০৪৫. সূরা আল জাসিয়াহ
আয়াতঃ ৩৭; রুকুঃ ০৪; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿حمٓ﴾
১। হা-মীম।
﴿تَنزِيلُ ٱلْكِتَـٰبِ مِنَ
ٱللَّهِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَكِيمِ﴾
২। এ কিতাব
আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত, যিনি মহাপরাক্রমশালী ও
মহাজ্ঞানী।১
﴿إِنَّ فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّلْمُؤْمِنِينَ﴾
৩। প্রকৃত
সত্য হচ্ছে, মু’মিনদের জন্য আসমান ও যমীনে অসংখ্য
নিদর্শন রয়েছে।২
﴿وَفِى خَلْقِكُمْ وَمَا يَبُثُّ
مِن دَآبَّةٍ ءَايَـٰتٌۭ لِّقَوْمٍۢ يُوقِنُونَ﴾
৪। তোমাদের
নিজেদের সৃষ্টির মধ্যে এবং যেসব জীব-জন্তুকে আল্লাহ পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার
মধ্যে বড় বড় নিদর্শন রয়েছে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণকারী লোকদের জন্য।৩
﴿وَٱخْتِلَـٰفِ ٱلَّيْلِ وَٱلنَّهَارِ
وَمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مِن رِّزْقٍۢ فَأَحْيَا بِهِ ٱلْأَرْضَ بَعْدَ
مَوْتِهَا وَتَصْرِيفِ ٱلرِّيَـٰحِ ءَايَـٰتٌۭ لِّقَوْمٍۢ يَعْقِلُونَ﴾
৫। তাছাড়া রাত
ও দিনের পার্থক্য ও ভিন্নতার মধ্যে,৪ আল্লাহ
আসমান থেকে যে রিযিক৫ নাযিল
করেন এবং তার সাহায্যে মৃত যমীনকে যে জীবিত করে তোলেন তার মধ্যে৬ এবং বায়ু
প্রবাহের আবর্তনের মধ্যে৭ অনেক নিদর্শন রয়েছে তাদের
জন্য যারা বুদ্ধি-বিবেচনাকে কাজে লাগায়।
﴿تِلْكَ ءَايَـٰتُ ٱللَّهِ
نَتْلُوهَا عَلَيْكَ بِٱلْحَقِّ ۖ فَبِأَىِّ حَدِيثٍۭ بَعْدَ ٱللَّهِ وَءَايَـٰتِهِۦ
يُؤْمِنُونَ﴾
৬। এগুলো
আল্লাহর নিদর্শন, যা আমি তোমাদের সামনে যথাযথভাবে বর্ণনা
করছি। আল্লাহ ও তাঁর নিদর্শনাদি ছাড়া এমন আর কী
আছে যার প্রতি এরা ঈমান আনবে?৮
﴿وَيْلٌۭ لِّكُلِّ أَفَّاكٍ
أَثِيمٍۢ﴾
৭। ধ্বংস এমন
প্রত্যেক মিথ্যাবাদী ও দুষ্কর্মশীল ব্যক্তির জন্য
﴿يَسْمَعُ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ
تُتْلَىٰ عَلَيْهِ ثُمَّ يُصِرُّ مُسْتَكْبِرًۭا كَأَن لَّمْ يَسْمَعْهَا ۖ فَبَشِّرْهُ
بِعَذَابٍ أَلِيمٍۢ﴾
৮। যার সামনে
আল্লাহর আয়াত সমূহ পাঠ করা হয় এবং সে তা শোনে তারপর পুরো অহংকার নিয়ে কুফরীকে
এমনভাবে আঁকড়ে থাকে যেন সে ঐগুলো শোনেইনি।৯ এ রকম
লোককে কষ্টদায়ক আযাবের সুখবর শুনিয়ে দাও।
﴿وَإِذَا عَلِمَ مِنْ ءَايَـٰتِنَا
شَيْـًٔا ٱتَّخَذَهَا هُزُوًا ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌۭ مُّهِينٌۭ﴾
৯। যখন সে
আমার আয়াতসমূহের কোন কথা জানতে পারে তখন তা নিয়ে উপহাস ও বিদ্রূপ করে।১০ এরূপ
প্রতিটি ব্যক্তির জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
﴿مِّن وَرَآئِهِمْ جَهَنَّمُ
ۖ وَلَا يُغْنِى عَنْهُم مَّا كَسَبُوا۟ شَيْـًۭٔا وَلَا مَا ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ
ٱللَّهِ أَوْلِيَآءَ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾
১০। তাদের
সামনে রয়েছে জাহান্নাম।১১ তারা
পৃথিবীতে যা কিছু অর্জন করেছে তার কোন জিনিসই তাদের কাজে আসবে না আবার আল্লাহকে
বাদ দিয়ে যাদেরকে তারা অভিভাবক বানিয়ে রেখেছেন তারাও তাদের জন্য কিছু করতে পারবে
না।১২ তাদের জন্য রয়েছে বড়
শাস্তি।
﴿هَـٰذَا هُدًۭى ۖ وَٱلَّذِينَ
كَفَرُوا۟ بِـَٔايَـٰتِ رَبِّهِمْ لَهُمْ عَذَابٌۭ مِّن رِّجْزٍ أَلِيمٌ﴾
১১। এই কুরআন
পুরাপুরি হেদায়াতের কিতাব। সেই লোকদের জন্য কঠিন
জ্বালাদায়ক আযাব রয়েছে। যারা নিজেদের রব-এর আয়াত
গুলোকে মেনে নিতে অস্বীকার করছে।
﴿ٱللَّهُ ٱلَّذِى سَخَّرَ
لَكُمُ ٱلْبَحْرَ لِتَجْرِىَ ٱلْفُلْكُ فِيهِ بِأَمْرِهِۦ وَلِتَبْتَغُوا۟ مِن فَضْلِهِۦ
وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
১২। তিনিই তো আল্লাহ
যিনি তোমাদের জন্য সমুদ্রকে অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর নির্দেশে জাহাজসমূহ
সেখানে চলে১৩ আর তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে১৪ এবং
কৃতজ্ঞ হতে পার।
﴿وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِى
ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًۭا مِّنْهُ ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَـٰتٍۢ
لِّقَوْمٍۢ يَتَفَكَّرُونَ﴾
১৩। তিনি যমীন
ও আসমানের সমস্ত জিনিসকেই তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন,১৫ সবই
নিজের পক্ষ থেকে।১৬ এতে
চিন্তাশীল লোকদের জন্য বড় বড় নিদর্শন রয়েছে।১৭
﴿قُل لِّلَّذِينَ ءَامَنُوا۟
يَغْفِرُوا۟ لِلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ أَيَّامَ ٱللَّهِ لِيَجْزِىَ قَوْمًۢا بِمَا
كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ﴾
১৪। হে নবী, যারা ঈমান
এনেছে তাদেরকে বলে দাও, যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন কঠিন দিন
আসার আশঙ্কা করে না১৮ তাদের
আচরণ সমূহ যেন ক্ষমা করে দেয় যাতে আল্লাহ নিজেই একটি গোষ্ঠীকে তাদের কৃতকর্মের
বদলা দেন।১৯
﴿مَنْ عَمِلَ صَـٰلِحًۭا فَلِنَفْسِهِۦ
ۖ وَمَنْ أَسَآءَ فَعَلَيْهَا ۖ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ﴾
১৫। যে সৎকাজ
করবে সে নিজের জন্যই করবে। আর যে অসৎ কাজ করবে তার
পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে। সবাইকে তো তার রবের কাছেই
ফিরে যেতে হবে।
﴿وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا بَنِىٓ
إِسْرَٰٓءِيلَ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْحُكْمَ وَٱلنُّبُوَّةَ وَرَزَقْنَـٰهُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَـٰتِ
وَفَضَّلْنَـٰهُمْ عَلَى ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾
১৬। ইতিপূর্বে
আমি বনী ইসরাঈলদের কিতাব, হুকুম২০ ও নবুওয়াত দান করেছিলাম। আমি
তাদেরকে উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলাম, সারা দুনিয়ার
মানুষের ওপর মর্যাদা দান করেছিলাম২১
﴿وَءَاتَيْنَـٰهُم بَيِّنَـٰتٍۢ
مِّنَ ٱلْأَمْرِ ۖ فَمَا ٱخْتَلَفُوٓا۟ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ
بَغْيًۢا بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِى بَيْنَهُمْ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ فِيمَا
كَانُوا۟ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ﴾
১৭। এবং
দ্বীনের ব্যাপারে স্পষ্ট হিদায়াত দান করেছিলাম। অতঃপর
তাদের মধ্যে যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিলো তা (অজ্ঞতার কারণে নয়, বরং) জ্ঞান
আসার পরে হয়েছিলো এবং এ কারণে হয়েছিলো যে, তারা একে অপরের
ওপর জুলুম করতে চাচ্ছিলো।২২ তারা যেসব ব্যাপারে মতভেদ করে
আসছিলো আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেই সব ব্যাপারে ফায়সালা করবেন।
﴿ثُمَّ جَعَلْنَـٰكَ عَلَىٰ
شَرِيعَةٍۢ مِّنَ ٱلْأَمْرِ فَٱتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا
يَعْلَمُونَ﴾
১৮। অতঃপর হে
নবী, আমি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাকে একটি সুস্পষ্ট
রাজপথের (শরীয়তের) ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছি।২৩ সুতরাং
তুমি তার ওপরেই চলো এবং যারা জানে না তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না।
﴿إِنَّهُمْ لَن يُغْنُوا۟
عَنكَ مِنَ ٱللَّهِ شَيْـًۭٔا ۚ وَإِنَّ ٱلظَّـٰلِمِينَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍۢ
ۖ وَٱللَّهُ وَلِىُّ ٱلْمُتَّقِينَ﴾
১৯। আল্লাহর
মোকাবিলায় তারা তোমরা কোন কাজেই আসতে পারে না।২৪ জালেমরা
একে অপরের বন্ধু এবং মুত্তাকীনদের বন্ধু আল্লাহ।
﴿هَـٰذَا بَصَـٰٓئِرُ لِلنَّاسِ
وَهُدًۭى وَرَحْمَةٌۭ لِّقَوْمٍۢ يُوقِنُونَ﴾
২০। এটা সব
মানুষের জন্য দূরদৃষ্টির আলো এবং যারা দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে তাদের জন্য হিদায়াত ও
রহমত।২৫
﴿أَمْ حَسِبَ ٱلَّذِينَ ٱجْتَرَحُوا۟
ٱلسَّيِّـَٔاتِ أَن نَّجْعَلَهُمْ كَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ
سَوَآءًۭ مَّحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ ۚ سَآءَ مَا يَحْكُمُونَ﴾
২১। যেসব২৬ লোক
অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে তারা কি মনে করে নিয়েছে যে, আমি তাদেরকে
এবং মু’মিন ও সৎকর্মশীলদেরকে সমপর্যায়ভুক্ত করে দেবো যে তাদের জীবন ও মৃত্যু সমান
হয়ে যাবে? তারা যে ফায়সালা করে তা অত্যন্ত জঘণ্য।২৭
﴿وَخَلَقَ ٱللَّهُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّ وَلِتُجْزَىٰ كُلُّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ﴾
২২। আল্লাহ
আসমান ও যমীনকে সত্যের ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন২৮ এবং এ
জন্য করেছেন যাতে প্রত্যেক প্রাণসত্তাকে তার কৃতকর্মের প্রতিদান দেয়া যায়। তাদের
প্রতি কখনো জুলুম করা হবে না।২৯
﴿أَفَرَءَيْتَ مَنِ ٱتَّخَذَ
إِلَـٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلْمٍۢ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمْعِهِۦ
وَقَلْبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَـٰوَةًۭ فَمَن يَهْدِيهِ مِنۢ بَعْدِ ٱللَّهِ
ۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ﴾
২৩। তুমি কি
কখনো সেই ব্যক্তির অবস্থা ভেবে দেখেছো যে তার প্রবৃত্তির কামনা বাসনাকে খোদা
বানিয়ে নিয়েছে৩০ আর জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও৩১ আল্লাহ তাকে গোমরাহীর মধ্যে
নিক্ষেপ করেছেন, তার দিলে ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন এবং
চোখে আবরণ সৃষ্টি করেছেন।৩২ আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে যে
তাকে হিদায়াত দান করতে পারে? তোমরা কি কোন শিক্ষা গ্রহণ
করো না?৩৩
﴿وَقَالُوا۟ مَا هِىَ إِلَّا
حَيَاتُنَا ٱلدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا يُهْلِكُنَآ إِلَّا ٱلدَّهْرُ ۚ وَمَا
لَهُم بِذَٰلِكَ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِنْ هُمْ إِلَّا يَظُنُّونَ﴾
২৪। এরা বলেঃ
জীবন বলতে তো শুধু আমাদের দুনিয়ার এই জীবনই। আমাদের
জীবন ও মৃত্যু এখানেই এবং কালের বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই আমাদের ধ্বংস করে না।
প্রকৃতপক্ষে এ ব্যাপারে এদের কোন জ্ঞান নেই। এরা শুধু
ধারণার বশবর্তী হয়ে এসব কথা বলে।৩৪
﴿وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ
ءَايَـٰتُنَا بَيِّنَـٰتٍۢ مَّا كَانَ حُجَّتَهُمْ إِلَّآ أَن قَالُوا۟ ٱئْتُوا۟ بِـَٔابَآئِنَآ
إِن كُنتُمْ صَـٰدِقِينَ﴾
২৫। যখন এদেরকে
আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ শুনানো হয়৩৫ তখন এদের
কাছে এছাড়া আর কোন যুক্তিই থাকে না যে, তোমরা সত্যবাদী হয়ে
থাকলে আমাদের বাপ-দাদাদের জীবিত করে দেখাও।৩৬
﴿قُلِ ٱللَّهُ يُحْيِيكُمْ
ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ
وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾
২৬। হে নবী, এদের বলো,
আল্লাহই তোমাদের জীবন দান করেন এবং তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটান।৩৭ তিনিই
আবার সেই কিয়ামতের দিন তোমাদের একত্রিত করবেন যার আগমনের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।৩৮ কিন্তু
অধিকাংশ লোকই জানে না।৩৯
﴿وَلِلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ ۚ وَيَوْمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ يَوْمَئِذٍۢ يَخْسَرُ ٱلْمُبْطِلُونَ﴾
২৭। যমীন এবং
আসমানের বাদশাহী আল্লাহর।৪০ আর যেদিন কিয়ামতের সময় এসে
উপস্থিত হবে সেদিন বাতিলপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
﴿وَتَرَىٰ كُلَّ أُمَّةٍۢ
جَاثِيَةًۭ ۚ كُلُّ أُمَّةٍۢ تُدْعَىٰٓ إِلَىٰ كِتَـٰبِهَا ٱلْيَوْمَ تُجْزَوْنَ مَا
كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
২৮। সে সময়
তোমরা প্রত্যেক গোষ্ঠীকে নতজানু দেখতে পাবে।৪১ প্রত্যেক
গোষ্ঠীকে এসে তার আমলনামা দেখার জন্য আহবান জানানো হবে। তাদের বলা
হবে, তোমরা যেসব কাজ করে এসেছো তোমাদেরকে তার
প্রতিদান দেয়া হবে।
﴿هَـٰذَا كِتَـٰبُنَا يَنطِقُ
عَلَيْكُم بِٱلْحَقِّ ۚ إِنَّا كُنَّا نَسْتَنسِخُ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
২৯। এটা আমাদের
তৈরী করানো আমলনামা, যা তোমাদের বিরুদ্ধে ঠিক ঠিক সাক্ষ্য
দিচ্ছে। তোমরা যাই করতে আমি তাই লিপিবদ্ধ করাতাম।৪২
﴿فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟
وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَيُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِى رَحْمَتِهِۦ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ
ٱلْفَوْزُ ٱلْمُبِينُ﴾
৩০। যারা ঈমান
এনেছিলো এবং সৎকাজ করেছিল তাদের রব তাদেরকে তাঁর রহমতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। এটা
সুস্পষ্ট সাফল্য।
﴿وَأَمَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟
أَفَلَمْ تَكُنْ ءَايَـٰتِى تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فَٱسْتَكْبَرْتُمْ وَكُنتُمْ قَوْمًۭا
مُّجْرِمِينَ﴾
৩১। আর যারা
কুফরী করেছিলো তাদের বলা হবে আমার আয়াত সমূহ কি তোমাদেরকে শুনানো হতো না? কিন্তু তোমরা
অহংকার করেছিলে৪৩ এবং অপরাধী হয়ে
গিয়েছিলে।
﴿وَإِذَا قِيلَ إِنَّ وَعْدَ
ٱللَّهِ حَقٌّۭ وَٱلسَّاعَةُ لَا رَيْبَ فِيهَا قُلْتُم مَّا نَدْرِى مَا ٱلسَّاعَةُ
إِن نَّظُنُّ إِلَّا ظَنًّۭا وَمَا نَحْنُ بِمُسْتَيْقِنِينَ﴾
৩২। আর যখন বলা
হতো, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কিয়ামত যে আসবে
তাতে কোন সন্দেহ নেই। তখন তোমরা বলতে, কিয়ামত কী
জিনিস তা আমরা জানি না। আমরা কিছুটা ধারণা পোষণ করি
মাত্র। দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের নেই।৪৪
﴿وَبَدَا لَهُمْ سَيِّـَٔاتُ
مَا عَمِلُوا۟ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ﴾
৩৩। সেই সময়
তাদের কাছে তাদের কৃতকর্মের মন্দ ফলাফল প্রকাশ পাবে।৪৫ তারা সেই
জিনিসের পাল্লায় পড়ে যাবে যা নিয়ে তারা বিদ্রূপ করতো।
﴿وَقِيلَ ٱلْيَوْمَ نَنسَىٰكُمْ
كَمَا نَسِيتُمْ لِقَآءَ يَوْمِكُمْ هَـٰذَا وَمَأْوَىٰكُمُ ٱلنَّارُ وَمَا لَكُم
مِّن نَّـٰصِرِينَ﴾
৩৪। তাদের বলে
দেয়া হবে, আজ আমিও ঠিক তেমনি তোমাদের ভুলে যাচ্ছি
যেমন তোমরা এই দিনের সাক্ষাৎ ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের
ঠিকানা এখন দোজখ এবং তোমাদের সাহায্যকারী কেউ নেই।
﴿ذَٰلِكُم بِأَنَّكُمُ ٱتَّخَذْتُمْ
ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ هُزُوًۭا وَغَرَّتْكُمُ ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا ۚ فَٱلْيَوْمَ لَا
يُخْرَجُونَ مِنْهَا وَلَا هُمْ يُسْتَعْتَبُونَ﴾
৩৫। তোমাদের এই
পরিণাম এ জন্য যে, তোমরা আল্লাহর আয়াত সমূহকে
ঠাট্টা-বিদ্রূপের বিষয়ে পরিণত করেছিলে এবং দুনিয়ার জীবন তোমাদের ধোকায় ফেলে
দিয়েছিলো। তাই আজ এদেরকে দোজখ থেকেও বের করা হবে না
কিংবা একথাও বলা হবে না যে, ক্ষমা চেয়ে আল্লাহকে
সন্তুষ্ট করো।৪৬
﴿فَلِلَّهِ ٱلْحَمْدُ رَبِّ
ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَرَبِّ ٱلْأَرْضِ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾
৩৬। কাজেই সব
প্রশংসা আল্লাহর যিনি যমীন ও আসমানের মালিক এবং গোটা বিশ্বজাহানের সবার পালনকর্তা।
﴿وَلَهُ ٱلْكِبْرِيَآءُ فِى
ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ﴾
৩৭। যমীন ও
আসমানে তারই শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত এবং তিনিই মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।