
৪। লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞেস করেছে,
তাদের জন্য কি হালাল করা
হয়েছে?
বলে দাও,
তোমাদের জন্য সমস্ত
পাক-পবিত্র জিনিস হালাল করা হয়েছে।১৮ আর যেসব শিকারী প্রাণীকে তোমরা শিক্ষিত
করে তুলেছো, যাদেরকে আল্লাহর দেয়া জ্ঞানের ভিত্তিতে তোমরা শিকার করা শিখিয়েছো,
তারা তোমাদের জন্য যেসব
প্রাণী ধরে রাখে, তাও তোমরা খেতে পারো।১৯ তবে তার ওপর আল্লাহর নাম নিতে হবে।২০ আর আল্লাহর আইন ভাঙ্গার ব্যাপারে সাবধান!
অবশ্যি হিসেব নিতে আল্লাহর মোটেই দেরী হয় না।
﴿الْيَوْمَ أُحِلَّ لَكُمُ
الطَّيِّبَاتُ ۖ وَطَعَامُ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حِلٌّ لَّكُمْ وَطَعَامُكُمْ
حِلٌّ لَّهُمْ ۖ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِينَ
أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ مُحْصِنِينَ
غَيْرَ مُسَافِحِينَ وَلَا مُتَّخِذِي أَخْدَانٍ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِالْإِيمَانِ فَقَدْ
حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾
৫। আজ তোমাদের জন্য সমস্ত পাক-পবিত্র বস্তু
হালাল দেয়া হয়েছে। আহ্লি কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্য
হালাল২১ এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল। আর সংরক্ষতি মেয়েরা তোমাদের জন্য হালাল,
তারা ঈমানদারদের দল থেকে হোক
বা এমন জাতিদের মধ্য থেকে হোক, যাদেরকে তোমাদের আগে কিতাব দেয়া হয়েছিল।২২ তবে শর্ত হচ্ছে এই যে,
তোমরা তাদের মোহরানা আদায় করে
দিয়ে বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে তাদের রক্ষক হবে।
তোমরা অবাধ যৌনচারে লিপ্ত হতে পারবে না অথবা লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করতেও পারবে না। আর যে ব্যক্তি ঈমানের পথে চলতে অস্বীকার করবে,
তার জীবনের সকল সৎ কার্যক্রম
নষ্ট হয়ে যাবে এবং আখেরাতে সে হবে নিঃস্ব ও দেউলিয়া।২৩
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ
وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ۚ وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا
فَاطَّهَّرُوا ۚ وَإِن كُنتُم مَّرْضَىٰ أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِّنكُم
مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا
صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ ۚ مَا يُرِيدُ اللَّهُ
لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ
عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
৬। হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য
তৈরী হও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত দু’টি কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো,
মাথার ওপর হাত বুলাও এবং পা দু’টি
গোড়ালী পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো।২৪ যদি তোমরা ‘জানাবাত’ অবস্থায় থাকো,
তাহলে গোসল করে পাক সাফ হয়ে
যাও।২৫ যদি তোমরা রোগগ্রস্ত হও বা সফরে থাকো অথবা
তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি মলমূত্র ত্যাগ করে আসে বা তোমরা নারীদেরকে স্পর্শ করে
থাকো এবং পানি না পাও, তাহলে পাক-পবিত্র মাটি দিয়ে কাজ সেরে নাও। তার ওপর হাত রেখে নিজের চেহারা ও হাতের ওপর মসেহ করে নাও।২৬ আল্লাহ তোমাদের জন্য জীবনকে সংকীর্ণ করে
দিতে চান না কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে পাক-পবিত্র করতে এবং তাঁর নিয়ামত তোমাদের
ওপর সম্পূর্ণ করে দিতে,২৭ হয়তো তোমরা শোকর গুজার হবে
﴿وَاذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ
عَلَيْكُمْ وَمِيثَاقَهُ الَّذِي وَاثَقَكُم بِهِ إِذْ قُلْتُمْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا
ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ﴾
৭। আল্লাহ তোমাদের যে নিয়ামত দান করেছেন২৮ তার কথা মনে রাখো এবং তিনি তোমাদের কাছ
থেকে যে পাকাপোক্ত অংগীকার নিয়েছেন তা ভুল যেয়ো না।
অর্থাৎ তোমাদের একথা-আমরা শুনেছি ও আনুগত্য করেছি।
আর আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ মনের কথা জানেন।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
كُونُوا قَوَّامِينَ لِلَّهِ شُهَدَاءَ بِالْقِسْطِ ۖ وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ
قَوْمٍ عَلَىٰ أَلَّا تَعْدِلُوا ۚ اعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَىٰ ۖ وَاتَّقُوا
اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾
৮। হে ঈমানদারগণ! সত্যের ওপর স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত ও ইনসাফের
সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাও।২৯ কোন দলের শত্রুতা তোমাদেরকে যেন এমন উত্তেজিত
না করে দেয় যার ফলে তোমরা ইনসাফ থেকে সরে যাও।
ইনসাফ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠিত করো। এটি আল্লাহভীতির সাথে বেশী
সামঞ্জস্যশীল। আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে থাকো। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত আছেন।
﴿وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ
آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ۙ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ﴾
৯। যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদের সাথে ওয়াদা
করেছেন যে, তাদের ভুল-ত্রুটি মাফ করে দেয়া হবে এবং তারা বিরাট প্রতিদান লাভ করবে
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ
الْجَحِيمِ﴾
১০। যারা কুফরী করবে এবং আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলবে,
তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ
إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُوا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ
ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ﴾
১১। হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর সে অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো,
যা তিনি (এ সাম্প্রতিককালে)
তোমাদের প্রতি করেছেন, যখন একটি দল তোমাদের ক্ষতি করার চক্রান্ত করেছিল কিন্তু
আল্লাহ তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন।৩০ আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে থাকো।
ঈমানদারদের আল্লাহর ওপরই ভরসা করা উচিত।
﴿وَلَقَدْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ
بَنِي إِسْرَائِيلَ وَبَعَثْنَا مِنْهُمُ اثْنَيْ عَشَرَ نَقِيبًا ۖ وَقَالَ اللَّهُ
إِنِّي مَعَكُمْ ۖ لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلَاةَ وَآتَيْتُمُ الزَّكَاةَ وَآمَنتُم
بِرُسُلِي وَعَزَّرْتُمُوهُمْ وَأَقْرَضْتُمُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا لَّأُكَفِّرَنَّ
عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَلَأُدْخِلَنَّكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
ۚ فَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ مِنكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيلِ﴾
১২। আল্লাহ বনী ইসরাঈলদের থেকে পাকাপোক্ত অংগীকার নিয়েছিলেন
এবং তাদের মধ্যে বারোজন ‘নকীব’৩১ নিযুক্ত করেছিলেন।
আর তিনি তাদেরকে বলেছিলেনঃ আমি তোমাদের সাথে আছি।
যদি তোমরা নামায কায়েম করো, যাকাত দাও,
আমার রাসূলদেরকে মানো ও
তাদেরকে সাহায্য করো৩২ এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিতে থাকো,৩৩ তাহলে নিশ্চিত বিশ্বাস করো আমি তোমাদের
থেকে তোমাদের পাপগুলো মোচন করে দেবো৩৪ এবং তোমাদের এমন সব বাগানের মধ্যে প্রবেশ করাবো যার তলদেশ
দিয়ে ঝরণাধারা প্রাবাহিত হবে। কিন্তু এরপর তোমাদের মধ্য থেকে যে
ব্যক্তি কুফরী নীতি অবলম্বন করবে, সে আসলে সাওয়া-উস-সাবীল৩৫ তথা সরল সঠিক পথ হারিয়ে ফেলেছে।
﴿فَبِمَا نَقْضِهِم مِّيثَاقَهُمْ
لَعَنَّاهُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوبَهُمْ قَاسِيَةً ۖ يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِ
ۙ وَنَسُوا حَظًّا مِّمَّا ذُكِّرُوا بِهِ ۚ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلَىٰ خَائِنَةٍ
مِّنْهُمْ إِلَّا قَلِيلًا مِّنْهُمْ ۖ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاصْفَحْ ۚ إِنَّ اللَّهَ
يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ﴾
১৩। তারপর তাদের নিজেদের অংগীকার ভংগের কারণেই আমি তাদেরকে
নিজের রহমত থেকে দূরে নিক্ষেপ করেছি এবং তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি। এখন তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে,
তারা শব্দের হেরফের করে কথাকে
একদিক থেকে আর একদিকে নিয়ে যায়, যে শিক্ষা তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তার বড় অংশ
তারা ভুলে গেছে এবং প্রায় প্রতিদিনই তাদের কোন না কোন বিশ্বাসঘাতকতার খবর তুমি লাভ
করে থাকো, তাদের অতি অল্প সংখ্যক লোকই এ দোষমুক্ত আছে (কাজেই তারা যখন এ পর্যায়ে পৌঁছে
গেছে তখন তাদের যে কোন কুকর্ম মোটেই অপ্রত্যাশিত নয়)।
তাই তাদেরকে মাফ করে দাও এবং তাদের কাজকর্মকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখো। আল্লাহ তাদেরকে পছন্দ করেন যারা সৎকর্মশীলতা ও পরোপকারের
নীতি অবলম্বন করে।
﴿وَمِنَ الَّذِينَ قَالُوا
إِنَّا نَصَارَىٰ أَخَذْنَا مِيثَاقَهُمْ فَنَسُوا حَظًّا مِّمَّا ذُكِّرُوا بِهِ فَأَغْرَيْنَا
بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ۚ وَسَوْفَ يُنَبِّئُهُمُ
اللَّهُ بِمَا كَانُوا يَصْنَعُونَ﴾
১৪। এভাবে যারা বলেছিল আমরা “নাসারা”৩৬ তাদের থেকেও আমি পাকাপোক্ত অংগীকার
নিয়েছিলাম। কিন্তু তাদের স্মৃতিপটে যে শিক্ষা সংবদ্ধ
করে দেয়া হয়েছিল তারও বড় অংশ তারা ভুলে গেছে।
শেষ পর্যন্ত আমি তাদের মধ্যে চিরকালের জন্য শত্রুতা ও পারস্পারিক হিংসা –বিদ্বেষের
বীজ বপন করে দিয়েছি। আর এমন এক সময় অবশ্যি আসবে যখন আল্লাহ
তাদের জানিয়ে দেবেন তারা দুনিয়ায় কি করতো।
﴿يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ
جَاءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِّمَّا كُنتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ
وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ ۚ قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ﴾
১৫। হে আহলি কিতাব! আমার রাসূল তোমাদের কাছে এসে গেছে। সে আল্লাহর কিতাবের এমন অনেক কথা তোমাদের কাছে প্রকাশ করছে
যেগুলো তোমরা গোপন করে রাখতে এবং অনেক ব্যাপারে ক্ষমার চোখেও দেখছে।৩৭ তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এসে গেছে
এক জ্যোতি এবং আমি একখানি সত্য দিশারী কিতাব,
﴿يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ
اتَّبَعَ رِضْوَانَهُ سُبُلَ السَّلَامِ وَيُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ
بِإِذْنِهِ وَيَهْدِيهِمْ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ﴾
১৬। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর সন্তোষকামী লোকদেরকে শান্তি ও
নিরাপত্তার পথপ্রদর্শন করেন এবং৩৮ নিজ ইচ্ছাক্রমে তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের দিকে
নিয়ে আসেন এবং সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন।
﴿لَّقَدْ كَفَرَ الَّذِينَ
قَالُوا إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ ۚ قُلْ فَمَن يَمْلِكُ مِنَ
اللَّهِ شَيْئًا إِنْ أَرَادَ أَن يُهْلِكَ الْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَأُمَّهُ وَمَن
فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ۗ وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا
ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
১৭। যারা বলে, মারইয়াম পুত্র মসীহই আল্লাহ, তারা অবশ্যি কুফরী করেছে।৩৯ হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও,
আল্লাহ যদি মারইয়াম পুত্র
মসীহকে, তার মাকে ও সারা দুনিয়াবাসীকে ধ্বংস করতে চান,
তাহলে তাঁকে তাঁর এ সংকল্প
থেকে বিরত রাখার ক্ষমতা কার আছে?
আল্লাহ তো আকাশসমূহের এবং এ
দু’য়ের মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুর মালিক।
তিনি যা চান সৃষ্টি করেন।৪০ তাঁর শক্তি সবকিছুর ওপর পরিব্যাপ্ত।
﴿وَقَالَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَىٰ
نَحْنُ أَبْنَاءُ اللَّهِ وَأَحِبَّاؤُهُ ۚ قُلْ فَلِمَ يُعَذِّبُكُم بِذُنُوبِكُم
ۖ بَلْ أَنتُم بَشَرٌ مِّمَّنْ خَلَقَ ۚ يَغْفِرُ لِمَن يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَاءُ
ۚ وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖ وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ﴾
১৮। ইহুদী ও খৃস্টানরা বলে,
আমরা আল্লাহর সন্তান এবং তাঁর
প্রিয়পাত্র। তাদেরকে জিজ্ঞেস করো,
তাহলে তোমাদের গোনাহের জন্য
তিনি তোমাদের শাস্তি দেন কেন?
আসলে তোমরাও ঠিক তেমনি মানুষ
যেমন আল্লাহ অন্যান্য মানুষ সৃষ্টি করেছেন।
তিনি যাকে চান মাফ করে দেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন।
পৃথিবী ও আকাশসমূহ এবং এ দুয়ের মধ্যকার যাবতীয় সৃষ্টি আল্লাহর মালিকানাধীন এবং
তাঁরই দিকে সবাইকে যেতে হবে।
﴿يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ
جَاءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ عَلَىٰ فَتْرَةٍ مِّنَ الرُّسُلِ أَن تَقُولُوا
مَا جَاءَنَا مِن بَشِيرٍ وَلَا نَذِيرٍ ۖ فَقَدْ جَاءَكُم بَشِيرٌ وَنَذِيرٌ ۗ وَاللَّهُ
عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
১৯। হে আহ্লি কিতাব! আমার এ রাসূল এমন এক সময় তোমাদের কাছে
এসেছেন এবং তোমাদেরকে দীনের সুস্পষ্ট শিক্ষা দিচ্ছেন যখন দীর্ঘকাল থেকে রাসূলদের
আগমনের সিল্সিলা বন্ধ ছিল, তোমরা যেন একথা বলতে না পারো,
আমাদের কাছে তো সুসংবাদ দানকারী
ও ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। বেশ,
এই দেখো,
এখন সেই সুসংবাদ দানকারী ও
ভীতি প্রদর্শনকারী এসে গেছেন এবং আল্লাহ সবকিছুর ওপর শক্তিশালী।৪১
﴿وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ
يَا قَوْمِ اذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ جَعَلَ فِيكُمْ أَنبِيَاءَ
وَجَعَلَكُم مُّلُوكًا وَآتَاكُم مَّا لَمْ يُؤْتِ أَحَدًا مِّنَ الْعَالَمِينَ﴾
২০। স্মরণ করো যখন মূসা তার জাতিকে বলেছিল,
হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা!
তোমরা আল্লাহর সেই নিয়ামতের কথা মনে করো, যা তিনি তোমাদের দান করেছিলেন। তিনি তোমাদের মধ্যে বহু নবীর জন্ম দিয়েছেন,
তোমাদেরকে শাসকে পরিণত করেছেন
এবং তোমাদেরকে এমন সব জিনিস দিয়েছেন, যা দুনিয়ায় আর কাউকে দেননি।৪২
﴿يَا قَوْمِ ادْخُلُوا الْأَرْضَ
الْمُقَدَّسَةَ الَّتِي كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ وَلَا تَرْتَدُّوا عَلَىٰ أَدْبَارِكُمْ
فَتَنقَلِبُوا خَاسِرِينَ﴾
২১। হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! সেই পবিত্র ভূখণ্ডে প্রবেশ
করো, যা আল্লাহ তোমাদের জন্য লিখে দিয়েছেন।৪৩ পিছনে হটো না। পিছনে হটলে তোমরা ব্যর্থ ও
ক্ষতিগ্রস্ত হবে।৪৪
﴿قَالُوا يَا مُوسَىٰ إِنَّ
فِيهَا قَوْمًا جَبَّارِينَ وَإِنَّا لَن نَّدْخُلَهَا حَتَّىٰ يَخْرُجُوا مِنْهَا
فَإِن يَخْرُجُوا مِنْهَا فَإِنَّا دَاخِلُونَ﴾
২২। তারা জবাব দিল, হে মূসা! সেখানে একটা অতীব দুর্ধর্ষ জাতি
বাস করে। তারা সেখান থেকে বের হয়ে না যাওয়া
পর্যন্ত আমরা কখনই সেখানে যাবো না। হাঁ,
যদি তারা বের হয়ে যায় তাহলে
আমরা সেখানে প্রবেশ করতে প্রস্তুত আছি।
﴿قَالَ رَجُلَانِ مِنَ الَّذِينَ
يَخَافُونَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمَا ادْخُلُوا عَلَيْهِمُ الْبَابَ فَإِذَا دَخَلْتُمُوهُ
فَإِنَّكُمْ غَالِبُونَ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ﴾
২৩। ঐ ভীরু লোকদের মধ্যে দুজন এমন লোকও ছিল৪৫ যাদের প্রতি আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ বর্ষণ
করেছিলেন। তারা বললো,
এ শক্তিশালী লোকদের মোকাবিলা
করে দরজার মধ্যে ঢুকে পড়ো। ভেতরে প্রবেশ করলে তোমরাই জয়ী হবে। আর যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো তাহলে আল্লাহর ওপর নির্ভর করো।
﴿قَالُوا يَا مُوسَىٰ إِنَّا
لَن نَّدْخُلَهَا أَبَدًا مَّا دَامُوا فِيهَا ۖ فَاذْهَبْ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَا
إِنَّا هَاهُنَا قَاعِدُونَ﴾
২৪। কিন্তু তারা আবার সেই একই কথা বললোঃ হে মূসা! যতক্ষণ তারা
সেখানে অবস্থান করবে আমরা ততক্ষণ কোনক্রমেই সেখানে যাবো না। কাজেই তুমি ও তোমার রব,
তোমরা দুজনে সেখানে যাও এবং
লড়াই করো, আমরা তো এখানে বসেই রইলাম।
﴿قَالَ رَبِّ إِنِّي لَا أَمْلِكُ
إِلَّا نَفْسِي وَأَخِي ۖ فَافْرُقْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ﴾
২৫। একথায় মূসা বললো, হে আমার রব! আমার ও আমার ভাই ছাড়া আর
কারোর ওপর আমার কোন ইখতিয়ার নেই। কাজেই তুমি এ নাফরমান লোকদের
থেকে আমাকে আলাদা করে দাও।
﴿قَالَ فَإِنَّهَا مُحَرَّمَةٌ
عَلَيْهِمْ ۛ أَرْبَعِينَ سَنَةً ۛ يَتِيهُونَ فِي الْأَرْضِ ۚ فَلَا تَأْسَ عَلَى
الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ﴾
২৬। আল্লাহ জবাব দিলেনঃ ঠিক আছে,
তাহলে। ঐ দেশটি চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের জন্য হারাম। তারা পৃথিবীতে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াবে,৪৬ এ নাফরমানদের প্রতি কখনো সহানুভূতি ও
সমবেদনা প্রকাশ করো না।৪৭
﴿وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ
ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ
يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَ ۖ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ
مِنَ الْمُتَّقِينَ﴾
২৭। আর তাদেরকে আদমের দু-ছেলের সঠিক কাহিনী ও শুনিয়ে দাও। তারা দুজন কুরবানী করলে তাদের একজনের কুরবানী কবুল করা হলো,
অন্য জনেরটা কবুল করা হলো না। সে বললো, আমি তোমাকে মেরে ফেলবো। সে জবাব দিল, আল্লাহ তো মুত্তাকিদের নজরানা কবুল করে
থাকে।৪৮
﴿لَئِن بَسَطتَ إِلَيَّ يَدَكَ
لِتَقْتُلَنِي مَا أَنَا بِبَاسِطٍ يَدِيَ إِلَيْكَ لِأَقْتُلَكَ ۖ إِنِّي أَخَافُ
اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ﴾
২৮। তুমি আমাকে মেরে ফেলার জন্য হাত উঠালেও আমি তোমাকে মেরে
ফেলার জন্য হাত উঠাবো না।৪৯ আমি বিশ্ব জাহানের প্রভু আল্লাহকে ভয় করি।
﴿إِنِّي أُرِيدُ أَن تَبُوءَ
بِإِثْمِي وَإِثْمِكَ فَتَكُونَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ ۚ وَذَٰلِكَ جَزَاءُ الظَّالِمِينَ﴾
২৯। আমি চাই, আমার ও তোমার পাপের ভার তুমি একাই বহন করো।৫০ এবং তুমি জাহান্নামী হয়ে যাও। জালেমদের জুলুমের এটিই সঠিক প্রতিফল।
﴿فَطَوَّعَتْ لَهُ نَفْسُهُ
قَتْلَ أَخِيهِ فَقَتَلَهُ فَأَصْبَحَ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾
৩০। অবশেষে তার প্রবৃত্তির কুপ্ররোচনা তার ভাইকে মেরে ফেলা তার
জন্য সহজ করে দিল এবং তাকে মেরে ফেলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তরভুক্ত হয়ে গেলো।
﴿فَبَعَثَ اللَّهُ غُرَابًا
يَبْحَثُ فِي الْأَرْضِ لِيُرِيَهُ كَيْفَ يُوَارِي سَوْءَةَ أَخِيهِ ۚ قَالَ يَا وَيْلَتَا
أَعَجَزْتُ أَنْ أَكُونَ مِثْلَ هَٰذَا الْغُرَابِ فَأُوَارِيَ سَوْءَةَ أَخِي ۖ فَأَصْبَحَ
مِنَ النَّادِمِينَ﴾
৩১। তারপর আল্লাহ একটি কাক পাঠালেন। সে মাটি খুঁড়তে লাগলো,
যাতে তাকে দেখিয়ে দেয় তার
ভাইয়ের লাশ কিভাবে লুকিয়ে ফেলবে। এ দৃশ্য দেখে সে বললো,
হায় আফসোস! আমি এ কাকটির মতোও
হতে পারলাম না যাতে নিজের ভাইয়ের লাশটিও লুকাতে পারি।৫১ এরপর নিজের কৃতকর্মের জন্য সে খুবই অনুতপ্ত হলো।৫২
﴿مِنْ أَجْلِ ذَٰلِكَ كَتَبْنَا
عَلَىٰ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ
فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا
أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا ۚ وَلَقَدْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُنَا بِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ
إِنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم بَعْدَ ذَٰلِكَ فِي الْأَرْضِ لَمُسْرِفُونَ﴾
৩২। এ কারণেই বনী ইসরাঈলের জন্য আমি এ ফরমান লিখে দিয়েছিলাম,৫৩ নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা
ছাড়া অন্য কোন কারণে যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলো সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে
হত্যা করলো। আর যে ব্যক্তি কারো জীবন রক্ষা করলো সে
যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করলো।৫৪ কিন্তু তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে,
রাসূলগণ একের পর এক সুস্পষ্ট
হেদায়াত নিয়ে তাদের কাছে এলো, তারপরও তাদের বিপুল সংখ্যক লোক পৃথিবীতে
সীমালংঘনকারীই থেকে গেলো।
﴿إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ
يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوا
أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلَافٍ أَوْ يُنفَوْا
مِنَ الْأَرْضِ ۚ ذَٰلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا ۖ وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ
عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
৩৩। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে লড়াই করে এবং পৃথিবীতে
বিপর্যয় সৃষ্টি করার জন্য প্রচেষ্টা চালায়,৫৫ তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে,
তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা
শূলিবিদ্ধ করা হবে বা তাদের হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা হবে। অথবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে।৫৬ দুনিয়ায় তাদের জন্য এ অপমান ও লাঞ্ছনা
নির্ধারিত রয়েছে আর আখেরাতের রয়েছে তাদের জন্য এর চাইতেও বড় শাস্তি।
﴿إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا
مِن قَبْلِ أَن تَقْدِرُوا عَلَيْهِمْ ۖ فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৩৪। তবে যারা তোমাদের হাতে পড়ার আগেই তাওবা করে তাদের জন্য নয়। তোমাদের জেনে রাখা উচিত,
আল্লাহ ক্ষমাশীল ও
অনুগ্রহকারী।৫৭
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
اتَّقُوا اللَّهَ وَابْتَغُوا إِلَيْهِ الْوَسِيلَةَ وَجَاهِدُوا فِي سَبِيلِهِ لَعَلَّكُمْ
تُفْلِحُونَ﴾
৩৫। হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো,
তাঁর দরবারে নৈকট্যলাভের উপায়
অনুসন্ধান করো৫৮ এবং তাঁর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনা করো,৫৯ সম্ভবত তোমরা সফলকাম হতে পারবে।
﴿إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا
لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُوا بِهِ
مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
৩৬। ভালভাবে জেনে নাও, যারা কুফরীর নীতি অবলম্বন করেছে সারা
দুনিয়ার ধন-দৌলত যদি তাদের অধিকারে থাকে এবং এর সাথে আরো সমপরিমাণও যুক্ত হয়। আর তারা যদি কিয়ামতের দিন শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য সেগুলো
মুক্তিপণ হিসেবে দিতে চায়, তাহলেও তাদের কাছ থেকে তা গৃহীত হবে না। তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করবেই।
﴿يُرِيدُونَ أَن يَخْرُجُوا
مِنَ النَّارِ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنْهَا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ﴾
৩৭। তারা জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে। কিন্তু তা তারা পারবে না।
তাদেরকে স্থায়ী শাস্তি দেয়া হবে।
﴿وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ
فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ
عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
৩৮। চোর-পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন,
উভয়ের হাত কেটে দাও।৬০ এটা তাদের কর্মফল এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে
নির্ধারিত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। আল্লাহর শক্তি সবার ওপর
বিজয়ী এবং তিনি জ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ।
﴿فَمَن تَابَ مِن بَعْدِ ظُلْمِهِ
وَأَصْلَحَ فَإِنَّ اللَّهَ يَتُوبُ عَلَيْهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৩৯। তবে যে ব্যক্তি জুলুম করার পর তাওবা করবে এবং নিজের সংশোধন
করে নেবে, আল্লাহর অনুগ্রহের দৃষ্টি আবার তার দিকে ফিরে আসবে।৬১ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
﴿أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ
لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يُعَذِّبُ مَن يَشَاءُ وَيَغْفِرُ لِمَن يَشَاءُ
ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
৪০। তুমি কি জানো না, আল্লাহ পৃথিবী ও আকাশ রাজ্যের মালিক? তিনি যাকে চান শাস্তি দেন এবং যাকে চান ক্ষমা করে দেন,
তিনি সব জিনিসের ওপর ইখতিয়ার
রাখেন।
﴿يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ
لَا يَحْزُنكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْكُفْرِ مِنَ الَّذِينَ قَالُوا آمَنَّا
بِأَفْوَاهِهِمْ وَلَمْ تُؤْمِن قُلُوبُهُمْ ۛ وَمِنَ الَّذِينَ هَادُوا ۛ سَمَّاعُونَ
لِلْكَذِبِ سَمَّاعُونَ لِقَوْمٍ آخَرِينَ لَمْ يَأْتُوكَ ۖ يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ
مِن بَعْدِ مَوَاضِعِهِ ۖ يَقُولُونَ إِنْ أُوتِيتُمْ هَٰذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمْ
تُؤْتَوْهُ فَاحْذَرُوا ۚ وَمَن يُرِدِ اللَّهُ فِتْنَتَهُ فَلَن تَمْلِكَ لَهُ مِنَ
اللَّهِ شَيْئًا ۚ أُولَٰئِكَ الَّذِينَ لَمْ يُرِدِ اللَّهُ أَن يُطَهِّرَ قُلُوبَهُمْ
ۚ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ ۖ وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
৪১। হে রাসূল! কুফরীর পথে যারা দ্রুত পদচারণার পরাকাষ্ঠ
দেখাচ্ছে তারা যেন তোমার মর্মপীড়ার কারণ না হয়,৬২ যদিও তারা এমন সব লোকের অন্তরভুক্ত হয়
যারা মুখে বলে আমরা ঈমান এনেছি কিন্তু তাদের অন্তর ঈমান আনেনি অথবা তারা এমন সব
লোকের অন্তরভুক্ত হয় যারা ইহুদী হয়ে গেছে, যাদের অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁচ্ছে গেছে যে,
তারা মিথ্যা ভাষণ শোনার জন্য
জান্য পেতে বসে থাকে,৬৩ এবং যারা কখনো তোমার কাছে আসেনি তাদের
জন্য আড়ি পেতে থাকে,৬৪ আল্লাহর কিতাবের শব্দাবলীর সঠিক স্থান নির্ধারিত হওয়া
সত্ত্বেও যারা সেগুলোকে তাদের আসল অর্থ থেকে বিকৃত করে৬৫ এবং লোকদের বলে,
যদি তোমাদের এ হুকুম দেয়া হয়
তাহলে মেনে নাও অন্যথায় মেনো না।৬৬ যাকে আল্লাহ নিজেই ফিতনার মধ্যে নিক্ষেপ
করার সিদ্ধান্ত নেন, তাকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচাবার জন্য তোমরা কিছুই করতে পারবে না।৬৭ এসব লোকের অন্তরকে আল্লাহ পবিত্র করতে
চাননি।৬৮ এদের জন্য দুনিয়াতে আছে লাঞ্ছানা এবং
আখেরাতে কঠিন শাস্তি।
﴿سَمَّاعُونَ لِلْكَذِبِ أَكَّالُونَ
لِلسُّحْتِ ۚ فَإِن جَاءُوكَ فَاحْكُم بَيْنَهُمْ أَوْ أَعْرِضْ عَنْهُمْ ۖ وَإِن تُعْرِضْ
عَنْهُمْ فَلَن يَضُرُّوكَ شَيْئًا ۖ وَإِنْ حَكَمْتَ فَاحْكُم بَيْنَهُم بِالْقِسْطِ
ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ﴾
৪২। এর মিথ্যা শ্রবণকারী ও হারাম আহারকারী।৬৯ কাজেই এরা যদি তোমাদের কাছে (নিজেদের
মামলা নিয়ে) আসে তাহলে তোমরা চাইলে তাদের মীমাংসা করে দিতে অথবা অস্বীকার করে দিতে
পারো। অস্বীকার করে দিলে এর তোমাদের কোন ক্ষতি
করতে পারবে না। আর মীমাংসা করে দিলে যথার্থ ইনসাফ সহকারে
মীমাংসা করো। কারণ আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন।
﴿وَكَيْفَ يُحَكِّمُونَكَ وَعِندَهُمُ
التَّوْرَاةُ فِيهَا حُكْمُ اللَّهِ ثُمَّ يَتَوَلَّوْنَ مِن بَعْدِ ذَٰلِكَ ۚ وَمَا
أُولَٰئِكَ بِالْمُؤْمِنِينَ﴾
৪৩। আর এরা৭০ তোমাকে কিভাবে বিচারক মানছে যখন এদের কাছে তাওরাত রয়ে গেছে,
যাতে আল্লাহর হুকুম লিখিত আছে
আর তারপরও এরা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে?৭১ আসলে এরা ঈমানই রাখে না।
﴿إِنَّا أَنزَلْنَا التَّوْرَاةَ
فِيهَا هُدًى وَنُورٌ ۚ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا لِلَّذِينَ
هَادُوا وَالرَّبَّانِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوا مِن كِتَابِ اللَّهِ
وَكَانُوا عَلَيْهِ شُهَدَاءَ ۚ فَلَا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلَا تَشْتَرُوا
بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلًا ۚ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ
هُمُ الْكَافِرُونَ﴾
৪৪। আমি তাওরাত নাযিল করেছি।
তাতে ছিল পথ নির্দেশ ও আলো। সমস্ত নবী,
যারা মুসলিম ছিল,
সে অনুযায়ী এ ইহুদী হয়ে যাওয়া
লোকদের৭২ যাবতীয় বিষয়ের ফায়সালা করতো। আর এভাবে রব্বানী ও আহবারও৭৩ (এরি ওপর তাদের ফায়সালার ভিত্তি স্থাপন
করতো)। কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের
দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এবং তারা ছিল এর ওপর সাক্ষী।
কাজেই (হে ইহুদী গোষ্ঠী!) তোমরা মানুষকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো এবং সামান্য
তুচ্ছ মূল্যের বিনিময়ে আমার আয়াত বিক্রি করা পরিহার করো। আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী যারা ফায়সালা করে না তারাই
কাফের।
﴿وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا
أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْأَنفَ بِالْأَنفِ وَالْأُذُنَ
بِالْأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ ۚ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِ فَهُوَ
كَفَّارَةٌ لَّهُ ۚ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾
৪৫। তাওরাতে আমি ইহুদীদের জন্য এ বিধান লিখে দিয়েছিলাম যে
প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং সব রকমের যখমের জন্য সমপর্যায়ের বদলা।৭৪ তারপর যে ব্যক্তি ঐ শাস্তি সাদকা করে দেবে
তা তার জন্য কাফ্ফারায় পরিণত হবে।৭৫ আর যারা আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী
ফায়সালা করে না তারাই জালেম।
﴿وَقَفَّيْنَا عَلَىٰ آثَارِهِم
بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ ۖ وَآتَيْنَاهُ
الْإِنجِيلَ فِيهِ هُدًى وَنُورٌ وَمُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ
وَهُدًى وَمَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِينَ﴾
৪৬। তারপর ঐ নবীদের পরে মারইয়ামপুত্র ঈসাকে পাঠিয়েছি। তাওরাতের মধ্য থেকে যা কিছু তার সামনে ছিল সে তার সত্যতা
প্রমাণকারী ছিল। আর তাকে ইনজিল দিয়েছি। তাতে ছিল পথনির্দেশ ও আলো এবং তাও তাওরাতের মধ্যে থেকে যা
কিছু সে সময় বর্তমান ছিল তার সত্যতা প্রমাণকারী ছিল৭৬
﴿وَلْيَحْكُمْ أَهْلُ الْإِنجِيلِ
بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فِيهِ ۚ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ
هُمُ الْفَاسِقُونَ﴾
৪৭। আর তা ছিল আল্লাহভীরুদের জন্য পথনির্দেশ ও উপদেশ। আমার নিদের্শ ছিল, ইনজীলে আল্লাহ যে আইন নাযিল করেছেন ইনজীল অনুসারীরা
যেন সে মোতাবেক ফায়সালা করে। আর যারা আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী
ফায়সালা করে না তারাই ফাসেক।৭৭
﴿وَأَنزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ
بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ
ۖ فَاحْكُم بَيْنَهُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ ۖ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ عَمَّا
جَاءَكَ مِنَ الْحَقِّ ۚ لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا ۚ وَلَوْ
شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَٰكِن لِّيَبْلُوَكُمْ فِي مَا آتَاكُمْ
ۖ فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ ۚ إِلَى اللَّهِ مَرْجِعُكُمْ جَمِيعًا فَيُنَبِّئُكُم
بِمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ﴾
৪৮। তারপর হে মুহাম্মাদ! তোমাদের প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছি,
যা সত্য নিয়ে এসেছে এবং আল
কিতাবের মধ্য থেকে তার সামনে যা কিছু বর্তমান আছে তার সত্যতা প্রমাণকারী৭৮ ও তার সংরক্ষক।৭৯ কাজেই তুমি আল্লাহর নাযিল করা আইনি
অনুযায়ী লোকদের বিভিন্ন বিষয়ের ফায়সালা করো এবং যে সত্য তোমার কাছে এসেছে তা থেকে
মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না।
--তোমাদের৮০ প্রত্যেকের জন্য একটি শরীয়াত ও একটি
কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে রেখেছি। আল্লাহ চাইলে তোমাদের সবাইকে
একই উম্মতের অন্তরভুক্ত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের যা
দিয়েছেন তার মধ্যে তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য এমনটি করেছেন। কাজেই সৎকাজে একে অপরের চাইতে অগ্রবর্তী হবার চেষ্টা করো। শেষ পর্যন্ত তোমাদের সবাইকে আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। তারপর তিনি সেই প্রকৃত সত্যটি তোমাদের জানিয়ে যে ব্যাপারে
তোমরা মতবিরোধ করে
﴿وَأَنِ احْكُم بَيْنَهُم
بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَاحْذَرْهُمْ أَن يَفْتِنُوكَ
عَن بَعْضِ مَا أَنزَلَ اللَّهُ إِلَيْكَ ۖ فَإِن تَوَلَّوْا فَاعْلَمْ أَنَّمَا يُرِيدُ
اللَّهُ أَن يُصِيبَهُم بِبَعْضِ ذُنُوبِهِمْ ۗ وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ لَفَاسِقُونَ﴾
৪৯। কাজেই৮২ হে মুহাম্মাদ! তুমি আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী তাদের
যাবতীয় বিষয়ের ফায়সালা করো এবং তাদের খেয়ালখুশীর অনুসরণ করো না। সাবধান হয়ে যাও, এরা যেন তোমাকে ফিতনার মধ্যে নিক্ষেপ করে
সেই হেদায়াত থেকে সামান্যতমও বিচ্যুত করতে না পারে,
যা আল্লাহ তোমার প্রতি নাযিল
করছেন। যদি এরা এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে
জেনে রাখো, আল্লাহ এদের কোন কোন গোনাহর কারণে এদেরকে বিপদে ফেলার সিদ্ধান্তই করে ফেলেছেন। আর যথার্থই এদের অধিকাংশ ফাসেক।
﴿أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ
يَبْغُونَ ۚ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ﴾
৫০। (যদি এরা আল্লাহর আইন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়) তাহলে কি এরা
আবার সেই জাহেলিয়াতের৮৩ ফায়সালা চায়?
অথচ যারা আল্লাহর প্রতি দৃঢ়
প্রত্যয়ের অধিকারী তাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর চাইতে ভাল ফায়সালাকারী আর কেউ নেই।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
ۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ
الظَّالِمِينَ﴾
৫১। হে ঈমানদারগণ! ইহুদী ও খৃস্টানদেরকে নিজেদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ
করো না। তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যদি তোমাদের মধ্য থেকে কেউ তাদেরকে বন্ধু হিসেবে
পরিগণিত করে তাহলে সেও তাদের মধ্যেই গণ্য হবে।
অব্যশ্যি আল্লাহ জালেমদেরকে নিজের পথনির্দেশনা থেকে বঞ্চিত রাখেন।
﴿فَتَرَى الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم
مَّرَضٌ يُسَارِعُونَ فِيهِمْ يَقُولُونَ نَخْشَىٰ أَن تُصِيبَنَا دَائِرَةٌ ۚ فَعَسَى
اللَّهُ أَن يَأْتِيَ بِالْفَتْحِ أَوْ أَمْرٍ مِّنْ عِندِهِ فَيُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا
أَسَرُّوا فِي أَنفُسِهِمْ نَادِمِينَ﴾
৫২। তুমি দেখতে পাচ্ছো, যাদের অন্তরে মোনাফেকীর রোগ আছে তারা
তাদের মধ্যেই তৎপর থাকে। তারা বলে,
আমাদের ভয় হয়,
আমরা কোন বিপদের কবলে না পড়ে
যাই।৮৪ কিন্তু অচিরেই আল্লাহ যখন তোমাদের চূড়ান্ত
বিজয় দান করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে অন্য কোন কথা প্রকাশ করবেন।৮৫ তখন তারা নিজেদের অন্তরে লুকিয়ে রাখা এ
মোনাফেকীর জন্য লজ্জিত হবে।
﴿وَيَقُولُ الَّذِينَ آمَنُوا
أَهَٰؤُلَاءِ الَّذِينَ أَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ ۙ إِنَّهُمْ لَمَعَكُمْ
ۚ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَأَصْبَحُوا خَاسِرِينَ﴾
৫৩। আর সে সময় ঈমানদাররা বলবে,
এরা কি সে সব লোক যারা
আল্লাহর নামে শক্ত কসম খেয়ে আমরা তোমাদের সাথে আছি বলে আশ্বাস দিতো? এদের সমস্ত কর্মকাণ্ড নষ্ট হয়ে গেছে এবং শেষ পর্যন্ত এরা
ব্যর্থ মনোরথ হয়েছেন।৮৬
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ
وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ
فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ
مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ﴾
৫৪। হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি দীন থেকে ফিরে
যায়, (তাহলে ফিরে যাক), আল্লাহ এমনিতর আরো বহু লোক সৃষ্টি করে দেবেন,
যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন এবং
তারা আল্লাহকে ভালবাসবে, যারা মুমিনদের ব্যাপারে কোমল ও কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর হবে,৮৭ যারা আল্লাহর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনা করে
যাবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবেনা।৮৮ এটি আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে চান তাকে দান করেন। আল্লাহ ব্যাপক উপায় উপকরণের অধিকারী এবং তিনি সবকিছু জানেন।
﴿إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ
وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ
وَهُمْ رَاكِعُونَ﴾
৫৫। আসলে তোমাদের বন্ধু হচ্ছে একমাত্র আল্লাহ,
তাঁর রাসূল এবং সেই ঈমানদাররা
যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহর সামনে বিনত হয়।
﴿وَمَن يَتَوَلَّ اللَّهَ
وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا فَإِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ﴾
৫৬। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে,
তাঁর রাসূলকে ও মুমিনদেরকে
নিজের বন্ধু রূপে গ্রহণ করে তার জেনে রাখা দরকার,
আল্লাহর দলই বিজয়ী হবে।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تَتَّخِذُوا الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِّنَ الَّذِينَ
أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ
إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ﴾
৫৭। হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে
যেসব লোক তোমাদের দীনকে বিদ্রুপ ও হাসি –তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছে তাদেরকে এবং
অন্যান্য কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধ হিসেবে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় করো, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।
﴿وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى
الصَّلَاةِ اتَّخَذُوهَا هُزُوًا وَلَعِبًا ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْقِلُونَ﴾
৫৮। যখন তোমরা নামাযের জন্য ডাক দাও তখন তারা এর প্রতি
বিদ্রূপবান নিক্ষেপ করে এবং এ নিয়ে টিটকারী ও তামাশা করে।৮৯ এর কারণ হচ্ছে তাদের জ্ঞান নেই।৯০
﴿قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ
هَلْ تَنقِمُونَ مِنَّا إِلَّا أَنْ آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا
أُنزِلَ مِن قَبْلُ وَأَنَّ أَكْثَرَكُمْ فَاسِقُونَ﴾
৫৯। তাদেরকে বলে দাও, হে আহলি কিতাব! তোমরা আমাদের প্রতি
তোমাদের ক্রোধের একমাত্র কারণ তো এই যে, আমরা আল্লাহর ওপর এবং দীনের সে শিক্ষার
ওপর ঈমান এনেছি যা আমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে এবং আমাদের আগেও নাযিল হয়েছিল। আর তোমাদের বেশীরভাগ লোকইতো অবাধ্য।
﴿قُلْ هَلْ أُنَبِّئُكُم بِشَرٍّ
مِّن ذَٰلِكَ مَثُوبَةً عِندَ اللَّهِ ۚ مَن لَّعَنَهُ اللَّهُ وَغَضِبَ عَلَيْهِ وَجَعَلَ
مِنْهُمُ الْقِرَدَةَ وَالْخَنَازِيرَ وَعَبَدَ الطَّاغُوتَ ۚ أُولَٰئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا
وَأَضَلُّ عَن سَوَاءِ السَّبِيلِ﴾
৬০। তাহলে বলো, আমি কি তাদেরকে চিহ্নিত করবো। যাদের পরিণাম আল্লাহর কাছে এ ফাসেকের চাইতেও খারাপ? বস্তুত যাদের ওপর আল্লাহ লানত বর্ষণ করেছেন,
যাদের প্রতি তিনি ক্রোধান্বিত,
যাদের মধ্য থেকে কতককে বানর ও
শুয়োর বানানো হয়েছে এবং যারা তাগুতের বন্দীগী করেছে,
তারা আরো নিকৃষ্ট এবং তারা
সাওয়া-উস-সাবীল- (সরল সঠিক পথ) থেকে বিচ্যুত হয়ে অনেক দূরে সরে গেছে।৯১
﴿وَإِذَا جَاءُوكُمْ قَالُوا
آمَنَّا وَقَد دَّخَلُوا بِالْكُفْرِ وَهُمْ قَدْ خَرَجُوا بِهِ ۚ وَاللَّهُ أَعْلَمُ
بِمَا كَانُوا يَكْتُمُونَ﴾
৬১। যখন তারা তোমাদের কাছে আসে,
তারা বলে,
আমরা ঈমান এনেছি। অথচ তারা কুফর নিয়ে এসেছিল,
কুফর নিয়েই ফিরে গেছে এবং
আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন তারা তাদের মনের মধ্যে কি জিনিস লুকিয়ে রেখেছে।
﴿وَتَرَىٰ كَثِيرًا مِّنْهُمْ
يُسَارِعُونَ فِي الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَأَكْلِهِمُ السُّحْتَ ۚ لَبِئْسَ مَا
كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
৬২। তুমি দেখতে পাচ্ছো, এদের বেশীর ভাগ লোক গোনাহ,
জুলুম ও সীমালংঘনের কাজে তৎপর
এবং এরা হারাম খায়। এরা অত্যন্ত খারাপ কাজ করে যাচ্ছে।
﴿لَوْلَا يَنْهَاهُمُ الرَّبَّانِيُّونَ
وَالْأَحْبَارُ عَن قَوْلِهِمُ الْإِثْمَ وَأَكْلِهِمُ السُّحْتَ ۚ لَبِئْسَ مَا كَانُوا
يَصْنَعُونَ﴾
৬৩। এদের উলামা ও মাশায়েখগণ কেন এদেরকে পাপ কথা বলতে ও হারাম
খেতে বাধা দেয় না?
অবশ্যি এরা যা করে যাচ্ছে তা
অত্যন্ত জঘন্য কার্যক্রম।
﴿وَقَالَتِ الْيَهُودُ يَدُ
اللَّهِ مَغْلُولَةٌ ۚ غُلَّتْ أَيْدِيهِمْ وَلُعِنُوا بِمَا قَالُوا ۘ بَلْ يَدَاهُ
مَبْسُوطَتَانِ يُنفِقُ كَيْفَ يَشَاءُ ۚ وَلَيَزِيدَنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم مَّا أُنزِلَ
إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ طُغْيَانًا وَكُفْرًا ۚ وَأَلْقَيْنَا بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةَ
وَالْبَغْضَاءَ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ۚ كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا لِّلْحَرْبِ
أَطْفَأَهَا اللَّهُ ۚ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا ۚ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ
الْمُفْسِدِينَ﴾
৬৪। ইহুদীরা বলে, আল্লাহর হাত বাঁধা,৯২ আসলে তো বাঁধা হয়েছে ওদেরই হাত৯৩ এবং তারা যে বাজে কথা বলছে সে জন্য তাদের
ওপর অভিশাপ বর্ষিত হয়েছে।৯৪ --আল্লাহর হাত তো দরাজ,
যেভাবে চান তিনি খরচ করে যান। আসলে তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার ওপর যে কালাম নাযিল করা
হয়েছে তা উল্টা তাদের অধিকাংশের বিদ্রোহ ও বাতিলের পূজা বৃদ্ধির কারণ হয়ে
দাঁড়িয়েছে।৯৫ আর (এ অপরাধে) আমি তাদের মধ্যে কিয়ামত
পর্যন্ত স্থায়ী শক্রতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করে দিয়েছি।
যতবার তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায় ততবারই আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন। তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের কখনোই পছন্দ করেন না।
﴿وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْكِتَابِ
آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَكَفَّرْنَا عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَلَأَدْخَلْنَاهُمْ جَنَّاتِ
النَّعِيمِ﴾
৬৫। যদি (বিদ্রোহের পরিবর্তে) এ আহলি কিতাব গোষ্ঠী ঈমান আনতো
এবং আল্লাহ ভীতর পথ অবলম্বন করতো, তাহলে আমি তাদের থেকে তাদের দুষ্কৃতিগুলো
মোচন করে দিতাম এবং তাদেরকে পৌঁছিয়ে দিতাম নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতে।
﴿وَلَوْ أَنَّهُمْ أَقَامُوا
التَّوْرَاةَ وَالْإِنجِيلَ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْهِم مِّن رَّبِّهِمْ لَأَكَلُوا مِن
فَوْقِهِمْ وَمِن تَحْتِ أَرْجُلِهِم ۚ مِّنْهُمْ أُمَّةٌ مُّقْتَصِدَةٌ ۖ وَكَثِيرٌ
مِّنْهُمْ سَاءَ مَا يَعْمَلُونَ﴾
৬৬। হায়, যদি তারা তাওরাত,
ইনজিল ও অন্যান্য কিতাবগুলো
প্রতিষ্ঠিত করতো, যা তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল! তাহলে তাদের জন্য রিযিক
ওপর থেকেও বর্ষিত হতো এবং নীচে থেকেও উত্থিত হতো।৯৬ তাদের মধ্যে কিছু লোক সত্যপন্থী হলেও অধিকাংশই অত্যন্ত
খারাপ কাজে লিপ্ত।
﴿يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ
مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ ۖ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ
ۚ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ﴾
৬৭। হে রাসূল! তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার কাছে যা কিছু নাযিল
করা হয়েছে তা মানুষের কাছে পৌঁছাও। যদি তুমি এমনটি না করো তাহলে
তোমার দ্বারা তার রিসালাতের হক আদায় হবে না।
মানুষের অনিষ্টকারিতা থেকে তোমাকে আল্লাহ রক্ষা করবেন।
নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, তিনি কখনো কাফেরদেরকে (তোমার মোকাবিলায়) সফলতার পথ দেখাবেন
না
﴿قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ
لَسْتُمْ عَلَىٰ شَيْءٍ حَتَّىٰ تُقِيمُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنجِيلَ وَمَا أُنزِلَ
إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ ۗ وَلَيَزِيدَنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم مَّا أُنزِلَ إِلَيْكَ
مِن رَّبِّكَ طُغْيَانًا وَكُفْرًا ۖ فَلَا تَأْسَ عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ﴾
৬৮। পরিষ্কার বলে দাও, হে আহ্লি কিতাব! তোমরা কখনোই কোন মূল
সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে না। যতক্ষণ না তোমরা তাওরাত,
ইনজিল ও তোমাদের রবের পক্ষ
থেকে তোমাদের কাছে নাযিল করা অন্যান্য কিতাবগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করবে।৯৭ তোমার ওপর এই যে ফরমান নাযিল করা হয়েছে
এটা অবশ্যি তাদের অনেকের গোয়ার্তুমী ও অবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেবে।৯৮ কিন্তু অস্বীকারকারীদের অবস্থার জন্য কোন
দুঃখ করো না।
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ
هَادُوا وَالصَّابِئُونَ وَالنَّصَارَىٰ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ
وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾
৬৯। (নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো এখানে কারোর ইজারাদারী নেই।) মুসলমান হোক বা ইহুদী,
সাবী হোক বা খৃস্টান যে-ই
আল্লাহ ও আখেরাতের ওপর ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে নিসন্দেহে তার কোন ভয় বা মর্ম
বেদনার কারণ নেই।৯৯
﴿لَقَدْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ
بَنِي إِسْرَائِيلَ وَأَرْسَلْنَا إِلَيْهِمْ رُسُلًا ۖ كُلَّمَا جَاءَهُمْ رَسُولٌ
بِمَا لَا تَهْوَىٰ أَنفُسُهُمْ فَرِيقًا كَذَّبُوا وَفَرِيقًا يَقْتُلُونَ﴾
৭০। বনী ইসরাঈলের থেকে পাকাপোক্ত অংগীকার নিয়েছিলাম এবং তাদের
কাছে অনেক রাসূল পাঠিয়েছিলাম কিন্তু যখনই তাদের কাছে কোন রাসূল তাদের প্রবৃত্তির
কামনা-বাসনা বিরোধী কিছু নিয়ে হাযির হয়েছেন তখনই কাউকে তারা মিথ্যুক বলেছে এবং
কাউকে হত্যা করেছে
﴿وَحَسِبُوا أَلَّا تَكُونَ
فِتْنَةٌ فَعَمُوا وَصَمُّوا ثُمَّ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ثُمَّ عَمُوا وَصَمُّوا
كَثِيرٌ مِّنْهُمْ ۚ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا يَعْمَلُونَ﴾
৭১। আর এতে কোন ফিতনা সৃষ্টি হবে না ভেবে তারা অন্ধ ও বধির হয়ে
গেছে। তারপর আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দিয়েছেন। এতে তাদের অনেকেই আরো বেশী অন্ধ ও বধির হয়ে চলেছে। আল্লাহ তাদের এসব কাজ পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন।
﴿لَقَدْ كَفَرَ الَّذِينَ
قَالُوا إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ ۖ وَقَالَ الْمَسِيحُ يَا بَنِي
إِسْرَائِيلَ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ ۖ إِنَّهُ مَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ
فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ۖ وَمَا لِلظَّالِمِينَ
مِنْ أَنصَارٍ﴾
৭২। নিসন্দেহে তারা কুফরী করেছে যারা বলেছে,
মারইয়াম পুত্র মসীহ্ই আল্লাহ। অথচ মসীহ্ বলেছেন, হে নবী ইসরাঈল! আল্লাহর বন্দেগী করো,
যিনি আমার রব এবং তোমাদেরও
রব! যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেছে তার ওপর আল্লাহ জান্নাত হারাম করে
দিয়েছেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর এ ধরনের জালেমদের কোন
সাহায্যকারী নেই।
﴿لَّقَدْ كَفَرَ الَّذِينَ
قَالُوا إِنَّ اللَّهَ ثَالِثُ ثَلَاثَةٍ ۘ وَمَا مِنْ إِلَٰهٍ إِلَّا إِلَٰهٌ وَاحِدٌ
ۚ وَإِن لَّمْ يَنتَهُوا عَمَّا يَقُولُونَ لَيَمَسَّنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ
عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
৭৩। নিসন্দেহে তারা কুফরী করেছে যারা বলেছে,
আল্লাহ তিন জনের মধ্যে একজন। অথচ এক ইলাহ্ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই যদি তারা নিজেদের এই
সব কথা থেকে বিরত না হয়, তাহলে তাদের মধ্য থেকে যারা কুফরী করেছে তাদেরকে যন্ত্রণা
দায়ক শাস্তি দেয়া হবে।
﴿أَفَلَا يَتُوبُونَ إِلَى
اللَّهِ وَيَسْتَغْفِرُونَهُ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৭৪। তবে কি তারা আল্লাহর কাছে তাওবা করবে না এবং তাঁর কাছে মাফ
চাইবে না?
আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও
করুণাময়।
﴿مَّا الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ
إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ وَأُمُّهُ صِدِّيقَةٌ ۖ كَانَا
يَأْكُلَانِ الطَّعَامَ ۗ انظُرْ كَيْفَ نُبَيِّنُ لَهُمُ الْآيَاتِ ثُمَّ انظُرْ أَنَّىٰ
يُؤْفَكُونَ﴾
৭৫। মারইয়াম
পুত্র মসীহ্ তো একজন রাসূল ছাড়া আর কিছুই ছিল না? তার পূর্বেও আরো অনেক রাসূল অতিক্রান্ত হয়েছিল। তার মা ছিল একজন সত্যনিষ্ঠ মহিলা। তারা দুজনই খাবার খেতো।
দেখো কিভাবে তাদের সামনে সত্যের নিদর্শনগুলো সুস্পষ্ট করি। তারপর দেখো তারা কিভাবে উল্টো দিকে ফিরে যাচ্ছে।১০০
﴿قُلْ أَتَعْبُدُونَ مِن دُونِ
اللَّهِ مَا لَا يَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا ۚ وَاللَّهُ هُوَ السَّمِيعُ
الْعَلِيمُ﴾
৭৬। তাদেরকে বলো, তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর
ইবাদাত করছো, যা তোমাদের না ক্ষতি করার কোন ক্ষমতা রাখে না উপকারের? অথচ একমাত্র আল্লাহই তো সবার সবকিছু শোনেন ও জানেন।
﴿قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ
لَا تَغْلُوا فِي دِينِكُمْ غَيْرَ الْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوا أَهْوَاءَ قَوْمٍ قَدْ
ضَلُّوا مِن قَبْلُ وَأَضَلُّوا كَثِيرًا وَضَلُّوا عَن سَوَاءِ السَّبِيلِ﴾
৭৭। বলে দাও, হে আহলি কিতাব! নিজেদের দীনের ব্যাপারে
অন্যায় বাড়াবাড়ী করো না এবং তাদের খেয়ালখুশীর অনুসরণ করো না যারা তোমাদের পূর্বে
নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং আরো অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে আর সাওয়া-উস-সাবীল থেকে
বিচ্যুত হয়েছে।১০১
﴿لُعِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا
مِن بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُودَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ۚ ذَٰلِكَ
بِمَا عَصَوا وَّكَانُوا يَعْتَدُونَ﴾
৭৮। বনী ইসরাঈল জাতির মধ্য থেকে যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে
তাদের ওপর দাউদ ও মারইয়াম পুত্র ঈসার মুখ দিয়ে অভিসম্পাত করা হয়েছে। কারণ তারা বিদ্রোহী হয়ে গিয়েছিল এবং বাড়াবাড়ি করতে শুরু
করেছিল।
﴿كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ
عَن مُّنكَرٍ فَعَلُوهُ ۚ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ﴾
৭৯। তারা পরস্পরকে খারাপ কাজ করা থেকে বিরত রাখা পরিহার করেছিল,১০২ তাদের গৃহীত সেই কর্মপদ্ধতি বড়ই জঘন্য ছিল।
﴿تَرَىٰ كَثِيرًا مِّنْهُمْ
يَتَوَلَّوْنَ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ لَبِئْسَ مَا قَدَّمَتْ لَهُمْ أَنفُسُهُمْ أَن
سَخِطَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَفِي الْعَذَابِ هُمْ خَالِدُونَ﴾
৮০। আজ তুমি তাদের মধ্যে এমন অনেক লোক দেখছো যারা (ঈমানদারদের
মোকাবিলায়) কাফেরদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করে। নিসন্দেহে তাদের প্রবৃত্তি তাদেরকে যে পরিণতি দিকে ঠেলে
দিচ্ছে তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট। সে পরিণতি হলো,
আল্লাহ তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ
হয়েছেন এবং তারা চিরন্তন শাস্তি ভোগ করবে।
﴿وَلَوْ كَانُوا يُؤْمِنُونَ
بِاللَّهِ وَالنَّبِيِّ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مَا اتَّخَذُوهُمْ أَوْلِيَاءَ وَلَٰكِنَّ
كَثِيرًا مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ﴾
৮১। যদি এ লোকেরা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ,
নবী এবং নবীর ওপর যা নাযিল
হয়েছিল তা মেনে নিতো তাহলে কখনো (ঈমানদারদের মোকাবিলায়) কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু
হিসেবে গ্রহণ করতো না।১০৩ কিন্তু তাদের অধিকাংশ আল্লাহর আনুগত্য
ত্যাগ করেছে।
﴿لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ النَّاسِ
عَدَاوَةً لِّلَّذِينَ آمَنُوا الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا ۖ وَلَتَجِدَنَّ
أَقْرَبَهُم مَّوَدَّةً لِّلَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ قَالُوا إِنَّا نَصَارَىٰ ۚ
ذَٰلِكَ بِأَنَّ مِنْهُمْ قِسِّيسِينَ وَرُهْبَانًا وَأَنَّهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ﴾
৮২। ঈমানদারদের সাথে শত্রুতার ক্ষেত্রে তুমি ইহুদী ও মুশরিকদের
পাবে সবচেয়ে বেশী উগ্র। আর ঈমানদারদের সাথে বন্ধুত্বের ব্যাপারে
নিকটতম পাবে তাদেরকে যারা বলেছিল আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। এর কারণ হচ্ছে তাদের মধ্যে ইবাদাতকারী আলেম,
সংসার বিরাগী দরবেশ পাওয়া যায়,
আর তাদের মধ্যে আত্মগরিমা নেই।
﴿وَإِذَا سَمِعُوا مَا أُنزِلَ
إِلَى الرَّسُولِ تَرَىٰ أَعْيُنَهُمْ تَفِيضُ مِنَ الدَّمْعِ مِمَّا عَرَفُوا مِنَ
الْحَقِّ ۖ يَقُولُونَ رَبَّنَا آمَنَّا فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ﴾
৮৩। যখন তারা এ কালাম শোনে,
যা রাসূলের ওপর নাযিল হয়েছে,
তোমরা দেখতে পাও,
সত্যকে চিনতে পারার কারণে
তাদের চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। তারা বলে ওঠে,
হে আমাদের রব! আমরা ঈমান
এনেছি, সাক্ষ্যদাতাদের মধ্যে আমাদের নাম লিখে নাও।
﴿وَمَا لَنَا لَا نُؤْمِنُ
بِاللَّهِ وَمَا جَاءَنَا مِنَ الْحَقِّ وَنَطْمَعُ أَن يُدْخِلَنَا رَبُّنَا مَعَ
الْقَوْمِ الصَّالِحِينَ﴾
৮৪। আর তারা আরো বলে, আমরা আল্লাহর ওপর ঈমান কেন আনবো না এবং যে
সত্য আমাদের কাছে এসেছে তাকে কেন মেনে নেবো না-যখন আমরা এ ইচ্ছা পোষণ করে থাকি যে,
আমাদের রব যেন আমাদের সৎ ও
সত্যনিষ্ঠ লোকদের অন্তরভুক্ত করেন।
﴿فَأَثَابَهُمُ اللَّهُ بِمَا
قَالُوا جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ وَذَٰلِكَ
جَزَاءُ الْمُحْسِنِينَ﴾
৮৫। তাদের এ উক্তির কারণে আল্লাহ তাদেরকে এমনসব জান্নাত দান
করেছেন যার নিম্নদেশ দিয়ে ঝরণাধারা প্রবাহিত হয় এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকালের
জন্য। সৎ-কর্মনীতি অবলম্বনকারীদের জন্য এ
প্রতিদান।
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا
بِآيَاتِنَا أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ﴾
৮৬। আর যারা আমার আয়াত মানতে অস্বীকার করেছে ও সেগুলোকে মিথ্যা
বলেছে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী হবে।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ
لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ﴾
৮৭। হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যেসব পবিত্র জিনিস
হালাল করেছেন সেগুলো হারাম করে নিয়ো না।১০৪ আর সীমালংঘন করো না।১০৫ সীমা-লংঘনকরীদেরকে আল্লহ ভীষণভাবে অপছন্দ করেন।
﴿وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ
اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ﴾
৮৮। আল্লাহ তোমাদের যে হালাল ও পবিত্র রিযিক দিয়েছেন তা থেকে
পানাহার করো এবং সে আল্লাহর নাফরমানী থেকে দূরে থাকো যার ওপর তোমরা ঈমান এনেছো।
﴿لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ
بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَٰكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الْأَيْمَانَ
ۖ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ
أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ ۖ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ
أَيَّامٍ ۚ ذَٰلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ ۚ وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ
ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
৮৯। তোমরা যে সমস্ত অর্থহীন কসম খেয়ে ফেলো। সে সবের জন্য আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করেন না। কিন্তু তোমরা জেনে বুঝে যেসব কসম খাও সেগুলোর ওপর তিনি
অবশ্যি তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। (এ ধরনের কসম ভেঙে ফেলার)
কাফ্ফারা হচ্ছে, দশ জন মিসকিনকে এমন মধ্যম পর্যায়ের আহার দান করো যা তোমরা নিজেদের সন্তানদের
খেতে দাও অথবা তাদেরকে কাপড় পরাও বা একটি গোলামকে মুক্ত করে দাও। আর যে ব্যক্তি এর সামর্থ রাখে না সে যেন তিন দিন রোযা রাখে। এ হচ্ছে তোমাদের কসমের কাফ্ফারা যখন তোমরা কসম খেয়ে তা
ভেঙে ফেলো।১০৬ তোমাদের কসমসমূহ সংরক্ষণ করো।১০৭ এভাবে আল্লাহ নিজের বিধান তোমাদের জন্য
সুস্পষ্ট করেন, হয়তো তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করবে।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ
الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
৯০। হে ঈমানদারগণ! এ মদ, জুয়া,
মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য
নির্ণায়ক শরসমূহ১০৮ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য শয়তানী কার্যকালাপ। এগুলো থেকে দূরে থাকো,
আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ
করবে।১০৯
﴿إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ
أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ
عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ﴾
৯১। শয়তান তো চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও
হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদের বিরত রাখতে। তাহলে তোমরা কি এসব থেকে বিরত থাকবে?
﴿وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا
الرَّسُولَ وَاحْذَرُوا ۚ فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُوا أَنَّمَا عَلَىٰ رَسُولِنَا
الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
৯২। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা মেনে চলো এবং (নিষিদ্ধ কাজ
থেকে) বিরত থাকো। কিন্তু যদি তোমরা আদেশ অমান্য করো,
তাহলে জেনে রাখো,
আমার রাসূলের প্রতি শুধুমাত্র
সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ পৌঁছিয়ে দেবারই দায়িত্ব ছিল।
﴿لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا إِذَا مَا اتَّقَوا وَّآمَنُوا وَعَمِلُوا
الصَّالِحَاتِ ثُمَّ اتَّقَوا وَّآمَنُوا ثُمَّ اتَّقَوا وَّأَحْسَنُوا ۗ وَاللَّهُ
يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ﴾
৯৩। যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে,
তারা পূর্বে যা কিছু পানাহার
করেছিল সে জন্য তাদেরকে কোন জবাবদিহি করতে হবে না,
তবে এ জন্য শর্ত হচ্ছে,
তাদেরকে অবশ্যি ভবিষ্যতে যেসব
জিনিস হারাম করা হয়েছে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে,
ঈমানের ওপর অবিচল থাকতে হবে
এবং ভাল কাজ করতে হবে তারপর যে যে জিনিস থেকে বিরত রাখা হয় তা থেকে তাদের বিরত
থাকতে হবে এবং আল্লাহর যেসব হুকুম নাযিল হয় সেগুলো মেনে চলতে হবে। অতপর আল্লাহভীতি সহকারে সদাচরণ অবলম্বন করতে হবে। আল্লাহ সদাচারীদের ভালবাসেন।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَيَبْلُوَنَّكُمُ اللَّهُ بِشَيْءٍ مِّنَ الصَّيْدِ تَنَالُهُ أَيْدِيكُمْ وَرِمَاحُكُمْ
لِيَعْلَمَ اللَّهُ مَن يَخَافُهُ بِالْغَيْبِ ۚ فَمَنِ اعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُ
عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
৯৪। হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এমন শিরকের মাধ্যমে তোমাদের কঠিন
পরীক্ষার মধ্যে নিক্ষেপ করবেন যা হবে একেবারে হাত ও বর্শার নাগালের মধ্যে,
তোমাদের মধ্য থেকে কে তাঁকে
না দেখেও ভয় করে, তা দেখার জন্য। কাজেই এ সর্তকবাণীর পর যে ব্যক্তি
আল্লাহর নির্ধারিত সীমালংঘন করলো তার জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تَقْتُلُوا الصَّيْدَ وَأَنتُمْ حُرُمٌ ۚ وَمَن قَتَلَهُ مِنكُم مُّتَعَمِّدًا
فَجَزَاءٌ مِّثْلُ مَا قَتَلَ مِنَ النَّعَمِ يَحْكُمُ بِهِ ذَوَا عَدْلٍ مِّنكُمْ
هَدْيًا بَالِغَ الْكَعْبَةِ أَوْ كَفَّارَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ أَوْ عَدْلُ ذَٰلِكَ
صِيَامًا لِّيَذُوقَ وَبَالَ أَمْرِهِ ۗ عَفَا اللَّهُ عَمَّا سَلَفَ ۚ وَمَنْ عَادَ
فَيَنتَقِمُ اللَّهُ مِنْهُ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ ذُو انتِقَامٍ﴾
৯৫। হে ঈমানদারগণ! ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিকার করো না।১১০ আর তোমাদের কেউ যদি জেনে বুঝে এমনটি করে
বসে, তাহলে যে প্রাণীটি সে মেরেছে গৃহপালিত প্রাণীর মধ্য থেকে তারই সমপর্যায়ের একটি
প্রাণী তাকে নয্রানা দিতে হবে, যার ফায়সালা করবে তোমাদের মধ্য থেকে দুজন
ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তি। আর এ নযরানা কাবা ঘরে পৌঁছাতে হবে। অথবা এ গুনাহের কাফ্ফারা হিসেবে কয়েক জন মিসকীনকে খাবার
খাওয়াতে হবে। অথবা সে অনুপাতে রোযা রাখতে হবে,১১১ যাতে সে নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করে। পূর্বে যা কিছু হয়ে গেছে সেসব আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন। কিন্তু এখন যদি কেউ সে কাজের পুনরাবৃত্তি করে তাহলে আল্লাহ
তার বদলা নেবেন। আল্লাহ সবার ওপর বিজয়ী এবং তিনি বদ্লা
নেবার ক্ষমতা রাখেন।
﴿أُحِلَّ لَكُمْ صَيْدُ الْبَحْرِ
وَطَعَامُهُ مَتَاعًا لَّكُمْ وَلِلسَّيَّارَةِ ۖ وَحُرِّمَ عَلَيْكُمْ صَيْدُ الْبَرِّ
مَا دُمْتُمْ حُرُمًا ۗ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
৯৬। তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার এবং তা খাওয়া হালাল করে দেয়া
হয়েছে।১১২ যেখানে তোমরা অবস্থান করবে সেখানে তা খেতে
পারো এবং কাফেলার জন্য পাথেয় হিসেবে নিয়ে যেতেও পার।
তবে যতক্ষণ তোমরা ইহরাম বাঁধা অবস্থায় থাকো ততক্ষণ তোমাদের জন্য স্থলভাগের শিকার
হারাম করে দেয়া হয়েছে। কাজেই আল্লাহর নাফরমানী করা থেকে দূরে
থাকো। তোমাদের সবাইকে ঘেরাও করে তাঁর সামনে
হাযির করা হবে।
﴿جَعَلَ اللَّهُ الْكَعْبَةَ
الْبَيْتَ الْحَرَامَ قِيَامًا لِّلنَّاسِ وَالشَّهْرَ الْحَرَامَ وَالْهَدْيَ وَالْقَلَائِدَ
ۚ ذَٰلِكَ لِتَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ
وَأَنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
৯৭। আল্লাহ পবিত্র কাবা ঘরকে মানুষের জন্য (সমাজ জীবন)
প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিণত করেছেন আর হারাম মাস,
কুরবানীর পশু ও গলায় মালা পরা
পশুগুলোকেও (এ কাজে সহায়ক বানিয়ে দিয়েছেন)১১৩ যাতে তোমরা জানতে পারো যে,
আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত
জানেন এবং তিনি সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন।১১৪
﴿اعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ
الْعِقَابِ وَأَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৯৮। জেনে রাখো, আল্লাহ শাস্তি দানের ব্যাপারে যেমন কঠোর
তেমনি তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়ও।
﴿مَّا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا
الْبَلَاغُ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ﴾
৯৯। রাসূলের
ওপর কেবলমাত্র বাণী পৌঁছিয়ে দেবার দায়িত্বই অর্পিত হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে তোমাদের প্রকাশ্য ও গোপন সমস্ত অবস্থাই
আল্লাহ জানেন।
﴿قُل لَّا يَسْتَوِي الْخَبِيثُ
وَالطَّيِّبُ وَلَوْ أَعْجَبَكَ كَثْرَةُ الْخَبِيثِ ۚ فَاتَّقُوا اللَّهَ يَا أُولِي
الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
১০০। হে নবী! এদেরকে বলে দাও,
পবিত্র ও অপবিত্র সমান নয়,
অপবিত্রের আধিক্য তোমাদের যতই
চমৎকৃত করুক না কেন।১১৫ কাজেই হে বুদ্ধিমানেরা! আল্লাহর নাফরমানী
করা থেকে দূরে থাকো আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
لَا تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِن تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ وَإِن تَسْأَلُوا عَنْهَا
حِينَ يُنَزَّلُ الْقُرْآنُ تُبْدَ لَكُمْ عَفَا اللَّهُ عَنْهَا ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ
حَلِيمٌ﴾
১০১। হে ঈমানদারগণ! এমন কথা জিজ্ঞেস করো না যা তোমাদের কাছে
প্রকাশ করে দেয়া হলে তোমাদের খারাপ লাগবে।১১৬ তবে কুরআন নাযিলের সময় যদি তোমরা সেসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করো
তাহলে তা তোমাদের কাছে প্রকাশ করা হবে। এ
পর্যন্ত তোমরা যা কিছু করেছো, আল্লাহ তা মাফ করে দিয়েছেন। তিনি ক্ষমাশীল ও সহনশীল।
﴿قَدْ سَأَلَهَا قَوْمٌ مِّن
قَبْلِكُمْ ثُمَّ أَصْبَحُوا بِهَا كَافِرِينَ﴾
১০২। তোমাদের পূর্বে একটি দল এ ধরনের প্রশ্ন করেছিল। তারপর সেসব কথার জন্যই তারা কুফরীতে লিপ্ত হয়েছিল।১১৭
﴿مَا جَعَلَ اللَّهُ مِن بَحِيرَةٍ
وَلَا سَائِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ ۙ وَلَٰكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يَفْتَرُونَ
عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ ۖ وَأَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ﴾
১০৩। আল্লাহ না কোন বাহীরা,
সায়েরা,
আসীলা বা হাম নির্ধারণ করেননি১১৮ কিন্তু এ কাফেররা আল্লাহর ওপর মিথ্যা
দোষারোপ করে এবং তাদের অধিকাংশই জ্ঞানহীন (কারণ তারা এ ধরনের কাল্পনিক বিষয় মেনে
নিচ্ছে)।
﴿وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا
إِلَىٰ مَا أَنزَلَ اللَّهُ وَإِلَى الرَّسُولِ قَالُوا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ
آبَاءَنَا ۚ أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ﴾
১০৪। আর যখন তাদেরকে বলা হয়,
এসো সেই বিধানের দিকে যা
আল্লাহ নাযিল করেছেন এবং এসো রাসূলের দিকে, কখন তারা জবাব দেয়,
আমাদের বাপ-দাদাকে যে পথে
পেয়েছি সে পথই আমাদের জন্য যথেষ্ট। তারা কি নিজেদের বাপ-দাদারই
অনুসরণ করে চলবে, যদিও তারা কিছুই জানতো না এবং সঠিক পথও তাদের জন্য ছিল না?
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
عَلَيْكُمْ أَنفُسَكُمْ ۖ لَا يَضُرُّكُم مَّن ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ ۚ إِلَى اللَّهِ
مَرْجِعُكُمْ جَمِيعًا فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
১০৫। হে ঈমানদারগণ! নিজেদের কথা চিন্তা করো,
অন্য কারোর গোমরাহীতে তোমাদের
কোন ক্ষতি নেই যদি তোমরা নিজেরা সত্য সঠিক পথে থাকো।১১৯ তোমাদের সবাইকে আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। তখন তোমরা কি করছিলে তা তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ حِينَ الْوَصِيَّةِ اثْنَانِ
ذَوَا عَدْلٍ مِّنكُمْ أَوْ آخَرَانِ مِنْ غَيْرِكُمْ إِنْ أَنتُمْ ضَرَبْتُمْ فِي
الْأَرْضِ فَأَصَابَتْكُم مُّصِيبَةُ الْمَوْتِ ۚ تَحْبِسُونَهُمَا مِن بَعْدِ الصَّلَاةِ
فَيُقْسِمَانِ بِاللَّهِ إِنِ ارْتَبْتُمْ لَا نَشْتَرِي بِهِ ثَمَنًا وَلَوْ كَانَ
ذَا قُرْبَىٰ ۙ وَلَا نَكْتُمُ شَهَادَةَ اللَّهِ إِنَّا إِذًا لَّمِنَ الْآثِمِينَ﴾
১০৬। হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদের কারোর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়
এবং সে অসিয়ত করতে থাকে তখন তার জন্য সাক্ষ্য নির্ধারণ করার নিয়ম হচ্ছে এই যে,
তোমাদের সমাজ থেকে দুজন
ন্যায়নিষ্ঠ১২০ ব্যক্তিকে সাক্ষী করতে হবে। অথবা যদি তোমরা সফরের অবস্থায় থাকো এবং সেখানে তোমাদের ওপর
মৃত্যু রূপ বিপদ উপস্থিত হয় তাহলে দুজন অমুসলিমকেই সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করে নেবে।১২১ তারপর কোন সন্দেহ দেখা দিলে নামাযের পরে
উভয় সাক্ষীকে (মসজিদে) অপেক্ষমান রাখবে এবং তারা আল্লাহর কসম খেয়ে বলবেঃ আমরা কোন
ব্যক্তি স্বার্থের বিনিময়ে সাক্ষ্য বিক্রি করবো না,
সে কোন আত্মীয় হলেও (আমরা তার
প্রতি পক্ষপাতিত্ব করবো না) এবং আল্লাহর ওয়াস্তের সাক্ষ্যকে আমরা গোপনও করবো না। এমনটি করলে আমরা গুনাহগারদের অন্তভুক্ত হবে।
﴿فَإِنْ عُثِرَ عَلَىٰ أَنَّهُمَا
اسْتَحَقَّا إِثْمًا فَآخَرَانِ يَقُومَانِ مَقَامَهُمَا مِنَ الَّذِينَ اسْتَحَقَّ
عَلَيْهِمُ الْأَوْلَيَانِ فَيُقْسِمَانِ بِاللَّهِ لَشَهَادَتُنَا أَحَقُّ مِن شَهَادَتِهِمَا
وَمَا اعْتَدَيْنَا إِنَّا إِذًا لَّمِنَ الظَّالِمِينَ﴾
১০৭। কিন্তু যদি একথা জানা যায় যে,
তারা দুজন নিজেদেরকে গোনাহে
লিপ্ত করেছে, তাহলে যাদের স্বার্থহানি ঘটেছে তাদের মধ্য থেকে সাক্ষ্য দেবার ব্যাপারে আরো
বেশী যোগ্যতা সম্পন্ন দুজন লোক তাদের স্থলবর্তী হবে এবং তারা আল্লাহর নামে শপথ করে
বলবে আমাদের সাক্ষ্য তাদের সাক্ষের চাইতে আরো বেশী ন্যায়নিষ্ঠ এবং নিজেদের সাক্ষের
ব্যাপারে আমরা কোন বাড়াবাড়ি করিনি। এমনটি করলে আমরা জালেমদের
অন্তরভুক্ত হবো।
﴿ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يَأْتُوا
بِالشَّهَادَةِ عَلَىٰ وَجْهِهَا أَوْ يَخَافُوا أَن تُرَدَّ أَيْمَانٌ بَعْدَ أَيْمَانِهِمْ
ۗ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاسْمَعُوا ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ﴾
১০৮। এ পদ্ধতিতে বেশী আশা করা যায়,
লোকদের সঠিক সাক্ষ্য দেবে
অথবা কমপক্ষে এতটুকু ভয় করবে যে, তাদের কসমের পর অন্য কসমের সাহায্যে তাদের
বক্তব্য খণ্ডন করা হতে পারে। আল্লাহকে ভয় করো এবং শোনো! আল্লাহ
নাফরমানদেরকে তাঁর পথনির্দেশনা থেকে বঞ্চিত করেন।
﴿يَوْمَ يَجْمَعُ اللَّهُ
الرُّسُلَ فَيَقُولُ مَاذَا أُجِبْتُمْ ۖ قَالُوا لَا عِلْمَ لَنَا ۖ إِنَّكَ أَنتَ
عَلَّامُ الْغُيُوبِ﴾
১০৯। যেদিন১২২ আল্লাহ সমস্ত রাসূলকে একত্র করে জিজ্ঞেস করবেন,
তোমাদের কী জবাব দেয়া হয়েছে?১২৩ তারা আরয করবে, আমরা কিছুই জানিনা,১২৪ গোপন সত্যসমূহের জ্ঞান একমাত্র আপনারই আছে।
﴿إِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى
ابْنَ مَرْيَمَ اذْكُرْ نِعْمَتِي عَلَيْكَ وَعَلَىٰ وَالِدَتِكَ إِذْ أَيَّدتُّكَ
بِرُوحِ الْقُدُسِ تُكَلِّمُ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ وَكَهْلًا ۖ وَإِذْ عَلَّمْتُكَ
الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَالتَّوْرَاةَ وَالْإِنجِيلَ ۖ وَإِذْ تَخْلُقُ مِنَ الطِّينِ
كَهَيْئَةِ الطَّيْرِ بِإِذْنِي فَتَنفُخُ فِيهَا فَتَكُونُ طَيْرًا بِإِذْنِي ۖ وَتُبْرِئُ
الْأَكْمَهَ وَالْأَبْرَصَ بِإِذْنِي ۖ وَإِذْ تُخْرِجُ الْمَوْتَىٰ بِإِذْنِي ۖ وَإِذْ
كَفَفْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَنكَ إِذْ جِئْتَهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَقَالَ الَّذِينَ
كَفَرُوا مِنْهُمْ إِنْ هَٰذَا إِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ﴾
১১০। তারপর সে সময়ের কথা চিন্তা করো যখন আল্লাহ বলবেন,১২৫ হে মারইয়ামের পুত্র ঈসা! আমার সে নিয়ামতের
কথা স্মরণ করো যা আমি তোমাকে ও তোমার মাকে দিয়েছিলাম।
আমি পাক-পবিত্র রুহের মাধ্যমে তোমাকে সাহায্য করেছিলাম। তুমি দোলনায় থেকেও লোকদের সাথে কথা বলেছিলে এবং পরিণত বয়সে
পৌঁছেও। আমি তোমাকে কিতাব ও হিকমত এবং তাওরাত ও
ইনজীলের শিক্ষা দিয়েছিলাম। তুমি আমার হুকুমে পাখির আকৃতির মাটির
পুতুল তৈরী করে তাতে ফুঁক দিতে এবং আমার হুকুমে তা পাখি হয়ে যেতো। তুমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে আমার হুকুমে নিরাময় করে দিতে। এবং মৃতদেরকে আমার হুকুমে বের করে আনতে।১২৬ তারপর যখন তুমি সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে বনী
ইসরাঈলের কাছে পৌঁছলে এবং তাদের মধ্যে যারা সত্য অস্বীকারকারী ছিল তারা বললো,
এ নিশানীগুলো যাদু ছাড়া আর
কিছুই নয়, তখন আমি তোমাকে তাদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলাম।
﴿وَإِذْ أَوْحَيْتُ إِلَى الْحَوَارِيِّينَ
أَنْ آمِنُوا بِي وَبِرَسُولِي قَالُوا آمَنَّا وَاشْهَدْ بِأَنَّنَا مُسْلِمُونَ﴾
১১১। আর যখন আমি হাওয়ারীদেরকে ইংগিত করেছিলাম,
আমার ও আমার রাসূলের প্রতি
ঈমান আনো, তারা বলেছিল, আমরা ঈমান আনলাম এবং সাক্ষী থাকো আমরা মুসলমান।১২৭
﴿إِذْ قَالَ الْحَوَارِيُّونَ
يَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ هَلْ يَسْتَطِيعُ رَبُّكَ أَن يُنَزِّلَ عَلَيْنَا مَائِدَةً
مِّنَ السَّمَاءِ ۖ قَالَ اتَّقُوا اللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ﴾
১১২। -(হাওয়ারীদের১২৮ প্রসংগে) এ ঘটনাটিও যেন মনে থাকে,
যখন হাওয়ারীরা বলেছিল,
হে মারইয়াম পুত্র ঈসা! আপনার
রব কি আমাদের জন্য আকাশ থেকে একটি খাবার পরিপূর্ণ খাঞ্চা নাযিল করতে পারেন?
ঈসা বলেছিল,
আল্লাহকে ভয় করো,
যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।
﴿قَالُوا نُرِيدُ أَن نَّأْكُلَ
مِنْهَا وَتَطْمَئِنَّ قُلُوبُنَا وَنَعْلَمَ أَن قَدْ صَدَقْتَنَا وَنَكُونَ عَلَيْهَا
مِنَ الشَّاهِدِينَ﴾
১১৩। তারা বলেছিল, আমরা কেবল এতটুকুই চাই যে,
আমরা সেই খাঞ্চা থেকে খাবার
খাবো, আমাদের মন নিশ্চিন্ত হয়ে যাবে এবং আমরা জেনে নেবো যে,
আপনি যা কিছু বলেছেন তা সবই
সত্য এবং আমরা তার সাক্ষী হয়ে যাবো।
﴿قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ
اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا
لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ ۖ وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ﴾
১১৪। এ কথায় ঈসা ইবনে মারইয়াম দোয়া করেছিল,
হে আল্লাহ! হে আমাদের রব!
আমাদের ওপর আকাশ থেকে একটি খাদ্য ভরা খাঞ্চা নাযিল করো,
যা আমাদের জন্য এবং আমাদের
আগের-পিছের সবার জন্য আনন্দের উপলক্ষ হিসেবে গণ্য হবে এবং তোমার পক্ষ থেকে হবে
একটি নিদর্শন। আমাদের জীবিকা দান করো এবং তুমি
সর্বোত্তম জীবিকা দানকারী।
﴿قَالَ اللَّهُ إِنِّي مُنَزِّلُهَا
عَلَيْكُمْ ۖ فَمَن يَكْفُرْ بَعْدُ مِنكُمْ فَإِنِّي أُعَذِّبُهُ عَذَابًا لَّا أُعَذِّبُهُ
أَحَدًا مِّنَ الْعَالَمِينَ﴾
১১৫। আল্লাহ জবাব দিয়েছিলেন,
আমি তা তোমাদের ওপর নাযিল
করবো।১২৯ কিন্তু এরপর তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি
কুফরী করবে তাকে আমি এমন শাস্তি দেবো,
যা দুনিয়ায় আর কাউকে দেইনি।
﴿وَإِذْ قَالَ اللَّهُ يَا
عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ أَأَنتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ اتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيْنِ
مِن دُونِ اللَّهِ ۖ قَالَ سُبْحَانَكَ مَا يَكُونُ لِي أَنْ أَقُولَ مَا لَيْسَ لِي
بِحَقٍّ ۚ إِن كُنتُ قُلْتُهُ فَقَدْ عَلِمْتَهُ ۚ تَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِي وَلَا
أَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِكَ ۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ﴾
১১৬। (মোটকথা এসব অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে) আল্লাহ যখন
বলবেন, হে মারইয়াম পুত্র ঈসা! তুমি কি লোকদের বলেছিলে,
আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমাকে ও
আমার মাকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করো?১৩০ তখন সে জবাব দেবে,
সুবহানাল্লাহ! যে কথা বলার
কোন অধিকার আমার ছিল না সে ধরনের কোন কথা বলা আমার জন্য ছিল অশোভন ও অসংগত। যদি আমি এমন কথা বলতাম তাহলে আপনি নিশ্চয়ই তা জানতে পারতাম,
আমার মনে যা আছে আপনি কিন্তু
আপনার মনে যা আছে আমি তা জানি না, আপনি তো সমস্ত গোপন সত্যের জ্ঞান রাখেন।
﴿مَا قُلْتُ لَهُمْ إِلَّا
مَا أَمَرْتَنِي بِهِ أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ ۚ وَكُنتُ عَلَيْهِمْ
شَهِيدًا مَّا دُمْتُ فِيهِمْ ۖ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنتَ أَنتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ
ۚ وَأَنتَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ﴾
১১৭। আপনি যা হুকুম দিয়েছিলেন তার বাইরে আমি তাদেরকে আর কিছুই
বলিনি। তা হচ্ছেঃ আল্লাহর বন্দেগী করো যিনি
আমারও রব এবং তোমাদেরও। আমি যতক্ষণ তাদের মধ্যে ছিলাম ততক্ষণ আমি
ছিলাম তাদের তদারককারী ও সংরক্ষক। যখন আপনি আমাকে ফিরিয়ে
নিয়েছিলেন তখন আপনিই ছিলেন তাদের তত্বাবধায়ক ও সংরক্ষক। আর আপনি তো সমস্ত জিনিসের তত্বাবধায়ক ও সংরক্ষক।
﴿إِن تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ
عِبَادُكَ ۖ وَإِن تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾
১১৮। এখন যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন তাহলে তারা তো আপনার
বান্দা আর যদি মাফ করে দেন তাহলে আপনি পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়।
﴿قَالَ اللَّهُ هَٰذَا يَوْمُ
يَنفَعُ الصَّادِقِينَ صِدْقُهُمْ ۚ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۚ رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ
الْعَظِيمُ﴾
১১৯। তখন আল্লাহ বলবেন, এটি এমন একটি দিন যেদিন সত্যবাদীদেরকে
তাদের সত্যতা উপকৃত করে।ত তাদের জন্য রয়েছে এমন বাগান যার
নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে তারা থাকবে চিরকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর
প্রতি। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।
﴿لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ وَمَا فِيهِنَّ ۚ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
১২০। পৃথিবী, আকাশসমূহ ও সমগ্র জাতির ওপর রাজত্ব
আল্লাহরই জন্য নির্ধারিত এবং তিনি সবকিছুর ওপর শক্তিশালী।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।