০৪৩. সূরা আয যুখরুফ
আয়াতঃ ৮৯; রুকুঃ ০৭; মাক্কী
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ﴾
পরম
করুণাময়
মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿حمٓ﴾
১। হা-মীম।
﴿وَٱلْكِتَـٰبِ ٱلْمُبِينِ﴾
২। এই
সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ।
إ﴿ِنَّا جَعَلْنَـٰهُ قُرْءَٰنًا
عَرَبِيًّۭا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ﴾
৩। আমি একে
আরবী ভাষার কুরআন বানিয়েছি যাতে তোমরা তা বুঝতে পারো।১
﴿وَإِنَّهُۥ فِىٓ أُمِّ ٱلْكِتَـٰبِ
لَدَيْنَا لَعَلِىٌّ حَكِيمٌ﴾
৪। প্রকৃতপক্ষে
এটা মূল কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে২ যা আমার কাছে অত্যন্ত উচুঁ
মর্যাদা সম্পন্ন ও জ্ঞানে ভরা কিতাব।৩
﴿أَفَنَضْرِبُ عَنكُمُ ٱلذِّكْرَ
صَفْحًا أَن كُنتُمْ قَوْمًۭا مُّسْرِفِينَ﴾
৫। তোমরা
সীমালংঘনকারী, শুধু এ কারণে কি আমি তোমাদের প্রতি
অসন্তুষ্ট হয়ে উপদেশমূলক শিক্ষা পাঠানো পরিত্যাগ করবো?৪
﴿وَكَمْ أَرْسَلْنَا مِن نَّبِىٍّۢ
فِى ٱلْأَوَّلِينَ﴾
৬।
পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মধ্যেও আমি বার বার নবী পাঠিয়েছি।
﴿وَمَا يَأْتِيهِم مِّن نَّبِىٍّ
إِلَّا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ﴾
৭। এমন কখনো
ঘটেনি যে তাদের কাছে কোন নবী এসেছে। কিন্তু
তাকে বিদ্রূপ করা হয়নি।৫
﴿فَأَهْلَكْنَآ أَشَدَّ مِنْهُم
بَطْشًۭا وَمَضَىٰ مَثَلُ ٱلْأَوَّلِينَ﴾
৮। যারা এদের
চাইতে বহুগুণে শক্তিশালী ছিল তাদেরকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি।
পূর্ববর্তী জাতিসমূহের উদাহরণ অতীত হয়ে গিয়েছে।৬
﴿وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ
خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ ٱلْعَزِيزُ ٱلْعَلِيمُ﴾
৯। তোমরা যদি
এসব লোকদের জিজ্ঞেস করো, যমীন ও আসমান কে সৃষ্টি করেছে,
তাহলে এরা নিজেরাই বলবে, ঐগুলো সেই
মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী সত্তা সৃষ্টি করেছেন।৭
﴿ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلْأَرْضَ
مَهْدًۭا وَجَعَلَ لَكُمْ فِيهَا سُبُلًۭا لَّعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ﴾
১০। তিনিই তো
সৃষ্টি করেছেন যিনি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য দোলনা বানিয়েছেন এবং সেখানে তোমাদের
জন্য রাস্তা তৈরী করে দিয়েছেন।৮ যাতে
তোমাদের গন্তব্যস্থলের পথ খুঁজে পাও।৯
﴿وَٱلَّذِى نَزَّلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ
مَآءًۢ بِقَدَرٍۢ فَأَنشَرْنَا بِهِۦ بَلْدَةًۭ مَّيْتًۭا ۚ كَذَٰلِكَ تُخْرَجُونَ﴾
১১। যিনি আসমান
থেকে একটি বিশেষ পরিমাণে পানি বর্ষণ করেছেন১০ এবং তার
সাহায্যে মৃত ভূমিকে জীবিত করে তুলেছেন। তোমাদের
এভাবেই একদিন মাটির ভেতর থেকে বের করে আনা হবে।১১
﴿وَٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْأَزْوَٰجَ
كُلَّهَا وَجَعَلَ لَكُم مِّنَ ٱلْفُلْكِ وَٱلْأَنْعَـٰمِ مَا تَرْكَبُونَ﴾
১২। তিনিই সেই
মহান সত্তা যিনি সমস্ত জোড়া সৃষ্টি করেছেন।১২ যিনি
তোমাদের জন্য নৌকা-জাহাজ এবং জীব-জন্তুকে সওয়ারি বানিয়েছেন যাতে তোমরা তার পিঠে
আরোহণ করো
﴿لِتَسْتَوُۥا۟ عَلَىٰ ظُهُورِهِۦ
ثُمَّ تَذْكُرُوا۟ نِعْمَةَ رَبِّكُمْ إِذَا ٱسْتَوَيْتُمْ عَلَيْهِ وَتَقُولُوا۟ سُبْحَـٰنَ
ٱلَّذِى سَخَّرَ لَنَا هَـٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقْرِنِينَ﴾
১৩। এবং পিঠের
ওপর বসার সময় তোমাদের রবের ইহসান স্মরন করে বলোঃ পবিত্র সেই সত্তা যিনি আমাদের
জন্য এসব জিনিসকে অনুগত করে দিয়েছেন। তা না হলে
এদের আয়ত্বে আনার শক্তি আমাদের ছিল না।১৩
﴿وَإِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا
لَمُنقَلِبُونَ﴾
১৪। এক দিন
আমাদের রবের কাছে আমাদের ফিরে যেতে হবে।১৪
﴿وَجَعَلُوا۟ لَهُۥ مِنْ عِبَادِهِۦ
جُزْءًا ۚ إِنَّ ٱلْإِنسَـٰنَ لَكَفُورٌۭ مُّبِينٌ﴾
১৫। (এসব কিছু
জানা এবং মানার পরেও) এসব লোক তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকেই কোন কোন বান্দাকে তাঁর
অংশ বানিয়ে দিয়েছে।১৫ প্রকৃত
সত্য এই যে, মানুষ সুস্পষ্ট অকৃতজ্ঞ।
﴿أَمِ ٱتَّخَذَ مِمَّا يَخْلُقُ
بَنَاتٍۢ وَأَصْفَىٰكُم بِٱلْبَنِينَ﴾
১৬। আল্লাহ কি
তাঁর সৃষ্টির মধ্যে থেকে নিজের জন্য কন্যা বেছে নিয়েছেন এবং তোমাদের পুত্র সন্তান
দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন।
﴿وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم
بِمَا ضَرَبَ لِلرَّحْمَـٰنِ مَثَلًۭا ظَلَّ وَجْهُهُۥ مُسْوَدًّۭا وَهُوَ كَظِيمٌ﴾
১৭। অথচ অবস্থা
এই যে, এসব লোক সেই দয়াময় আল্লাহর সাথে যে ধরনের
সন্তানকে সম্পর্কিত করে এদের নিজেদের কাউকে যদি সেই সন্তানের জন্মলাভের সুসংবাদ
দেয়া হয় তাহলে তার মুখমণ্ডলে কালিমা ছেয়ে যায় এবং মন দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।১৬
﴿أَوَمَن يُنَشَّؤُا۟ فِى
ٱلْحِلْيَةِ وَهُوَ فِى ٱلْخِصَامِ غَيْرُ مُبِينٍۢ﴾
১৮। আল্লাহর
ভাগে কি সেই সব সন্তান যারা অলঙ্কারাদির মধ্যে বেড়ে ওঠে এবং বিতর্ক ও যুক্তি পেশের
ক্ষেত্রে নিজের লক্ষ্য পুরোপুরি সুস্পষ্ট করতেও পারে না?১৭
﴿وَجَعَلُوا۟ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةَ
ٱلَّذِينَ هُمْ عِبَـٰدُ ٱلرَّحْمَـٰنِ إِنَـٰثًا ۚ أَشَهِدُوا۟ خَلْقَهُمْ ۚ سَتُكْتَبُ
شَهَـٰدَتُهُمْ وَيُسْـَٔلُونَ﴾
১৯। এরা
ফেরেশতাদেরকে- যারা দয়াময় আল্লাহর খাস বান্দা।১৮ স্ত্রীলোক
গণ্য করেছে। এরা কি তাদের দৈহিক গঠন
দেখেছে?১৯ এদের সাক্ষ্য
লিপিবদ্ধ করে নেয়া হবে এবং সেজন্য এদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
﴿وَقَالُوا۟ لَوْ شَآءَ ٱلرَّحْمَـٰنُ
مَا عَبَدْنَـٰهُم ۗ مَّا لَهُم بِذَٰلِكَ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ﴾
২০। এরা বলেঃ
“দয়াময় আল্লাহ যদি চাইতেন (যে আমরা তাদের ইবাদত না করি) তাহলে আমরা কখনো পূজা
করতাম না।২০ এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য
এরা আদৌ জানে না, কেবলই অনুমানে কথা বলে।
﴿أَمْ ءَاتَيْنَـٰهُمْ كِتَـٰبًۭا
مِّن قَبْلِهِۦ فَهُم بِهِۦ مُسْتَمْسِكُونَ﴾
২১। আমি কি এর
আগে এদেরকে কোন কিতাব দিয়েছিলাম (নিজেদের এই ফেরেশতা পূজার সপক্ষে)
﴿بَلْ قَالُوٓا۟ إِنَّا وَجَدْنَآ
ءَابَآءَنَا عَلَىٰٓ أُمَّةٍۢ وَإِنَّا عَلَىٰٓ ءَاثَـٰرِهِم مُّهْتَدُونَ﴾
২২। তা নয়, বরং এরা বলে,
আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে একটি পন্থার ওপর পেয়েছি, আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলছি।২২
﴿وَكَذَٰلِكَ مَآ أَرْسَلْنَا
مِن قَبْلِكَ فِى قَرْيَةٍۢ مِّن نَّذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَآ إِنَّا وَجَدْنَآ
ءَابَآءَنَا عَلَىٰٓ أُمَّةٍۢ وَإِنَّا عَلَىٰٓ ءَاثَـٰرِهِم مُّقْتَدُونَ﴾
২৩। এভাবে
তোমার পূর্বে আমি যে জনপদেই কোন সতর্ককারীকে পাঠিয়েছি, তাদের
স্বচ্ছল লোকেরা একথাই বলেছে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে একটি
পন্থার অনুসরণ করতে দেখেছি। আমরাও
﴿قَـٰلَ أَوَلَوْ جِئْتُكُم
بِأَهْدَىٰ مِمَّا وَجَدتُّمْ عَلَيْهِ ءَابَآءَكُمْ ۖ قَالُوٓا۟ إِنَّا بِمَآ أُرْسِلْتُم
بِهِۦ كَـٰفِرُونَ﴾
২৪। প্রত্যেক
নবীই তাদের বলেছেন, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদাদের যে পথে চলতে
দেখেছো আমি যদি তোমাদের তার চেয়ে অধিক সঠিক রাস্তা বলে দেই তাহলেও কি তোমরা সেই
পথেই চলতে থাকবে? তারা সব রাসূলকে এই জবাবই দিয়েছে, যে দ্বীনের দিকে আহবান জানানোর জন্য তুমি প্রেরিত হয়েছো, আমরা তা অস্বীকার করি।
﴿فَٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْ ۖ
فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلْمُكَذِّبِينَ﴾
২৫। শেষ
পর্যন্ত আমি তাদেরকে মার দিয়েছি এবং দেখে নাও, অস্বীকারকারীদের
পরিণাম কি হয়েছে।
﴿وَإِذْ قَالَ إِبْرَٰهِيمُ
لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦٓ إِنَّنِى بَرَآءٌۭ مِّمَّا تَعْبُدُونَ﴾
২৬। স্মরণ করো
সেই সময়টি যখন ইবরাহীম তাঁর বাপ এবং কওমকে বলেছিলো।২৪ “তোমরা
যাদের দাসত্ব করো তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
﴿إِلَّا ٱلَّذِى فَطَرَنِى
فَإِنَّهُۥ سَيَهْدِينِ﴾
২৭। আমার
সম্পর্ক শুধু তাঁরই সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই
আমাকে পথপ্রদর্শন করবেন।”২৫
﴿وَجَعَلَهَا كَلِمَةًۢ بَاقِيَةًۭ
فِى عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ﴾
২৮। ইবরাহীম এ
কথাটি২৬ তাঁর
পেছনে তাঁর সন্তানদের মধ্যেও রেখে গিয়েছিলো, যাতে তারা এ
দিকে ফিরে আসে।২৭
﴿بَلْ مَتَّعْتُ هَـٰٓؤُلَآءِ
وَءَابَآءَهُمْ حَتَّىٰ جَآءَهُمُ ٱلْحَقُّ وَرَسُولٌۭ مُّبِينٌۭ﴾
২৯। (এসব
সত্ত্বেও যখন এরা অন্যদের দাসত্ব করতে শুরু করলো তখন আমি এদের ধ্বংস করে দিলাম আমি
বরং এদের ও এদের বাপ-দাদাদেরকে জীবনোপকরণ দিতে থাকলাম এমনকি শেষ পর্যন্ত এদের কাছে
ন্যায় ও সত্য এবং সুস্পষ্ট বর্ণনাকারী রাসূল এসে গেল।২৮
﴿وَلَمَّا جَآءَهُمُ ٱلْحَقُّ
قَالُوا۟ هَـٰذَا سِحْرٌۭ وَإِنَّا بِهِۦ كَـٰفِرُونَ﴾
৩০। কিন্তু
ন্যায় ও সত্য যখন এদের কাছে আসলো তখন এরা বললোঃ এতো যাদু।২৯ আমরা তা
মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছি।
﴿وَقَالُوا۟ لَوْلَا نُزِّلَ
هَـٰذَا ٱلْقُرْءَانُ عَلَىٰ رَجُلٍۢ مِّنَ ٱلْقَرْيَتَيْنِ عَظِيمٍ﴾
৩১। তারা বলে, দু’টি শহরের
বড় ব্যক্তিদের কারো ওপর এ কুরআন নাযিল করা হলো না কেন?৩০
﴿أَهُمْ يَقْسِمُونَ رَحْمَتَ
رَبِّكَ ۚ نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُم مَّعِيشَتَهُمْ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا ۚ
وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍۢ دَرَجَـٰتٍۢ لِّيَتَّخِذَ بَعْضُهُم بَعْضًۭا
سُخْرِيًّۭا ۗ وَرَحْمَتُ رَبِّكَ خَيْرٌۭ مِّمَّا يَجْمَعُونَ﴾
৩২। তোমার রবের
রহমত কি এরা বণ্টন করে? দুনিয়ার জীবনে এদের মধ্যে
জীবন-যাপনের উপায়-উপকরণ আমি বণ্টন করেছি এবং এদের মধ্য থেকে কিছু লোককে অপর কিছু
সংখ্যক লোকের ওপর অনেক বেশী মর্যাদা দিয়েছি, যাতে এরা একে
অপরের সেবা গ্রহণ করতে পার।৩১ (এদের
নেতারা) যে সম্পদ অর্জন করছে তোমার রবের রহমত তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান।৩২
﴿وَلَوْلَآ أَن يَكُونَ ٱلنَّاسُ
أُمَّةًۭ وَٰحِدَةًۭ لَّجَعَلْنَا لِمَن يَكْفُرُ بِٱلرَّحْمَـٰنِ لِبُيُوتِهِمْ سُقُفًۭا
مِّن فِضَّةٍۢ وَمَعَارِجَ عَلَيْهَا يَظْهَرُونَ﴾
৩৩। সমস্ত
মানুষ একই পথের অনুসারি হয়ে যাবে যদি এই আশঙ্কা না থাকতো তাহলে যারা দয়াময় আল্লাহর
সাথে কুফরি করে আমি তাদের ঘরের ছাদ,
﴿وَلِبُيُوتِهِمْ أَبْوَٰبًۭا
وَسُرُرًا عَلَيْهَا يَتَّكِـُٔونَ﴾
৩৪। যে সিঁড়ি
দিয়ে তারা তাদের বালাখানায় ওঠে সেই সিঁড়ি, দরজাসমূহ এবং
যে সিংহাসনের ওপর তারা বালিশে হেলান দিয়ে বসে তা সবই রৌপ্য এবং স্বর্ণের বানিয়ে
দিতাম।৩৩
﴿وَزُخْرُفًۭا ۚ وَإِن كُلُّ
ذَٰلِكَ لَمَّا مَتَـٰعُ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا ۚ وَٱلْـَٔاخِرَةُ عِندَ رَبِّكَ لِلْمُتَّقِينَ﴾
৩৫। এগুলে তো
শুধু পার্থিব জীবনের উপকরণ, তোমার রবের দরবারে আখেরাত
শুধু মুত্তাকীদের জন্য নির্দিষ্ট।
﴿وَمَن يَعْشُ عَن ذِكْرِ
ٱلرَّحْمَـٰنِ نُقَيِّضْ لَهُۥ شَيْطَـٰنًۭا فَهُوَ لَهُۥ قَرِينٌۭ﴾
৩৬। যে ব্যক্তি
রাহমানের স্মরণ৩৪ থেকে গাফিল থাকে আমি
তার ওপর এক শয়তান চাপিয়ে দেই, সে তার বন্ধু হয়ে যায়।
﴿وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ
عَنِ ٱلسَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ﴾
৩৭। এ শয়তানরা
এসব লোকদেরকে সঠিক পথে আসতে বাঁধা দেয়, কিন্তু এরা মনে করে আমরা
ঠিক পথেই চলছি।
﴿حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَنَا
قَالَ يَـٰلَيْتَ بَيْنِى وَبَيْنَكَ بُعْدَ ٱلْمَشْرِقَيْنِ فَبِئْسَ ٱلْقَرِينُ﴾
৩৮। অবশেষে যখন
এ ব্যক্তি আমার কাছে পৌঁছবে তখন তার শয়তানকে বলবেঃ “আহা, যদি আমার ও
তোমার মাঝে পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান হতো! তুমি তো জঘন্যতম সাথী প্রমাণিত হয়েছো।”
﴿وَلَن يَنفَعَكُمُ ٱلْيَوْمَ
إِذ ظَّلَمْتُمْ أَنَّكُمْ فِى ٱلْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ﴾
৩৯। সেই সময়
এদের বলা হবে, তোমরা যখন জুলুম করেছো তখন আজ একথা তোমাদের
কোন উপকারে আসবে না। তোমরা ও তোমাদের শয়তানরা
সমানভাবে আযাব ভোগ করবে।৩৫
﴿أَفَأَنتَ تُسْمِعُ ٱلصُّمَّ
أَوْ تَهْدِى ٱلْعُمْىَ وَمَن كَانَ فِى ضَلَـٰلٍۢ مُّبِينٍۢ﴾
৪০। হে নবী, তাহলে এখন কি
তুমি বধিরদের শোনাবে? নাকি অন্ধ ও সুস্পষ্ট গোমরাহীর মধ্যে
পড়ে থাকা লোকদের পথ দেখাবে?৩৬
﴿فَإِمَّا نَذْهَبَنَّ بِكَ
فَإِنَّا مِنْهُم مُّنتَقِمُونَ﴾
৪১। আমি তোমাকে
দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নেই কিংবা এদেরকে যে পরিণামের প্রতিশ্রুতি আমি দিয়েছি তা তোমাকে
চাক্ষুষ দেখিয়ে দেই এখন তো আমার এদেরকে শাস্তি দিতে হবে।
﴿أَوْ نُرِيَنَّكَ ٱلَّذِى
وَعَدْنَـٰهُمْ فَإِنَّا عَلَيْهِم مُّقْتَدِرُونَ﴾
৪২। এদের
বিরুদ্ধে আমি পূর্ণ ক্ষমতা রাখি।৩৭
﴿فَٱسْتَمْسِكْ بِٱلَّذِىٓ
أُوحِىَ إِلَيْكَ ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ صِرَٰطٍۢ مُّسْتَقِيمٍۢ﴾
৪৩। অহীর
মাধ্যমে তোমার কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে সর্বাবস্থায় তুমি দৃঢ়ভাবে তা আঁকড়ে থাকো
নিশ্চয়ই তুমি সোজা পথে আছো।৩৮
﴿وَإِنَّهُۥ لَذِكْرٌۭ لَّكَ
وَلِقَوْمِكَ ۖ وَسَوْفَ تُسْـَٔلُونَ﴾
৪৪। প্রকৃত সত্য
হলো, এ কিতাব তোমার ও তোমার কর্মের জন্য অনেক বড়
একটি মর্যাদা এবং এজন্য অচিরেই তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে।৩৯
﴿وَسْـَٔلْ مَنْ أَرْسَلْنَا
مِن قَبْلِكَ مِن رُّسُلِنَآ أَجَعَلْنَا مِن دُونِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ءَالِهَةًۭ يُعْبَدُونَ﴾
৪৫। তোমার
পূর্বে আমি যত রাসূল পাঠিয়েছিলাম তাঁদের সবাইকে জিজ্ঞেস করে দেখো, আমি উপাসনার
জন্য রাহমান খোদা ছাড়া আর কোন উপাস্য নির্দিষ্ট করেছিলাম কিনা?৪০
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ
بِـَٔايَـٰتِنَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَإِي۟هِۦ فَقَالَ إِنِّى رَسُولُ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ﴾
৪৬। আমি৪১ মূসাকে
আমার নিদর্শনসমূহসহ৪২ ফেরাউন ও
তার সভাসদদের কাছে পাঠিয়েছিলাম। সে গিয়ে
তাদের বলেছিলোঃ আমি বিশ্ব-জাহানের রবের রাসূল।
﴿فَلَمَّا جَآءَهُم بِـَٔايَـٰتِنَآ
إِذَا هُم مِّنْهَا يَضْحَكُونَ﴾
৪৭। অতঃপর সে
যখন তাদের সামনে আমার নিদর্শনসমূহ পেশ করলো তখন তারা বিদ্রূপ করতে লাগলো।
﴿وَمَا نُرِيهِم مِّنْ ءَايَةٍ
إِلَّا هِىَ أَكْبَرُ مِنْ أُخْتِهَا ۖ وَأَخَذْنَـٰهُم بِٱلْعَذَابِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ﴾
৪৮। আমি
তাদেরকে একের পর এক এমন সব নিদর্শন দেখাতে থাকলাম যা আগেরটার চেয়ে বড় হতো। আমি
তাদেরকে আযাবের মধ্যে লিপ্ত করলাম যাতে তারা তাদের আচরণ থেকে বিরত থাকে।৪৩
﴿وَقَالُوا۟ يَـٰٓأَيُّهَ
ٱلسَّاحِرُ ٱدْعُ لَنَا رَبَّكَ بِمَا عَهِدَ عِندَكَ إِنَّنَا لَمُهْتَدُونَ﴾
৪৯। প্রত্যেক
আযাবের সময় তারা বলতো, হে যাদুকর! তোমার রবের পক্ষ থেকে
তুমি যে পদমর্যাদা লাভ করেছো তার ভিত্তিতে আমাদের জন্য তাঁর কাছে দোয়া করো। আমরা
অবশ্যই সঠিক পথে এসে যাবো।
﴿فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُمُ
ٱلْعَذَابَ إِذَا هُمْ يَنكُثُونَ﴾
৫০। কিন্তু আমি
যেই মাত্র তাদের ওপর থেকে আযাব সরিয়ে দিতাম তারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতো।৪৪
﴿وَنَادَىٰ فِرْعَوْنُ فِى
قَوْمِهِۦ قَالَ يَـٰقَوْمِ أَلَيْسَ لِى مُلْكُ مِصْرَ وَهَـٰذِهِ ٱلْأَنْهَـٰرُ تَجْرِى
مِن تَحْتِىٓ ۖ أَفَلَا تُبْصِرُونَ﴾
৫১। একদিন
ফেরাউন তার কওমের মাঝে ঘোষণা করলোঃ৪৫ হে জনগণ,
মিসরের বাদশাহী কি আমার নয় এবং এসব নদী কি আমার অধীনে প্রবাহিত
হচ্ছে না? তোমরা কি তা দেখতে পাচ্ছ না?৪৬
﴿أَمْ أَنَا۠ خَيْرٌۭ مِّنْ
هَـٰذَا ٱلَّذِى هُوَ مَهِينٌۭ وَلَا يَكَادُ يُبِينُ﴾
৫২। আমিই উত্তম
না এই ব্যক্তি যে হীন ও নগণ্য৪৭ এবং
নিজের বক্তব্যও স্পষ্ট করে বর্ণনা করতে পারে না।৪৮
﴿فَلَوْلَآ أُلْقِىَ عَلَيْهِ
أَسْوِرَةٌۭ مِّن ذَهَبٍ أَوْ جَآءَ مَعَهُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ مُقْتَرِنِينَ﴾
৫৩। তাঁর কাছে
সোনার বালা কেন পাঠানো হলো না? অথবা তাঁর আরদালী হিসেবে
একদল ফেরেশতা কেন আসলো না।৪৯
﴿فَٱسْتَخَفَّ قَوْمَهُۥ فَأَطَاعُوهُ
ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَوْمًۭا فَـٰسِقِينَ﴾
৫৪। সে তার
জাতিকে হালকা ও গুরুত্বহীন মনে করেছে এবং তারাও তার আনুগত্য করেছে।
প্রকৃতপক্ষে তারা ছিল ফাসেক।৫০
﴿فَلَمَّآ ءَاسَفُونَا ٱنتَقَمْنَا
مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَـٰهُمْ أَجْمَعِينَ﴾
৫৫। অবশেষে
তারা যখন আমাকে ক্রোধান্বিত করলো তখন আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম, তাদের সবাইকে
এক সাথে ডুবিয়ে মারলাম
﴿فَجَعَلْنَـٰهُمْ سَلَفًۭا
وَمَثَلًۭا لِّلْـَٔاخِرِينَ﴾
৫৬। এবং
পরবর্তীদের জন্য অগ্রবর্তী ও শিক্ষণীয় উদাহরণ বানিয়ে দিলাম।৫১
﴿وَلَمَّا ضُرِبَ ٱبْنُ مَرْيَمَ
مَثَلًا إِذَا قَوْمُكَ مِنْهُ يَصِدُّونَ﴾
৫৭। আর যেই
মাত্র ইবনে মারইয়ামের উদাহরণ দেয়া হলো তোমার কওম হৈ চৈ শুরু করে দিলো
﴿وَقَالُوٓا۟ ءَأَـٰلِهَتُنَا
خَيْرٌ أَمْ هُوَ ۚ مَا ضَرَبُوهُ لَكَ إِلَّا جَدَلًۢا ۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ خَصِمُونَ﴾
৫৮। এবং বলতে
শুরু করলোঃ আমাদের উপাস্য উৎকৃষ্ট না সে?৫২ তারা
শুধু বিতর্ক সৃষ্টির জন্য তোমার সামনে এ উদাহরণ পেশ করেছে। সত্য কথা
হলো, এরা মানুষই কলহ প্রিয়।
﴿إِنْ هُوَ إِلَّا عَبْدٌ
أَنْعَمْنَا عَلَيْهِ وَجَعَلْنَـٰهُ مَثَلًۭا لِّبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ﴾
৫৯। ইবনে মারইয়াম
আমার বান্দা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আমি তাঁকে
নিয়ামত দান করেছিলাম এবং বনী ইসরাঈলদের জন্য আমার অসীম ক্ষমতার একটি নমুনা
বানিয়েছিলাম।৫৩
﴿وَلَوْ نَشَآءُ لَجَعَلْنَا
مِنكُم مَّلَـٰٓئِكَةًۭ فِى ٱلْأَرْضِ يَخْلُفُونَ﴾
৬০। আমি চাইলে
তোমাদের পরিবর্তে ফেরেশতা সৃষ্টি করে দিতে পারি৫৪ যারা
পৃথিবীতে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবে।
﴿وَإِنَّهُۥ لَعِلْمٌۭ لِّلسَّاعَةِ
فَلَا تَمْتَرُنَّ بِهَا وَٱتَّبِعُونِ ۚ هَـٰذَا صِرَٰطٌۭ مُّسْتَقِيمٌۭ﴾
৬১। আর
প্রকৃতপক্ষে সে তো কিয়ামতের একটি নিদর্শন।৫৫ অতএব সে
ব্যাপারে তোমরা সন্দেহ পোষণ করো না এবং আমার কথা মেনে নাও। এটাই
সরল-সোজা পথ।
﴿وَلَا يَصُدَّنَّكُمُ ٱلشَّيْطَـٰنُ
ۖ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّۭ مُّبِينٌۭ﴾
৬২। শয়তান যেন
তা থেকে তোমাদের বিরত না রাখে।৫৬ সে তো
তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।
﴿وَلَمَّا جَآءَ عِيسَىٰ
بِٱلْبَيِّنَـٰتِ قَالَ قَدْ جِئْتُكُم بِٱلْحِكْمَةِ وَلِأُبَيِّنَ لَكُم بَعْضَ ٱلَّذِى
تَخْتَلِفُونَ فِيهِ ۖ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾
৬৩। ঈসা যখন
সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছিলো, বলেছিলোঃ আমি তোমাদের
কাছে হিকমত নিয়ে এসেছি এবং এজন্য এসেছি যে, তোমরা যেসব বিষয়ে
মতানৈক্য পোষণ করছো তার কিছু বিষয়ের তাৎপর্য প্রকাশ করবো। অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।
﴿إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ رَبِّى
وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُ ۚ هَـٰذَا صِرَٰطٌۭ مُّسْتَقِيمٌۭ﴾
৬৪। প্রকৃত
সত্য এই যে, আল্লাহই আমার ও তোমাদের রব। তাঁরই
ইবাদত করো। এটাই সরল-সোজা পথ।৫৭
﴿فَٱخْتَلَفَ ٱلْأَحْزَابُ
مِنۢ بَيْنِهِمْ ۖ فَوَيْلٌۭ لِّلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ مِنْ عَذَابِ يَوْمٍ أَلِيمٍ﴾
৬৫। কিন্তু
(তাঁর এই সুস্পষ্ট শিক্ষা সত্ত্বেও) বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠী পরস্পর মতপার্থক্য করলো।৫৮ যারা
জুলুম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক দিনের আযাব।
﴿هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا ٱلسَّاعَةَ
أَن تَأْتِيَهُم بَغْتَةًۭ وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ﴾
৬৬। এখন এসব
লোকেরা কি শুধু এজন্যই অপেক্ষমান যে অকস্মাত এদের ওপর কিয়ামত এসে যাক এবং এরা আদৌ
টের না পাক?
﴿ٱلْأَخِلَّآءُ يَوْمَئِذٍۭ
بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا ٱلْمُتَّقِينَ﴾
৬৭। যখন সে
দিনটি আসবে তখন মুত্তাকীরা ছাড়া অবশিষ্ট সব বন্ধুই একে অপরের দুশমন হয়ে যাবে।৫৯
﴿يَـٰعِبَادِ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمُ
ٱلْيَوْمَ وَلَآ أَنتُمْ تَحْزَنُونَ﴾
৬৮। যারা আমার
আয়াতসমূহের ওপর ঈমান এনেছিলো এবং আমার আদেশের অনুগত হয়েছিল
﴿ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَا
وَكَانُوا۟ مُسْلِمِينَ﴾
৬৯। সেই দিন
তাদের বলা হবে, “হে আমার বান্দারা, আজ
তোমাদের কোন ভয় নেই এবং কোন দুঃখও আজ তোমাদের স্পর্শ করবে না।
﴿ٱدْخُلُوا۟ ٱلْجَنَّةَ أَنتُمْ
وَأَزْوَٰجُكُمْ تُحْبَرُونَ﴾
﴿يُطَافُ عَلَيْهِم بِصِحَافٍۢ
مِّن ذَهَبٍۢ وَأَكْوَابٍۢ ۖ وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ ٱلْأَنفُسُ وَتَلَذُّ ٱلْأَعْيُنُ
ۖ وَأَنتُمْ فِيهَا خَـٰلِدُونَ﴾
৭১। তাদের
সামনে স্বর্ণের প্লেট ও পেয়ালাসমূহ আনা নেয়া করানো হবে এবং মনের মত ও দৃষ্টি পরিতৃপ্তকারী
প্রতিটি জিনিস সেখানে থাকবে। তাদের বলা হবে, “এখন তোমরা
এখানে চিরদিন থাকবে। পৃথিবীতে তোমরা যেসব কাজ
করেছো
﴿وَتِلْكَ ٱلْجَنَّةُ ٱلَّتِىٓ
أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
৭২। তার
বিনিময়ে এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছো।
﴿لَكُمْ فِيهَا فَـٰكِهَةٌۭ
كَثِيرَةٌۭ مِّنْهَا تَأْكُلُونَ﴾
৭৩। তোমাদের
জন্য এখানে প্রচুর ফল মজুদ আছে যা তোমরা খাবে।”
﴿إِنَّ ٱلْمُجْرِمِينَ فِى
عَذَابِ جَهَنَّمَ خَـٰلِدُونَ﴾
৭৪। আর
অপরাধীরা তারা তো চিরদিন জাহান্নামের আযাব ভোগ করবে।
﴿لَا يُفَتَّرُ عَنْهُمْ وَهُمْ
فِيهِ مُبْلِسُونَ﴾
৭৫। তাদের আযাব
কখনো কম করা হবে না এবং তারা সেখানে নিরাশ অবস্থায় পড়ে থাকবে।
﴿وَمَا ظَلَمْنَـٰهُمْ وَلَـٰكِن
كَانُوا۟ هُمُ ٱلظَّـٰلِمِينَ﴾
৭৬। আমি তাদের
প্রতি জুলুম করিনি। বরং তারা নিজেরাই নিজেদের
প্রতি জুলুম করেছে।
﴿وَنَادَوْا۟ يَـٰمَـٰلِكُ
لِيَقْضِ عَلَيْنَا رَبُّكَ ۖ قَالَ إِنَّكُم مَّـٰكِثُونَ﴾
৭৭। তারা
চিৎকার করে বলবে “হে মালেক।৬১ তোমার রব
আমাদেরকে একেবারে ধ্বংস করে দেন তাহলে সেটাই ভাল” সে জবাবে বলবেঃ “তোমাদের এভাবেই
থাকতে হবে।
﴿لَقَدْ جِئْنَـٰكُم بِٱلْحَقِّ
وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَكُمْ لِلْحَقِّ كَـٰرِهُونَ﴾
৭৮। আমরা
তোমাদের কাছে ন্যায় ও সত্য নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু
তোমাদের অধিকাংশের কাছে ন্যায় ও সত্য ছিল অপছন্দনীয়।”৬২
﴿أَمْ أَبْرَمُوٓا۟ أَمْرًۭا
فَإِنَّا مُبْرِمُونَ﴾
৭৯। এ লোকেরা
কি কোন পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে?৬৩ বেশ তো!
তাহলে আমিও একটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।
﴿أَمْ يَحْسَبُونَ أَنَّا
لَا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَىٰهُم ۚ بَلَىٰ وَرُسُلُنَا لَدَيْهِمْ يَكْتُبُونَ﴾
৮০। এরা কি মনে
করেছে, আমি এদের গোপন এবং এদের চুপিসারে বলা কথা
শুনতে পাই না!
﴿قُلْ إِن كَانَ لِلرَّحْمَـٰنِ
وَلَدٌۭ فَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلْعَـٰبِدِينَ﴾
৮১। আমি সব
কিছু শুনছি এবং আমার ফেরেশতা তাদের কাছে থেকেই তা লিপিবদ্ধ করছে। এদের বলো, “সত্যিই যদি রাহমানের
কোন সন্তান থাকতো তাহলে তাঁর সর্বপ্রথম ইবাদতকারী হতাম আমি।”৬৪
﴿سُبْحَـٰنَ رَبِّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضِ رَبِّ ٱلْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ﴾
৮২। আসমান ও
যমীনের শাসনকর্তা আরশের অধিপতি এমন সমস্ত বিষয় থেকে পবিত্র যা এরা তাঁর প্রতি আরোপ
করে থাকে।
﴿فَذَرْهُمْ يَخُوضُوا۟ وَيَلْعَبُوا۟
حَتَّىٰ يُلَـٰقُوا۟ يَوْمَهُمُ ٱلَّذِى يُوعَدُونَ﴾
৮৩। ঠিক আছে, যে দিনের ভয়
তাদের দেখানো হচ্ছে সেই দিন না দেখা পর্যন্ত তাদেরকে বাতিল ধ্যান-ধারণার মধ্যে
ডুবে এবং নিজেদের খেলায় মেতে থাকতে দাও।”
﴿وَهُوَ ٱلَّذِى فِى ٱلسَّمَآءِ
إِلَـٰهٌۭ وَفِى ٱلْأَرْضِ إِلَـٰهٌۭ ۚ وَهُوَ ٱلْحَكِيمُ ٱلْعَلِيمُ﴾
৮৪। সেই একজনই
আসমানেও আল্লাহ এবং যমীনেও আল্লাহ।
﴿وَتَبَارَكَ ٱلَّذِى لَهُۥ
مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَعِندَهُۥ عِلْمُ ٱلسَّاعَةِ
وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ﴾
৮৫। তিনি
মহাকুশলী ও মহাজ্ঞানী।৬৫ অনেক
উচ্চ ও সম্মানিত সেই মহান সত্তা যার মুঠিতে যমীন ও আসমানসমূহ এবং যমীন ও আসমানের
যা কিছু আছে তার প্রতিটি জিনিসের বাদশাহী।৬৬ তিনিই
কিয়ামতের সময়ের জ্ঞান রাখেন এবং তোমাদের সবাইকে তাঁর কাছেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।৬৭
﴿وَلَا يَمْلِكُ ٱلَّذِينَ
يَدْعُونَ مِن دُونِهِ ٱلشَّفَـٰعَةَ إِلَّا مَن شَهِدَ بِٱلْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ﴾
৮৬। এরা তাঁকে
বাদ দিয়ে যাদের ডাকে তারা শাফায়াতের কোন ইখতিয়ার রাখে না। তবে যদি
কেউ জ্ঞানের ভিত্তিতে ন্যায় ও সত্যের সাক্ষ্য দান করে।৬৮
﴿وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ
خَلَقَهُمْ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ﴾
৮৭। যদি তোমরা
এদের জিজ্ঞেস করো, কে এদের সৃষ্টি করেছে তাহলে এরা নিজেরাই
বলবে, আল্লাহ।৬৯ তাহলে
কোথা থেকে এরা প্রতারিত হচ্ছে?
﴿وَقِيلِهِۦ يَـٰرَبِّ إِنَّ
هَـٰٓؤُلَآءِ قَوْمٌۭ لَّا يُؤْمِنُونَ﴾
৮৮। রাসূলের এই
কথার শপথ, ‘হে রব, এরাই সেই সব
লোক যারা মানছে না।’৭০
﴿فَٱصْفَحْ عَنْهُمْ وَقُلْ
سَلَـٰمٌۭ ۚ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ﴾
৮৯। ঠিক আছে, হে নবী,
এদের উপেক্ষা করো এবং বলে দাও, তোমাদের সালাম
জানাই।৭১ অচিরেই
তারা জানতে পারবে।
--- সমাপ্ত ---
কোন মন্তব্য নেই
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।